Sunday 24 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

একাদশ শ্রেণিতে কলেজ নির্বাচনে সতর্ক থাকতে হবে

মো. শফিকুল ইসলাম নিয়ামত
৫ ডিসেম্বর ২০২২ ১৫:৫৭

এবার এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের গড় পাসের হার ৮৭ শতাংশ। পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন ১৭ লাখ ৪৩ হাজার ৬১৯ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ লাখ ৬৯ হাজার ৬০২ জন শিক্ষার্থী। ২০২১ সালে এ সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৮৯ হাজার ১৬৯ জন। গেলে দুই বছরের মধ্যে তুলনা করলে ২০২২ সালে জিপিএ-৫ এর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ৮০ হাজার ৪৪৩ জন।

প্রত্যেক শিক্ষার্থীর স্বপ্ন থাকে রাজধানীকেন্দ্রিক ভালো কলেজে ভর্তি হওয়ার। একাদশ শ্রেণীতে অনলাইনে প্রথম ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৫ সাল থেকে। তারই ধারাবাহিকতায় এবারো অনলাইনেই ভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী আগামী ৮ ডিসেম্বর থেকে ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে অনলাইন ভর্তির কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে। ২০১৫ সালের পূর্বে ভালো কলেজগুলো শিক্ষার্থী ভর্তি করতো ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে। তখন ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উপস্থিত মেধা এবং যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে ভর্তির সুপারিশ প্রাপ্ত হত। সেখানে এসএসসির জিপিএ কাজে লাগলেও এখনকার মত এত গুরুত্বপূর্ণ ছিলনা।

বিজ্ঞাপন

কিন্তু ২০১৫ সাল থেকে অনলাইনে ভর্তি কার্যক্রম শুরু করার পর কলেজগুলোতে ভর্তির ক্ষেত্রে এসএসসির জিপিএ সবচেয়ে বড় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজধানীর নামীদামী কলেজগুলোতে আমরা অনলাইন কর্যক্রম শুরুর পর থেকেই দেখে আসছি যে, সেখানে শুধু জিপিএ-৫ পেলেই হয়না বরং সর্বোচ্চ নাম্বারের অধিকারী হতে হয়। কারণ সীট সংখ্যার চেয়ে বেশি সংখ্যক জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা সেখানে আবেদন করে। অনেক কলেজ তাদের সর্বনিম্ন জিপিএ নির্ধারণ করে রাখে ৪.৫০ কিন্তু তাদের কলেজে আবেদনকারী সব শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ প্রাপ্ত। সংগত কারনেই তাদের নির্ধারিত জিপিএ এর বিষয়টা তখন সামনে আসেনা।

বিজ্ঞাপন

অর্থাৎ অনেক জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীই সেখান থেকে বাদ পরে যায়। যেসব শিক্ষার্থী কলেজের সার্বিক অবস্থা না জেনে শুধু সর্বনিম্ন নির্ধারিত জিপিএ দেখে আবেদন করে তারা শতভাগ বাদ পরার সম্ভাবনা থাকে। পরে কাঙ্ক্ষিত কলেজে ভর্তির সুযোগ না পেয়ে হতাশ হয়। এজন্য কলেজের বিষয়ে যারা ভালো জানে তাদের কাছে গিয়ে কলেজ সম্পর্কে জানা অথবা অনলাইনে ভালো তথ্য পাওয়া যায় সেখান থেকে যাচাই-বাছাই করে কলেজ সিলেকশনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই রাজধানীকেন্দ্রিক চিন্তাভাবনা করে।

তারা রাজধানীর বাইরে চিন্তাই করতে চায়না। অথচ রাজধানীর বাইরে দেশে অনেক ভালো ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে। রাজধানীর বাইরে অনেক বিভাগীয় এবং জেলা শহরে রাজধানীর সমপর্যায়ের কলেজ আছে। সেই সব কলেজ থেকে প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীরা ভালো করছে। অতীতের চেয়ে কলেজগুলোতে ভর্তির ক্ষেত্রে এবার বেশি জটিলতায় পরবে শিক্ষার্থীরা।

আগেই উল্লেখ করেছি গতবারের চেয়ে এবার জিপিএ-৫ সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ৮০ হাজার ৪৪৩ জন। ২০২১ সালেই কলেজ সিলেকশনের ক্ষেত্রে অনেক জটিলতায় পরেছিল শিক্ষার্থীরা। সিট সংখ্যার চেয়ে বেশি জিপিএ-৫ এর কারণে অনেকেই ভালো কলেজে ভর্তি হতে পারেনি৷ এবার সেই সমস্যাটা আরো প্রকট হবে। সংগত কারণেই চোখ-কান খোলা রেখে যারা এই বিষয়ে ভালো জানে তাদের পরামর্শ মোতাবেক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এক অথবা দুই শব্দের পার্থক্যে অনেক জায়গায় একই নামের দুই কলেজ থাকে।

প্রথম-প্রথম শিক্ষার্থীরা কলেজ সিলেকশন করতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পরে। অনেকে পরিষ্কার ধারণা না থাকায় ভুল নামের কলেজটি নির্বাচন করে। এসব ঝামেলা এড়াতে কলেজ সিলেকশনের সময় খুব ভালোভাবে কলেজের নাম এবং কোড দেখে নির্বাচন করতে হবে। এবার সারাদেশে ফল ভালো হওয়ায় ভর্তির ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত একমাত্র কলেজটি পাওয়া কঠিন হয়ে যেতে পারে। এজন্য ভালোভাবে কয়েকটি কলেজ বাছাই করে প্রথম দিকে রাখতে হবে। যেহেতু ১০ টি কলেজ নির্বাচন করার সুযোগ আছে, সেহেতু ১০ টি কলেজ পূরণ করেই রেজিষ্ট্রেশন সম্পন্ন করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

ভর্তিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ কেউ অন্যান্য কোটায় ভর্তি হতে চাইলে কোটা সংশ্লিষ্ট সকল বিষয় অবশ্যই ভালোভাবে জেনে নিতে হবে। অনেক গরীব শিক্ষার্থী আছে। তাদের ভালো কলেজ বিবেচনার পাশাপাশি কলেজের ব্যায় সহ যেখানে থাকবে সেখানকার ব্যায় বহন করতে পারবে কিনা নিশ্চিত হতে হবে। অনলাইনে ভর্তি কার্যক্রম করেনা অর্থাৎ পূর্বের নিয়ম অনুযায়ী ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করে এরকম কলেজে কেউ ভর্তি হতে চাইলে কলেজগুলো সম্পর্কে প্রাক্তন অথবা বর্তমান ছাত্রদের কাছে তথ্য নিতে পারে।

জাতীয় পত্রিকাসহ ইন্টারনেট থেকে তথ্য নিয়ে কলেজগুলির ভর্তি পরীক্ষার সিলেবাস এবং আনুসঙ্গিক বিষয়ে অবগত হতে পারে। অনলাইনে ভর্তির প্রক্রিয়া করা হয়েছে শিক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য। এটার সুবিধা এবং অসুবিধা দুটোই আছে৷ পূর্বে কলেজ সিলেকশন করার পর ছেলেদের অনেককেই দেখা গেছে ভুলবশত মেয়েদের কলেজে পরে গেছে এটা অবশ্য শিক্ষার্থীর কোন দোষ নয়। সিস্টেমের ত্রুটির কারনেই নাকি এরকম হয়েছিল।

এবার আশা করি অতীতের কোন ভুলের আর পুনরাবৃত্তি হবেনা। শিক্ষার্থীরা সর্বোচ্চ সতর্কতার সাথে কলেজ সিলেকশন করার পূর্বে প্রতিটি কলেজ সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে বুঝে নির্বাচন করবে। এবার যারা এসএসসি পরিক্ষায় ভালো করেছে তাদের সবাইকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই এবং তারা যেন তাদের কাঙ্ক্ষিত কলেজে ভর্তি হয়ে আন্তরিকতার সাথে শিক্ষা-কার্যক্রম চালাতে পারে এই কামনাই করি।

লেখক: শিক্ষার্থী, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

সারাবাংলা/এজেডএস

একাদশ শ্রেণিতে কলেজ নির্বাচন মো. শফিকুল ইসলাম নিয়ামত

বিজ্ঞাপন

ইত্যাদি এবার মোংলায়
২৪ নভেম্বর ২০২৪ ১৯:৩৪

বরবাদের আইটেম গানে নুসরাত
২৪ নভেম্বর ২০২৪ ১৯:২৬

আরো

সম্পর্কিত খবর