পার্বত্য জেলা হিসেবে পরিচিত রাঙ্গামাটি জেলা যা অন্যতম একটি পর্যটন স্থান। ভ্রমন পিপাসু মানুষদের কাছে রাঙ্গামাটি থাকে একদম শীর্ষে। তারও কারণ আছে কেন না রাঙ্গামাটিতে আছে অন্যতম পর্যটন স্থান ঝুলন্ত ব্রিজ, রয়েছে সাজেক ভ্যালি, কাপ্তাই হ্রদ। প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ এই খানে আসে পর্যটন স্থান পরিদর্শন করতে।
এমন এক পর্যটন স্থান ঘুরে দেখলে দেখা যায় বিভিন্ন এলাকায় স্তূপাকারে ময়লা-আবর্জনা জমে রয়েছে। এইসব বর্জ্যের কারণে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ পরিস্থিতি। বিশেষ করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ময়লা-আবর্জনা, গবাদি পশুর আবর্জনা, পর্যটন এলাকায় যত্রতত্র ময়লা ফেলাসহ মনষ্য সৃষ্ট এসব বর্জ্য যথা সময়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না করায় জেলাসহ উপজেলার অনেক স্থান ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। এসব ময়লা পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। ফলে চলাচলরত মানুষজনকে নানা ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় নাক চেপে চলাচল করতে হচ্ছে। এতে যেমন পরিবেশ দূষিত হচ্ছে তেমনি রাঙ্গামাটি জেলার সৌন্দর্য বিনষ্ট করছে।
রাঙ্গামাটি শহরে এমন অনেক জায়গা রয়েছে যেখানে ময়লা জমে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে হাসপাতাল এলাকা, হ্যাপির মোড়, রাজবাড়ী, বনরুপাসহ আরও অনেক জায়গা। এক রাস্তার সঙ্গেই রাঙ্গামাটির শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মুজাদ্দেদ এ আলফেসানী উচ্চ বিদ্যালয় অবস্থিত। এই বিদ্যালয়ের সামনে রাস্তার ওপর পাশেই ময়লার স্তূপ দেখা যায়। সরেজমিনে সবচেয়ে বেশি সমস্যা পোহাতে দেখা যায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের। তারা অভিযোগ করে বলেন, প্রতিদিন ময়লা আবর্জনার ভাগাড় মাড়িয়ে স্কুল-কলেজে যেতে হয়। শুধু তা-ই নয়, ময়লার পচা গন্ধ বাতাসের সঙ্গে মিশে শ্রেণিকক্ষে পর্যন্ত চলে যায়।এসব দুর্গন্ধে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
বনরুপার মত ব্যস্ততাপূর্ণ এস এ পরিবহন এলাকায় দেখা যায় ময়লার স্তূপ। তার পাশেই রয়েছে কয়েকটি স্ট্রীট ফুডের দোকান এই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশেই বিক্রি হচ্ছে এসব খাবার। এছাড়াও ট্রাইব্যাল আদাম এলাকার চাররাস্তার মোড়েও ময়লার ছড়াছড়ি। ওই এলাকার এক স্থানীয় বলেন “প্রতিদিন সকালে বাসা থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় এই স্থান পার হয়ে য়েতে হয় আমাদের, অত্যন্ত দুগন্ধময় এই স্থানটি”। রাঙ্গামাটি পৌরসভার পাশেই রয়েছে কাকলী সিনেমা হল, সেই জায়গায়ও দেখা যায় ময়লার ভাগাড়।
মূলত এসব ময়লা-আবর্জনার জন্য দায়ী এলাকাবাসীরাই। এলাকার বিভিন্ন স্থানের ময়লা আবর্জনা গুলি নির্দিষ্ট স্থানে ফেলার জন্য একটি বর্জ্য পরিবহনের গাড়ী ও কিছু ড্রাম দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মানুষ এসব নিয়মের তোয়াক্কা না করে যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলে এলাকাকে নোংরা করছে।
রাঙ্গামাটির সরকারি হাসপাতালে যাওয়ার পথে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায় পলিথিন ভর্তি ময়লা অথচ পাশেই দেওয়া রয়েছে বড় বড় ডাস্টবিন। এতে করে সৃষ্টি হচ্ছে নতুন নতুন রোগ বালাই যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে রোগী ও সাধারন মানুষের। এসবের জন্য দায়ী কারা? এর থেকেই বুঝা যায় রাঙ্গামাটি শহরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে রাঙ্গামাটিবাসীর কতটুকু অনীহা।
এখন রাঙ্গামাটিতে আসা ভ্রমন পিপাসু পযটকদের নিয়ে কিছু বলি পর্যটকগণ রাঙ্গামাটির বিভিন্ন প্রসিদ্ধ স্থান ভ্রমনের সময় গাড়ি থেকে বর্জ্য রাস্তায় ছুড়ে ফেলে দেয়। পানিপথে বোট ভ্রমনে পর্যটকদের দেখা যায় প্রতওনিয়ত প্লাস্টিক বর্জ্য লেকের পানিতে ফেলছে।এতে করে যেমন পরিবেশ দূষিত করছে তেমনি লেকের পানিও দূষিত হচ্ছে। কাপ্তাই লেক যার জন্য প্রসিদ্ধ এই রাঙ্গামাটি পানি দূষনে কাপ্তাই লেকের মৎস্য খাতে বিপুল প্রভাব ফেলবে। সচেতন থাক, প্রকৃতিকে রক্ষা কর।
লেখক: শিক্ষার্থী, ফেনী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট