Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ধর্ম ও সততার আলোকবর্তিকা শেখ হাসিনা

ড. মো. সিদ্দিকুর রহমান
১৬ নভেম্বর ২০২৩ ১৯:৪৫

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ার একমাত্র অগ্রপথিক হয়ে উঠেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই কঠিন কাজটিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন নিঃস্বার্থ সত্যিকারের দেশপ্রেম। যা অন্য কারো মাঝে খুঁজে পাওয়া যায় না, এমনকি অনেক আওয়ামী লীগ নেতাদের মাঝেও খুঁজে পাওয়া যায় না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই একমাত্র এদেশের নির্যাতিত নিপীড়িত প্রান্তিক আপামর গণ-মানুষের সুখ-দুঃখের মমতাময়ী সাথী। বাবা মায়ের দেয়া সততা ও নিষ্ঠাকে পুজি করে সমস্ত লোভ-লালসা ত্যাগ করে জীবন-মৃত্যুর হুমকি থাকা সত্ত্বেও দেশপ্রেমকে আলিঙ্গন করে এগিয়ে যাচ্ছেন। স্বপ্ন পূরণে । প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্বারাই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্ভব হয়েছে অন্য কারও দ্বারা সম্ভব হতো না। ৪৫ বছর আগের পাপীরা ভেবে ছিল তাদের পাপের কথা সবাই ভুলে গেছে? সততার শক্তি এমনই, এই শক্তি দিয়ে ৪৫ বছর আগের পুরনো পাপী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন করেছেন। পিতা হত্যার বিচার সম্পন্ন করেছেন।

বিজ্ঞাপন

একটি দেশকে সামগ্রিকভাবে এগিয়ে নেওয়ার জন্য প্রয়োজন দূরদর্শী দৃষ্টিভঙ্গি ও সৎ নেতৃত্ব। সততা এবং আদর্শের কোনো বিকল্প নেই। নিজে সৎ না থাকলে মানুষের ভালোবাসা পাওয়া যায় না। আর মানুষের ভালোবাসা ছাড়া ক্ষমতায় আসা যায় না। সৎ সাহস ও নিজের আত্মবিশ্বাস থাকলে যে কোনো কঠিন কাজ যে সহজে করা যায় তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সততা আর নিষ্ঠার মন্ত্রে দুর্বার গতিতে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সারাবিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা থাকা সত্ত্বেও দক্ষতা দিয়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রেখেছেন। সততাকে সঙ্গী করে দেশি, বিদেশিচক্র আর বিশ্ব ব্যাংকের ষড়যন্ত্রকে চ্যালেঞ্জ দিয়ে পদ্মা সেতুর মতো বৃহৎ প্রকল্প কারো সাহায্য ছাড়াই বাস্তবায়িত করছেন। আদর্শ ও বিশ্বাসের মাধ্যমে মানুষের কাছে আলোকবর্তিকা হিসেবেই আবির্ভূত হয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

বঙ্গবন্ধুর মতোই মানুষকে আশাবাদী করে জাগিয়ে তোলেন, পিতার সবগুলো গুণই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে বিরাজমান। দেশ এবং দেশের মানুষকে ভালোবেসে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন বাংলাদেশকে। কেউ কখনো এমন করে ভাবেনি দূরন্ত গতিতে বৃদ্ধি পাওয়া জাতিকে নিয়ে যেমনটি ভেবেছেন জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা, দেশরত্ন শেখ হাসিনা। বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে জনসম্পদে রূপান্তরিত করার প্রত্যয় নিয়ে কেউ কখনো স্বপ্ন দেখায়নি আমাদের যেমনটি দেখিয়েছেন দেশরত্ন শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুর পর বাঙালি জাতি এমন কাউকে পাশে পায়নি যেমনটি পেয়েছে মাতৃরূপী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিরামহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছেন সুযোগ্য উত্তরসূরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হাতে নিয়েছেন নতুন নতুন পরিকল্পনা। এইসব পরিকল্পনার মধ্যে দিয়েই বাস্তবায়ন করে চলেছেন পিতার স্বপ্ন। সেই স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দিতেই ঘোষণা করেছেন ‘রূপকল্প ২০২১’। যার প্রতিপাদ্য বিষয় ডিজিটাল বাংলাদেশ।

ডিজিটাল বাংলাদেশের দরুন পুরো বিশ্বকে হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছেন। তথাকথিত নিয়মের বেড়াজাল ভেঙে মানুষের জীবনযাত্রাকে করে দিয়েছেন সহজ থেকে সহজতর। ডাক পিয়ন রানার চিঠির বোঝা কাঁধে নিয়ে ঝুমঝুম ছুটে চলার গল্প এখন শুধুই চাঁদের বুড়ির গল্প। গতানুগতিক ঝাঁড় ফুকের গাঁড়াকল থেকে বের করে মানুষের জীবনের প্রতিটি স্তরেই পৌঁছে দিয়েছে ডিজিটাল বাংলাদেশের ছোঁয়া। দৈনন্দিন জীবনে কাজকর্মকে সহজ এবং গতিশীল করে দিয়েছে ডিজিটাল বাংলাদেশের ধারণা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বেই ২০৩১ সালের আগেই উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ হবে বাংলাদেশ।

সততা, মানবিকতা ও শান্তির অগ্রদূত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষের জন্য নিজের প্রাণকে তুচ্ছ করতে পারেন নির্দ্বিধায়। সম্প্রতি বিশ্ব রাজনীতি নিয়ে গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘পিপলস অ্যান্ড পলিটিক্স’ সৎ নেতার সন্ধান করেছে। সরকার/রাষ্ট্রপ্রধান হয়ে তিনি কি তার রাষ্ট্রের বাইরে কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করেছেন? ক্ষমতায় আসীন হবার পর তার ব্যক্তিগত সম্পদ কতটুকু বেড়েছে? গোপন সম্পদ গড়েছেন কিনা? সরকার/রাষ্ট্রপ্রধানের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট দুর্নীতির অভিযোগ আছে কিনা? দেশের জনগণ তাঁর সম্পর্কে কী ভাবেন? এই প্রশ্নগুলোর উত্তরের দ্বারা ১৭৩ টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের কর্মকাণ্ড বিশ্লেষণ করে নেতৃত্বের সততার মান বিচার করেছে। ১৭৩ জন সরকার ও রাষ্ট্র প্রধানের মধ্যে ১০০ নম্বর থেকে ৯০ পেয়ে সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন ও সৎ সরকার প্রধান হিসেবে বিবেচিত হয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল। ৮৭ নম্বর পেয়ে তৃতীয় পরিচ্ছন্ন ও সৎ সরকার প্রধান হিসেবে বিবেচিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংস্থাটি গবেষণায় দেখেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাংলাদেশের বাইরে কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই। বেতন ছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পদের স্থিতিতে কোনো সংযুক্তি নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোনো গোপন সম্পদ নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের ৭৮ ভাগ মানুষ মনে করেন সৎ এবং ব্যক্তিগত লোভ লালসার উর্ধ্বে। তারা নিশ্চিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দুর্নীতি স্পর্শ করেনি, উল্লেখ করার মতো কোনো সম্পদও নেই।

ফোর্বস ম্যাগাজিনের ২০১৭-তে ক্ষমতাবান নারীর তালিকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবস্থান ৩০। আরেক বিবেচনায় পাওয়ারফুল ওমেন ইন পলিটিকসে ২২ জনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবস্থান নবম। খালিজ টাইমসের প্রাচ্যের তারকার পাশাপাশি ব্রিটিশ মিডিয়া তাকে দিয়েছে ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ উপাধি।

ক্ষমতা যে ভোগের বস্তু নয়, এটা জনগণের কল্যাণের জন্য তা নিশ্চিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কর্তব্য পালনের মাধ্যমে জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করেছেন তিনি। তার হাত ধরেই মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়ে বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশ মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে। দেশকে নিয়েছেন সম্মানজনক অবস্থানে। প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে দিয়ে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠিত করে গণতন্ত্রকে করেছে সুদৃঢ়। সাধারণ মানুষের আস্থা ও ভরসার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার মেধা, সাহস, মানবিকতা ও সততা বাঙালি জাতির কাণ্ডারিতে পরিণত হয়েছেন। অস্তিত্বের প্রতীক। তিনি বটগাছের মতো ছায়া দিয়ে যাচ্ছেন এদেশের মানুষকে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করে বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থা, নেতৃবৃন্দ ও গণমাধ্যম নানা উপাধি দিয়েছেন। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো _
১. লেডি অব ঢাকা – যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক প্রভাবশালী বিজনেস ম্যাগাজিন ‘ফোর্বস’;
২. মাদার অব হিউম্যানিটি – ব্রিটিশ মিডিয়া কারিশম্যাটিক লিডার;
৩. প্রাচ্যের নতুন তারকা – সংযুক্ত আরব আমিরাতের সংবাদপত্র খালিজ টাইমস;
৪. বিশ্বের নেতা – ভারতের বিজেপির ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সংসদ সদস্য ড. বিনয় প্রভাকর;
৫. নারী অধিকারের স্তম্ভ কানাডার আন্তর্জাতিক উন্নয়নমন্ত্রী মেরি কুড বিবেউ;
৬. বিশ্ব শান্তির দূত – কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পিস স্ট্যাডিস বিভাগের তিন শিক্ষক;
৭. মানবিক বিশ্বের প্রধান নেতা – অক্সফোর্ড নেটওয়ার্ক অফ পিস নামক সংস্থা;
৮. জোয়ান অফ আর্ক – শ্রীলঙ্কা গার্ডিয়ান;
৯. বিশ্ব মানবতার আলোকবর্তিকা – নোবেল বিজয়ী কৈলাশ সত্যর্থী;
১০. বিশ্ব মানবতার বিবেক – কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট জুয়ান ম্যানুয়েল সন্তোস;
১১. বিরল মানবতাবাদী নেতা- ভূষিত করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ।

এছাড়া তার কর্মদক্ষতা ও মহানুভবতার জন্য তিনি বিশ্ববাসীর কাছ থেকে অসংখ্য পদক ও সম্মাননা পেয়েছেন। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। একটি উন্নত মানবিক বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শতায়ু প্রার্থনা করে দেশের মানুষজন ।

বঙ্গবন্ধু যেমন ছিলেন একজন দেশপ্রেমিক বাঙালি, তেমনি ছিলেন একজন প্রকৃত মুসলমান। বঙ্গবন্ধুর সারা জীবনের কর্মপ্রয়াস ছিল বাংলার জনগণের শোষণ ও মুক্তির অন্বেষণ। স্বাধীন বাংলাদেশে ইসলামি অগ্রযাত্রায়ও বঙ্গবন্ধুর অবদান অবিস্মরণীয়। বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর সাড়ে তিন বছরের শাসনামলে ইসলামের প্রচার প্রসারে যে অবদান রেখেছেন, তা সমকালীন ইতিহাসে বিরল। স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন উদার চেতনার অধিকারী একজন খাঁটি ইমানদার। তেমনি তার সুযোগ্য কর্ণধার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তার গুণ পেয়েছেন।

শুধু নিজ ধর্ম নয়, অন্য ধর্মের মানুষের জন্যও নিবেদিত প্রাণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যেখানেই মানুষের সমস্যা সেখানেই মানবতার দূত হিসেবে ছুটে গিয়েছেন তিনি। সেসকল নমুনা আমরা বিভিন্ন সময়ে দেখতে পেয়েছি। অথচ এরকম অবস্থা আর কোন সরকারের শাসনামলে চোখে পড়েনি এদেশের মানুষের। শুধু শোষণ-বৈষম্য-নিপীড়ন-নির্যাতন থেকে বাচতে নয়, ধর্ম-বর্ণের কুৎসিত রাজনীতির কবর রচনা করতেই মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। বাংলাদেশ নামক একটি অসাম্প্রদায়িক ভূখণ্ডের জন্য জাতির পিতার ডাকে বাঙলার হিন্দু-বৌদ্ধ- মুসলমান-খ্রিস্টান কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করেছিল। এনেছিল বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন রাষ্ট্র।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকল নামায নিয়মিত আদায় করেন। এমনকি বিশ্ব ইজতেমার আখেরী মোনাজাতে অংশ নেন। আর দেশে বিভিন্ন দুর্যোগ চলাকালিন সময়ে তিনি প্রার্থনারত থাকেন। তিনি একজন রাষ্ট্রপ্রধান, সেই সঙ্গে তিনি একনিষ্ঠ ধর্মভীরু মুসলমান। দুটো কাজই এক সঙ্গেই তিনি করেছেন। তিনি মাঝে মাঝেই সারারাত জায়নামাজেই কাটান। তিনি শুধু একজন ব্যক্তি নন, এই দেশের অভিভাবক। সারা রাত জেগে সৃষ্টিকর্তার কাছে এ দেশের মানুষের জন্য প্রার্থনা করার মধ্য দিয়ে তিনি প্রমাণ করলেন যে, মানুষকে তিনি কতটা ভালোবাসেন।

লেখক: প্রফেসর, মেডিসিন বিভাগ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

সারাবাংলা/এসবিডিই

ড. মো. সিদ্দিকুর রহমান ধর্ম ও সততার আলোকবর্তিকা শেখ হাসিনা মুক্তমত

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর