Tuesday 26 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সরকারি চাকরির বয়সসীমা কোন দেশে কত?

শাহনেওয়াজ ইসলাম
২৬ জুলাই ২০২৩ ১৪:২৮

একটি রাষ্ট্রের মূল চালিকাশক্তি যুবসমাজ। এ যুবসমাজ তখন-ই মানবসম্পদে পরিণত হয়, যখন রাষ্ট্র তাদেরকে সঠিকভাবে পরিচর্যা করে এবং নিজেদেরকে গড়ে তোলার সুযোগ দেয়। অন্যথায় এ বিশাল জনসম্পদ রাষ্ট্রের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। রাষ্ট্রের জনগোষ্ঠীকে কাজে লাগানোর সবচেয়ে মোক্ষম ধাপ হল ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড।

বাংলাদেশ বর্তমানে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড -এ অবস্থান করছে। জনমিতির হিসেবে বাংলাদেশ ২০১২ সাল থেকে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড -এ অবস্থান করছে, যা বিদ্যমান থাকবে ২০৪০ সাল পর্যন্ত। অর্থাৎ ২০৪০ সাল পর্যন্ত দ্রুতগতিতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য বাংলাদেশের সুবর্ণ সুযোগ থাকলেও ২০৪০ সাল থেকে এ সুযোগ হ্রাস পেতে থাকবে। ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড অনুযায়ী, ১৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সী লোকদেরকে কর্মক্ষম বিবেচনা করা হয়, যেখানে দেশের অর্ধেকের বেশি জনগোষ্ঠী কর্মক্ষম থাকে। বাংলাদেশে বর্তমানে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা প্রায় ৬৮ শতাংশ। আর এ কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীকে কাজে লাগিয়ে একটি রাষ্ট্র তার গতিপথে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনার সুযোগ পায়। যদি এখন-ই ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডকে কাজে লাগানো না যায়, তবে বাংলাদেশকে এর মাশুল দিতে হবে কারণ ২০৪০ সালের পর ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড-এর সুযোগের ধারা সংকুচিত হতে থাকবে।

বিজ্ঞাপন

অন্যদিকে, বাংলাদেশের যুবনীতি অনুযায়ী,যুবকদের বয়সসীমা ১৮ থেকে ৩৫ বলা হয়েছে। দুর্ভাগ্যের বিষয়, সবকিছুতে বয়সের ঊর্ধ্বগতি থাকলেও বাংলাদেশে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০-এ সীমাবদ্ধ করার কারনে আমরা উচ্চশিক্ষিত তরুণদেরকে ৩০ বছর পার করার পর অযোগ্য হিসেবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিচ্ছি। এতে রাষ্ট্রের বোঝা যেমন বাড়ছে, তেমনি রাষ্ট্র হারাচ্ছে একটি কর্মক্ষম বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে।

বিজ্ঞাপন

পৃথিবীর কোথাও কারও বয়স ত্রিশ পেরিয়ে গেলে তাকে চাকরিতে অযোগ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয় না। বরং পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতে যতই বয়স বৃদ্ধি পায়, ততই তাদেরকে দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু একমাত্র পাকিস্তান ও বাংলাদেশে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ করার মধ্য দিয়ে লক্ষ লক্ষ উচ্চশিক্ষিত তরুণদের ঘামে ঝরা সার্টিফিকেট অকেজো করে দেওয়া হয় ত্রিশ বছর পেরিয়ে গেলে। এতে আমরা শুধু উচ্চশিক্ষিত মেধাবীদের চাকরি থেকে বঞ্চিত করছি না, বরং তাদেরকে বিপদগামী করে দিচ্ছি। গবেষণা, উদ্ভাবনী ক্ষমতা এখনও দেশে সংকুচিত হওয়ায়,এ তরুণদের কিছু অংশ হতাশাগ্রস্থ হয়ে আত্মহত্যা করছে, কেউ জড়িয়ে পড়ছে অপরাধ কর্মকাণ্ডে। যা বিগত বছরগুলোতে পত্রিকার পাতা খুললেই দেখা যায়।

চাকরির বয়সসীমা শেষ হয়ে যাওয়ায় সম্প্রতি এক যুবকের শিক্ষাসনদ পুড়িয়ে ফেলার দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ সাইট ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। মাওলানা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী কিছুদিন আগে এক জাতীয় দৈনিকে বিবৃতি দিয়েছেন এভাবে- ‘আমি আমার অনার্স সম্পন্ন করতে গিয়ে কখনও ড্রপআউট হইনি, আবার ফেলও করিনি। তবুও আমার অনার্স সম্পন্ন করতে লেগেছে ৬ বছর।’

বিগত কয়েক বছর ধরে উচ্চশিক্ষিত তরুণরা চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ত্রিশ থেকে পঁয়ত্রিশ করার দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। তাদের দাবি -করোনায় অনেকের জীবন থেকে দুই বছর হারিয়ে গেছে, আবার অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনও সেশনজটের ঐতিহ্য রয়ে গেছে, সব মিলিয়ে স্নাতক (অনার্স) সম্পন্ন করতে করতে কারও কারও বয়স ২৬/২৭ হয়ে যাচ্ছে, সে হিসেবে একজন শিক্ষার্থী চাকরিতে প্রবেশের জন্য সময় পাচ্ছে মাত্র তিন থেকে চার বছর। অর্থাৎ কোন কোন শিক্ষার্থী সারাজীবন পরিশ্রম করার পর তার যোগ্যতা প্রমাণের জন্য সময় পাচ্ছে মাত্র তিন থেকে চার বছর, যেখানে একটি বিসিএস সম্পূর্ণ করতেও চার পাঁচ বছর লেগে যায়।

অন্যদিকে, স্নাতক সম্পূর্ণ করার পর সামাজিক নিরাপত্তা ও মর্যাদার কথা চিন্তা করে অনেকেই চাকরিতে প্রবেশের প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হতে গিয়ে সবকিছু থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে পড়ার টেবিলে মগ্ন থাকে, অথচ যদি চাকরিতে প্রবেশের সময়সীমা যদি ৩৫ থাকত, তবে এ সময়ে একজন শিক্ষার্থীর হাতে দীর্ঘ সময় থাকার কারণে সে চাইলে গবেষণার সুযোগ নিতে চাইত, চাইত উদ্ভাবনী ক্ষমতায় নিজেকে যাচাই করার। কিন্তু এদেশে মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা মেধাবীদের ইচ্ছে থাকে দ্রুত চাকরির বাজারে প্রবেশ করে পরিবারের হাল ধরার। অথচ শুধুমাত্র বয়সের শৃঙখলে বেঁধে রেখে আমরা লাখ লাখ তরুণের স্বপ্নকে ভঙ্গ করে দিচ্ছি।

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে তথ্য উপাত্ত যাচাই বাছাই করলে দেখা যায়, যখন চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ২৭ ছিল, তখন মানুষের গড় আয়ু ছিল ৪০ বছর। সর্বশেষ ১৯৯১ সালে বাংলাদেশে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ২৭ থেকে ৩০ করা হয়, তখন মানুষের গড় আয়ু ছিল ৫০ বছর। অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০২২ অনুযায়ী, বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়ে ৭২.৮ বছর হলেও, চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০-ই রয়ে গেছে। ২০১১ সালে চাকরিতে অবসরের বয়সসীমা ৫৭ বছর থেকে ৫৯ করা হলেও, বাড়ানো হলেও, বাড়ানো হয়নি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা।

সমগ্র বিশ্বে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা কোথাও ৩৫, কোথাও ৪০, আবার কোথাও কোথাও বয়সের কোন সীমাবদ্ধতা নেই। দক্ষিণ এশিয়ার দেশ মালদ্বীপে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সময়সীমা ৪০ বছর, আফগানিস্তানেব ৩৫
বছর, শ্রীলঙ্কায় ৪৫ বছর, নেপাল ৩৫ বছর, ভুটান ৩৫, ভারত ৩৫/৪০ (রাজ্যভেদে)। আফ্রিকায় চাকরিতে প্রবেশে বয়সের কোন সীমাবদ্ধতা নেই, যোগ্যতা থাকলেই যে কোন সময় চাকরিতে আবেদন করা যায়। শুধুমাত্র ৩০-এর বিধান রয়েছে পাকিস্তান এবং বাংলাদেশে। যে দেশটি আমাদেরকে ২৪ বছর পঙ্গু করে রেখেছিল, যে দেশটি ত্রিশ লক্ষ লোককে হত্যা করেছে, যে দেশটি এখন একটি ভঙ্গুর রাষ্ট্র, আমরা চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমার নীতিমালায় সে-ই পাকিস্তান নামক দুর্বৃত্তকে অনুসরণ করছি, যা ত্রিশ লক্ষ শহিদের আত্মত্যাগের সাথে সম্পূর্ণ বেমানান।

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি সুপারিশ করলেও তা আলোর মুখ দেখেনি। এ পর্যন্ত প্রায় ৭১ বার জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার দাবি উত্থাপিত হয়েছে। অন্যদিকে সরকারী কর্মচারীদের ঐক্যফোরাম তাদের বেতন বৃদ্ধি ও অবসরের বয়সসীমা ৬২ বছরে উন্নীতকরণের দাবিতে আন্দোলনরত রয়েছেন। তাদের ৭টি দফার মধ্যে ৭নং দফায় চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫-এ উন্নীতকরণের কথা বলেছেন।

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধি করা হলে বেকারত্ব বৃদ্ধি পাবে- অনেকের এমন যুক্তিকে উড়িয়ে দিয়েছেন চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি হল- চাকরিতে প্রবেশের বয়স বৃদ্ধি করা হলে প্রতিযোগিতা যেমন কমবে, তেমনি একজন শিক্ষার্থী নিজেকে দক্ষ করে গড়ে তোলার সুযোগ পাবে। ধরুন, আপনার হাতে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা আছে ৫ বছর। এখন আপনি চিন্তা করবেন, কীভাবে দ্রুত চাকরিতে প্রবেশ করা যায়। আর এজন্য আপনি সবকিছু থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছেন। চাকরির পড়াশোনা বাদ দিয়ে আপনি চাইলেও একটি সাহিত্যের বই পড়তে পারছেন না, আপনি চাইলেও একটি সেমিনারে যোগদান করতে পারছেন না, আপনি চাইলেও একটি কবিতা লিখতে পারছেন না, কারণ আপনি ভাবছেন- এসব কাজ তো আমাকে চাকরির পরীক্ষায় কাজ দিবে না, ফলে আপনি আমার স্বকীয়তাকে ধ্বংস করে দিচ্ছেন। চাকরি পরীক্ষার পড়া পড়তে গিয়ে আপনি চাইলেও গবেষণার সুযোগ নিতে চাচ্ছেন না, চাইলেও ফ্রিল্যান্সিং করার সুযোগ নিতে চান না। আবার যারা চাকরির বাজার থেকে ছিটকে পড়ছেন তারা হয় মধ্যপ্রাচ্যে সস্তা শ্রমিক হিসেবে পাড়ি জমাচ্ছেন, আবার কেউ কেউ যোগ্যতা ও মেধা থাকা সত্ত্বেও বয়স পেরিয়ে যাওয়ায় ইউরোপ যাওয়ার স্বপ্নে বিভোর যাচ্ছে। এতে একদিকে যেমন মেধা পাচার হচ্ছে, অন্যদিকে রাষ্ট্রের টাকায় পড়াশোনা করা শিক্ষার্থীর সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এদেশের জনগোষ্ঠী।

চাকরি না খুঁজে, কেন উদ্যোক্তা হচ্ছেন না- এমন প্রশ্নের জবাবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী জানান, করোনায় ভার্চুয়ালি ক্লাস করতে যেখানে আমাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঋণের মাধ্যমে স্মার্টফোন নিতে হয়েছে, সেখানে উদ্যোক্তা হওয়ার বিষয়টি আমাদের জন্য বিলাসিতা ছাড়া আর কিছুই নয়।

আমাদের প্রচলিত চাকরি পরীক্ষায় অনার্স সম্পন্ন করার পর শুধু চাকরির পরীক্ষায় অবতীর্ণ হওয়ার জন্য আলাদা সিলেবাসে পড়াশোনা করতে হয়, যার সাথে আমাদের একাডেমিক লাইফের পড়াশোনার কোন মিল-ই থাকে না। বলাবাহুল্য, এ চাকরির পরীক্ষার পড়া পড়তে গিয়ে অনেকে প্রথম বর্ষ থেকে চাকরি পরীক্ষার গাইড নিয়ে লাইব্রেরিতে পড়ে থাকে একাডেমিক পড়া বাদ দিয়ে, যা আমাদের জন্য অশুভ সংকেত বহন করে। অথচ চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করা হলে এ ধরণের পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হত না।

চাকরির বাজার সম্পর্কে যাদের ধারণা আছে, তারা নিশ্চয় জানেন- বাংলাদেশ মধ্যবিত্ত মেধাবীদের চাকরি পাওয়ার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ সরকারী কর্মকমিশন। তাই বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ যেমন বেড়েছে, ঠিক তেমনি বেড়েছে পিএসসি-এর প্রতি আস্থা কারণ ২০১৪ সালে নন ক্যাডার বিধিমালা সংশোধনের কারণে প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় পাশ করেও ক্যাডার পদে সুপারিশপ্রাপ্ত না হলেও নন ক্যাডার পদে চাকরি পাচ্ছে মেধাবীরা। কিন্ত এখানেও রয়েছে জটিলতা। একেকটি বিসিএস কার্যক্রম সম্পন্ন হতে সময় লাগছে সাড়ে চার থেকে পাঁচ বছর। অর্থাৎ আপনি সদ্য অনার্স পাশ করে প্রথম বিসিএসে উত্তীর্ণ হলেও আপনার যোগদান করতে করতে বয়স ত্রিশ ছুঁই ছুঁই হয়ে যায়। এক্ষেত্রে আবার অনেকে ক্যাডার পায় না, ক্যাডার পেলেও কাঙখিত ক্যাডার না পাওয়ায় হতাশায় ভুগতে থাকে। এছাড়া যারা নন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়, তারাও ক্যাডার হওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকে, কিন্তু বয়সের সীমাবদ্ধতায় অনেকে চাকরিতে আবেদনের যোগ্যতা হারিয়ে ফেলায় হীনম্মন্যতায় ভুগতে থাকেন। বাংলাদেশে আজকে চাকরির পরীক্ষা দিলে, কাল চাকরি হয়ে যাবে, বিষয়টি তেমন নয়। সার্কুলার থেকে শুরু করে চাকরিতে যোগদান পর্যন্ত আপনাকে কমপক্ষে তিন থেকে চার বছর অপেক্ষা করতে হয় প্রথম শ্রেণির চাকরিগুলোতে। অর্থাৎ, আপনি ২৫/২৬ বছর বয়সে জীবনের প্রথম চাকরির পরীক্ষার দিয়ে উত্তীর্ণ হলেও, আপনি যোগদান করতে করতে বয়স ত্রিশ পেরিয়ে যাচ্ছে। এখন প্রশ্ন হল- সবাই তো আর প্রথম চাকরির পরীক্ষায় চান্স পাবে না, কারণ এখানে পদসংখ্যা সীমিত। তাহলে বাকি শিক্ষার্থীরা কী করবে?

আবার ধরুন, আপনি একটি চাকরি করছেন, কিন্তু কয়েক বছর ঐ চাকরিতে কয়েক বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পর আপনি উপলব্ধি করলেন- এ চাকরিটি আপনার জন্য উপযুক্ত না। আর এ ধরনের ঘটনা প্রায় ঘটে থাকে আমাদের চাকরির বাজারে কারণ শুধু অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য অনেকে প্রথম প্রথম এমন পদে যোগদান করে, যা হয়তো তার জন্য উপযুক্ত ও কাঙখিত না। কিন্তু তখন আর অন্য চাকরিতে চাইলেও আপনি যোগদান করতে পারছেন না না, কারণ আপনি ত্রিশের ঘরে বন্দী, আপনার বয়সসীমা শেষ। অথচ চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করা হলে আপনি চাইলে আরও ভালো কোন পদে কিংবা আপনার কাঙ্ক্ষিত পদে আবেদন করে সে সুযোগ নিতে পারতেন।

বর্তমান বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সরকার চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধির বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে বয়সবৃদ্ধির বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করে, কিন্তু সরকারের এ মেয়াদ প্রায় শেষের পথে থাকলেও নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়িত না হওয়ায় চাকরিতে প্রবেশের দাবিতে সোচ্চার থাকা শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভের পাশাপাশি হতাশার বহিপ্রকাশ ঘটেছে।

দেশের লক্ষ লক্ষ উচ্চশিক্ষিত তরুণদের উদ্ভাবনী ক্ষমতা,গবেষণা ও আত্মনির্ভরশীল কাজে সংযুক্ত করার জন্য চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ -এ উন্নীতকরণের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হতে পারে একটি বৈপ্লবিক সিদ্ধান্ত, কারণ চাকরিতে প্রবেশের জন্য দীর্ঘসময় থাকায় একদিকে যেমন তরুণরা নিজেদেরকে চাকরির বাহিরে নিজেদেরকে যাচাই করার সুযোগ পাবে, অন্যদিকে চাকরিতে আবেদনের যে হিড়িক তাও কমে যাবে। শুধু তাই নয়, এর মাধ্যমে রাষ্ট্র সবচেয়ে দক্ষ জনগোষ্ঠী পাবে চাকরির বাজারে।

লেখক: শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

সারাবাংলা/এসবিডিই

মুক্তমত শাহনেওয়াজ ইসলাম সরকারি চাকরির বয়সসীমা কোন দেশে কত?

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর