Monday 25 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নির্বাচনী ইশতেহার ও পর্যালোচনা

ড. এইচ এম সাইদুর রহমান
৬ জানুয়ারি ২০২৪ ১৫:৩০

৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের ১২তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দল আওয়ামীলীগের ১১টি ইশতেহার এর একটি হচ্ছে সর্বস্তরের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সুরক্ষা ও চর্চার প্রসার।

এই দলটি বাংলাদেশের স্বাধীনতার সাথে, একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশের সাথে জড়িত। দলটির রয়েছে স্বৈরাচার বিরোধী সফল আন্দোলনের ইতিহাস।

বিগত বছরগুলোতে ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন, রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সেবাসমূহ ডিজিটালাইজড করা, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহ বৃদ্ধি করা, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি করা, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ইত্যাদি সহ নানাভাবে সফলতার নিদর্শন রেখেছে। তেমনি কিছু সমালোচনারও উদ্ভব হয়েছে। যেমন: দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতি, অর্থ পাচার, আমলাতন্ত্রের লাল ফিতা, রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন ইত্যাদি।

প্রখ্যাত রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ফ্রান্সিস ফুকুইয়ামা বলেছেন একটি আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র তিনটি প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়: রাষ্ট্র, আইনের শাসন, এবং গণতান্ত্রিক জবাবদিহিতা। রাষ্ট্র তার শক্তি ও সামর্থ্য দিয়ে দেশকে রক্ষা করতে, আইন প্রয়োগ করতে এবং সকল স্তরের জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করতে কাজ করে।

আইনের শাসন শুধুমাত্র গণনাগরিকদের নিয়ন্ত্রণ করাই নয়, ক্ষমতায় থাকার প্রবণতা আছে এমন রাজনৈতিক অভিজাতদেরও নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমে আপামর জনসাধারণের মূল্যবোধকে সমুন্নত করা এবং বহুদলীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।

সবশেষে, এই তিনটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ভারসাম্য ও সমন্বয় সাধনই শাসকদের প্রধান কাজ। ম্যাক্স ভেবার আরও বলেছেন যে একটি আধুনিক রাষ্ট্রকে পক্ষপাতহীন হতে হবে। যেখানে সব নাগরিক কে সমান চোখে দেখতে হবে। যেখানে কোন একটি বিশেষ গোষ্ঠী যারা ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে আছেন তাদের বিশেষ কোন সুবিধা দেবে না।

বিজ্ঞাপন

যদি আমরা আমেরিকার গণতন্ত্রের ইতিহাসের দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাবো উনিশ শতকের শুরুর দিকে আমেরিকাতেও শাসক গোষ্ঠী তার নিজ দলের লোকজনদের বিশেষ সুবিধা দিয়ে থাকতেন। আসলে এমনটা হওয়া কোন অস্বাভাবিক বিষয় নয়। ফুকুইয়ামা বলেছেন এমনটা হওয়া আসলে গণতন্ত্রের উন্নয়নেরই লক্ষণ।

আমরা যদি বর্তমান সরকারের কর্মকাণ্ড সার্বিকভাবে পর্যালোচনা করি তবে দেখতে পাই যে জননেত্রী শেখ হাসিনা পুনরায় জেলা পরিষদ চালু করেছেন। দক্ষতা ও নিরপেক্ষতার সাথে স্থানীয় সরকার নির্বাচন সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন।

নিজের মন্ত্রীসভায় যে সব সদস্য কোন বিতর্কে জড়িয়েছেন তাদের মন্ত্রিত্ব বাতিল করেছেন, নিজ দলের বেপরোয়া কর্মীকে সতর্ক করেছেন কিংবা শাসিয়েছেন। এমনকি পদচ্যুত করেছেন। হয়তো এর পরিমাণ বা পরিধি এর বিষয়ে আরও অনেক কাজ করবার আছে যা আমরা এই দলটির কাছ থেকে আশা করি।

দেশের প্রখ্যাত এক গুণীজন বলেছেন, “মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়”। আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন দেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধশালী করা। উনি উনার স্বপ্নের মতো মহত্তম। যার সক্ষমতা বেশী তার কাছে দাবীও থাকে বেশী।

তাই আমরা দেশের জন্যগণ চাই আওয়ামীলীগ দলটি আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে তাদের ইশতেহার অনুযায়ী দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সুরক্ষা ও চর্চার প্রয়াসে সকল পর্যায়ে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে রাষ্ট্রযন্ত্রের সর্বোচ্চ ক্ষমতা অর্পণ করুক, ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে প্রশাসনকে আরও বেগবান করুক, এবং সকল নাগরিককে সমান চোখে দেখার মাধ্যমে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নকে রোধ করুক।

লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, মনোবিজ্ঞান বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এসবিডিই

ড. এইচ এম সাইদুর রহমান নির্বাচনী ইশতেহার ও পর্যালোচনা মুক্তমত

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর