Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

উপমহাদেশের বিখ্যাত চিত্রশিল্পী এস এম সুলতান

রশীদ এনাম
১০ অক্টোবর ২০২৩ ১৬:২৩

পল্লিবাংলার সৃজনশীল মানুষরা সবসময় অবহেলা উৎসাহ ও অনুপ্রেরণাবিহীন পরিবেশে বেড়ে ওঠে অনেকে তাদের দিকে মুখ তুলেও তাকায় না অনেকটা অবহেলিত বন ফুলের মতো। অনেক সময় দেখা যায় সেই বন ফুলের সুগন্ধীর পুরো বিশের মানুষকে মুগ্ধ করে। সত্যি ভাবতে অবাক লাগে সৃষ্টিশীল মানুষগুলো একসময় তাঁর জিয়নকাঠির আলো ছড়িয়ে বিখ্যাত হয়ে ওঠেন তাদের সুনাম খ্যাতি দেশ ছড়িয়ে বিদেশের মাঠিতেও একদিন পৌঁছে যায়। শিল্পী সাহিত্য-সংস্কৃতিকে অমরত্ব দান করতে হলে তাদের ভালোবাসতে হয়, শ্রদ্ধা করতে হয়। অজানা ও বিস্মৃত অধ্যায় স্বজাতির সাহিত্য-সংস্কৃতির অতীত ইতিহাস উপলব্ধি করতে হয়। অধ্যয়ন জীবন থেকে এস এম সুলতানের নাম শুনেছি যিনি ভিন্ন প্রকৃতির ছবি এঁকে বিশ্বে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিলেন। তার তুলির আঁচড়ের প্রতিভা দেশ ছাড়িয়ে বিশ্ববরেণ্য শিল্পীদের কাতারে পৌছে যায়। এস এম সুলতানের সৃষ্টিশীল প্রতিভার কথা শুনলে যে কেউ মুগ্ধ হবে। বই পড়ে জানলাম অনেক বড়োমাপের কীর্তিমান উপমহাদেশের চিত্রশিল্পী এস এম সুলতান। সেই অজানা কৌতূহল থেকে শিল্পী এস এম সুলতানকে জানার তৃষ্ণার্ত পিপাসা পেয়ে বসে আমাকে। সে গুণী মানুষটার খুঁজে গিয়েছিলাম একদিন নড়াইশ শহরে। দেশবরেণ্য চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানকে তুলে ধরার সম্যক চেষ্টা মাত্র ।

চিত্রা নদীর বুকে ছোটো একটি শহর নড়াইল। নড়াইলের পূর্বনাম ছিল কিসমত কুড়িগ্রাম। কথিত আছে মদন গোপাল দত্ত নামে এক সুবেদার দেখতে পান এক ফকিরের, তার হাতের একটি নড়ি বা লাঠি নিয়ে সামনের দিকে আসছেন। তিনি নাকি কিছুটা ভয় পেয়ে যান। ফকির নড়িটি মদন গোপাল দত্তকে উপহার দিয়ে বিদায় নিলেন। নড়িটি গোপাল দত্তের জন্য আশীর্বাদ হয়ে গেল। নড়ি পাওয়ার পর থেকে গোপাল দত্তের সম্পদ ও প্রতিপত্তি বাড়তে থাকে। তিনি রাতারাতি জমিদার বনে যান। কালের বিবর্তনে একসময় কিসমত কুড়িগ্রাম পরির্তন হয়ে ফকিরের দেওয়া নড়ি থেকে নড়াইল রূপান্তরিত হয়।

শান্ত শহরের মাঝ দিয়ে নীরবে বয়ে গেছে চিত্রা নদী। চিত্রা নদীর উপর আঁকাবাঁকা সাপের মতো সেতুটি দেখলে মন জুড়িয়ে যাবে। নড়াইল শহরের আরেক তরুণ প্রতিভা নড়াইল এক্সপ্রেস মাশরাফির বাড়ি। বীরশ্রেষ্ঠ শহিদ ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ-র বাসভবন। অপরূপা চিত্রা নদীর পাশে রূপগঞ্জ বাজার। নড়াইলে অনেক গুণিজনের জন্ম, বিখ্যাত নৃত্যশিল্পী উদয়শঙ্কর ও সুরকার কমল দাশ গুপ্তের পৈতৃক বাড়ি। চিত্রা নদীর এপার থেকে ওপার দেখা যায়। চিত্রা নদীর পাশাপাশি নড়াইলের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে কালিগঙ্গা, মধুমতি নবগঙ্গা, নলিয়া, ভৈরব, আঠারোবাঁকি, ঘোড়াখালি নদী। নড়াইল শহরের লোকজন রূপগঞ্জ বাজারের ঘাট দিয়ে নৌকাযোগে এপার থেকে ওপারে আসা-যাওয়া করে। নদীর ঘোলাটে পানিতে প্রচুর পরিমাণে কচুরিপানা এবং শেওলা ভেসে বেড়াচ্ছে। গোধূলি বেলায় অন্ধকারে চিত্রা নদীর পাড়ে, জোনাকি আর ঝিঁঝি পোকারা ছুটাছুটি করে। নদীর পাড়ে বসে নদীর নীরবতা উপভোগ করার মজাই আলাদা। মাঝে মাঝে শ্যালোচালিত বোটের ভট ভট ভট শব্দ কানে ভেসে আসছে। নদীতে মাঝে মাঝে শুশুক চোখে পড়ে।

নড়াইল শহরের নাম বলতে মানুষ এক নামে সহজে চিনে নড়াইলের পটুয়া এস এম সুলতান আর নড়াইল এক্সপ্রেস খ্যাত ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মর্তুজাকে। চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের সাথে কাউকে তুলনা করা যাবে না। ওনার তুলনা ও সৃষ্টিতে উনি নিজেই। আল্লাহ মানুষকে এত প্রতিভা দিয়ে পৃথিবীতে পাঠান কল্পনাই করা যায় না।

কে এই চিত্রশিল্পী এস এম সুলতান?

এস এম সুলতান নড়াইল জেলার মাছিমদিয়া এক নিষ্পেষিত কৃষক পরিবারে ১৯২৩ সালের ১০ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম শেখ মেসের আলী পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি হলেও মূল পেশা ছিল কৃষি। মাতার নাম মোছাম্মৎ মেহেরুননেসা। এস এম সুলতানের পুরো নাম শেখ মোহাম্মদ সুলতান। পারিবারিক ডাকনাম ছিল লাল মিয়া। তবে নড়াইলে এস এম সুলতান নামেই অধিক পরিচিত। ১৯২৮ সালের কথা, তার দরিদ্র পিতা এস. এম. সুলতানকে নড়াইলের ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট ইশকুলে ভর্তি করে দেন। ইশকুলে পাঁচ বছর পেরোতে না পেরোতে বন্ধ হয়ে যায় পড়াশুনা।

এস এম সুলতানের বর্ণাঢ্য জীবন ও দেশের জন্য অবদান ও অর্জন

ইশকুল ত্যাগ করার পর শিল্পী তার বাবার কাজে সাহায্যে করতেন কখনো মাঠে, খেত-খামারে কখনো-বা রাজমিস্ত্রির কাজে ব্যস্ত থাকতেন। রাজমিস্ত্রির কাজ দিয়ে তাঁর তুলির আঁচড় শুরু বিভিন্ন দালানে ছবি আঁকা, নকশা করে বেড়াতেন। মাত্র দশ বছর বয়সে একদিন ইশকুল পরিদর্শনে আসেন ডাঃ শাম্যাপ্রসাদ মুখার্জী শিল্পী তার ছবি এঁকে সবাইকে মুগ্ধ করেন। মূলত এখান থেকে শিল্পের প্রতিভা বিকাশ। শিল্পী সুলতানের ইচ্ছা ছিল কলকাতায় গিয়ে ছবি আঁকা শিখবেন। নড়াইলের লোহাগড়ার জমিদার ধীরেন্দ্র নাথ রায়ও তার প্রতিভা দেখে মুগ্ধ হন। তখন তিনিও এই খুদে তরুণ প্রতিভা এস এম সুলতানের প্রতি ভালোবাসার হাত বাড়িয়ে দেন। ১৯৩৮ সালের দিকে এস এম সুলতান কলকতায় চলে যান এবং ধীরেন্দ্রনাথ রায়ের কলকাতার বাসায় ওঠেন। দরিদ্র শিল্পীর ইচ্ছে ছিল অর্থ উপার্জনের পাশাপাশি ছবি আঁকা শিখবেন। সে সময় তিনি কলকাতা আর্ট কলেজের গভর্নিং বডির সদস্য বিখ্যাত চিত্রশিল্পী ও সমালোচক শাহেদ সোহরাওয়ার্দীর সান্নিধ্যে লাভ করেন। এস এম সুলতানের প্রতিভা দেখে তিনি তার গ্রন্থাগার উন্মুক্ত করে দেন এবং বিভিন্নভাবে তাকে সহযোগিতা করেন। এক সময় এস এম সুলতান কলকাতা আর্ট ইশকুলে ভর্তি হন। আর্ট ইশকুলে পড়ালেখা শেষ করে তিনি ফ্রিল্যান্স শিল্পীর জীবন শুরু করেন। এস এম সুলতান ছিলেন কিছুটা মেয়েলি প্রকৃতির। মাথাভরতি থাকত পাখির বাসার মতো লম্বা চুল। চলাফেরা বেশভূষা ছিল বাঙালি নারীর । শাড়ি পরতেন, পায়ে নূপুর, গলায় মালা দিয়ে নাচতেন। কিছুটা স্বাধীনচেতা বাউন্ডুলে প্রকৃতিরও বটে। তাই তিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের রীতিনীতি মেনে চলতে পারেননি। প্রকৃতিপ্রেমীও ছিলেন। তাঁর সংগ্রহশালার আঙিনা দেখে তা বুঝা যায়, গাছগাছালি, ফুল ফলে লতায় পাতায় ভরা। ১৯৪৩ সালে তিনি খাকসার আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় তিনি বেরিয়ে পড়েন উপমহাদেশের বিভিন্ন স্থানে। শহরের অলিতেগলিতে ইংরেজ ও আমেরিকান সৈন্যদের ছবি আঁকতেন। রণক্ষেত্রের ও বিভিন্ন দেশের প্রাকৃতিক ও গ্রামবাংলার ছবি প্রদর্শনী ও বিক্রি করে চলত শিল্পীর জীবন। এক সময় এস এম সুলতান চিত্রশিল্পী হিসেবে পরিচিত লাভ করেন। সিমলায় ১৯৪৬ সালে এস এম সুলতানের প্রথম আঁকা ছবির চিত্র প্রদর্শনী হয়। ছবি আঁকার জন্য ছুটে যেতেন কখনো কাশ্মীরে কখনো-বা পাঞ্জাবে কখনো-বা করাচিতে। করাচিতে তিনি দু বছর শিক্ষকতাও করেন। সে সময় চুঘতাই ও শাকের আলীদের মতো শিল্পীদের সাথে তার পরিচয় হয়। ১৯৫০ সালে তিনি আমেরিকায় চিত্রশিল্পীদের এক সম্মেলনে যোগ দেন। নিউইর্য়ক, বোস্টন, শিকাগো, ওয়াশিংটন এবং পরে লন্ডনেও তাঁর চিত্র প্রদর্শনী হয়। এক সময় তিনি নামকরা চিত্রশিল্পী হিসেবে পরিচিত লাভ করতে থাকেন। মা মাটি ও শিকড়ের টানে তিনি ১৯৫৩ সালে নড়াইলে ফিরে আসেন। শিল্পী এস এম সুলতান শিশুপ্রেমীও ছিলেন। শিশুদের নিয়ে তার স্বপ্ন ছিল বেশ। সবসময় চিন্তা করতেন শিশুদের জন্য কিছু একটা করার। চিত্রা নদীতে নৌকায় করে শিশুদের নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন। তিনি শিশুদের জন্য আনন্দজগৎ খুঁজে বেড়াতেন। এক সময় তিনি নড়াইলে নন্দন কানন নামে একটি প্রাইমারি ইশকুল, একটি হাই ইশকুল ও একটি আর্ট কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। শিল্পী তার শেষ বয়সে এসে তার স্বপ্ন শিশুদের জন্য শিশু স্বর্গ ও চারু পীঠ প্রতিষ্ঠা করেন। যা আজও নড়াইলে কালের সাক্ষী হয়ে ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে নড়াইলের রূপগঞ্জের এস এম সুলতানের সংগ্রহশালার পাশে। শিল্পীর স্বপ্নের তুলির আঁচড়ে তিলে তিলে গড়া শিশু স্বর্গের শিশুরা আলোকিত হচ্ছে ,আলো ছড়াচ্ছে দেশে-বিদেশে। এস এম সুলতান শুধু বিখ্যাত চিত্রশিল্পী নন তিনি একজন সুরসাধক এবং ভালো বংশীবাদকও বটে। এ রূপগঞ্জের সংগ্রহশালায় যখন প্রবেশ করছিলাম তখন বিকেল তিনটা, সংগ্রহশালার পাশে চিরতরে শুয়ে আছেন এস এম সুলতান, পাশে নানা রকমের ফুলের বাগান। বড়ো বড়ো বেশ কয়েকটি বর্ষীয়ান আম বৃক্ষও চোখে পড়ল। মাঝে মাঝে টুপটাপ আম ঝরে পড়ছে। সংগ্রহশালার ভিতরে প্রবেশ করে চোখ আঁতকে উঠল। শিল্পী এস এম সুলতানের তুলির আঁচড় এত সুন্দর! দেওয়ালে টাঙানো ছবিগুলো মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে উপভোগ করছি আর ভাবছি। এ যেন এক একটা জীবন্ত ছবির দুর্গ, ছবির ক্যাম্পাস। চটের উপর, দেওয়ালে, কাগজে অসাধারণ তুলির আঁচড়, তার সৃষ্টি তাকে অনন্তকাল বাঁচিয়ে রাখবে। তার ছবিতে গ্রামীণ পরিবেশ। গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষের জীবনযাপন থেকে শুরু করে কৃষক, গ্রাম্য মহিলাদের কাজকর্ম, বিশেষ করে গ্রামের মানুষের বিদ্রোহের প্রতিবাদ, ঝড় জলোচ্ছ্বাসের সাথে কীভাবে টিকে থাকতে হয় সংগ্রাম অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। কৃষকদের মধ্যে কেউ রুগ্ণ, কেউবা বাহুবলী এবং সোনার ফসল ফলা মাটির সাথে সারাক্ষণ যাদের যুদ্ধ করে টিকে থাকতে হয়। দেশের সোনার মানুষ কৃষকদের জীবনসংগ্রাম, ঢেঁকি দিয়ে ধান ভাঙার দৃশ্য, গ্রাম্য নারীর গাভির দুধ দোহনের দৃশ্য, বাঙালির ইতিহাস, লোকসংস্কৃতিসহ আরও কত কী। বিশেষ করে তাঁর ছবিতে প্রাণবন্ত ও নিষ্পেষিত মানুষের জীবনযাপনের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণি বৈষম্যের বাস্তব চিত্র, চরদখল ও হত্যাযজ্ঞসহ আরও গ্রামবাংলার নানা চিত্রকর্ম তিনি তার মেধায় মননে বংতুলি দিয়ে সমাজের এক বাস্তব চিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন। যা আজ সবকিছু সোনালি অতীত স্মৃতির ঝাঁপিতে যেন সবকিছু সাজানো এক সংগ্রহশালা। শিল্পী জল রং এবং চটের উপর কখনো-বা পটচিত্রের উপর এঁকেছেন বেশি। মাঝে মাঝে ক্যামেরায় তোলা শিল্পীর মাথাভরতি বাবরি কাটা মাথায় চুল কখনো-বা বাঁশি হাতে ছবি তুলেছিলেন সেই ছবিও তার সংগ্রহশালায় শোভা পাচ্ছে। ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত শিল্পী অনেকটা পর্দার আড়ালে ছিলেন বলা যায়। পরবর্তীতে এক সময় তার কিছু ভক্ত তাকে ঢাকায় নিয়ে আসেন। সে সময়ে বাংলা একাডেমিতে শিল্পী সুলতানের একটি প্রদর্শনীও হয়। এ প্রদর্শনী দেখে অনেকে মুগ্ধ হন এবং শিল্পী নতুন পরিচয় লাভ করেন। ১৯৮০’র দশকের দিকে শিল্পী অনেকটা নড়াইলে থেকে যান। এস এ সুলতান সবসময় গ্রামীন মানুষ, কৃষক ও পেশাজীবি মানুষের পাশপাশি শিশুদের কথাও ভাবতেন। নিজের কষ্টার্জিত টাকা দিয়ে নিজ গ্রামে শিশুদের জন্য শিশুস্বর্গ প্রতিষ্টা করেগেছেন শুধু তাই নয় শিশুসর্গ নামে তার একটি ভাসমান নৌকা ছিল। যে নৌকা দিয়ে তিনি শিশুদেরকে প্রকৃতিকে কিভাবে উপভোগ করতে হয় প্রকৃতি মাঝে কিভাবে হারিয়ে যেতে হয় সেই স্বপ্ন বুনেছিলেন। সে সময়ে তার বাড়িতে শিশুদের বিনোদনের জন্য তিনি বিভিন্ন জীবজন্তু দিয়ে একটি চিড়িয়াখানা বানিয়ে দেন। দেশের শিশুরা আগামীর ওরা এগিয়ে গেলে দেশ এগিয়ে যাবে এবং সত্যি সত্যি সোনার বাংলা বিনির্মাণে শিশুরাই আগামীতে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে সেকথাই তিনি তার মন মন্দিরের ক্যানভাসে তুলি দিয়ে এঁকেছেন। ১৯৮২ সালে নড়াইলের কিংবদন্তি-পুরুষ এস এম সুলতানকে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ‘এশিয়ান ব্যক্তিত্ব’ হিসেবে ঘোষণা করে। ১৯৮২ সালে এস এম সুলতানকে একুশে পদক, ১৯৮৫ সালে চারুশিল্পী সংসদ সম্মাননা এবং ১৯৯৪ সালে স্বাধীনতা পদক দেওয়া হয়।

নড়াইলের শিল্পী এসএম সুলতানের আঁকা ছবি দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন কথাসাহিত্যিক আহমদ ছফা, বলা যায় সুলতান তারই আবিষ্কার, শিল্পী সুলতান বাংলার মেহনতি মানুষের প্রতি যে দরদ সেটা তিনি তুলির মাধ্যমে তুলে ধরেছেন, সুলতানের শিল্পীকর্মটা ছফাকে মুগ্ধ করেছে বিধায় ছফার হৃদয়ে বসবাস করতেন শিল্পী এসএম সুলতান। লেখক ছফা সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য পরিবাগে এসএম সুলতান পাঠশালা প্রতিষ্ঠা করেন।

১৯৮০ সালের শেষের দিকে শিল্পী এস এম সুলতান অসুস্থ হয়ে পড়েন। ১৯৯৪ সালে এস এম সুলতানের শেষ চিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয় ঢাকার গ্যালারিস্টোনে। ১৯৯৪ সালে ১০ অক্টোবর যশোরের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে দেশবরেণ্য চিত্রশিল্পী পটুয়া এস এম সুলতানের তুলির আঁচড় চিরতরে থেমে যায়। খ্যাতিমান চিত্রশিল্পীর ২৯তম মৃত্যুবার্ষিকীতে জানাই বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি।

লেখক: কলামিস্ট

সারাবাংলা/এসবিডিই

উপমহাদেশের বিখ্যাত চিত্রশিল্পী এস এম সুলতান মুক্তমত রশীদ এনাম


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

৯০০তম গোলে ইতিহাস গড়লেন রোনালদো
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:০৪

সম্পর্কিত খবর