Sunday 24 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পটকা ফাঁটিয়ে বা ফানুস উড়িয়ে বর্ষবরণ অর্থের অপচয়

মাহমুদ সোহেল
১ জানুয়ারি ২০২৩ ১৭:৩৬

পটকা ফাঁটিয়ে বা ফানুস উড়িয়ে বর্ষবরণ অর্থের অপচয় ছাড়া কিছুই নয়। যেখানে রাষ্ট্রীয়ভাবেই আশঙ্কা করা হচ্ছে ২০২৩ সাল হবে দুর্ভিক্ষের বছর। এমন শংঙ্কা আছে পৃথিবী জুড়েও। এলসি না করতে অনুরোধ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক (শুধুমাত্র খাদ্য আর নিত্য দরকারী পণ্য ছাড়া)।

এমনই সংশয় মাথায় নিয়ে ২০২৩ সালকে স্বাগত জানালাম আমরা। আতশবাজি ফোটানো তরুণদের চিন্তায় এইসব আছে কি? আমরা পারিনি তাদেরকে এর গুরুত্ব বোঝাতে।

বিজ্ঞাপন

অথচ দেশকে এগিয়ে নিতে এই তরুণদেরকে বাদ দিয়ে সম্ভব নয়। কেননা কোন সংকটই সরকারের পক্ষে একা মোকাবিলা করা যায় না। আতশবাজি ফাটিয়ে কত টাকা নষ্ট হলো তা আমার আলোচনার বিষয় নয়। বরং বিশেষ ভয় সাথে করে নিয়ে আসা এই বছরে জাতিগতভাবে ইতিবাচক কিছু পরিকল্পনা তুলে ধরা দরকার ছিলো বলে মনে করি। কেননা দেশের সমস্যা নিরসনে বিশাল তরুন জনগোষ্ঠী ভাবতে শুরু করলে দেশের চেহারাই পাল্টে যেত।

গেল বিশ্বকাপ ফুটবল উন্মাদনা আর বর্ষবরণের মতো এ ধরণের মৌসুমে তরুনদের উজ্জীবিত করা ও মোটিভেশন দেওয়াটা সহজ হয়। এটিকে কাজে লাগাতে হবে।

বিষয়টা সহজ করে বলি, সরকারের বক্তব্য অনুযায়ী একটি দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা মাথায় নিয়ে এসেছে নতুন বছর। তাই তরুনদের প্রতি আহবান জানানো দরকার ছিলো চলো এবারের বর্ষবরণকে আমরা ভিন্নভাবে সেলিব্রেট করি। এর আগেও আমরা দেখেছি এমন আহবানে ব্যাপক সাড়া দেয় দেশবাসী। যেমন কয়েক বছর আগেও পহেলা বৈশাখ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহবানে ইলিশ রক্ষায় পান্তা-ইলিশ বর্জন করেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের তরুন সচেতন সমাজ।

প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন সময়ে বলে থাকেন, দেশের এক ইঞ্চি জমিও চাষ অযোগ্য রাখা যাবে না। নতুন বছরে এমন কিছু গাইড লাইন থাকা দরকার ছিল। তাতে সংকট সমাধানে আরও সচেতন হতো দেশবাসি।

বিজ্ঞাপন

তরুনদের মাঝে মোটিভেশন দরকার। তাদেরকে বোঝানো দরকার- নতুন বছরে আমরা শিক্ষিত জনশক্তি চাকরী খুঁজবো না, কাজ খুঁজবো। কারণ এদেশে চাকরীর সংকট থাকলেও কাজের অভাব নেই। বিদেশে পড়তে যেয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা কোন কাজকেই খাটো করে দেখে না। ঐ একই কাজ দেশে করতে যত আপত্তি তাদের। তাই বেকার সমস্যা দিন দিন প্রকট হচ্ছে। ‘পাছে লোকে কিছু বলে’- এই ব্যাধি তাদেরকে পেয়ে বসেছে। এই দৃষ্টি ভঙ্গি বদলানো দরকার। তাহলে তরুনদের মাঝে উদ্যোক্তা তৈরী হবে। চাকরীর বাজারে চাপ কমবে।

তরুনদের মাঝে ব্যাপক মোটিভেশন দরকার। এর জন্য শিক্ষাবিদ-বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে একটি জাতীয় প্ল্যাটফর্ম গঠনের প্রস্তাব করছি। যারা তরুনদের মাঝে দেশপ্রেম তৈরী করবে। তাদেরকে বোঝাবে, বড় চেয়ারে বসে ঘুষ, দূর্নীতি করার চেয়েও একজন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা হতে পারা অনেক সম্মানের। উন্নত রাষ্ট্র গড়তে হলে তরুনদেরকে দলে দলে উদ্যোক্তা হতে হবে। তবেই দেশ এগোবে। অন্যথায় বছর আসবে, বছর যাবে- কিন্তু এ জাতির ভাগ্য বদলাবে না।

সবার স্বপ্ন পুরণের বছর হোক এটি। এজন্য আগামী ১২ মাসে আমরা যা যা অর্জন করতে চাই তার একটা তালিকা করি। কি কি খারাপ অভ্যাস আছে তা বর্জনে সচেষ্ট হই।

তবে বেকার সমস্যা সমাধানে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোরও বড় দায়িত্ব আছে। তারা কিছু ইতিবাচক উদ্যোগ নিতে পারে। তাতে করে বেকারত্ব কমবে। দেশবাসীর অর্থনৈতিক মন্দার ভয় কেটে যাবে। মানুষ সাহসী হবে। আত্মবিশ্বাস বাড়বে। এজন্য তাদেরকে লোন দিতে হবে।

সবশেষ বলবো, দেশ বা সমাজকে পরিবর্তনের আগে নিজেকে বদলান। নিজেকে সময় দিন। নিজের স্বপ্ন পূরণে কাজ করুন। কাজকে ভালোবাসুন, ইবাদত মনে করুন। কাজই আপনাকে সফলতা এনে দেবে।

মনে রাখা দরকার, বিপদের সময় কেউ আমাকে চাল ডাল তেল নুন কেনার টাকা দেবে না। বাড়ি ভাড়াও দেবে না। তাই নিজের কাজে মনোযোগী হোন। সৃষ্টি কর্তার সাথে সম্পর্ক বাড়ান। তাতে আত্মবিশ্বাসও বাড়বে।

খুব কাছের বন্ধুটিও স্বার্থ শেষে আপনাকে ভুলে যাবে। কিন্তু দেরিতে হলেও কর্ম-ই আপনাকে সফল করবে। আপনার সামাজিক মর্যাদা বহু গুনে বাড়াবে, তখন মানুষের জন্য আপনি অনেক কিছু করতেও পারবেন। সমাজ বদলে ভূমিকা রাখতে পারবেন।

নতুন বছরে নিজেকে সময় দিন, নিজের উপর বিনিয়োগ করুন। স্বপ্ন দেখুন, লেগে থাকুন, আলো আসবেই ইনশাল্লাহ। শুভ নববর্ষ।

লেখক: সাংবাদিক ও উদ্যোক্তা

সারাবাংলা/এসবিডিই/এএসজি

পটকা ফাঁটিয়ে বা ফানুস উড়িয়ে বর্ষবরণ অর্থের অপচয় মাহমুদ সোহেল মুক্তমত

বিজ্ঞাপন

বিদেশ বিভুঁই। ছবিনামা-১
২৪ নভেম্বর ২০২৪ ২৩:০০

আরো

সম্পর্কিত খবর