Wednesday 27 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আত্নহত্যা সকল সমস্যার সমাধান নয়

সৌরভ হালদার
৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৭:০৪

আপনি যখন আত্নহত্যা করার কথা ভাবছেন, তখন হাসপাতালের আইসিইউতে একজন বাঁচার জন্য লড়াই করছে। আত্নহত্যা সকল সমস্যার সমাধান না। আপনি যদি আপনার বিশাল সমস্যার কথা চিন্তা করেন তাহলে সমাধান ও খুঁজে পাবেন।

নিঃসঙ্গতা, হতাশা, বিষন্নতা, অবসাদ হলো মানসিক চাপের একটা ধাপ। আর মানসিক চাপ কখনো কখনো আত্মহত্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে আত্নহত্যার প্রধাণ কারণ নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়। অথচ সব কিছু জানা সত্ত্বেও, এই আত্নহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে শিক্ষিত যুবক যুবতীরা। ২০২২ সালে আত্নহত্যার পরিসংখ্যানে বলা হচ্ছে ৫৩২ জন শিক্ষার্থী আত্নহত্যা‌ করছে এর ভিতরে ৪৪৬ জন স্কুল কলেজর শিক্ষার্থী আর বাকি ৮৬ জন বিশ্ববিদ্যালয়ের।

বিজ্ঞাপন

আমরা সামাজিকতার দিক থেকে আন্তরিক হতে ভুলে যাচ্ছি। উৎসাহ দেওয়ার আগে আমরা আরো কঠোর হচ্ছি। শাসনের নামে আমরা তৈরি করছি মানসিক চাপ। এই সব কিছুই আমাদের পরিবারতন্ত্রের একটা প্রভাব। যার ফলে একজন শিক্ষার্থীর মনে এমন ভীতি তৈরি হচ্ছে যেমন মেডিকেলে চান্স না পেলে সে পরিবারের ভয়ে আত্নহত্যার পথ বেঁচে নিচ্ছে। এর পাশাপাশি রয়েছে সামাজিক সমালোচনা মেডিকেলর মতো এইরকম উদাহরণ অনেক। ভুল মানুষের জন্য, ভুল করলে‌ তার সমাধান খুঁজে বের করা উচিত। পড়াশোনা শেষ করে বাবা মার একটা স্বপ্ন থাকে সন্তানের একটা ভালো চাকরি কিন্তু তার কাঁধে বেকারত্বের ভার। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ ছেলে মেয়েরা দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসে আর আর্থিক মানসিক চাপ তাদের জীবনে বিপর্যয় নেমে আসে। পারিবারিক কলহ, প্রেম, পারিবারিক জীবনে ঝামেলা, পিতামাতার মধ্যে সমস্যা, পরকীয়া বা পরিবারে আত্মমর্যাদার অভাবের মতো বিভিন্ন কারণে অনেকে আত্মহত্যা করে।এছাড়াও মাদকাসক্তি এবং কিছু অনলাইন গেম সহ বিভিন্ন কারণে মানসিক অবসাদ, বিষণ্ণতার কারনে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।

বিজ্ঞাপন

ব্যাধিটা যখন মনে তখন‌ আত্নহত্যার প্রতিরোধে সহায়তা করে মানসিক শান্তি। মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত ব্যক্তির পাশে পরিবার, বন্ধু-বান্ধব, শিক্ষক, মেসে বা হলের সিনিয়র, জুনিয়র সবাই মিলে তাকে বোঝাতে হবে‌। কোন মানসিক অবসাদ বিষন্নতায় আচ্ছন্ন ব্যক্তি দেখলে বোঝা যায় তার আচরণ দেখে। তখন তার শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে কাছের বন্ধু বা তার পাশের কেউ তাকে মানসিকভাবে সান্ত্বনা দিতে হবে। তার সমস্যার কথা‌‌ শুনতে হবে। তার কথাগুলো ইতিবাচকভাবে তার কাছে তুলে ধরতে হবে। কারণ আত্মহত্যা করতে চাওয়া ব্যক্তি এমনিতেই ভেতরে ভেতরে অনেক লজ্জিত, অপরাধী বা বিব্রত বোধ করেন। কোনো দোষ ত্রুটি দিয়ে তার সমস্যাগুলোকে না ধরে সমর্থন দিয়ে তার কথা মনোযোগ সহকারে শুনতে হবে। মানসিক অবসাদগ্ৰস্থ ব্যক্তিরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে একা থাকতে পছন্দ করেন এবং বিষন্নতায় জীবন যাপন করতে থাকে। কারো সাথে কথা বলতে চায় না। সে ক্ষেত্রে তার পাশে থাকা মানুষগুলো মানসিকভাবে তাকে সমর্থন করা উচিত, তাকে বোঝানো‌ উচিত আত্নহত্যা সকল সমস্যার সমাধান নয়।

লেখক: শিক্ষার্থী, ব্যবস্থাপনা বিভাগ, সরকারি ব্রজলাল কলেজ, খুলনা

সারাবাংলা/এজেডএস

আত্নহত্যা সকল সমস্যার সমাধান নয় সৌরভ হালদার

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর