পটিয়া হোক আগামীর স্মার্ট মডেল শহর
২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৯:২৫
প্রাচীনকাল থেকে চট্টগ্রামে শিক্ষাদীক্ষা, সংস্কৃতি ও বীরপ্রসবিনী পটিয়ার বেশ নামযশ রয়েছে। পটিয়া একসময় কচুর ছড়ার জন্য বিখ্যাত ছিল। কোনো এক পল্লিকবি লিখেছেন, “আসল সৈয়দ যারা মাইল্যাপাড়া, হারলাতে ফকির বেশ পটিয়াতে কচু ছড়া চরকানইতে ভোয়ইয়া বেশ” কচুর ছড়ার পাশাপাশি পেয়ারা, লবণ ও মাছের পোনার জন্য সুপরিচিত। দেশবরেণ্য শিল্প উদ্যোক্তার মধ্যে এগিয়ে আছে, এ যুগের হাজি মহসিন খ্যাত আলহাজ¦ সাইফুল আলম মাসুদ (এস আলম), যিনি সমগ্র বাংলাদেশে বেকারত্ব দূরীকরণে এগিয়ে, বর্তমানে পটিয়াকে ব্যাংকারের শহর বললেও ভুল হবে না। এ জন্য বোধহয় চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজের প্রয়াত অধ্যক্ষ সাফায়েত আহমেদ সিদ্দিকী স্যার বলেছিলেন, Patiya is the Brain Box of Chattogram.
চট্টগ্রামের সাহিত্য-সংস্কৃতির গুণিজনদের ঐতিহ্যের তীর্থস্থান ‘পটিয়া’। পটিয়া নামের উৎপত্তি সম্পর্কে ‘শহর চট্টগ্রামের ইতিকথা’ রচয়িতা প্রখ্যাত গবেষক আবদুল হক চৌধুরীর অভিমত হচ্ছে, পটুয়া থেকে হয়ত পটিয়া নামের উৎপত্তি হতে পারে। পটুয়া বলতে পট,চিত্র অংকন বা মূর্তি নির্মাণকারীদেরকেই বুঝায় সে সময় পটিয়ায় এ শ্রেণীর লোকের আধিক্য ছিল।
প্রাক ঐতিহাসিককালে পটিয়ার আদিনাম ছিল ‘পটি’ লোক ও কারুশিল্পের একটি প্রাচীন নাম ‘পট’। এ ‘পট’ শব্দের উদ্ভব হয় পট্্র শব্দ থেকে এ পট্র মানে কাপড়। আর পট মানে চিত্র । পটি, পটিটা, পটহ, পটইয়া , পটিয়া ,অথ্যাদি মূল উৎসঃ পতিপট্রি শব্দ থেকে পটিয়া নামকরণ হয়।
দেশবরেণ্য অনেক গুণিজনের শহর পটিয়া: চন্দ্রাবতী কাব্যের রচিয়তা প্রাচীনযুগের অন্যতম কবি কোরেশি মাগন ঠাকুরের পিতৃভূমি পটিয়া, আবদুল করিম সাহিত্যবিশাদ, ডা. অন্নদাচরণ খাস্তগীর, ডক্টর আহমেদ শরিফ, কবি শশাঙ্কমোহন সেন, সমাজ বিজ্ঞানী ডক্টর অনুপম সেন, গণিতবিশারদ ডক্টর আতাউল হাকিম, অর্থনিতীবিদ ও বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশনের চেয়ারম্যান ডক্টর নুরুল ইসলাম, গুণিজনদের নামে তাঁদের স্বস্ব গ্রামে বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তাদের নামে পাঠাগার স্থাপনসহ সড়কের নামকরণ করে পটিয়া পৌরসদরে গুণি মানুষদের পোট্রেট করে তাঁদের সংক্ষিপ্ত জীবনি সংরক্ষণ করা যেতে পারে।
বীরপ্রসবিনী বিপ্লবী ও একাত্তরের স্মৃতি বিজড়িত পটিয়ায় জাদুঘর স্থাপন করা যেতে পারে
ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের নেপথ্য নায়ক মাস্টারদা সূর্যসেনের সহযোদ্ধা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, বিপ্লবী সাবিত্রি দেবীসহ অনেক বিপ্লবী ও শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের জন্ম পটিয়ায়। প্রত্যেক শহিদ ও মুক্তিযোদ্ধাদের নামে তাদের জীবনের পাঠ নেয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠাগার স্থাপন সহ তাঁদের বাড়ির নামের সড়কটি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নামে করতে পারেন। মু্িক্তযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে এ ব্যাপারে একটি প্রজ্ঞাপন ও ইতোমধ্যে জারি হয়েছে। একাত্তরের শহিদ ও বীরমু্িকতযোদ্ধাদের স্মৃতি স্তম্ভসহ স্থাপনসহ পটিয়ার বধ্যেভূমিগুলো সংরক্ষনসহ ৭১ এর মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক ইতিহাস ও তাঁদের ব্যবহৃত পোষাক-আশাক ও আসবাবপত্র নিয়ে পটিয়া মুক্তিযোদ্ধা জাদুকর প্রতিষ্টা এখন শুধু সময়ের দাবি।
দক্ষিণ চট্টগ্রামের মিনি সংসদখ্যাত পটিয়া ক্লাবের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনুন: ১৯৪৪ সালে পটিয়া ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা ভারতের হুগলি জেলার ব্যান্ডেল গির্জা এলাকার বাসিন্দা তৎকালীন সিও (সার্কেল অফিসার) স্যার গ্রেগরি গোমেজ (এস,জি, গোমেজ) তৎকালীন সাবরেজিস্ট্রার ও কথাশিল্পী মাহাবুব উল আলম( চট্টগ্রাম চারুকলা কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ শিল্পী সবিহ্ উল আলমের বাবা), পটিয়া ক্লাব প্রতিষ্ঠার পেছনে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। পটিয়া ক্লাবের পূর্ব নাম ছিল ‘বরদা মেমোরিয়াল হল’ আদিকালের সংস্কৃতি কর্মযজ্ঞের প্ল্যাটফর্ম বড়ো দা বাবুর হল। পটিয়া ক্লাবের ভূমিদাতা ছিলেন এ্যাডভোকেট আহমদ কবির মোক্তার (পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রয়াত প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেম মাস্টারের শশুর) এবং গোলামুর রহমান সওদাগর। দক্ষিন ভুর্ষি গ্রামের প্রভেন্দু বিকাশ দাশ ও অর্ধেন্দু বিকাশ দাশ। তাঁদের বাবার নাম ছিলো বরদা চরণ দাশ। যার নামে একসময় নামকরণ হয়েছিলো “বরদা মেমোরিয়াল” হল। কালের বিবর্তনে আজকের “পটিয়া ক্লাব”। পটিয়া ক্লাবের সবচেয়ে আকর্ষণ ছিল মঞ্চ নাটক। মাটি ও টিন শ্যাডের তৈরি নাট্য মঞ্চে, অভিনয় করতে এসেছিলেন,জনপ্রিয় অভিনেতা আনোয়ার হোসেন, নায়িকা আনোয়ারা, অঞ্জু ঘোষ, সেলিনা হোসেন, ও ইত্যাদি অনুষ্ঠানের উপস্থাপক হানিফ সংকেত সহ আরো অনেক গুণি শিল্পীরা।
১৯৪৬ সালে চন্দনাইশের,সাতবাড়িয়া গ্রামের কাঠ ব্যাবসায়ী পটিয়া ক্লাবের আজীবন সদস্য প্রয়াত মোস্তাফিজুর রহমান সওদাগর পাঠাগার পটিয়া ক্লাবে পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। যা মোস্তাফিজুর রহমান পাঠাগার নামে পরিচিত। পাঠাগারটি ছিলো পটিয়া ক্লাবের প্রাণ। মঞ্চ আছে কিন্তু নাটক মঞ্চয়িত হয় না। পটিয়া ক্লাবের হারানো দিনের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনুন এবং সাংস্কৃতি কর্মকান্ড পুনরায় চালু করার ব্যবস্থা করুন। মোস্তাফিজুর রহমান পাঠাগারটি সবার জন্য উন্মোক্ত করে দেয়া হোক।
পটিয়া সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয় ও সরকারী মহিলা কলেজ জাতীয়করণ করা হোক: অতীতে অনেকে আবদুস সোবহান রাহাত আলী উচ্চ বিদ্যালয় ও পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়কে একত্রিত করে জাতীয়করণ করার আশ্বাস দিয়েছিল কিন্তু কেউ কথা রাখেনি। পটিয়াবাসীর প্রাণের দাবী পটিয়ায় একটি সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয বিশেষ করে আপনার বিদ্যাপিঠ আপনার অহংকার “আবদুস সোবহান রাহাত আলী উচ্চ বিদ্যালয়” কে জাতীয়করণের লক্ষ্যে আপনি ভালোবাসার হাত প্রসারিত করবেন। পটিয়া এতো বড়ো উপজেলা শহর অথচ একটি সরকারী মহিলা কলেজ নেই। পটিয়াবাসীর প্রত্যাশা আপনি একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করতে এগিয়ে আসবেন।
সাংস্কৃতি চর্চায় আলোকিত পটিয়া: দেশবরেণ্য গীতীকার ও লোককবি আস্কর আলী পন্ডিত, গীতীকার আবদুল গফুর হালী, দেশবরেণ্য গিটার জাদুকর গায়ক আইয়ুব বাচ্চু, গোপাল দাশ গুপ্ত, নির্মলেন্দু চৌধুরী, তপন বৈদ্য, রাণী প্রভা চৌধুরী, গায়ক তপন চৌধুরী, আবদু রশীদ কাওয়াল, সেলিম নেজামী, সনজিত আচার্য, মিলন আচার্য, গীতা আচার্য, রনজীত বরণ চৌধুরী, শুভ্রা দাশ, মঞ্জুরী বড়ুয়া, নিশীতা বড়ূয়া, ইলমা বখতিয়ারসহ আরো অনেক গুণীশিল্পীর জন্ম পটিয়ায়। এলআরবি ব্যান্ডের প্রয়াত গিটার যাদুকর আইয়ুব বাচ্চুর নামে একটি সাংস্কৃতিক একাডেমি ও আইয়ুব বাচ্চুর স্মৃতিস্তম্ভ ও গিটারের আদলে মুর্যাল স্থাপন করা যেতে পারে। পাশাপাশি পটিয়ায় স্ব প্রগতীশিলরা স্বাধীনভাবে সংস্কৃতি কর্মকান্ড করতে পারে না। রাজনীতিক নেতারা এসে হস্তক্ষেপ করে বিষয়টি নিবিড়ভাবে তদারকি করার সবিনয় নিবেদন করছি।
পটিয়ায় খেলার মাঠ ও শিশু পার্ক স্থাপন: শিশুরা হাসলে যেমন পৃথিবী হেসে উঠে মন খারাপ হলে পৃথিবীর মন খারাপ। আগামীর পটিয়া হোক শিশুদের জন্য স্বর্গের। শিশুরা ভুলতে বসেছে দুরন্ত শৈশব, আগের মতো খেলার মাঠ নেই, ব্যাঙের ছাতার মতো চারিদিকে দালান। সবাই বাড়ি নির্মাণের প্রতিযোগিতার দৌঁড়ে ব্যস্ত। শিশুদের খেলার মাঠের কথা কেউ ভাবে না। পটিয়া এতো বড়ো একটা উপজেলা অথচ শিশুদের জন্য একটা পার্ক নেই। পার্ক এবং পর্যাপ্ত খেলার মাঠ না থাকার কারনে অনেক শিশু গৃহবন্দী কবুতের কোপের মধ্যে অস্থির সময় পার করেন। গ্রামীন খেলুধুলা ভুলে যেতে বসেছে। অনেকে মোবাইল আসক্তি হয়ে পড়ছে। আজকের শিশু আগামীর কান্ডারী। আমি জানি আপনি একজন শিশু প্রেমী শিশুদেরকে আপনি অনেকে ভালোবাসেন। আপনার হাত ধরে পটিয়ায় একটি শিশু স্বর্গ ও শিশু পার্ক স্থাপন করা হোক।
পটিয়ার পুরানো স্থাপনাসমুহ সংরক্ষন করা হোক: পটিয়া পুরানো জমিদার বাড়ি, শতো বছরের আদি মসজিদ, মন্দির, গির্জা, পুরানো স্থাপত্য কারুকার্যমন্ডিত শিল্প ও নকশাগুলো আগামী প্রজন্মদের স্তপত্য শিল্পের গবেষণার জন্য সংরক্ষণ করা জরুরি। পটিয়া শতবর্ষী বেশ কয়েকটি মসজিদ, পুরানো বাড়ি সংস্কার করতে গিয়ে ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। পটিয়ার কালের সাক্ষী আদি স্থাপনসমুহ সংরক্ষণ করুন।
পটিয়ার দিঘী ও বিলুপ্ত খালসমুহ পুনরুদ্ধার করা জরুরী: পটিয়াকে একসময় বলা হতো দিঘির শহর। বর্তমানে অনেক দিঘির জৌলসুতা হারিয়েছে। অনেক দিঘি বিলুপ্তের পথে। পরীর দিঘি, বিনোদ নন্দির দিঘি, লাউয়ের দিঘি, হাদুর দিঘি, হরিচরণ খানুর দিঘি, ঠাকুরানির দিঘি, নিধিরামের দিঘি, বৃন্দাবনের মাতার দিঘি, রাম সাগরের দিঘি, আমির খাঁর দিঘি, রত্তনের দিঘি, ভাইয়ের দিঘি, জনুলালার দিঘি, ইউসুপ চৌধুরীর দিঘি, দৌলত খাঁর দিঘি, সুবেদারের দিঘি, ভট্টাচার্য দিঘি, ষষ্টি বৈদ্যর দিঘিসহ আরো অনেক নাম না জানা দিঘি ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।
পটিয়ার নয়নাভিরাম চানখালী, শ্রীমতি, বাঁকখালীসহ এদের উপশাখা খাল বিশেষ করে পটিয়া পৌরসভার এলাকার উত্তর গোবিন্দারখীল খাল, সুচক্রদন্ডী খাল, পটিয়া কলেজের দক্ষিণ পাশ সংলগ্ন খাল, হাবিবুর পাড়া খাল, টুইটে খাল, মির্জা বাড়ি ও খান বাড়িসংলগ্ন খাল, বনা খালসহ, সিও অফিস সংলগ্ন খালসমুহ পুনরুদ্ধার করে খনন করা অতিব জরুরী। না হয় অদুরভবিষ্যতে পটিয়া পৌরসভাসহ পাশ^বর্তী ইউনিয়নগুলো ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ ব্যাপারে পানি উন্নয়নবোর্ডসহ কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
পটিয়া হারিয়ে যাওয়া শিল্পসমুহ উন্নয়ন করার লক্ষ্যে সুদুর প্রসারি পরিকল্পনা করা যেতে পারে: পটিয়ায় লবণ শিল্প, মৎস্য শিল্প, পান শিল্প,চট-কার্পেট শিল্প, কাগজ শিল্প, পটিয়ার টি-এস্টেট, পাহাড়ী এলাকায় লেবু-পেয়ারা, কচুর ছড়া সহ নানা জাতের সবজি ও ফলজ বাগানের চাষাবাদের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে আপনার সুদুর প্রসারি পরিকল্পনা পুনরায় ফিরে পেতে পারে পটিয়া বিলুপ্ত শিল্পগুলো।
বাইপাস সড়কের দুপাশে বিণোধন স্পট ও সবুজায়ন করা যেতে পারে: পটিয়া একসময় সবুজায়ন ছিলো। রাস্তা প্রশস্ত করতে গিয়ে অনেক বর্ষিয়ান গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। বৃক্ষ নিধন ও মাটি কাটার ফলে বনের পরিমানও কমে গেছে। গাছ যে পরিমান কাটা হয়েছে নতুন করে গাছ লাগানো হয়নি। পটিয়া বাই পাস সড়কের পাশে আইল্যান্ড স্থাপন করে দু পাশে তালবৃক্ষসহ নানা জাতের ফল, ফুল ও ঔষধি গাছ লাগানোর মাধ্যেমে পটিয়াকে সবুজায়ন করতে আপনি বৃক্ষরোপন কর্মসুচি দিবেন। পাশাপাশি পটিয়া শহরে সৌন্দর্যবর্ধনের লক্ষ্যে পটিয়ার ঐতিহ্য কচু ছড়া, লবণ, পেয়ারা এবং পুঁথির আধলে মানচিত্রের একটি মুর্যাল স্থাপন করতে এগিয়ে আসবেন।
বেওয়ারিশ লাশ দাফনের জন্য সমাধিস্থান নির্মাণ: পটিয়া অর্থনৈতিকভাবে যেভাবে এগিয়েছে পটিয়া বর্তমানে প্রায় ৫ লক্ষেরও বেশি মানুষ বসবাস করে। এবং বর্তমানে সমগ্র দেশের জেলার মানুষ পটিয়ায় চাকুরী ও ব্যবস্থার সুবাধে বসবাস করছেন অনেকে বাড়িও করেছেন। কিন্তু পরিতাপের বিষয় সে অনুযায়ী নতুন করে পটিয়ায় কবরস্তান স্থাপন করেনি। পটিয়ায় একটি বেওয়ারিশ লাশ দাফনের জন্য কবরস্তান স্থাপন করা যেতে পারে।
পটিয়ার ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও জলাবদ্ধতা দূরীকরণ: পটিয়ার ড্রেনেজ ব্যবস্থা খুবই নাজুক। বর্ষা-মৌসুমে মানুষের দুর্ভোগের সীমা থাকে না। রাস্তা-ঘাটে এবং পটিয়া শহরে পানিতে টইটম্বুর হয়ে যায়। পটিয়ার আবাসিকগুলো পরিকল্পনা ছাড়া যে যেভাবে পারে স্থাপনা করছে। ড্রেনেজ ব্যবস্থার জন্য এবং পানি চলাচলের জন্য রাস্তা রাখেনি। সংশ্লিষ্ট বিভাগকে আপনার দিকনির্দেশনায় পটিয়ায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা সংস্কার করে পটিয়ার জলাবদ্ধতা নিরসনে আপনি এগিয়ে আসবেন।
পরিবেশ বান্ধব ময়লা আবর্জনার জন্য ডাম্পিং স্টেশন স্থাপন: পটিয়া পৌরসভায় নয় শুধু সমগ্র পটিয়ার জন্য একটি পরিবেশ বান্ধব ডাম্পিং স্টেশন স্থাপন করা যেতে পারে। আপনার সু-দৃষ্টি কামনা করছি।
ঢাকা থেকে কক্সবাজারগামী ট্রেন পটিয়া রেলওয়ে স্টেশনে থামানোর ব্যবস্থা করা যেতে পারে: বাংলাদেশ রেলওয়ের কাছে আমাদের পটিয়াবাসীর আকুল আবেদন বর্তমানে পটিয়ার ছেলেমেয়েরা সমগ্র দেশে চাকুরীর সুবাধে ছড়িয় ছিটিয়ে আছে। বিশেষ করে রাজধানীতে পটিয়ার অনেকে ছেলেমেয়েরা চাকুরি করেন। ঢাকা টু কক্সবাজার ট্রেনটি পটিয়া রেল স্টেশনে পাঁচ মিনিটের জন্য যাত্রা বিরতি ব্যবস্থা করার ব্যাপারে আপনার দিকে তাকিয়ে আছেন।
মাদক ও ইয়াবা মুক্ত পটিয়া চাই: পটিয়ার তরুণ সমাজ ইয়াবা ও মাদক আসক্ত হয়ে কিশোরগ্যাংসহ নানা অপরাধমুলক কাজের সাথে জড়িয়ে পড়ছে। এবং অনেকে অন্ধকার জগতে বিচরণ করছে।পটিয়াকে আপন্ িইয়াবা মুক্ত করে তরুণ সমাজকে আলোর পথে ফিরিয়ে আনতে আপনার সর্বাত্মক প্রচেষ্ঠা চালিয়ে যাবেন।
আপনি পটিয়ার ঐতিহ্যবাহী বনেদি পরিবারের সন্তান, সমগ্র চট্টগ্রামে আপনাদের বাড়ির আদিকাল থেকে সুনাম রয়েছে। আমার দেখা আপনি একজন সত্যিকারের দেশপ্রেমিক ও স্বচ্ছ রাজনীতিবিদ। একাত্তরের রণাঙ্গনে যেভাবে একজন মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক হিসেবে ভূমিকা রেখে দেশ-স্বাধীন করার জন্য আপনি ভূমিকা রেখেছিলেন ঠিক সেভাবে আপনি পটিয়াকে আরো একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবেন। পটিয়াবাসী আপনাকে প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসেন। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আপনি সেটার প্রমাণ পেয়েছেন। মাননীয় এমপি মহোদয় এবার পটিয়াবাসীকে আপনার দেয়ার পালা। বঙ্গবন্ধু তনয়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহোদয় যেভাবে চট্টগ্রামের প্রতি ভালোবাসার হাত প্রসারিত করেছেন, আমার প্রত্যাশা দক্ষিণ চট্টগ্রামের স্মার্ট মডেল শহর হবে আগামীর পটিয়া। পটিয়াকে বিনির্মাণে আপনার কাছে আমার সবিনয় নিবেদন এবং আকুল আবেদন আপনি পটিয়ার হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে সুদুর প্রসারি পরিকল্পনা করবেন এবং যথাযথাভাবে বাস্তবায়ন করবেন। আপনার জিয়নকাঠির আলোয় উদ্ভাসিত হোক আগামীর স্মার্ট পটিয়া। আপনাকে জানাই উষ্ণ অভিভাদন ও কৃতজ্ঞতা। আল্লাহ আপনাকে আরো দীর্ঘজীবী করুক !
লেখক: লেখক ও প্রাবন্ধিক
সারাবাংলা/এজেডএস