‘সারাবাংলা’ আরও বিস্তৃত হোক সারাবাংলায়
৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৩:৫৭
যেন এই তো সেদিন; খুব ঢাকঢোল না পিটিয়েই যাত্রা শুরু সারাবাংলার। একে-একে ছয়টি বসন্ত পেরিয়ে পা দিয়েছে সাত বছরে। আজ ৬ পেরিয়ে ৭ বছরে সারাবাংলা ডটনেট। বাংলাদেশের অনলাইন সাংবাদিকতায় অর্ধযুগের পথ পেরুলো সারাবাংলা। সারাবাংলা ডটনেটের এই অগ্রযাত্রায় একজন পাঠক, লেখক ও শুভানুধ্যায়ী হিসেবে শুভ কামনা জানাই।
বাংলাদেশে অনলাইনে তথ্যসেবা বা সংবাদ পৌঁছে দেওয়ার এই অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছে প্রায় দেড় যুগ আগেই। এই পথ ছিল বন্ধুর, উঁচুনিচু-অমসৃণ। ব্রেকিং প্রতিযোগিতা, ভাইরাল কনটেন্ট, অনুমান নির্ভর সাংবাদিকতা অনলাইন সাংবাদিকতা কিছুক্ষেত্র বিপজ্জনক করে তুলেছে। শুরু থেকেই সারাবাংলা এখানে অনেক ব্যতিক্রম। সবার আগে ব্রেকিং, ভাইরাল হওয়ার কনটেন্ট ছাপিয়ে সংশ্লিষ্ট আত্মসম্মান হননের মতো নির্লজ্জ প্রতিযোগিতায় নিজেদের বিরত রেখে চেষ্টা করে আসছে সঠিক খবর খানিক দেরিতে হলেও তুলে ধরার। পাঠক আমাদের সেই আবেদন সানন্দে যে গ্রহণ করেছে এটি প্রমাণ করেছে সারাবাংলার পাঠকপ্রিয়তাই।
সারাবাংলা পাঠকরা দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও রয়েছেন। বিদেশে বসবাসরত প্রবাসীরাও নিয়মিত পড়ছেন। অনেকেই রীতিমতো নিজের লেখায় সারাবাংলার সংবাদকে রেফার করছেন এমন পাঠকপ্রিয়তা সারাবাংলার একান্তই অর্জন। সারাবাংলার শুরু থেকেই দেখছি প্রতিষ্ঠানটি রাজধানী ঢাকা ও বন্দরনগরী চট্টগ্রাম ছাড়াও অন্যান্য বিভাগীয় শহর ও মফস্বল জেলাগুলোর সংবাদ অত্যন্ত দায়িত্ব ও আগ্রহ নিয়েই ছাপিয়ে আসছে। এর বিবেচনা বা মূল্যায়ন সবচেয়ে ভালো করতে আমাদের পাঠকরাই।
পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি জেলার একটি হলো রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা। রাঙ্গামাটির মানুষ এখন সারাবাংলার পাঠক। অনেকেই মুক্তমতে লেখেন, সারাবাংলায় ছবি ছাপান। নিয়মিত পাঠকরা নিয়মিতই সারাবাংলার সাইট ভিজিট করেন। এসব একদিনে তৈরি হয়নি। দীর্ঘ ছয় বছরের সংবাদ সেবায় সারাবাংলা পাঠকের সংবাদ খোরাকির জন্য যে প্রচেষ্টা করে গেছে তারই সুফল এসব প্রাপ্তি।
সারাবাংলা ডটনেটের মত-দ্বিমত ও মুক্তমতে লিখতে পারছেন লেখক, কলামিস্টরা। সংবাদ না লিখেও তুলে ধরছেন সমাজের বিভিন্ন অসংগতি ও দাবি-দাওয়াগুলো। সারাবাংলার মুক্তমত বা সম্পাদকীয় পাতা অনেক দায়িত্ব নিয়ে গুরুত্ব দিয়ে ছাপিয়ে আসছে৷ লেখকের সংখ্যাও বেড়েছে অনেক। সারাবাংলার মুক্তমত পাতার একজন লেখক হিসেবে আমিও তাদের অভিবাদন জানাতে চাই।
বাংলাদেশে সাংবাদিকতার যে ‘আকাল’ শুরু হয়েছে। এটিও মূলত অনলাইন সাংবাদিকতাকেন্দ্রিকই বেশি। অনুমান নির্ভর সাংবাদিকতা ও গুজবের ‘কান দেওয়ার’ কারণে বাড়ছে ভূয়া খবর। এটি অনলাইন সংবাদপত্রের বাড়-বাড়ন্তের ফলে বেশি বাড়ছে। বাংলাদেশে কয়েক হাজার অনলাইন নিউজ পোর্টাল রয়েছে রাজধানীসহ সারাদেশে। মফস্বল জেলায় বহুজন সরাসরি বনে গেছেন সম্পাদকের আসনে। অনলাইন সাংবাদিকতা এসব আয়োজন সহজ করে দেওয়ায় বেড়েছে অনলাইন সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে হুমকিও।
বাংলাদেশে শীর্ষ স্থানীয় যে সব অনলাইন নিউজ পোর্টাল রয়েছে এবং যাত্রার শুরুর পর থেকে এখনো টিকে আছে তাদের বেশ কয়েকটি মধ্যে সারাবাংলা ডটনেট অন্যতম। ভাইরাল সাংবাদিকতা, চমকপ্রদ শিরোনামের নামে অপ-সাংবাদিকতার পথভুলে সারাবাংলাসহ কিছু অনলাইন মাধ্যম এক্ষেত্রে পথিকৃৎ ভূমিকা রেখে আসছে৷ সারাবাংলা মনে করে ভাইরাল হওয়ার চমকপ্রদ শিরোনামের ব্যবহার না করে ভালো কনটেন্ট, গুরুত্বপূর্ণ কনটেন্ট ছাপিয়ে পাঠক প্রিয়তা পাওয়া যায়, ধরে রাখা যায়। সারাবাংলার একজন ক্ষুদ্র কর্ম হিসেবে আমি মনে করি এই অর্জন গৌরবের।
আজ বুধবার (৬ ডিসেম্বর) সারাবাংলা ডটনেট-এর ষষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ৬ পেরিয়ে ৭-এ পা রাখা সারাবাংলার সকল পাঠক, লেখক, ফটোগ্রাফার ও শুভানুধ্যায়ীগণ আমার শুভেচ্ছা জানবেন।আপনাদের সহযোগিতায় পাঠকপ্রিয়তা ধরে রেখে আমরা ছয় বছর পেরিয়ে সাত বছরে পা রাখতে যাচ্ছি। এ জন্য আপনাদের সবাইকে জানাই ধন্যবাদ। ‘সারাবাংলা’ আরও বিস্তৃত হোক সারাবাংলায়।
লেখক: ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, সারাবাংলা ডটনেট, রাঙ্গামাটি
সারাবাংলা/এসবিডিই