বন্যা দুর্গতদের পুর্নবাসনের ব্যবস্হা গ্রহণ করুন
১৮ আগস্ট ২০২৩ ১৯:০৬
মানবসেবা মানুষের মধ্যে একটি সহজাত প্রবৃত্তি। মানবসেবা সবাইকে আন্তরিক ও উন্নতি করতে সাহায্য করে। মানবসেবা করে তৃপ্তি পাওয়া যায়৷ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কষ্টও লাঘব হয়। সমাজসেবামূলক কাজের জন্য এগিয়ে আসছে সরকার, স্হানীয় প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংস্হা, প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তিবর্গরা। সম্প্রতি চট্টগ্রামের চন্দনাইশ, বাঁশখালী, সাতকানিয়াসহ তিন পার্বত্য অঞ্চল বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। উজান থেকে নেমে আসা পানি এবং ভারী বর্ষণের কারণে বাড়ি, মহল্লা, ইউনিয়ন, উপজেলা পানিতে ডুবে গেল। কয়েকদিন মানুষ পানিবন্দি। নষ্ট হয়েছে মানুষের ফসলের জমি ও বসতবাড়ি। মানুষ আশ্রয়ণ কেন্দ্রে চলে গেলেও তাদের ভিটামাটির অনেক আসবাবপত্র বন্যার পানিতে নিয়ে গেছে৷ দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির অভাব। এই এলাকাগুলোর মধ্যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে অনেক।
স্হানীয় লোকজনের ভাষ্যমতে, এর আগে কখনো এলাকাগুলোতে এরকম ভয়াবহ বন্যার মুখে পড়েননি তারা। অনেক দরিদ্র, মধ্যবিত্ত পরিবার গুলো নিঃস্ব হয়ে গেল। তাদের দুর্ভোগের শেষ নেই। বন্যার পানি চলে যাওয়ার পর তাদের মাথায় হাত পড়েছে৷ তাদের কিছুই অবশিষ্ট রইল না। অনেক গরীব পরিবার কী করবে বুঝে উঠতে পারছে না। কিভাবে তারা সামাল দিবে বুঝতে পারছে না। কারো কারো ঘরবাড়ি ও চলে গেছে। কাঁচা বাড়ির অবস্হা সবচেয়ে শোচনীয়। স্বজনহারা হয়েছেন অনেকেই। অনেক মানুষ মারা গেছে। এমনকি কিছু লাশ পর্যন্ত ভেসে আসছে নদী দিয়ে। মৃত্যু ঘটেছে অনেক গবাদিপশুর। কেউ কেউ রেললাইনে তাবু করে থাকছে। অনেক পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে। অধিকাংশ পরিবার সামান্য অর্থসম্বল দিয়ে বেঁচে থাকার চেষ্টা করছে। পরিবারে খাবার জোগাড় করার চেষ্টা করছে। শোকাহত এই পরিবারগুলো মানসিকভাবেও ভেঙ্গে পড়ছে।
তাছাড়া গ্যাসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দামও অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে গেছে। বন্যা দুর্গত মানুষেরা খাদ্য সংকটে পড়েছে। একদিকে ঘরবাড়ি মেরামত করতে হচ্ছে, ঘরের ভিতরের কাদা পরিস্কার করতে হচ্ছে। অন্যদিকে খাবার জোগাড় করতে হচ্ছে। বন্যার সময় বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে। এ সময় স্বাস্থ্য সচেতন হতে হয়। স্বাস্থ্য সচেতন না হলে দেখা দিতে পারে ডায়রিয়া, আমাশয়, টাইফয়েড, পেটের পীড়া, চর্ম রোগ, ভাইরাল হেপাটাইটিসসহ ভাইরাসজনিত নানা রোগ। বন্যার সময় পানি দূষিত হয়ে থাকে। তাই সচেতন থাকতে হয়। রাস্তা ঘাটের মেরামত করতে হবে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য ত্রাণসহ পুর্নবাসন করা অতিব জরুরি হয়ে পড়েছে। ত্রাণ, পুর্নবাসন করার সময় সমন্বয় করে দেওয়া উচিত। কারণ অনেকেই বেশি পাই ত্রাণ। অনেকেই একদমই পাইনা৷ তাই ত্রাণ পুর্নবাসন করার সময় সজাগ থাকতে হবে কেউ বাদ পড়ছে কিনা। প্রতিটা বাড়িতে গিয়ে ত্রাণ পাইছে কিনা দেখা উচিত।
সরকার, বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যক্তিবর্গদের উচিত দ্রুত চন্দনাইশ, বাঁশখালী সাতকানিয়াসহ তিন পার্বত্য জেলার এই দুর্গম এলাকাগুলোর গরীব দুঃখী মানুষের পুর্নবাসনের ব্যবস্হা করা। বিশেষ করে বন্যার্তদের ক্ষতিপূরণ দিতে এবং স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে দুর্যোগ ব্যবস্হাপনা ও ত্রাণমন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে হবে। সরকার, স্হানীয় প্রশাসন, সংসদ সদস্য ও বিভিন্ন সংস্হা ব্যক্তিবর্গদের এই অসহায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। বন্যার্তদের সাহায্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে। তাদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের মানবিক ও নৈতিক দায়িত্ব।
লেখক: শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম কলেজ
সারাবাংলা/এজেডএস