Monday 25 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পেঁয়াজের বাজার ঊর্ধ্বগতি; হতাশায় ভোক্তারা

সাকিব আলম মামুন
১০ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৩:৫১

ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের অজুহাতে অস্থির পেঁয়াজের বাজার। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের অজুহাতে একদিনের ব্যবধানে দাম বেড়েছে কেজিতে ১০০ টাকা। একদিন আগের ৯৫-১০০ টাকার ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি দরে। হঠাৎ দাম বাড়ায় বিপাকে সাধারণ ক্রেতারা। ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করার পর দিনই পার্বত্য জেলা রাঙামাটির লংগদুতে দ্বিগুণ দামে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।

বিজ্ঞাপন

পেঁয়াজের দাম বাড়ানোয় অসহায় হয়ে পড়া ক্রেতারা বাজার মনিটর জোরদার করার দাবি জানিয়েছেন। দেশি প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১২০ টাকা কেজি দরে এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।

ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণার পরপরই অনেক ব্যবসায়ী পেঁয়াজ বিক্রি বন্ধ করে দেন আবার অনেকেই বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করেন। শনিবার দুপুর ১২টায় বাজারে দেশি পেঁয়াজ ছোট-বড় সাইজ ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজি ও ভারতীয় পেঁয়াজ ১৯০ টাকা থেকে ২১০ টাকা দরে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। হঠাৎ পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ হলেও মাঠ পর্যায়ে প্রশাসনের তেমন কোনো তৎপরতা এখনো দেখা যাচ্ছে না। প্রায় একই চিত্র উপজেলার অন্যান্য হাট-বাজার গুলোতেও।

এ অবস্থায় ক্রেতাদের দাবি- যারা সিন্ডিকেট তৈরি করে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়েছে তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে বিচার করা হোক। হঠাৎ করে আমদানি বন্ধ এবং দাম বৃদ্ধির কারণে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি সাধারণ ক্রেতাদের।

মূলত দেশের বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে এবং দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার লক্ষ্যে ভারত সরকার আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে। এ ধরনের সিদ্ধান্ত ভারত যে প্রথম নিয়েছে তা নয়। এর আগেও ভারত একাধিকবার পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করেছিল। তখন এ দেশের বাজার সিন্ডিকেট একই কাজ করেছিল। মূলত তাদের কাজ হচ্ছে জনগণের পকেট কাটা।

মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশের মাটি ও আবহাওয়া পেঁয়াজ চাষের জন্য বেশ উপযোগী। ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা গেলে প্রয়োজনীয় পেঁয়াজ দেশেই উৎপাদন করা সম্ভব। তখন আর বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে হবে না। বিপাকে পড়তে হবে না ক্রেতাদের। আমরা দীর্ঘদিন থেকেই লক্ষ্য করে আসছি, আমদানিকৃত পেঁয়াজের আগ্রাসনের কারণে বাংলাদেশের কৃষক পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য পান না।

বিজ্ঞাপন

অন্যদিকে, প্রয়োজনীয় সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের প্রায় শতকরা ৩০ ভাগ পচে নষ্ট হয়ে যায়। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য, ভারতে বছরে দুইবার পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়। একবার শীতকালে আর একবার গ্রীষ্মকালে। বাংলাদেশে শীতকালেই অধিকাংশ পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়। গ্রীষ্মকালে বাংলাদেশে তেমন পেঁয়াজ উৎপাদিত হয় না বললেই চলে। যদিও গ্রীষ্মকালে চাষ করার মতো উন্নতজাতের বারি পেঁয়াজ-২ ও বারি পেঁয়াজ-৫ নামের দুটি উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবন করেছে মসলা গবেষণা কেন্দ্র। ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার কারণে বাংলাদেশে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের চাষ তেমন জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারেনি।

আমরা মনে করি, পেঁয়াজের আমদানি নির্ভরতা কমাতে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সেদিকেই বিশেষ মনোযোগ দেয়া উচিত। বাজারে পেঁয়াজের প্রচুর সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও হঠাৎ দাম বেড়ে যাওয়া একেবারেই অস্বাভাবিক ঘটনা। সরকারের পরিকল্পিত উদ্যোগই কেবল পারে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে। পাশাপাশি প্রয়োজন স্থানীয় প্রশাসন, সরকার, জনপ্রতিনিধি, নেতৃবৃন্দ সহ সচেতন নাগরিকদের যৌথ উদ্যোগ।

লেখক: সংবাদকর্মী

সারাবাংলা/এসবিডিই

পেঁয়াজের বাজার ঊর্ধ্বগতি; হতাশায় ভোক্তারা মুক্তমত সাকিব আলম মামুন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর