Monday 25 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

এবার স্মার্ট হাওড় অঞ্চল গড়তে নৌকার বিকল্প নেই

রফিকুল ইসলাম
৪ জানুয়ারি ২০২৪ ১৬:১৯

‘আধুনিক হাওড় অঞ্চল গড়তে আরেকবার নৌকায় ভোট দিন’ – শীর্ষক নির্বাচনী এই সাক্ষাৎকারটি বিগত ২০০১ সালের। যা হাজারো ফটোকপি হয় তিনটি উপজেলায় ২৪টি ইউনিয়নের ভোটারের কাছে পৌঁছে যায়।

তৎকালীন জাতীয় সংসদের স্পিকার ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট মো. আবদুল হামিদ (সত্য সাবেক রাষ্ট্রপতি) জাতীয় সংসদ সদস্য পদে নির্বাচনী প্রচার অভিযানকালে কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার জয়সিদ্ধি গ্রামে তাঁর বুট থেকে রাত ১টার সময় এ সাক্ষাৎকারটি নিই।

বিজ্ঞাপন

অ্যাডভোকেট মো. আবদুল হামিদকে বর্তমানে কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) আসনের ভোটাররা একে একে সাতবার নির্বাচিত করেছিলেন। অপরদিকে তাঁর জনপ্রিয়তা, দলের প্রতি একনিষ্ঠতা এবং রাজনৈতিক নেতা হিসেবে সৎ, অতি বিশ্বস্ত ও আস্থাভাজন হওয়ায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে ডেপুটি স্পিকার, স্পিকার, বিরোধীদলীয় উপনেতা এবং দুবার রাষ্ট্রপতি বানান।

‘আধুনিক হাওড় অঞ্চল গড়া’ তাঁর নির্বাচনী অঙ্গীকার রক্ষা করেই ছেড়েছেন তিনি। উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে হাওড় অঞ্চল।

মো. আবদুল হামিদ দেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি হওয়ায় এ আসনটি শূন্য হয়। ফলে ২০১৩ সালের ৩ জুলাই তাঁরই বড় ছেলে প্রকৌশলী রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক উপনির্বাচনে বিজয়ী হয়ে হাওড়বাসীর ভাগ্যোন্নয়নে ওই হাল ধরেন। ফলে ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম উপজেলার ভোটাররা তাকে তিন তিনবার নির্বাচিত করেন।

রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক তার বাবার উন্নয়নের ওই ধারা ধরে রেখে চলেছেন এবং হাওড়ের মানুষের কল্যাণে জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন।

করোনাকালীন মহামারির সময় দুর্যোগের মুহূর্তে যখন কৃষি শ্রমিক বা দাওয়ালের অভাবে কৃষকরা তাদের একমাত্র বোরো ধান গোলায় তোলা নিয়ে শঙ্কিত ও দিশেহারা ছিল, তখন নিজের জীবন বাজি রেখে দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে কৃষকদের সেই পাকা ধান কেটে কেটে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিয়েছেন তিনি। যা দেশে রাজনৈতিক নেতৃত্বের ক্ষেত্রে এক নজিরবিহীন দৃষ্টান্তে বহুল প্রশংসিত হয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

করোনায় কর্মহীন কেউ যেন না খেয়ে থাকেন সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন এবং ঈদে অসহায় মানুষের মাঝে সাহায্য নিয়ে দাঁড়িয়েছেন। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে অধিকসংখ্যক প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করেছেন।

এছাড়া প্রান্তিক কৃষকের মাঝেও বিনামূল্যে বিতরণ করেছেন ধানসহ বিভিন্ন ফসলের বীজ। ফলে তিনি ক্রমেই হয়ে উঠেন আমজনতার নিবেদিত প্রাণ নেতা।

রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক বঙ্গভবনের জৌলুস ও ভোগবিলাস ছেড়ে হাওড়ে পড়ে রয়েছেন। সাধারণদের সুখে-দুঃখে পাশে থেকেছেন। দিনরাত পরিশ্রম করে চলেছেন হাওড় অঞ্চলের মানুষের ভাগ্যকে পরিবর্তন করতে। হাওড়কে শহরে রূপান্তরিত করেছেনও।

হাওড়ের দুর্গম তিন উপজেলা ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রামকে সংযুক্ত করতে ৮৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করেছেন প্রায় ৩০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সারাবছর চলাচলের উপযোগী স্বপ্নের অলওয়েদার সড়ক। যা হাওড়ে নবদিগন্তের সূচনা করেছে। গড়ে তোলা হয়েছে পর্যটন কেন্দ্রও।

গত ২০২২ সালের ৮ অক্টোবর ‘হাওড়ের বিস্ময়’ হিসেবে পরিচিত এই অলওয়েদার সড়কটি শুভ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ভবিষ্যতে এই সড়কটি পার্শ্ববর্তী জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলা হয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সঙ্গেও সংযুক্ত করার প্রকল্প হাতে রয়েছে।

রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক বিভিন্ন স্থানে পথসভায় বলছেন, তার এবারের নির্বাচনী অঙ্গীকার স্মার্ট হাওড় অঞ্চল গড়া। সে লক্ষ্যে সারাবাংলার সাথে হাওড়বাসীর সারাবছর সড়ক যোগাযোগের জন্য প্রায় ৬ হাজর কোটি টাকা ব্যয়ে ১৫ কিলোমিটার উড়ালসড়ক নির্মাণের কাজ টেন্ডারের পর্যায়ে রয়েছে বলেও জানানো হয়।

তিনি জানান, ‘কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলা সদর হতে করিমগঞ্জ উপজেলার মরিচখালী পর্যন্ত উড়াল সেতু নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে একনেক। প্রকল্পের আওতায় একইসাথে কিশোরগঞ্জ-করিমগঞ্জ সড়কের নাকভাঙা মোড় থেকে মরিচখালী বাজার পর্যন্ত বিদ্যমান ১৩ দশমিক ৪০ কিলোমিটার সড়কও প্রশস্ত করা হবে।

তিনি উড়ালসড়ক মিঠামইন উপজেলার সঙ্গে মিঠামইন সেনানিবাস ও করিমগঞ্জকে সরাসরি সড়ক যোগাযোগের আওতায় আনবে উল্লেখ করে বলেন, হাওড়ের ওপর দিয়ে এই উড়ালসড়ক হলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি ফসল বাজারজাতকরণে উপকার পাবেন কৃষক। তাছাড়া হাওড় অঞ্চলের সঙ্গে কিশোরগঞ্জ জেলা সদরসহ ঢাকা, সিলেট ও অন্যান্য জেলার সঙ্গে সারাবছর সরাসরি নিরবচ্ছিন্ন চলাচলের জন্য নির্মিত হচ্ছে স্বপ্নের এই উড়ালসড়ক।

তিনি আরও বলেন, এটি বাস্তবায়ন হলে যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তনের পাশাপাশি হাওড়ের মানুষের জীবনযাত্রা ও অর্থনীতির সঙ্গে বিকশিত হবে পর্যটন শিল্প।

হাওড়ের বিদ্যমান সড়কের মূল যানবাহন এখন ইজিবাইক, নছিমন ও করিমন। দূরদূরান্ত থেকে হাওড় দেখতে আসা কিছু মানুষ গাড়ি নিয়ে আসেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাওড়ের উড়ালসড়ক দিয়ে পদ্মা সেতু ও বঙ্গবন্ধু সেতুর চেয়ে বেশি যানবাহন চলবে।

তাছাড়া মেগা প্রকল্প ও শহরের নাগরিক বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাসহ শিক্ষা, আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক পদক্ষেপও হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়।

এ আসনে অন্য আরও পাঁচজন প্রার্থী থাকলেও তারা কার্যত জনবিচ্ছিন্ন। যাযাবর। নেই কোনো সাংগঠনিক ভিত্তিও। তবে বাস্তবিকই আওয়ামী লীগ টানা তিনবার ক্ষমতায় থাকাকালে স্থানীয় কতপয় রাজনৈতিক নেতা ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থের জন্য নানান ক্ষেত্রে ও জায়গায় নেতৃত্বের পরিবর্তে কর্তৃত্ব খাটিয়ে সাধারণদের মন বিষিয়ে তোলা হয়েছে। এর জন্য হাওড় অঞ্চলে ব্যাপক উন্নয়ন করা সত্ত্বেও নৌকার প্রার্থীর বৈঠা বাইতে হচ্ছে বেশি।

শেষমেশ অনাকাঙ্ক্ষিত এসব শূন্যতা কাটিয়ে ওঠে বরাবরের মতো এবারও দেখা যাচ্ছে নৌকার গণজোয়ার। নৌকার পালেই বইছে হাওয়া।

আর রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিকের নির্বাচনী প্রতিটি পথসভায় আছড়ে পড়ছে জনতার ঢেউ। জোর স্লোগান উঠেছে, ‘বাইয়া দে – নৌকা’।

আওয়ামী লীগ এবারও সরকার গঠনের সুযোগ পেলে রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিকের জনপ্রিয়তার বদৌলতে হাওড়বাসী তাকে মন্ত্রী হিসেবে পাবেন বলে পথসভাগুলোতে উচ্চকিত হচ্ছে।

লেখক: জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও কলামিস্ট, সহযোগী সম্পাদক, আজকের সূর্যোদয়

সারাবাংলা/এসবিডিই

এবার স্মার্ট হাওড় অঞ্চল গড়তে নৌকার বিকল্প নেই মুক্তমত রফিকুল ইসলাম

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর