Thursday 28 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কিশোরীদের অনলাইন হ্যারাসমেন্ট ও নিরাপত্তা প্রসঙ্গে কিছু কথা

মেহেজাবিন চুমকী
২৫ আগস্ট ২০২৩ ১৭:৪৭

বেসরকারি সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) সাম্প্রতিক একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩৬ শতাংশের বেশি মেয়েশিশু অনলাইনে পুরুষ বন্ধু দ্বারা যৌন হয়রানির শিকার হয়। এ ছাড়া ২৭ শতাংশের বেশি মেয়েশিশু পরিচিত প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি ও আত্মীয় এবং ১৮ শতাংশ অপরিচিত প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত কয়েক বছরে, বিশেষ করে করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনের সময়ে অনলাইন–নির্ভরতা যেমন বেড়েছে, তেমনি অনলাইনে হয়রানিও বেড়েছে। পরিসংখ্যান, বিশেষজ্ঞ মতামত এবং আমার বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে পরিষ্কারভাবেই বলতে পারি যে কমবয়েসী মেয়েদের জন্য অনলাইনের এই ভার্চুয়াল জগৎ মোটেই নিরাপদ নয়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, মেয়েশিশুদের জন্য নিরাপদ অনলাইন গড়ে তুলতে কী করনীয়?

বিজ্ঞাপন

এই প্রসঙ্গে আমার নিজের জানা বা চেনা তিনজন মেয়ের সঙ্গে অনলাইনে ঘটে যাওয়া যৌন হয়রানির ঘটনা নিয়ে একটু আলোচনা করি। সবগুলি ঘটনার ক্ষেত্রেই কাল্পনিক নাম ব্যবহার করা হয়েছে।

ঘটনা ১

লিপি নামের একজন নারী গ্রামে বসবাস করে। সে বিবাহিতা। স্বামী বিদেশে কর্মরত। দেশে বিদেশে যোগাযোগ সুবিধার জন্য ইন্টারনেটের বিভিন্ন এপ এখন বিপুলভাবে সারা পৃথিবীজুড়েই ব্যবহৃত হয়। আমাদের ঘটনার মূল চরিত্র লিপিও ইন্টারনেট ব্যবহার করেই প্রবাসী স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে যে ইন্টারনেট লক্ষ মাইল দূরে থাকা মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ ঘটিয়ে দিচ্ছে মুহূর্তেই, সেই ইন্টারনেটই তার জীবনে একটা অভিশাপ বয়ে নিয়ে আসে। ইন্টারনেটে লিপির সঙ্গে পরিচয় হয় একজনের, সে তার নাম বলে সুমন। সুমন ধীরে ধীরে লিপির সঙ্গে একটা বন্ধুত্ব তৈরি করতে সক্ষম হয়। লিপিও সরল বিশ্বাসে সুমনের সঙ্গে তার জীবনের অনেক কথা শেয়ার করে। এভাবে সুমন আস্তে আস্তে তার পরিবারের ব্যাপারে অনেক তথ্য জেনে যায়। বেশ কিছুদিন পর সুমন একদিন লিপির কাছে টাকা দাবি করে। লিপি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তখন সুমন তাকে হুমকি দেয় যে সে তার স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে জানাবে যে লিপি তার সঙ্গে পরকীয়া প্রেমে লিপ্ত। সে লিপির শ্বশুড়বাড়ির লোকদের কাছে তাদের দুজনের কল রেকর্ড পাঠাবে এবং আশেপাশের মানুষের কাছে মিথ্যা বদনাম রটাবে বলেও হুমকি দেয়। এই ঘটনার ফলশ্রুতিতে লিপিকে পরবর্তীতে অনেক ভুগতে হয়েছিল।

ঘটনা ২

তুলি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেয়ে। মেধাবী একজন ছাত্রী। পড়াশোনার পাশাপাশি তার অন্যান্য অনেক বিষয়েও পারদর্শীতা রয়েছে। তুলি পড়াশোনার নানা প্রয়োজনে ও বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে চ্যাট করতে ইন্টারনেট ব্যবহার করত। ফেসবুকের এক গ্রুপের সুবাদে এক ব্যাচমেট ছেলের সঙ্গে তুলির বন্ধুত্ব হয়। একসময় গ্রুপ থেকে তাদের এই বন্ধুত্ব ব্যক্তিগত চ্যাটে চলে আসে এবং একসময় তারা দেখা করে একান্ত সময়ও কাটাতে শুরু করে। তাদের মধ্যে নিয়মিত ভিডিও চ্যাট, ছবি আদানপ্রদান হতো। পরবর্তীতের কোনো এক কারনে তাদের সম্পর্ক তিক্ত হয়ে ওঠে। তখন রাগ ও জেদের বসে ছেলেটি তুলির সঙ্গে তোলা ছবি , চ্যাট-এর স্ক্রিনশট এবং যে রকম ছবি সে তুলির কাছে চাইতো আর তুলিও ভালোবাসার খাতিরে দিয়েছিল সেই সব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন আজেবাজে পেজে, গ্রুপে ও টিকটকে নানা বাজে বাজে ক্যাপশন দিয়ে পোস্ট করে যেগুলো বেশ ভাইরাল হয়। এইসব দেখে আর মেয়ের সম্পর্কে মানুষের কাছে থেকে আসা আপত্তিকর মন্তব্য শুনে তুলির বাবা হার্ট অ্যাটাক করে। এবং তুলির পরিবার তার সঙ্গে ধীরে ধীরে যোগাযোগ বন্ধ করে দিতে থাকে। তুলি মানসিকভাবে পুরো ভেঙ্গে পড়ে। এবং এই মানসিক ট্রমা থেকে তুলির নিজের প্রতি তীব্র ঘৃণা জন্মায়। একসময় সে আত্মহত্যা করার চেষ্টাও করে।

বিজ্ঞাপন

ঘটনা ৩

রিমি করোনা এপিডেমিক বাংলাদেশে শুরু হওয়ার সময়ে সপ্তম শ্রেণীতে পড়তো। করোনার কারণে তখন স্কুল, কলেজ সবকিছুই বন্ধ হয়ে শুরু হয় অনলাইন ক্লাস। প্রথম প্রথম স্কুল থেকে বাধ্যতামূলক অনলাইন ক্লাস করে দেওয়ার কারণে রিমির বাবা-মা তাকে ফেইসবুকের আইডি খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করে। রিমি আগে কখনোই ফেইসবুক চালায়নি এবং কিভাবে চালাতে হয় তা-ও সে জানত না। তার বড় ভাই তাকে শুধু ক্লাস কিভাবে করতে হয় এতটুকুই শিখিয়ে দিয়েছিল।

রিমির বাবা মাও ইন্টারনেট খুব একটা ব্যবহার করেন না এবং ইন্টারনেট সম্পর্কে তাদের তেমন কোনো ধারণা নেই। ফলে তাদের পক্ষে সম্ভব ছিল না যে মেয়ের কোনো কিছু বুঝতে অসুবিধা হলে বা কোনো সমস্যা সম্মুখীন হলে ইন্টারনেটের মাধ্যমে উনারা তাকে সাহায্য করবে বা বুঝিয়ে দেবে। রিমি তাই নিজে নিজেই ইন্টারনেট ব্যবহার করা শেখার চেষ্টা করছিল। ধীরে ধীরে ফেইসবুকে তার বন্ধুর সংখ্যা বাড়তে থাকে। সহপাঠী বন্ধু থেকে সহপাঠীদের সাথে যুক্ত বন্ধুদের সঙ্গেও তার বন্ধুত্ব হতে শুরু করলো অনলাইনে। সে অপরিচিত অনেকের সঙ্গেও বন্ধুত্ব করত বাকি বন্ধুদের মতো বেশি বেশি লাইক, কমেন্ট পাওয়ার আশায়। একসময় দেখা গেলো যে রিমি সারাক্ষণ অনলাইনেই সময় ব্যয় করছে।

একদিন তার কাছে একটা অপরিচিত মেয়ের প্রোফাইল থেকে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট আসে। সে দেখে যে তার অনেক সহপাঠী এই মেয়ের সঙ্গে মিউচুয়াল ফ্রেন্ড। তাই সে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট এক্সেপ্ট করে নেয়। ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করার পর সেই অপরিচিত মেয়েটি তার সঙ্গে মেসেঞ্জারে দুই চার কথার পরই নানা অশ্লীল ছবি এবং পর্ন ভিডিও পাঠিয়ে খারাপ কাজে লিপ্ত হওয়ার জন্য বিভিন্ন উস্কানিমূলক কথা বলতে শুরু করে। রিমি তখন খুব ভয় পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই সেই আইডিটি ব্লক করে দেয়। এবং ঐ মেয়ের সঙ্গে তার অন্য যে সহপাঠীদের মিউচুয়াল ছিলো তাদের সে বিষয়টি জানায়। তারপর তার তিনজন সহপাঠী তাকে জানায় যে তারাও এই একাউন্ট থেকে একই মেসেজ এবং অশ্লীল ছবি ও ভিডিও পেয়েছে এবং তারাও ওই একাউন্ট ব্লক করে দিয়েছে। তারপর তারা ওই একাউন্ট থেকে আসা মেসেজগুলির ধরণ সম্পর্কে চিন্তা করে বুঝতে পারল যে এটা সম্ভবত কোন ছেলের ফেইক একাউন্ট যেটা ব্যবহার করে সে মেয়েদের সোশাল হ্যারাসমেন্ট করে। রিমি জানতে পারে যে এই রকম আরও বেশ কিছু ঘটনা তার বান্ধবীদের সঙ্গে ঘটেছে। যাদের সঙ্গে বিষয়গুলি ঘটেছে তারা অনেকেই মানসিক সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ অনেক চুপচাপ হয়ে গেছে, হারিয়ে ফেলেছে কৈশোরের স্বাভাবিক উচ্ছলতা।

শারীরিক ও মানসিক নিগ্রহের হুমকি, ছবি বিকৃত করা, বর্ণবাদী আক্রমণ, কুৎসিত অঙ্গভঙ্গি, ঘৃণা ছড়ানো বক্তব্য — এসব একটি আদর্শ সভ্য সমাজে থাকার কথা নয়। কিন্তু সাম্প্রতিক একটি বৈশ্বিক জরিপে দেখা যাচ্ছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী অর্ধেকের বেশি নারী (৫৮ শতাংশ) এ ধরনের কোনো না কোনো হয়রানির শিকার হয়েছেন। মেয়েরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হয়রানির শিকার হবেন এবং এটাই স্বাভাবিক বাস্তবতা- এমন একটি ধারণা মেয়েদের মধ্যে বদ্ধমূল হতে শুরু করেছে। এ ধরনের হেনস্তার শিকার হয়ে প্রতি পাঁচজন মেয়ের মধ্যে একজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার বাদ দেন, নয়তো অনলাইনে উপস্থিতি কমিয়ে দেন। প্রতি ১০ জনে একজন অনলাইন হয়রানি থেকে বাঁচতে আগের মতো নিজেদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুলে ধরেন না। অনেকে মানসিক সমস্যায় ভুগেন এমনকি আত্মহত্যার দিকেও নিজেদের ঠেলে দিতে বাধ্য হন। হয়রানির শিকার হওয়া মেয়েদের মধ্যে প্রতি তিনজনের একজন হয়রানি করা ব্যক্তির আইডির বিরুদ্ধে রিপোর্ট করেন।

আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল ২২টি দেশের ১৪ হাজার মেয়ে, তরুণী ও নারীর সাক্ষাৎকার নিয়ে এ ফলাফল প্রকাশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে কেনিয়া, ভারত থেকে জাপান—সব দেশের চিত্রই প্রায় এক। সবখানেই অনলাইনে একইভাবে মেয়েরা প্রায় একই ধরনের হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

এ অবস্থায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কোম্পানি এবং সরকারগুলোর উদ্যোগ নেওয়ার সময় হয়েছে। উচ্চ থেকে নিম্ন আয়ের দেশ— সবখানেই মেয়েরা প্রতিনিয়ত উত্ত্যক্তকারীদের কাছ থেকে কুৎসিত ও অপমানজনক বার্তা পাচ্ছেন, তাদের পর্নোগ্রাফিক ছবি পাঠানো হচ্ছে ও হুমকিধমকি দেওয়া হচ্ছে।

বিশ্বের সব প্রান্তের নারীকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে এ অবস্থার প্রতিবাদ করতে হবে। লিখতে হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কোম্পানিগুলোকে মেয়েদের পক্ষ থেকে একটি খোলা চিঠি দিতে হবে। হয়রানি ঠেকানোর ক্ষেত্রে এসব কোম্পানিগুলো পদক্ষেপ নিলে সমস্যাটির অনেকখানি সমাধান বেরিয়ে আসতে পারে। জরিপে দেখা গেছে মেয়েরা ফেসবুক ব্যবহার করার সময় সবচেয়ে বেশি হয়রানির শিকার হয়ে থাকেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মেয়েদের যত হয়রানি করা হয়, তার ৩৯ শতাংশ করা হয় ফেসবুকে, ২৩ শতাংশ ইনস্টাগ্রামে, ১৪ শতাংশ হোয়াটসঅ্যাপে এবং ৯ শতাংশ টুইটারে।

এসব হয়রানির কারণে যে মানসিক ক্ষতি হয় তা মেয়েরা অনলাইন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরও তাদের ব্যক্তিজীবনকে অতিষ্ঠ করে তোলে। অনলাইনে যে মেয়েটি ধর্ষণ বা শারীরিকভাবে নিগৃহীত হওয়ার হুমকি পান, তার পক্ষে নির্ভয়ে বাইরে চলাচল করা কঠিন হয়ে পড়ে। এসব হয়রানি শুধু একটি মেয়ের একান্ত জীবনকে অসহনীয় করে না, এর কারণে আধুনিক জীবনে তার অংশগ্রহণ ও নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগকেও সংকুচিত করে দেয়।

এমনিতেই নেতৃত্বের জায়গায় মেয়েদের আসতে প্রচণ্ড বাধার মুখে পড়তে হয়। জনসমাগমস্থল ও অফিস–আদালতে তাদের নেতৃত্বের যোগ্যতাকে প্রশ্নাতীতভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় না। সামাজিকভাবে এখনো এমন ধারণা প্রতিষ্ঠিত হয়ে আছে যে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা নারীর নেই। অনলাইনে এ ধারণাকেই পুরুষদের একাংশ প্রচার করতে থাকে, যাতে নারীরা কোণঠাসা হয়ে পড়েন।

জরিপে ৩৯ শতাংশ মেয়ে বলেছে, অনলাইন হয়রানি তাদের আত্মবিশ্বাসকে কমিয়ে দিয়েছে বলে তাদের মনে হয়েছে। ৩৮ শতাংশ মেয়ে বলেছে, এসব হয়রানি তাদের মানসিকভাবে পর্যুদস্ত করে ফেলেছে। ১৮ শতাংশ মেয়ে বলেছে, এর কারণে স্কুলে তারা ঠিকমতো পড়াশোনায় মন দিতে পারে না।

এ হয়রানি থেকে মেয়েদের রেহাই দেওয়ার বিষয়ে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে পারে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কোম্পানিগুলো। অথচ জরিপে অংশ নেওয়া মেয়েরা জানিয়েছে, হেনস্তা থেকে বাঁচার জন্য বর্তমানে অনলাইনে রিপোর্ট করার যে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, তা খুব একটা কার্যকর নয়। কোম্পানিগুলো মেয়েদের হয়রানি রোধে বিশেষ কোনো উদ্যোগও নেয় না। হয়রানির শিকার হওয়া প্রতি তিনজনের একজন রিপোর্ট করলেও হয়রানি থেকে মুক্তি পাওয়া যায় না। কারণ, উত্ত্যক্তকারীরা একাধিক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে থাকতে পারে। এ ছাড়া উত্ত্যক্ত করা অ্যাকাউন্টকে অকার্যকর করতে হলে বিশালসংখ্যক ইউজারকে রিপোর্ট করতে হয়। সময় এসেছে সোশাল মিডিয়া কোম্পানিগুলোর এই সকল ক্ষেত্রে আরও শক্ত অবস্থান নেয়ার এবং রিপোর্ট করার ব্যবস্থাটিকে কিভাবে সত্যিকারভাবে কার্যকর করা যায় তা নিয়ে ভাবার। এ ছাড়া সরকার যদি অনলাইন হয়রানিকে গুরুতর অপরাধ বিবেচনা করে কঠোর আইন পাস করে, তাহলেও হয়রানি কমবে।

লেখক: শিক্ষার্থী

সারাবাংলা/এজেডএস

কিশোরীদের অনলাইন হ্যারাসমেন্ট মেহেজাবিন চুমকী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর