Monday 25 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মানবাধিকার ও জাতিসংঘ

সৈয়দ আমিরুজ্জামান
১০ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৪:১১

Journal of United Nation এ বলা হয়েছে যে, “The establishment of human rights provided the foundation upon which rests the political structure of human freedom. The achievement of human freedom generates the will as the capacity for economic and social progress, the attainment of economic and social progress provides the basic for true peace”.

জাতিসঙ্ঘের প্রাক্তন মহাসচিব উথান্ট এর বক্তব্য হতে বোঝা যায় যে মানুষের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ক্ষেত্রে প্রকৃত কল্যাণ প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যেই মানবাধিকারের উদ্ভব। মানবাধিকার কথাটির ব্যবহার আজ থেকে প্রায় দু’শো থেকে তিনশো বছর আগে থেকে ব্যবহার করা হচ্ছে। যদিও এর প্রকৃত ধারনা খ্রিষ্টপূর্ব প্রায় ২০০০ অব্দ হতে বিরাজ ছিল।

বিজ্ঞাপন

১৯৪৮ সালের ১০ই ডিসেম্বর-এ Universal declaration of Human Rights এর মাধ্যমে মানবাধিকারের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করা হয় যা মানবাধিকারের ইতিহাসে এক বিশেষ মাইলফলক। প্রকৃতপক্ষে আজ থেকে প্রায় ১৪শ বছর পূর্বে আল্লাহ প্রদত্ত দীন ইসলাম অর্থাৎ মুহাম্মদ (সাঃ) কর্তৃক তা প্রণীত হয়েছিল। আজকের এই বিশ্বে মানবাধিকারের গুরুত্ব ও তাৎপর্য সার্বজনীন।

মানবাধিকার কি, তার উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ নিয়ে নীচে আলোচনা করা হল:

মানবাধিকার কি

মানবাধিকার বা “Human Rights” কথাটি দুটি শব্দ তথা human ও rights নিয়ে গঠিত হয়েছে। এখানে অধিকার বলতে এমন সত্তা বা দাবিকে বুঝায় যা মানুষ কর্তৃক সংক্ষরিত। এ অধিকারের ব্যাপারে GilChrist বলেন, “Rights arise from the fact that man is a social being”.

FRW Times তার “Human Rights and Duties” Article এ বলেছেন, “Right is moral power of claim to receive something which is due through justice”.

আমরা এই অধিকারের সংজ্ঞা থেকে মানবাধিকারের সংজ্ঞা পাই।

আমরা মানবাধিকারের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলতে পারি যে, যেসকল মানুষ হিসেবে সকলের জন্য প্রযোজ্য তা হল মানবাধিকার।

ড. শফিক আহমেদ বলেছেন, “মানুষের অস্তিত্ব রক্ষা, ক্ষমতার বিকাশ এবং মর্যাদাপূর্ণ জীবন-যাপনের জন্য একান্তভাবে প্রয়োজনীয় অধিকার হচ্ছে মানবাধিকার”।

বিজ্ঞাপন

গাজী শামসুর রহমান বলেছেন, “সকল দেশের, সকল কালের, সকল মানুষের ন্যূনতম যে অধিকারসমূহ সর্বজনীনভাবে স্বীকৃত, একেই বলা হয় মানবাধিকার”। (মানবাধিকার ভাষ্যঃ গাজী শামসুর রহমান, পৃষ্ঠা:৩৩)

Gaiues Ezjiofor বলেছেন, “মানবাধিকার হল সেসব অধিকারের আধুনিক নাম যাকে ঐতিহ্যগতভাবে অধিকার বলা হয় এবং নৈতিক অধিকার যা প্রত্যেক ব্যক্তি প্রতিটি স্থানে ও সার্বক্ষণিকভাবে এই কারণে পেয়ে থাকে, সে অনান্য সকল সৃষ্টির তুলনায় অধিক বোধশক্তি সম্পন্ন এবং নৈতিক গুণাবলীর অধিকারী। ন্যায়বিচার ছাড়া এসব অধিকার হতে মানুষকে দূরে রাখা যাবে না”। (Protection of Human Rights) মোস্তাফা জামান ভুট্টো বলেন, “মানবাধিকার হল সেই অধিকার যা মানুষের সুস্থ্য, সুন্দর ও শান্তিময় জীবন-যাপনের নিশ্চয়তা দেয়”।

The New Encyclopedia Britannica তে বলা হয়েছে যে, “Rights thought to belong to individual under the natural law as a consequence of his being Human”.

তাহলে আমরা উপরের প্রামাণ্য সংজ্ঞাসমূহ হতে এ কথা নির্ধিধায় বলতে পারি যে, মানুষের যে সকল অধিকার সর্বজনীনভাবে স্বীকৃতিস্বরুপ আর যা যেকোন মানুষের জন্য খর্ব করা হলে পরে তা হবে চরম অন্যায়, সেই অধিকারসমূহ হল মানবাধিকার।

মানবাধিকারের কতিপয় দিকসমূহ

১. মানবাধিকার মানুষের মর্যাদার স্বীকৃতি দেয় এবং আইনগত ও প্রশাসনিক কার্যক্রমের জন্য পথ প্রদর্শনের নীতিমালা দেয়।
২. মানুষের জুলুম-অত্যাচার ও শক্তি প্রয়োগের হাত থেকে রক্ষা করে নিরাপত্তা দেয়।
৩. মানবাধিকারের ফলে এমন একটি প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব দেয় যা সকল ব্যক্তি ও শাসকগোষ্ঠীর মোকাবিলায় অধিকার বাস্তবায়নের গ্যারান্টি দেয় যা হল বিচার বিভাগ।

লেখক: মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক, সাংবাদিক ও কলামিস্ট

সারাবাংলা/এসবিডিই

মানবাধিকার ও জাতিসংঘ মুক্তমত সৈয়দ আমিরুজ্জামান

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর