Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আমরা হলে সচেতন, হবে না কিন্তু পরিবেশ দূষণ

রশীদ এনাম
২৭ জুন ২০২৩ ১৪:৫২

প্রকৃতি হলো মানবজাতির জন্য মহান সৃষ্টিকর্তার সর্বশ্রেষ্ট দান। প্রকৃতি থেকে মানবজাতি তার সবকিছু পেয়ে থাকেন। প্রকৃতি ছাড়া বেঁচে থাকা অসম্ভব। অক্সিজেন, পানি, গাছ ফল-মুল নদী পর্বত থেকে আমরা কতো কিছুই না আহরণ করছি। প্রকৃতি আমাদের প্রতিনিয়ত ফলে ফুলে রুপ রস গন্ধে মাতিয়ে রাখে। আমাদের জীবনে প্রকৃতির অবদান সত্যি অপরিসীম। তাই আমাদের উচিত প্রকৃতির যত্ন নেয়া, প্রকৃতিকে ভালোবাসা প্রকৃতিকে কাছের করে নেয়া এবং প্রকৃতিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।

বিজ্ঞাপন

কথায় আছে স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল কিংবা সুস্থ দেহ প্রশান্ত মন কর্মব্যস্ত সুখী জীবন। পরিবেশের চারিদিকে পানি, বায়ু মাটি কিংবা গাছপালায় অসংখ্যা জীবাণু বসবাস করে। আমাদের নিজেদের কিছু ভুলের কারনে অনেক সময় রোগ জীবাণুগুলো আমাদেরকে আক্রমণ করে বসে। সবচেয় বেশি আক্রান্ত হয় শিশুরা। জীবাণু থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা এবং সচেতনতা জরুরি।

আসছে পবিত্র ঈদুল আজহা, পশু কোরবানির ঈদ। প্রতিবছর কিন্তু বলা হয়, যত্র তত্র পশুর বর্জ্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলবেন না। কে শোনে ভাই কার কথা। প্রতি বছর পশু জবাই করার পর বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায় বর্জ্য অপসারণ নিয়ে। একটু সচেতন হলে কিন্তু পশুর বর্জ্য নিয়ে অতো চিন্তা করতে হয় না। নির্দিষ্ট জায়গায় বর্জ্য না ফেলে অনেকে দেখা যায় পশু কোরবানি দেয়ার সাথে সাথে বর্জ্য এনে রাস্তার পাশে নালায় নর্দমায় পুকুরে খালে-বিলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলে রেখে দ্রুত চলে যায়। এটা কিন্তু মারাত্বক অপরাধ। পরিবেশের জন্য হুমকি স্বরূপও বটে। আপনি কি জানেন, আপনার পশুর বর্জ্যটা পঁচে গন্ধে মশা মাছি সহ বিভিন্ন রোগ জিবাণু ছড়ায় যা পরিবেশের এবং শিশুদের মারাত্বাকভাবে ক্ষতির কারণ হয়। কুকুর বিড়াল কিংবা কাক নানা রকমের বিহঙ্গ কোরবানীর পশুর বর্জ্য বিভিন্ন জায়গায় টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যায়। ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলে এতে করে মারাত্বকভাবে দুর্গন্ধ ছড়ায়। অতিরিক্ত পশুর বর্জ্য নালা নর্দমায় ফেলার কারণে বর্জ্য পচা গন্ধে বিশেষ করে ড্রেনে বা নালা নর্দমা পানি চলাচলের রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্ক থাকে বেশি। একটু বৃষ্টি হলে নালার পানি আটকে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। পৌরসভা কিংবা সিটিকর্পোরেশনের পরিচন্নকর্মীরা বর্জ্য অপসারণ করতে গিয়ে জামেলায় পড়েন।

বিজ্ঞাপন

বুঝতে পারছেন, পরিবেশের ক্ষতি হওয়া মানে পরিবারের, বাড়ি তথা সমাজ ও দেশের ক্ষতি করছেন। সচেতন না হওয়ার কারনে আমরা তখন সব দোষ চাপায় হরিজনদের, বাসা বাড়ির বুয়া/কাজের লোকদের, পৌরসভা, সিটিকর্পোরেশনের চৌদ্দগোষ্টি উদ্ধার করে ফেলি।

আমরা গত ফুটবল বিশ্বকাপে দেখেছি- জাপানিরা খেলা দেখতে এসে পুরো স্টেডিয়াম পরিস্কার করে দিয়ে গেছে। এটা কিন্তু পুরো বিশ্ববাসীকে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়েছে আমরাও পারি। এটা শিক্ষার তথা সভ্যতার স্ম্যার্টনেসের উজ্জল দৃষ্টান্ত। আমি আপনি কি তা করছি? না করছি না। কোরবানী ঈদে আমাদের প্রত্যেকের উচিত, পশু কোরবানী দেয়ার সাথে সাথে, আপনার নিজ দায়িত্বে আপনার বাড়ির উঠোন বা বাড়ির লনে সম্মিলিতভাবে নিজ দায়িত্বে পরিষ্কার করা। বর্জ্যটা মাটিতে পুঁতে ফেলা। মাটিতে পুঁতে ফেললে কিন্তু মাটির উর্বরতা শক্তি বাড়ে যেটা গাছের জন্য খুবই উপকারী। মাটিতে পুঁতার ব্যবস্থা না থাকলে। আপনি বর্জ্যটাকে চটের বস্তায় বা থলেতে ভরে থলের মুখ বেঁধে রেখে ডাস্টবিনে বা একটা নির্দিষ্ট স্থানে রেখে পৌরসভা বা সিটিকর্পোরেশন-র কাউন্সিলর বা ইউপি সদস্যদেরকে বর্জ্য পরিচ্ছনের বিষয়টা জানাতে পারেন। আপনি তা না করে বর্জ্যটা বাড়ির সামনে কিংবা রাস্তার পাশে ফেলে দ্রুত সরে যান। পরিবেশ পরিচ্ছনন্ন রাখার ব্যাপারে হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণিত আমাদের প্রিয় নবিজী বলেছেন, তোমরা লানতকারী (অভিশাপে আক্রান্ত হতে হয় এমন) দুইটি কাজ থেকে দূরে থাকো। সাহাবারা জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহ রাসুল লানতকারী কাজ দুটি কী ? তিনি বলেন, যে মানুষের চলাচলের রাস্তায় কিংবা গাছের ছায়ায় মলমূত্র ত্যাগ করে (আবু দাউদ হাদিস ২৫ মুসনাদ আহমদ হাদিস ৮৮৫৩। সবার আগে পরিবেশ বাঁচাতে হবে। পরিবেশ বাঁচলে পৃথিবী বাঁচবে। তুমি আমি হলে সচেতন হবে না কিন্তু পরিবেশ দূষণ। আঁরার পরিবেশ আঁরারতে বাঁচান ফরিবু দয়া গড়ি কোরবাইন্না গরুর ভাড়াল আঁতুরি-বুতুরি নির্দিষ্ট জায়গাত ফেলাইয়ুন।

লেখক: কলামিস্ট

সারাবাংলা/এসবিডিই

আমরা হলে সচেতন- হবে না কিন্তু পরিবেশ দূষণ মুক্তমত রশীদ এনাম

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর