Monday 25 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাজার সিন্ডিকেট ভেঙে ভোক্তা অধিকার নিশ্চিত করতে হবে

সাকিব আলম মামুন
১৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৪:২৪

বাজার সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি দেশের মানুষ। নিত্যপণ্যসহ পরিবহণ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও প্রায় সব ধরনের সেবা খাতে চলছে সিন্ডিকেটের নৈরাজ্য।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সিন্ডিকেট ভাঙতে হলে সবার আগে সরকারকে আন্তরিক হতে হবে। এর জন্য দরকার রাজনৈতিক অঙ্গীকার। তবে এসব সিন্ডিকেটের সঙ্গে অনেক ক্ষেত্রে সরকারের নীতিনির্ধারকরাও জড়িত থাকায় তা কখনই ভাঙা সম্ভব হচ্ছে না। এমনকি এ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে শক্ত কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সম্ভব হয় না। মানুষের কল্যাণে কিছু করতে হলে এ সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। বিশেষ করে পরিবহণ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও নিত্যপণ্যের মতো অতি জরুরি খাতের সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারলে মানুষকে স্বস্তি দেওয়া সম্ভব নয়। নিত্যপণ্যের বাজারে তো রীতিমতো তাদেরই রাজত্ব চলছে। যার ফলে সরকার বেঁধে দেওয়া সত্ত্বেও নির্ধারিত দামে বিক্রি হয় না পণ্য। কোনোরকম মনিটরিং ও স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা না থাকায় চাল, ডাল, ডিম, পেঁয়াজ, রসুন, আলু, দুধ, চিনি, তরিতরকারি, মাছ ও মাংসসহ সব ধরনের নিত্যপণ্যের বাজারে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য। ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করার পরপরই দেশের বাজারে বাড়তে থাকে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটির দাম।

বিজ্ঞাপন

পার্বত্য জেলা রাঙামাটির লংগদু উপজেলার বাজারগুলোতে দু’দিনের ব্যবধানেই দ্বিগুণ দাম বেড়ে যায় সব ধরনের পেঁয়াজের। হঠাৎ এমন অস্বাভাবিক দাম বাড়ার কারণে পেঁয়াজ কেনা কমিয়েছেন সাধারণ ক্রেতারাও। যদিও বাজারে নতুন দেশি পেঁয়াজ উঠতে শুরু করায় এখন আবার দাম কমতে শুরু করেছে। হঠাৎ পেঁয়াজের অস্বাভাবিক দাম বেড়ে যাওয়ায় মাঠপর্যায়ে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে সরকার।

বিজ্ঞাপন

সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে বিকালে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন। সচিবালয়ে এ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। ভোক্তা অধিকারের অভিযানের মুখেও পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে বেশি দামে। কখনো কখনো দোষী কিংবা দায়ী ব্যক্তিরা চিহ্নিত হলেও তাদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হয় না। বরং লঘু পাপে গুরু দণ্ড দিয়ে লোক দেখানো শাস্তি দেওয়া হয়। আবার কখনো কখনো অসৎ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়েই দায়িত্ব শেষ করে। বাজার সিন্ডিকেট অবৈধ ও অযৌক্তিকভাবে দাম বাড়াতে মজুত গড়ে তুলছে। দেশি-বিদেশি সব ধরনের ফলেও বাজারে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য।

বাজার করতে আসা ক্রেতাদের বক্তব্য হচ্ছে, বর্তমান সময়ে বাজারে এসে একদামে কোনো পণ্য পাওয়া অনেক কষ্টকর। বাজারে যেসব পণ্য আছে তার দাম সকালে এক রকম আবার বিকালে আরেক রকম। আবার এই বাজারে ৪০ টাকা হলে অন্য বাজার তা হয়তো ৪৫ অথবা ৩৫ টাকা। প্রায় সব পণ্যের ক্ষেত্রেই দোকান বা বাজার ভেদে তারতম্য রয়েছে। এসব হচ্ছে বাজার সিন্ডিকেটের কারসাজি। এরা জনগণের স্বার্থের দিকে নজর দেয় না। এরা বাজারসন্ত্রাসী। কীভাবে অসৎ উপায় অবলম্বন করে দ্রুত ধনী হবে এটাই তাদের প্রধান উদ্দেশ্য। ফলে তাদের কাছে দেশের অসহায় জনগণ জিম্মি হয়ে পড়ে। ক্ষেত্র বিশেষ সরকারও তাদের কাছে জিম্মি। বাজার নিয়ে অতীতে অনেক পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে, প্রচুর লেখালেখি হয়েছে কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। বিক্রেতাদের মানসিকতার কোনো পরিবর্তন হয়নি। এটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক!

আমরা মনে করি, বিক্রেতাদের মানসিকতার পরিবর্তন যতদিন না ঘটবে ততদিন নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির থাকবেই এবং দেশের জনগণও তাদের কাছে জিম্মি থাকবে। দেশের উন্নয়ন হচ্ছে ভালো কথা, সেই উন্নয়নের সুফল যেন সাধারণ মানুষ ভোগ করতে পারে সেদিকে সরকারকে বিশেষ নজর দিতে হবে। এ জন্য দ্রুত বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, ভাঙতে হবে বাজার সিন্ডিকেট। বন্ধ করতে হবে বাজার সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্য।

লেখক: সংবাদকর্মী

সারাবাংলা/এসবিডিই

বাজার সিন্ডিকেট ভেঙে ভোক্তা অধিকার নিশ্চিত করতে হবে মুক্তমত সাকিব আলম মামুন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর