‘আহা, আজ কী আনন্দ অপার শুভ শুভ জন্মদিন দেশরত্ন শেখ হাসিনার’
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৩:২১
‘আহা! আজ কী আনন্দ অপার
শুভ শুভ জন্মদিন দেশরত্ন শেখ হাসিনার
জয় জয় জয় জয় বাংলার’
-সৈয়দ শামসুল হক
হাজার বছরের পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন পিতা মুজিব। আর বাঙালি জাতিকে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে কথা বলার শ্রেষ্ঠত্বটুকু এনে দিয়েছেন তারই কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা।
’৭৫ এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করার মধ্য দিয়ে এদেশকে অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছিল ঘাতক স্বৈরশাসকেরা। সেই ধ্বংসস্তূপে ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের মতো আলোকবর্তিকা হাতে নিয়ে তিনি এসেছিলেন; প্রতিষ্ঠা করেছেন গণতন্ত্র, ফিরিয়ে এনেছেন মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার; তিনিই গণতন্ত্রের মানসকন্যা শেখ হাসিনা।
স্বাধীনতার স্লোগান ‘জয় বাংলা’ মুছে দিতে ওরা বার বার হত্যা করতে চেয়েছিল শেখ হাসিনাকে। পিতাহারা বোনকে বাঁচাতে তাই তার ভাইয়েরা প্রাণ দিয়েছেন লালদিঘির ময়দানে, মানব দেয়াল রচনা করেছে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে।
যার জন্য প্রতি নামাজে দোয়া করেন বাংলার মায়েরা, প্রার্থনা হয় মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডায়, মানত করে মাজার দরগায় তাকে হত্যা করে এমন সাধ্য কার। তিনিই বঙ্গবন্ধুর রক্তের উজ্জ্বল প্রতিনিধি দেশরত্ন শেখ হাসিনা।
একসময় যা ছিল স্বপ্ন, আজ তা বাস্তবে পরিণত হয়েছে। মানুষ এখন শুধু তার মৌলিক অধিকারের সীমাবদ্ধ নয়; স্বপ্ন দেখে উন্নত জীবনের। তলাবিহীন ঝুড়ির দেশ থেকে আজ বাংলাদেশ নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। আমরা স্বপ্ন দেখি এখন উন্নত বাংলাদেশের।
দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠী যখন আমাদের মাথার ওপর ছড়ি ঘোরাতে চেয়েছে। ব্যর্থ করতে চেয়েছে আমাদের স্বপ্নের পদ্মা সেতুর স্বপ্ন; তখন যিনি বাঙালির আত্মমর্যাদাবোধকে সমুন্নত রেখে সততার সঙ্গে তৈরি করেছেন পদ্মা সেতু, বিশ্বকে জানিয়ে দিয়েছেন আমাদের সক্ষমতা; তিনিই বাঙালির গৌরব শেখ হাসিনা।
দান অনুদানের অপেক্ষা আজ বাংলাদেশ করে না। বাংলাদেশ আজ বিনিয়োগের এক উৎকৃষ্ট রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। আমাদের পররাষ্ট্রনীতি আজ বিএনপি সরকারের মতো নতজানু নয়। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘে দাঁড়িয়ে সাহসের সঙ্গে জলবায়ু ইস্যুতে বিশ্বমোড়লদের দ্বিচারিতাকে প্রশ্ন করেন, যুদ্ধ বন্ধের জন্য দৃঢ়তার সঙ্গে আওয়াজ তোলেন, নারীর ক্ষমতায়নকে ইতিবাচক বার্তা দিতে জাতিসংঘে নারী মহাসচিব নির্বাচনের কথা বলেন।
করোনা মোকাবিলায় যেখানে উন্নত বিশ্বের দেশগুলো নাকাল হয়েছে; তখনো থেমে থাকেনি আমাদের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা, না খেয়ে মরতে হয়নি কাউকে। মাদার তেরেসার মতো মানুষের দুয়ারে অর্থ, খাবার, চিকিৎসা পৌঁছে দিয়েছেন, নিশ্চিত করেছেন করোনার প্রতিষেধক ভ্যাকসিন। যিনি সংকল্প করেছেন এদেশে কেউ গৃহহীন-ভূমিহীন থাকবে না; তিনিই মাদার অব হিউম্যানিটি বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনা।
আজ মৌলবাদী গোষ্ঠী যখন নারীর পোশাক নিয়ে কথা বলে, নারীকে গৃহবন্দী করে দাসীতে পরিণত করতে চায়; তখন যিনি নারীর শিক্ষার অধিকার, কর্মের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে চলেছেন, বেগম রোকেয়ার সেই সুলতানার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিচ্ছেন, তিনিই মুক্তির ঠিকানা শেখ হাসিনা। আজকে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, সকল কর্মক্ষেত্রে নারীদের যে উপস্থিতি সেই সাফল্যের প্রমাণ রাখে।
মৌলবাদী গোষ্ঠী যখন আমাদের মেয়েদের খেলার মাঠে বাধা হয়ে দাঁড়াতে চায়, তখন আমাদের মেয়েরা সাফ জয় করে আসে। রূপনা চাকমা, সাবিনাদের একেকটি গোল মোল্লাতন্ত্রের কফিনে একেকটি পেরেক ঠুকে দেয়।
আমাদের পিতাদের কালে, বড় ভাইদের কালে এমন ছিল যে, অর্থাভাবে উচ্চশিক্ষা নিতে পারেনি অনেক মেধাবী তরুণ। আজ দেশের প্রায় সকল জেলায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হচ্ছে। দারিদ্রতা আজ কারো উচ্চ শিক্ষায় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আজ নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত শিক্ষার্থীদের জয়জয়কার। যুগোপযোগী শিক্ষা নীতি, শিক্ষা ব্যবস্থার ফলে আমাদের শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে উচ্চতর ডিগ্রি নিতে অক্সফোর্ড, হার্ভাডে পড়তে যেতে পারছে।
যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে আইসিটি শিক্ষার পাশাপাশি এভিয়েশন, মেরিটাইম কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হচ্ছে। সমুদ্রবিজ্ঞান, এরিয়া স্টাডিজের মতো বিষয়গুলো আজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ান হয়। ডিজিটাল শিক্ষা ব্যবস্থার ফলে আমরা করোনাকালীন একাডেমিক গ্যাপ অনেকটাই কাটিয়ে উঠেছি।
বিশ্ব র্যাংকিং নিয়ে আজ হয়তো অনেকেই মাথার চুল ছিঁড়ছেন। এক যুগ পেরুলেই শেখ হাসিনার যুগোপযোগী শিক্ষা ব্যবস্থার সাফল্য আরও দৃশ্যমান হবে।
আমরা আজ বলে দিতে চাই, রক্ত আগুন জ্বলা ৫২ এর উত্তরসূরি, ৭১ এর মুক্তিসংগ্রামের একজন প্রতিনিধি বেঁচে থাকতেও এইদেশ কখনো পাকিস্তান হবে না। টেক ব্যাক বাংলাদেশ কখনো এই মাটিতে সফল হবে না, আমাদের মোটো এখন স্মার্ট বাংলাদেশ।
লেখক: প্রচার উপ-সম্পাদক, মুক্তিযোদ্ধা হল ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
সারাবাংলা/আইই