মহালয়ার মাধ্যমে দেবী পক্ষের সূচনা
১৪ অক্টোবর ২০২৩ ১০:৩৫
আজ ১৫ অক্টোবর ২০২৩ সাল রবিবার মহালয়ার মাধ্যমে দেবী পক্ষের সূচনা হলো, এই দিন থেকে শুরু করে, হিন্দুরা শারদীয়া নবরাত্রির নয় দিন ধরে দেবী দুর্গার পুজো করবে। নবরাত্রি শেষে, দশমীতে, দেবী দুর্গাকে বিসর্জন দেওয়া হবে।
মহালয়া, দেবীপক্ষের সূচনা। হিন্দু ধর্মে, মহালয়া হল একটি পবিত্র দিন যা শারদীয়া নবরাত্রির সূচনা চিহ্নিত করে। এই দিনটি দুর্গার আগমনকে চিহ্নিত করে, যিনি হিন্দু দেবী শক্তির রূপ। মহালয়া শব্দটি দুটি সংস্কৃত শব্দের সংমিশ্রণ থেকে এসেছে: “মহা”, যার অর্থ “মহান”, এবং “লয়া”, যার অর্থ “মিলন”। এই দিনটিকে দেবীর সাথে মিলনের দিন হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
মহালয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন যা ছুটির দিন হিসেবে ভারত এবং বাংলাদেশ সহ বিশ্বের অনেক দেশে পালিত হয়। এই দিনটিতে, হিন্দুরা দেবী দুর্গার পুজো করে এবং তাঁর আশীর্বাদ প্রার্থনা করে। মহালয়ায়, হিন্দুরা সাধারণত একটি নতুন কলশ স্থাপন করে, যাকে “জলপাত্র”ও বলা হয়। এই কলশটি দেবী দুর্গার প্রতীক হিসাবে বিবেচিত হয়। কলশটিতে জল, ফুল, চাল, এবং অন্যান্য উপকরণ দিয়ে পূজা করা হয়।
মহালয়ার দিনটিতে, হিন্দুরা সাধারণত উপবাস করে এবং দেবী দুর্গার কাছে প্রার্থনা করে। তারা সাধারণত এই দিনটিতে পূজা, ধর্মীয় অনুষ্ঠান, এবং ধর্মীয় গান এবং নাচের মাধ্যমে উদযাপন করে।
মহালয়া একটি শুভ দিন । এই দিনটিতে, হিন্দুরা নতুন করে শুরু করে দেবীর আগমনীর এবং তাদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে চায়।মহালয়া একটি আনন্দঘন এবং উৎসবমুখর দিন যা হিন্দু ধর্মের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।
দেবীর আরাধনা শুরু মহালয়ার ছয়দিন পর
মহালয়ার ছয়দিন পর, পঞ্চমী তিথিতে দেবীর আরাধনা শুরু হবে। এই দিন থেকে দেবী দুর্গার আবাহন শুরু হবে। চন্ডীপাঠের মধ্য দিয়ে দেবীর আরাধনা করবেন অনুসারীরা।চন্ডীতে দেবী দুর্গার সৃষ্টির বর্ণনা ও দেবীর প্রশস্তি রয়েছে। দেবী দুর্গা সৃষ্টির আদিম শক্তি। তিনিই সবকিছুর সৃষ্টি, রক্ষা ও বিনাশের কর্তা।
পঞ্চমী তিথিতে দেবীর মূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হয়। মূর্তির সামনে প্রদীপ, ধূপ, ফুল, ফল, মিষ্টি ইত্যাদি নিবেদন করা হয়। চন্ডীপাঠের মাধ্যমে দেবীর আরাধনা শুরু হয়।
দেবীর আরাধনার সময় বিভিন্ন মন্ত্র উচ্চারণ করা হয়। দেবীর স্তোত্র পাঠ করা হয়। দেবীর কাছে সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করা হয়।
পঞ্চমী তিথি থেকে শুরু করে নবমী তিথি পর্যন্ত দেবীর আরাধনা চলে। নবমী তিথিতে দেবীকে বিসর্জন দেওয়া হয়।
চন্ডীপাঠের মাধ্যমে দেবীর আবাহন
চন্ডীপাঠ হল দেবী দুর্গার আরাধনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। চন্ডী হল একটি সংস্কৃত মহাকাব্য যা দেবী দুর্গার বীরত্বগাথা বর্ণনা করে।চন্ডীপাঠের মাধ্যমে দেবীর আরাধনা করলে দেবীর আশীর্বাদ লাভ করা যায় বলে বিশ্বাস করা হয়। দেবীর আবাহনের মাধ্যমে তাঁর শক্তি ও মহিমা অনুভব করা যায়।চন্ডীপাঠে দেবী দুর্গার বিভিন্ন রূপের বর্ণনা রয়েছে। তিনিই হলেন মহাকালী, মহাসরস্বতী, মহালক্ষ্মী। তিনিই হলেন জগতের পালনকর্তা।চন্ডীপাঠের মাধ্যমে দেবীর আরাধনা করলে দেবীর করুণা লাভ করা যায় বলে বিশ্বাস করা হয়। দেবীর আশীর্বাদে জীবনে সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে।
দেবী দুর্গার প্রশস্তি
চন্ডীতে দেবী দুর্গার প্রশস্তি রয়েছে। দেবী দুর্গার সৌন্দর্য, শক্তি ও মহিমার বর্ণনা করা হয়েছে।দেবী দুর্গা হলেন মহাশক্তি। তিনিই হলেন সবকিছুর কর্তা। তিনিই হলেন জগতের রক্ষাকর্তা।দেবী দুর্গার আরাধনা করলে জীবনের সকল বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় বলে বিশ্বাস করা হয়। দেবীর আশীর্বাদে জীবনে সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে।
লেখক: শিক্ষার্থী; সরকারি ব্রজলাল কলেজ, খুলনা
সারাবাংলা/এসবিডিই