Wednesday 27 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আজ আর ফিরে আসবে না

রহমান মৃধা
৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৩:৪১

“বিশ্ব” একটি শব্দ, যা আমাদের দুনিয়ার মহান এবং প্রসারণশীল সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রজন্মকে উপস্থাপন করে। এটি আমাদের সাম্প্রতিক যুগের সকল সম্প্রদায়, ধর্ম, ভাষা, সংস্কৃতি, ও রাজনীতির সম্মিলিত আবদ্ধতা ও সম্প্রদায়ের সাথে যোগাযোগ ও সহযোগিতা নিয়ে চলতে পারে।

এই বিশ্ববাসী একসাথে একটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবেশ সৃষ্টি করে, যা বৃদ্ধি, উন্নতি ও সম্প্রসারণের মাধ্যমে বিশেষ গতিতে প্রবণতা অর্জন করতে থাকে। এই বিশ্বের অধীনে, মানবিক অধিকার, সামাজিক ন্যায়বিচার, মহিলাদের অধিকার, পরিবেশ সংরক্ষণ, শিক্ষার উন্নতি ও প্রযুক্তির উন্নতির লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

এটি একটি নিবিড় জগত, যেখানে বিভিন্ন ধর্ম, ভাষা এবং সংস্কৃতির মানুষ একত্রে থাকে এবং সামাজিক উন্নতি ও মানবিক উন্নতির দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে চলছে। এই বিশ্ব বিভিন্ন মানবিক মূল্যবোধের সাথে সম্পর্কিত এবং একটি আলোকপথ হতে পারে, যেখানে সকল মানবজাতি একে অপরের সাথে শান্তি, সহযোগিতা এবং সহানুভূতির মধ্যে জীবনযাপন করতে সহায়ক হতে পারে।

আমি বা আমার মতো অনেকেই এই বিশ্বে বাকস্বাধীনতা এবং মৌলিক অধিকারের উপর কথা বলেছি/বলছে, এটি অত্যন্ত মৌলিক এবং মানবিক বিষয়। এটি স্বাধীনতা ও ব্যক্তিগত মতামতের মৌলিক অধিকার প্রকাশ করার উপকারী মাধ্যম। বাকস্বাধীনতা আমাদের মতামত প্রকাশ করার স্বাধীনতা দেয়, আপনি যেখানে চান সেখানে আপনার ধর্ম, বর্ণ, ব্যক্তিগত মতামত এবং উপায় প্রকাশ করতে পারেন। আপনি অন্যদের মতামত শ্রদ্ধাশীলভাবে শুনতে পারেন এবং একটি সাম্প্রদায়িক সাহিত্যে প্রবদ্ধ হতে পারেন যা আপনার ব্যক্তিগত এবং সামাজিক স্বাধীনতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করতে পারে।

বিজ্ঞাপন

ধর্মগ্রন্থের অবমাননা করা বা কাউকে তার ধর্মগ্রন্থের কারণে অপমান করা অযৌক্তিক। বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থে আলোকিত মূল্যবোধের দিকে মানব জাতির প্রতি আহ্বান থাকতে পারে। আমাদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আদর্শভাবে ব্যবহার করা উচিত। ধর্মগ্রন্থের অবমূল্যায়ন, অবমাননা ও অপমান সমাজে বৈষম্য ও অসঙ্গতি তৈরি করতে পারে এবং সামাজিক ঐক্য ও সহযোগিতার পথে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।

এজেন্ডা (Agenda) একটি অদ্বিতীয় টিভি প্রোগ্রাম যা সুইডেনের SVT (সুইডিশ টেলিভিষণ) চ্যানেলে প্রচারিত হয়। এই প্রোগ্রামে, নিষ্কর্ষ করা হয় সম্প্রতি বিশ্বের যেকোনো মহত্ত্বপূর্ণ ইভেন্ট, ঘটনা, পরিবর্তন এবং মৌলিক প্রবণতা। এটি একাধিক প্ল্যাটফর্মের দর্শকদের একসাথে নিয়ে আসে, যা সামাজিক ও রাজনৈতিক বিষয়গুলো নিয়ে চর্চা করতে থাকে। এজেন্ডার প্রস্তাবনা এবং আলোচনা ধারার মাধ্যমে, সুইডেনে এবং বিশ্বে ঘটিত মহত্ত্বপূর্ণ ঘটনাগুলোর প্রাসঙ্গিক বিশ্লেষণ এবং মন্তব্য সরবরাহ করে, যা বিভিন্ন পেশাদার ও সামাজিক প্রাতিষ্ঠানিকতা বিশেষভাবে আলোচনা করে। এটি দর্শকদেরকে নিজেদের সাথে সাম্পর্কিক এবং তত্ত্বাবধানে রাখার একটি সাধারণ উপায় প্রদান করে, যা পরিবর্তনের অধীনে সমাজের দক্ষতা এবং বুদ্ধিমত্তা বাড়ানোর একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে।

এই প্ল্যাটফর্মে গতকাল সুইডেনের প্রধানমন্ত্রীসহ ( প্রীষ্ট, বিশিষ্ট আইন বিষয়ক গবেষক ) অনেকে উপস্থিত ছিলেন। মূলত ধর্মগ্রন্থ পোড়ানো বন্ধ করার কী উপায় বা আদৌ এটা বন্ধ করার দরকার আছে কিনা সে বিষয় আলোচনা হয়। আমি অবাক এই কারণে যে কেউ বললেন না এটা বন্ধ করা হোক, তবে, সম্পর্কিত ধর্মগ্রন্থের বিষয়ে বিভিন্ন মতামত ও চিন্তাভিন্নতার মধ্যে উপস্থাপনা ও আদান-প্রদান একত্রিত করে আলোচনা ও সামাজিক সম্পর্কে সুস্থ বৃদ্ধি প্রয়োজন এ বিষয়ে সবাই একমত এবং বললেন বিষয়টি তদন্ত করতে হবে, যদি তদন্তে বেরিয়ে আসে এটা মৌলিক অধিকার বা বাকস্বাধীনতা হরণ করে তবে আইন পরিবর্তন হবে নইলে নয়। ধর্মগ্রন্থকে এখানে পাঠ্যপুস্তকের মতো ভাবছে কারণ পাঠ্যপুস্তক থেকে যেমন আমরা কিছু শিখি ধর্মগ্রন্থ থেকেও ঠিক তেমন ধর্ম সম্পর্কে শিখি। অতএব কুরআনকে ভিন্নভাবে দেখছে না আইনের চোখে। তবে সবাই একমত যে বাকস্বাধীনতা আছে বলে যা খুশি করা ঠিক নাকি বেঠিক সে দায়িত্ব ব্যক্তির নিজের। একটা দেশের পতাকা পোড়ানো যাবে না তবে একটি ধর্মের ধর্মগ্রন্থ পোড়ানো যাবে, আমি বিষয়টি ঠিক বুঝে উঠতে পারিনি। তবে এটা সত্য যে ন্যাটা যাতে ভালো মতো লাগে সে বিষয়ের ওপর জোরালোভাবে ন্যাটো থেকে শুরু করে রাশিয়া সহ অন্যান্য সংগঠন বা গোষ্ঠী কাজ করে চলছে। সুইডেনের টেরোর হেট উচ্চতর স্কেলে থাকা সত্ত্বেও এখনও সুইডিশ কর্তৃপক্ষ কোনো নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি। চলছে বিশ্বে যুদ্ধ, ইনফ্লেশন সমস্যা, গণতন্ত্র ফিরে পাবার লড়াই। এত সব ঝামেলার মধ্যেও মুসলমানদের ধর্মগ্রন্থ পোড়ানো হচ্ছে সত্ত্বেও বিশ্বের মুসলিম জাতি অতীতের মতো আচরণ করছে না কিন্তু প্রতিবাদ বা নিন্দা করা হচ্ছে ঠিকই। তবে ভয়ঙ্কর কিছু এখন পর্যন্ত দেখা যায়নি।

আমার ভাবনা থেকে কিছু কথা।

সব সমস্যার সমাধান যদি রাতারাতি হয়ে যেত তাহলে সকালে ঘুম থেকে উঠে আমরা কী করতাম? কোথাও কেউ নেই, কোথাও সমস্যা নেই। আমি নতুন সমস্যায় পড়লাম নাতো? মনে হচ্ছে আমাদের অস্তিত্ব মানেই বর্তমান যেভাবে চলছে সেভাবে বা আরো জটিলতার মধ্য দিয়ে চলতে হবে। আমাকে কে যেন বলছে, “থাকলে থাকো না থাকলে চলে যাও। যদি মনে করো এপার থেকে ওপার ভালো তাহলে দেরি না করে চলে যাও ওপারে। তোমাকে কেউ জোর করে ধরে রাখেনি এখানে। তবে যদি মনে করো তুমি এখানে থাকতে চাও তবে তোমার যা ভালো লাগে সেটা কর”। সবাই যদি যার যার ভালো লাগার ওপর কাজ করে তবে সংঘর্ষ হবে, সমাধান হবে আবার নতুন সমস্যা আসবে—এর নাম বিশ্ব, আমি বিশ্ব নাগরিক, আমি আমার অধিকার এবং আমার অস্তিত্বের ওপর লড়াই করে চলছি। সময় যখন শেষ হয়ে যাবে, আমি চলে যাব। নতুন কেউ আমার জায়গা দখল করে নিবে, ভালো না লাগলে সে তার মতো করে সাজাবে। এভাবেই চলতে থাকবে। তবে আমি যখন এসেছি ভবে, এই মুহূর্তে আমি অতীতের একটি রিফ্লেকশনকে কেন্দ্র করে আমার লিখা শেষ করি— When Albert Einstein met Charlie Chaplin in 1931, Einstein said, “What I admire most about your art is its universality. You do not say a word, and yet the world understands you.”

“It’s true,” replied Chaplin, “but your fame is even greater. The world admires you, when no one understands you.”

So life is short, live for every day, die hard for one day. Break the rules if it is necessary and bring your own chemistry to your mind and soul. Close your eyes, forgive and forget quickly, kiss slowly, love truly, laugh unconditionally and uncontrollably, and never regret anything that makes you happy.

লেখক: সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন থেকে

সারাবাংলা/এজেডএস

আজ আর ফিরে আসবে না রহমান মৃধা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর