Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সংঘাত নিরসনে সমঝোতা অত্যাবশ্যক

এস. এম. রাহমান জিকু
৬ নভেম্বর ২০২৩ ১৮:৫২

হরতালের পর টানা তিন দিনের অবরোধ। আশঙ্কা বিরোধীদলের এমন কর্মসূচি আসতে পারে আরও। মূল যে সংকট– গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। সেটির সমাধানের সম্ভাবনা এখনও দৃশ্যমান নয়। ফলে চলমান এই অস্থিরতা, পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি। আর তাকে কেন্দ্র করে মানুষের মৃত্যু, ভোগান্তি এসব শিরোনাম দেশ ছাড়িয়ে বহির্বিশ্বেও ফের আলোচনায় বাংলাদেশ। এদিকে নিজ দেশের নেতিবাচক এসব আলোচনা নিয়ে অস্বস্তিতে তরুণরাও।

চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় বাংলাদেশ সম্পর্কে বহির্বিশ্বে নেতিবাচক বার্তা জমা পড়ছে। এর প্রভাব রাজনীতি, অর্থনীতির পাশাপাশি শিক্ষা সহ বিভিন্ন খাতেও পড়তে পারে বলে শঙ্কা করা হচ্ছে। সংকট সমাধানে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আন্তরিক যোগাযোগ বাড়িয়ে সমাধানের পথ খুঁজতে হবে। অন্যথায় অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন ইস্যুতে সমঝোতা না হলেই বিপদ বাড়বে।

বিজ্ঞাপন

সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত ও সহিংসতা বন্ধে ভিসানীতি সহ যুক্তরাষ্ট্রের মানা উদ্যোগ ও পরামর্শ থাকলেও তাই এখনো খুব একটা কাজে আসেনি।

বহির্বিশ্বে যে যোগাযোগ গুলো ছিল, সেগুলোর অনেকগুলোই রাজনৈতিক সংস্কৃতির এই দীনতার কারণে আমরা পিছিয়ে পড়বো। সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে কীভাবে নিয়ে যাওয়া যায়? সরকারি দলকে বাধ্য করা যায় এদিকে লক্ষ্য রাখা বিরোধীদলের কাজ হবে। অন্যদিকে সরকারি দলের কাজ হচ্ছে সমঝোতায় যাওয়া বিরোধীদলের সাথে।

হরতাল-অবরোধ পালন বা প্রতিরোধ নামে যা হচ্ছে তাতেই নষ্ট হচ্ছে দেশের ভাবমূর্তি। করোনার পর রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ। সব মিলিয়ে দেশের অর্থনীতির চেয়ে কঠিন দশা তাতে রাজনৈতিক অস্থিরতা যুক্ত করছে আরও একটি নতুন মাত্রা। তাই সংকট সমাধানে খোলা মনে রাজনৈতিক দল গুলোর মধ্যে কার্যকর আলোচনার তাগিদ সাধারণ মানুষের।

বিজ্ঞাপন

যখন সহিংসতা বা রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করে তখন আমাদের এই একাডেমিক কারিকুলামে ব্যাপক ডিস্টার্বেঞ্জ সৃষ্টি হয়। এদিকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্লাসে আসতে, তাদের যে যাতায়াতের পথটা আসলে ঠিক কিরকম হবে? এটা নিয়েও শঙ্কিত অভিভাবকরা। ভোগান্তি কমাতে আপামর জনতার চাওয়া-পাওয়া গুলোকে রাজনীতিকরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেবেন বলে প্রত্যাশা সাধারণ মানুষের।

চলমান সংঘাতের বলি হতে হচ্ছে দেশের সাধারণ মানুষকে। এদিকে বিরোধীদলের হরতাল-অবরোধে যেমনি ভাবে জনসাধারণের ভোগান্তি বাড়ছে, ঠিক তেমনি ভাবে জনমনে শঙ্কা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। এদিকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ১ম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা চলছে। হরতাল-অবরোধের তোয়াক্কা না করে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরীক্ষার সময়সূচি অপরিবর্তিত রেখেছে। যার ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মনে শঙ্কা ও আতঙ্কের স্তূপ জমেছে। অভিভাবকদের প্রশ্ন হচ্ছে, হরতাল-অবরোধের রোষানলে পড়ে যাতায়াত পথে যদি কোনো শিক্ষার্থীর প্রাণহানি ঘটে, তার দায় কে নিবে?

অন্তর্ভুক্তিমূলক, গ্রহণযোগ্য, দেশে এবং বিদেশে একটা নির্বাচনই কিন্তু এই সমস্যার টেকসই সমাধান দিতে পারে। তা না হলেই আমরা একটা দীর্ঘমেয়াদী জটিলতায় পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

হরতাল-অবরোধ আন্দোলনের একটি হাতিয়ার হলেও এতে একটি দেশ বিপুলভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে করে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বাড়ে। আজকাল তাই এসব ধ্বংসাত্মক কর্মসূচির বিকল্পের কথা বলা হচ্ছে। সম্প্রতি বিএনপির সহিংস আন্দোলনে প্রায় প্রতিদিনই হতাহতের ঘটনা ঘটছে। এদিকে গণপরিবহণে উঠতে মানুষের ভয়। কখন ধরিয়ে দেয়া আগুন? এই শঙ্কিত মনে আজ দেশের মানুষ প্রতিনিয়তই আতঙ্কিত। অথচ এই সংঘাত-সংঘর্ষ কখনোই কাম্য ছিল না। বিধক্রান্তিকালে দেশের অর্থনৈতিক স্থবিরতা নয়, চাই স্বাভাবিক গতি। সংঘাত নয়, চাই শান্তি।

সর্বোপরি– হরতাল-অবরোধ, সংঘাত, শঙ্কা ও আতঙ্ক নিরসনে রাজনৈতিক বিরোধী দলগুলোর সাথে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তথা সরকারের সমঝোতার বিকল্প নেই। এদেশের সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা– সরকার সমঝোতা আনয়নের মধ্যে দিয়ে চলমান সংকট নিরসন করে একটি টেকসই এবং দীর্ঘমেয়াদী সমাধান নিশ্চিত করবে।

লেখক: শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম কলেজ

সারাবাংলা/এসবিডিই

এস এম রাহমান জিকু মুক্তমত সংঘাত নিরসনে সমঝোতা অত্যাবশ্যক

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর