নারীর সাফল্যের অজস্র গল্প
৮ মার্চ ২০২৪ ১৬:৫৬
আমরা অনেক বদলেছি। সময় অনেক বদলেছে । সময়কে আমরা বদলিয়েছি। সময় এখন আমাদের । সময় এখন নারীদের। নারীর জয়; জগতময়। নারী রাঁধে নারী চুল বাঁধে। নারী চাকা চালায় । নারী উড়ে আকাশে। নারী; দেশ শাসন করে। সংসদের আসনে নারী প্রধান। আর কি চাই ? নারীর গুরুত্ব এখন সর্বাধিক। নারী পারে না ,করে না এই শব্দটা এখন পুরনো। পুরাতন স্লোগান এখন পুরাতন । নারীর অধিকার চাওয়া সেইসব ঘটনা ,মিছিল আন্দোলন এখন ইতহাস। এখনো সহিংসতা থাকলেও তাও প্রতিবাদের আগুনে পুড়তে বাধ্য। একদিন নারী সেটাও পার করবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন‘‘ আইন নয়, মানসিকতার পরিবর্তনই নারীর ওপর সহিংসতা প্রতিরোধ করতে পারে।”
নারীর অন্দর মহলের সেই সুতার কাজ, সেই আচার , সেই মায়ের হাতের রেসিপি- বিভিন্ন রান্না করে পুরস্কার পায়। সেরা রাধুনী বর্ষসেরা কত কি! নারী রিকশা , লেগুনা ,টমটম ও বাইক হাuকিয়ে রাস্তায় সবার দৃষ্টি কাড়ে। দৃষ্টিটা এখন স্বাভাবিক হয়ে গেছে। শপিং মলগুলোতে নারীর অবাধ ব্যবসা , শো রুমে ঠাসা। উদ্যোক্তা ঘরে ঘরে। অনলাইন আর্নিং করছে বিভিন্ন উপায়ে। হোটেল চালাচ্ছে নারী। পুরো পরিবার চালানোর দায়িত্বও নিয়েছে নারী। বেশ কিছু কর্পোরেট হাউজে নারী প্রধান কর্ণধার। সিও, পরিচালক-সভাপতি কত না টাইটেল। ঘরে, ঘরে ডাক্তার , ইন্জিনিয়ার নারী।
৮ মার্চ আর্ন্তজাতিক নারী দিবস? কি ভাবছি আজ নারীকে নিয়ে? কি বলা যায়? নির্দিষ্ট নারী নিয়ে চিন্তা ভাবনা একদিন মুছে যাবে। পছন্দের নারী তা ব্যক্তিগত। সমাজের কাজে নারীকে দায়িত্ব দেয়া দরকার সময় ,যোগ্যতা ও মেধার পরিমাপ করে । এখন প্রতিযোগিতার সময় । নারী একে ওপরের প্রতিযোগিতায় এগিয়ে আসছে। সমাজে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। নারী নির্যাতন যেমন, আছে। তা থেকে পরিত্রানের উপায়, সুযোগ দুটোই আছে। নারী নিয়ে এখনো কিছু , কিছু পুরুষ সমাজ বাঁকা চোখে, ছোট চোখে দেখার অভ্যাসটা থেকে গেছে। তারা বংশ পরম্পরায়। আবার পছন্দের নারী নিয়ে আসর জমানোর দৃশ্যও আছে। এতে করে মেধাবী নারীরা বঞ্চিত হয়। নারী সব সমান। যদি গুরুত্ব দিতে জানেন। মেধা অনুসারে ,যোগ্যতা অনুসারে নারী সমান। সময় ,সুযোগ , সদ্ব্যবহার নারীর অধিকার।
নারীর চাওয়া পাওয়া দুটোর সংমিশ্রণ একসাথে এখনো হয় না। চাইলে সে অনেক কাজ করতে পারে না শারীরিক কারণে। পরিবেশ, পরিস্থিতি সেরকম করে গড়া বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে। তবু যতটা পেরেছে নারী গড়ে উঠেছে। এই সাধনার পেছনে অজস্র কান্না আছে। নারীর কৃতিত্বকে স্মরণ ও সম্মাণ জানাতে এই দিনটি পালন করা হয়। লিঙ্গ বৈষম্য সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতেও এই দিনটি কার্যকর ভুমিকা পালন করে।
নারীর শিক্ষা বেড়েছে । নারীর স্বনির্ভরতা বেড়েছে। নারীর পদ-পদবী বেড়েছে। নারীর কর্মক্ষেত্র জানলে পুরুষও পিছিয়ে আজ মানতে হবে। নারী ইচেছ করলে সব কাজ একসাথে করতে পারে। তারা যা করে মনোযোগ দিয়ে করে। নারীর পিছানোর কাজ থেকে, ফাuকি দিবার সংখ্যা খুব কম। দৃষ্টিভঙ্গিটা এখন আর আগের মতো নেই। সবই ইতিহাস। পুরনো ক্যালেন্ডার।
নারী মা হবে যুগে ,যুগে। নারী কর্মস্পৃহায় বড় হবে আরও। বাকি নেই। শুধু কিছু খুতের অবয়ব পরিষ্কার করাটা বাকি। নারী নিজেকে, নিজের জাতকে জায়গা করে দিবে। কিন্তু এই দুর্বলতার বিষয়টা পুরুষ যাতে না বুঝতে পারে নারীকে সেই পদ্ধতিটা জানতে হবে। এতো অচলায়তন যদি ভাঙ্গতে পারে নারী; তাহলে নিজেদের ভেতর ইর্ষার যুদ্ধটাও বন্ধ করতে পারে। সবাই সব কাজে মেধাবী হয় না। সেটা নারীকে স্বীকার করতে হবে। সবাই শুধু একটা কাজে বেশি বেশি পারার ক্ষমতায় থাকে। যে যার কাজে বেশি দক্ষ; সে অনুযায়ী জায়গাটা ছেড়ে দিয়ে, তাকে সাহায্য করতে পারে। এভাবেই নারীর পৃথিবীর চুড়ান্ত পরিবর্তন হয়ে যাবে। আমরা খুব শীঘ্রই অন্যরকম নারী দিবস পালন করবো, লিখবো, বলবো। যেখানে শুধু নারীর সাফল্য , কেবল সাফল্যের অজস্র গল্প।
লেখক: সাংবাদিক
সারাবাংলা/এজেডএস