চিকিৎসা সেবায় দালাল চক্রের হাত থেকে মুক্তি মিলবে কবে?
৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৬:৪৭
দিন আনে দিন খায়। হয়তো কৃষি জমিতে কামলা দিয়ে নতুবা রিকশার প্যাডেল চালিয়ে চালায় সংসারের চাকাটা। শত দুঃখ কষ্ট আর দুর্দিনের হাহাকার কিছু স্মৃতি নিয়ে বেড়ে উঠে এই প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষগুলো। তবে অনেক ধনী মানুষও আছে, কিন্তু আমি তাদের কথা বলছি না। তারা তো সুন্দর ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে বড় বড় অ্যাম্বুলেন্স চেপে যায় চিকিৎসা নিতে। তারা তো এ বিষয়গুলোর সম্মুখীন হয় না, যে বিষয়গুলোর সাথে প্রতিনিয়তই লড়াই করে বেড়ে উঠছে অসহায়, হতদরিদ্র ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষগুলো।
মানুষের পাঁচটি মৌলিক চাহিদার একটি হচ্ছে চিকিৎসা। মানুষের রোগ-শোক আছে। হয়তো পকেটে টাকা না থাকতে পারে, না থাকতে পারে পেঠে ভাতও। কিন্তু যখন তারা অসুস্থ হয় কিংবা নানা জটিল রোগে ভোগে তখন তাদের চোখে মুখে শত চিন্তার ভাজ পড়ে। এমন মনে হয় যেন আকাশটা মাথার উপর ভেঙে পড়েছে। টাকার অভাবে উন্নত কোনো চিকিৎসা নিতে না পারলেও অন্তত দৌঁড়ে ছুটে যায় সরকারি হাসপাতালগুলোতে। শত হতাশা আর চিন্তার মধ্যে আশা নিয়ে যায় তারা সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে।
কিন্তু চিকিৎসা সেবা নিতে গিয়ে তারা নানা ধরনের জটিলতায় পড়ে। সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও ক্লিনিক সেন্টারগুলোয় হরহামেশাই দালাল চক্রের হাতে জিম্মি হতে হয় এসব মানুষদের। তাদের অধিকাংশরই পড়াশোনা তেমন নেই, নেই তেমন অক্ষরজ্ঞানও। যার কারণে নানা ধরনের প্রতারণা আর দালালচক্রের ফাঁদে পা দিতে হয় তাদের।
ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন মোতাবেক ঔষধ আনতে বের হতেই ঘাপটি মেরে বসে থাকা দালালচক্র নানা ধরনের ভুলভাল বুঝিয়ে তাদের অপ্রয়োজনীয় বিষয়ের দিকে উৎসাহিত করে। রোগী কিংবা রোগীর স্বজনরা তখন নিতান্তই অসহায়। যে যেভাবে এসে তাদের বুঝিয়ে যায় সেই অনুসারে কাজ করে বসে তারা নিঃসংকোচে। অক্ষরজ্ঞানহীন এই প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষগুলো খুব অসহায় হয়ে ভালো চিকিৎসার জন্য পাড়ি জমায় এই চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতে৷ কিন্তু তাদের সাথে ঘটে যাওয়া এমন বিষয়ের আদৌও কি সমাধান নেই?
তারা কবে নাগাদ মুক্তি পাবে এই চক্রের হাত থেকে? কবে ঘটবে তাদের এই দুর্দশার অবসান। আর কতটা পথ পার হলেই তবে মিলবে তাদের দালালমুক্ত চিকিৎসা সেবা গ্রহণের সুন্দর ও সঠিক পরিবেশ? রোগী আর স্বজনরা আর কতটা অসহায় হলে পরে এই অমানবিক ও পাশবিক নির্যাতন থেকে মুক্তি পাবে? এসব কি এমনি এমনিই সমাধান হবে? এর সমাধান হোক, ব্যবস্থা নেওয়া হোক এ নৃশংস কর্মকান্ডের সাথে জড়িত দালালচক্রের বিরুদ্ধে। হোক এই অবস্থার অবসান প্রসাশনের হাত ধরেই, মুক্তি পাক সাধারণ জনগণ তথা পুরো দেশের এ বিষয়ে ভুক্তভোগী জনসাধারণ!
লেখক: শিক্ষার্থী; বাকলিয়া সরকারী কলেজ, চট্টগ্রাম
সারাবাংলা/এজেডএস
চিকিৎসা সেবায় দালাল চক্রের হাত থেকে মুক্তি মিলবে কবে? তৌহিদ-উল বারী