Tuesday 26 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সারাদেশের অনন্য সংবাদমাধ্যম হবে ‘সারাবাংলা’

সাকিব আলম মামুন
৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ১২:৫৩

সারাবাংলা ডটনেট অনলাইন নিউজ পোর্টালটির একজন শুভাকাঙ্খী ও লেখক হিসেবে নয়, একনিষ্ঠ পাঠক হয়ে সারাবাংলা’কে আগামীর নির্ভীক পথচলার প্রশ্নে বলব— মিথ্যার বেড়াজাল ভেঙে সত্যের সন্ধিতে এগোও বহুদূর।

মুজিব জন্মশতবর্ষ, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতীয় সত্ত্বা মহান বিজয় দিবসের লাল-সবুজের মহোৎসবের মহিমান্তিত লগ্নে পোর্টালটির ষষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে স্বাগত এবং সপ্তম বর্ষে পদার্পণের আনন্দক্ষণে পত্রিকাটির প্রতিষ্ঠাতা, প্রকাশক, সম্পাদক, সাংবাদিক ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিজয়ের মাসে জানাই লাল-সবুজের বিজয়ী শুভেচ্ছা।

বিজ্ঞাপন

পত্রিকাটির ষষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এসেও মনে হয় সংবাদ প্রকাশে দৃশ্যমান কিংবা অদৃশ্য কোনো শক্তির বশবর্তী নয় তারা। এখানে নেই কারও কোনো হস্তক্ষেপ। সংবাদ প্রকাশে ‘সবার আগে সব খবর নয়’, বরং খবরের বস্তুনিষ্ঠতা, তথ্য যাচাই, সঠিক ও নির্ভুল তথ্য দেওয়ায় লক্ষ্য। সংবাদ প্রকাশের নামে সামাজিক অস্থিরতা তৈরি কিংবা উসকানি দেওয়া তাদের লক্ষ্য নয়। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উর্বর মানবজমিনে কৃষক হয়ে ন্যায্যতার ফসল ঘরে তুলতে চায় ‘সারাবাংলা’।

একজন ধীমান পাঠক হিসেবেও নিরীক্ষণ করে দেখেছি, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ‘কালোকে কালো আর সাদাকে সাদা’ বলার দৃঢ়প্রত্যয় এবং গণমানুষের প্রত্যাশাকে ধারণ করে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে পাঠকের ভালোবাসায় ধন্য হয়ে উঠেছে ‘সারাবাংলা’।

এছাড়া মুক্তিমন্ত্রের কবি, স্বাধীনতার স্থপতি, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন, কর্ম ও গভীর আত্মত্যাগ এবং ৩০ লাখ শহীদ ও দুই লাখ মা-বোনের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে শক্তিশালী অবস্থানের মাধ্যমে সমৃদ্ধ চেতনাকে ঋদ্ধ করতে অনন্য ভূমিকা পালন করে চলেছে ‘সারাবাংলা’।

বিজ্ঞাপন

শুধু তাই নয়, বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশ ও গণতন্ত্রের জয়যাত্রায় অবদান রেখে চলা এবং সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নয়নে জনসচেতনতা তৈরিতে সারাবাংলার দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলা খুবই প্রশংসনীয়। পোর্টালটি রাষ্ট্র, সমাজ, সংস্কৃতি, রাজনীতি, অর্থনীতি তথা জনমানুষের কল্যাণে অবদান রাখায় এরই মধ্যে স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশের মধ্য দিয়ে পাঠকের হৃদয় জয় করতে সক্ষম হয়েছে। সৃজনশীল, আধুনিক ও উদার গণতান্ত্রিক মতপ্রকাশের চর্চাকে গুরুত্ব দেওয়ায় ছয় বছরের চারা গাছটি শেকড় মেলে আজ পোক্ত বটবৃক্ষ ‘সারাবাংলা’।

“…এ দেশের নাড়িতে নাড়িতে অস্থিমজ্জায় যে পচন ধরেছে, তাতে এর একেবারে ধ্বংস না হলে নতুন জাত গড়ে উঠবে না। … দেশের যারা শত্রু, যা কিছু মিথ্যা, ভণ্ডামি, মেকি ইত্যাকার দূর করতে ‘ধূমকেতু’ হবে আগুনের সম্মার্জনী।”— এ উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য নিয়ে ১৯২২ সালের ১২ আগস্ট প্রকাশিত অর্ধ-সাপ্তাহিক ‘ধূমকেতু’ পত্রিকাটি উপমহাদেশীয় সাংবাদিকতার ইতিহাসে স্বরাজের পূর্ণ স্বাধীনতার দাবি তুলে সূচনা করেছিল অগ্নিযুগের। তেমনি ‘সারাবাংলা” বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের প্রত্যয় নিয়ে ২০১৭ সালের ৬ ডিসেম্বর আত্মপ্রকাশ করেছিল অনলাইন পোর্টালটি। এর নীতি হোক সাংবাদিকতার মাধ্যমে জনসেবা, উন্নয়ন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা এবং অসঙ্গতির বিরুদ্ধে সত্য ও স্বাধীনতার পক্ষে জনগণকে সচেতন করে তোলা। এর জন্য আবশ্যক মা, মাটি ও মানুষের বৃহত্তর কল্যাণে কলম ধরা। এছাড়া উপলব্ধিতে গণ্য হোক, ‘মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান।”

যে বস্তুর নাম সংবাদপত্র বা নিউজ পোর্টাল, তা কী জিনিস তা নামই বলে দেয়। কিন্তু আধুনিক সংবাদপত্র বা নিউজ পোর্টাল ঘটিত বা সংঘটিত বিষয়ের বিবরণই শুধু পরিবেশন করে না, তার ভূমিকা বিশাল ও বিচিত্র। সংবাদ পরিবেশন এখন আংশিক কাজ। তার বাইরেই তার কাজের বিস্তৃতি বেশি। নিরীক্ষণ ও পর্যবেক্ষই বেশি। জীবন ও জগতের সবকিছুই তার উপজীব্য। জীবনের সঙ্গে যুক্ত যেকোনো গুরুতর বিষয়ের দার্শনিক ভিত্তি যদি শক্ত না হয়, তাহলে তা দিয়ে মানুষের কল্যাণ হয় না। সংবাদমাধ্যমেরও দর্শন রয়েছে এবং রয়েছে সাংবাদিকতার নৈতিক ও দার্শনিক ভিত্তি।

একটি বিষয়বস্তু- সমাজের একটি বড় অংশ বিদ্যমান অবস্থা মেনে নিয়ে চলতেই অভ্যস্ত। কিন্তু সমাজের প্রগতিকামী অংশ অর্থাৎ অগ্রসর অংশ বিদ্যমান অবস্থার ইতিবাচক পরিবর্তন চায়। কায়েমি স্বার্থকে আঘাত করা সংবাদমাধ্যমের এখন একটি বড় দায়িত্ব। কায়েমি স্বার্থ সংঘবদ্ধ, সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিককে লড়তে হয় একা। নিঃসঙ্গ লড়াইয়ে তার সঙ্গী না থাকলেও সমর্থক অজস্র। সেটিই সংবাদমাধ্যমের শক্তি। যে সংবাদমাধ্যম বা সাংবাদিকের নৈতিক অবস্থান বা দার্শনিক ভিত্তি শক্ত, জনকল্যাণে সেই সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকের ভূমিকাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

একটি সমাজ গঠনে সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিককে এখন বিভিন্ন ফ্রন্টে লড়াই করতে হয়। রাষ্ট্রের স্বার্থের চেয়ে ব্যক্তির মানবিক অধিকারের গুরুত্ব কোনো অংশে কম নয়, রাষ্ট্রের উপাদানই তা নির্দেশ করে। একদিকে সর্বশক্তির অধিকারী রাষ্ট্র, অন্যদিকে একজন সহায়সম্বলহীন দুর্বল মানুষ। সেই দুর্বলের অধিকার যখন হরণ করে রাষ্ট্র, তার পাশে দাঁড়ায় সংবাদমাধ্যম। সংবাদমাধ্যমকে লড়াই করতে হয় সবচেয়ে শক্তিধরের সঙ্গে। সাংবাদিকের কি সেই অস্ত্র আছে, যার দ্বারা তিনি প্রবল পরাক্রান্ত শক্তিকে মোকাবিলা করবেন? আমি উদ্দীপ্ত কণ্ঠ বলব, হ্যাঁ! আলবত আছে— তার নৈতিক অবস্থান। ইতিহাসও তো তা-ই বলে।

একবিংশ শতাব্দীতে যখন আধুনিক সাংবাদিকতা বিজয়পতাকা উড়াচ্ছে প্রিন্ট, অনলাইন, ইলেকট্রনিক থেকে ডিজিটাল মিডিয়ায়; তখনো কিন্তু সাংবাদিকতা নিয়ে দেশজুড়েই নানা প্রশ্ন উত্তাপিত হচ্ছে। সাংবাদিকতার নৈতিকতা, পেশাদার হিসেবে সাংবাদিকের কর্তব্য এবং জাতীয়তাবাদী দায়িত্ব নিয়ে বিতর্কও কম নয়। ক্ষেত্রবিশেষে সাংবাদিকের ভূমিকা কতটা বস্তুনিষ্ঠ, কতটা কায়েমি স্বার্থ পরিচালিত— এসব আসছে সামনে। আবার পেশাদারি সাংবাদিকতার চলও এখন গোটা দেশে বেড়েছে। মফস্বলেও সাংবাদিকদের গুরুত্বও চোখে পড়ে পত্রিকাভেদে। এ দেশের গ্রামে গ্রামে বহু নাম না জানা সাংবাদিক আজও সাধ্যমতো গ্রামীণ সাংবাদিকতা করে চলেছেন। সামাজিক আন্দোলনে তাদের অবদান ফেলনা নয়, বরং উজ্জ্বল। ইতিহাসসিদ্ধও।

আমাদের স্বাধীন দেশে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা প্রত্যাশিত। সংবাদপত্রের সাথে অনেকেই সংশ্লিষ্ট। সংবাদপত্র তথা গণমাধ্যমের এক বা একাধিক মালিক থাকেন। থাকেন সাংবাদিক ও কর্মীবাহিনী। থাকেন লেখক। বিজ্ঞাপনকর্মী। পাঠক। তাদের প্রত্যেকেরই নিজস্ব বৃত্তের স্বাধীনতা থাকতে হবে সংবাদপত্রকে ঘিরেই। রাষ্ট্রের রয়েছে তিনটি স্তম্ভ— জাতীয় সংসদ, নির্বাহী বা শাসন বিভাগ এবং বিচার বিভাগ। এই তিনটি স্তম্ভের সঙ্গে ‘সংবাদমাধ্যম বা গণমাধ্যম’ অপরিহার্যভাবে যুক্ত হয়ে চারটি স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে আছে রাষ্ট্র। বিপদগ্রস্ত মানুষজন বিপদ থেকে প্রতিকার চাইতে সাংবাদিককেই খুঁজে। গ্রাম, শহর, বন্দরের যেকোনো বয়সের মানুষ গণমাধ্যমকেই দেখে তাদের ভরসা হিসেবে।

গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মূল ভিত্তি জনমত। এই জনমত প্রকাশের অবাধ অধিকার থাকতে হবে, যেন জনগণ ইচ্ছামতো সরকারের পক্ষে-বিপক্ষে মতামত প্রকাশ করতে পারে। এতে কেউ বাধা দিতে পারে না। কোনো ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠান কিংবা সরকার ভুল করলে সাংবাদিকরা সত্য বিষয়টি লেখনির মাধ্যমে তুলে ধরেন। এভাবে জনমত তৈরিতে ভূমিকা রাখে সংবাদপত্র। এটি সংবাদপত্রের অধিকার এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক দায়বদ্ধতা। সাংবাদিকরাও আইনের ঊর্ধ্বে না, না অন্য কেউ। জনগণেরও মৌলিক অধিকার রয়েছে তথ্য জানার। সত্যে সমাদৃত এ তথ্যসমুদ্র বাতিঘরের প্রয়োজন মেটায় সংবাদমাধ্যম। সাংবাদিকরা জনগণের বাইরে নন। সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকের দায়িত্ব ও কাজ হচ্ছে প্রতিকারের মানসে যতসব অসঙ্গতির তথ্যচিত্র রাষ্ট্রযন্ত্র, সরকার বা সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের তথ্য যেকোনো মূল্যে জনসম্মুখে তুলে ধরা। সাংবাদিকের কলম মুক্ত হলে সমাজ ও রাষ্ট্র উপকৃত হয়।

সাংবাদিকতা মানে যা সত্য, যা কঠিন, যা মানুষের জানা দরকার তা বস্তুনিষ্ঠভাবে তীর্যকভাবে তুলে ধরা। এতে কোনোটির সমাধান হয়, কোনোটি চলে সমাধানের পথ ধরে। অন্যদিকে ঘটনাগুলো পবিত্র, আদেশগুলো নিখরুচে, সংবাদ তৈরি হয় সত্যের ভিত্তিতে, কল্পকাহিনী কোনো সংবাদ নয়।’ বোতল অর্ধেক ভরা কিংবা বোতল অর্ধেক খালি বলা গেলেও নেই দোসরা বলার সুযোগ। অর্থাৎ, সত্য-মিথ্যার লাবড়া হবে সাংবাদিকতার গায়ে হলুদ।

সারাবাংলা বস্তুনিষ্ঠ ও নির্ভীক সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে পাঠকপ্রিয়তায় হয়ে উঠুক বাংলার সেরা, সংবাদমাধ্যমের জগতে শুকতারা— এমন প্রত্যাশা করাটা অতিশয়োক্তি হবে না নিশ্চয়।

সারাবাংলা’র সম্পাদকীয় দফতর থেকে ডেপুটি এডিটর সন্দীপন বসু যখন বললো প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর লেখা দিতে, তখন প্রথমেই মস্তিষ্কে এলো— খবর কী? দীর্ঘ দুই বছরের সারাবাংলার শুভানুধ্যায়ী পাঠক হয়ে- অতঃপর ভাবনা থেকে এ লেখা।

লেখক: সংবাদকর্মী

সারাবাংলা/এসবিডিই

মুক্তমত সাকিব আলম মামুন সারাদেশের অনন্য সংবাদমাধ্যম হবে ‘সারাবাংলা’

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর