নতুন সরকারের কাছে তরুণদের প্রত্যাশা
২১ জানুয়ারি ২০২৪ ১৭:৫৫
তরুণ মানে এককথায় বলা যায় নবীন কিংবা অপরিণত। এই অপরণিত-নতুনদের পরিণত করার দায়িত্ব সমাজের এবং দেশের। একটি দেশের অন্যতম সম্পদ কিন্তু তরুণরাই। এদের সঠিকভাবে ব্যবহার কারে বিশ্বের অনেক দেশ আজ উন্নতি হচ্ছে। লাভবান করছে নিজেদের দেশকে। শক্তির দিক দিয়েও এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটা ভিন্ন। কারণ আমাদের দেশে তরুণদের নিয়ে সাড়া জাগানোর মতো কিছু তৈরী হয়নি। তরুণদের প্রত্যাশা অনেক আছে। কিন্তু প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির মধ্যে রয়েছে বিশাল ব্যবধান।
অথচ তরুণরা দেশের জন্য কতটা করতে পারে তার বড় প্রমাণ ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬৯’র এর গণঅভ্যুত্থান এবং ৭১’র মুক্তিযোদ্ধ। ইতিহাসের পাতা উল্টালে দেখতে পাবেন তরুণদের অবদান কতটা। শুধু বাংলাদেশ নয় পৃথিবীর সকল দেশে তরুণদের অবদান রয়েছে অত্যধিক।
নতুন বছরের শুরুতে নতুন মেয়াদে আবারও প্রধানমন্ত্রী হলেন শেখ হাসিনা। তিনিই দেশের ইতিহাসে প্রথমবার তরুণদের মুখোমুখি হয়েছেন। এমন প্রধানমন্ত্রীকে সবাই বারবার চায়। তিনি সেসময় জানতে চেয়েছিলেন তরুণরা কেমন বাংলাদেশ চেয়েছে। তরুণদের জন্য বিগত সময়ে কতটা করেছেন, আর কতটা করেননি সেই তর্কে যেতে চাই না। নতুন মেয়াদে নতুন সরকারের কাছে জানতে চাই তরুণদের নিয়ে ভাবনা কি?
আজকের তরুণরা একটি সুন্দর পরিচ্ছন্ন দেশ চায়। যেখানে থাকবেনা কোনো সহিংসতা আর হানাহানী। আজকের তরুণরা দেশকে নিয়ে অনেক চিন্তা করছে। প্রতিনিয়ত দেশের খবরা-খরব জানতে চেষ্টা করে তারা। কিন্তু প্রশাসন, রাষ্ট্র তরুণদের নিয়ে কতটা ভাবে?
দেশের প্রশাসন এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিদের একটা কথা পরিষ্কার করে বলতে চাই, আজকের তরুণরা মুখে আর বিশ্বাস করে না। তারা এখন বাস্তবতায় বিশ্বাস করে। তাদের এখন আশ্বাস দিয়ে কোনো লাভ নেই। বর্তমান তরুণ প্রজন্ম কাজে বিশ্বাস করে, কথায় নয়। আজকের তরুণরা আগামীর বাংলাদেশ গড়বেন এমনটা আমাদের প্রধানমন্ত্রী সবসময় বলেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় যখন দেখি আমাদের দেশে তরুণ বেকারের সংখ্যা অন্যান্য দেশের তুলনায় অধিক। এই বেকার তরুণদের মাধ্যমে বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে। এদের চিন্তা চেতনা আর বুদ্ধি যদি কাজে লাগাতে পারছে না রাষ্ট্র।
এই বাংলাদেশ সোনার বাংলায় পরিণত করতে হলে অবশ্যই তরুণদের কাজে লাগাতে হবে। বর্তমান তরুণ সমাজও এমনটা চায়। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে তরুণ সমাজের বিকল্প নেই। একটা কথা সকলের মনে রাখতে হবে আজকের তরুণরাই আগামী দিনে দেশ পরিচালনা এবং বড় বড় কাজের নেতৃত্ব দিবে। এখন থেকে যদি তরুণদের দক্ষ করে গড়ে তুলা যায় তবে বাংলাদেশের ভবিষ্যত আরো সুন্দর হবে। তাই দেশ গঠনে তরুণদের চাওয়াকে যেমন গুরুত্ব দিতে হবে ঠিক তেমনি তাদের পর্যাপ্ত সুযোগও দিতে হবে।
আজ আমাদের দেশে লাখ লাখ শিক্ষিত বেকার তরুণ যুব সমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। যাদের চাইলে দেশের উন্নয়নে কাজে লাগাতে পারে সরকার। তরুণদের দাবি একটাই, পর্যাপ্ত পরিমাণ কর্মসংস্থান। দেশে যেনো বেকার না থাকে। একইসাথে তরুণদের মেধাকে সঠিকভাবে মূল্যায়ণ করতে হবে। তরুণদের জন্য কর্মমূখী শিক্ষা, কারিগরি শিক্ষাকে আরও বেশি জোরদার করতে হবে। তাহলেই তরুণরা দক্ষ হবে এবং দেশের সম্পদ হয়ে দাঁড়াবে। ভালো ভালো মেধা সম্পন্ন তরুণদের যেনো সরকার এবং রাষ্ট্রের কাজে লাগাতে পারে সেটাই এখন তরুণ সমাজের প্রত্যাশা।
অথচ আমাদের দেশের অনেক মেধাবী তরুণরা আজ দেশের বাইওে গিয়ে শ্রম দিচ্ছে। অন্যান্য দেশকে তারা উন্নত করতে ভূমিকা রাখছে। অথচ আমাদেও দেশের তাদের মেধা আর শ্রম কেন কাজে লাগাতে পারছে না সেটাই বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে এখন।
পরিেশষে বলা যায়, এই প্রজন্মেও তরুণরা দেশকে নিয়ে অনেক বেশি সচেতন। তারা দেশের জন্য সবসময় প্রস্তুত থাকে, দেশের জন্য কাজ করতে সবসময় আগ্রহী থাকে। তাদের দেশে কাজে লাগানোর দায়িত্ব সরকারের। তাদের প্রত্যাশা পূরণ করার দায়িত্বও সরকারের।
লেখক: কলামিস্ট
সারাবাংলা/এসবিডিই