Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বঙ্গবন্ধুর আদর্শ

সাহিদা সাম্য লীনা
১৭ মার্চ ২০২৪ ১৪:২০

বঙ্গবন্ধু এক আদর্শের নাম, বঙ্গবন্ধু একটা ধ্রুবতারা, যে ধ্রুবতারার আলোকে আজ আমরা স্বাধীন ভূমিতে আলোকিত। তবে বঙ্গবন্ধুর সঠিক আদর্শ কয়জন মেনেছে এ চিত্রে? বঙ্গবন্ধুর সঠিক চিন্তাধারা, সঠিক আদর্শ সব জায়গায়, সর্বস্তরে আজো পৌঁছায়নি। তাই এখনো, অনেকের মাঝে ভুল কিছু বিশ্লেষণ তাকে নিয়ে করতে দেখা যায়। আগেকার কিছু মানুষ যারা আছেন এখনো বেঁচে তারা এসবের প্রচারক। সময় সুযোগে চায়ের কাপে ঝড় তোলেন এখনো মুদি দোকানে, পাড়া- মহল্লায়! আসলে এটা তাদের দোষ না। তাদের সময় মিডিয়া এতো বেশী সরব ছিলনা। লোকমুখে যা প্রচারিত হয়েছে অনেকের মধ্যে তা তারা গ্রহণ করে ঐ তত্ত্বে বেড়ে উঠেছে। যেমন – এখনকার গুজবের মতো। এখন গুজবে মানুষ বেশ দিশেহারা! ২০১৯ সালে অসহায় রানু যেভাবে গুজব তত্বের কারণে অকালে, নির্মমভাবে প্রাণ দিয়েছেন। এ ভুল থেকে আমাদেরই বের করে আনতে হবে। সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে হবে। সঠিক নির্দেশনা দিতে হবে জাতিকে। ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু সঠিক ভাষণ কৌশলে না দিলে জাতিকে সেদিনই লক্ষ জনতাসহ মুহূর্তে প্রাণ দিতো হতো। বঙ্গবন্ধু সেদিন কেবল ভাষণ দেননি, বাঁচিয়ে ছেন তাঁর প্রিয় দেশবাসীকে! লক্ষ্য রেখেছিলেন তাদের জীবন আর শত্রুর তাক করা গুলির দিকে। ব্রেইন শার্ফ আর অদূরদর্শী চিন্তা তার মননে, দৃষ্টি তার আকাশের দিকে যেমন; তেমন তার জনগণের উদ্দেশ্যে সেই ঐতিহাসিক ভাষণ দান!

বিজ্ঞাপন

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এ পর্যন্ত যে কয়টা গবেষণা ধর্মী বই বেরিয়েছে তা যথেষ্ট নয়। তার জীবনের আরো নানা বাঁক নিয়ে বিশ্লেষকরা বিশ্লেষণের প্রয়োজন রয়েছে। এ গুলোই হবে এক একটা দলিল, যা পৌঁছে যাবে আমাদের ভবিষ্যৎ জাতির কাছে। আর বিভিন্ন সংগঠনের আয়োজনে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অনুষ্ঠান গূলো তো একটা মাইলফলক হিসেবে ভূমিকা রাখবে। এতে করে ভবিষ্যৎ পৃথিবী তাকে জানতে পারবে প্রখর ও পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে।

বিজ্ঞাপন

জাতির পিতাকে নিজেদের স্বার্থে হলেও আরো কয়টা বছর বাঁচিয়ে রাখা প্রয়োজন ছিল। এ কথা কিন্তু সব দলীয়রাই এখন বলছে। অন্তত তাঁর কাজের ধরণ, কথার সাথে সম্পৃক্ততা কী, কতটুকু তিনি পূরণ করছেন দেখতো, বুজতো আশি দশকের প্রজন্ম।

পুরো একটা দেশ তছনছ হয়েছিল ৭১ সালে! সোনার বাংলা পুড়ে হাহাকার, কঠিন সে দৃশ্য! যুদ্ধবিদ্ধস্থ দেশ ইরাকের, আফগানিস্তানের হামলার পর পুরো বিশ্ব দেখেছে কী ভয়াবহ অবস্থা! তাহলে আমরা অনুমান করতে পারি বাংলাদেশে পাকিস্তান শাসকদের নয়টা মাসের অত্যাচারে কতোটা দুর্বিষহ সময়, সমস্যা তারা তৈরি করে গিয়েছিল। যাবার আগে, পরে আরো যতো ক্ষয় ক্ষতি, লুট তারা এই বাংলাকে দেখিয়েছে তা একমাত্র বঙ্গবন্ধু উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন! এমন প্রতিকূল পরিবেশে তিনি দেশের হাল ধরেছেন। দেশে আসলেন, বুকে জড়ালেন মা, মাটিকে! মা তো পুড়ে ছাই! মাটি তো নয় যেন কয়লা! মানুষ জিবন বাঁচাতে দিগ্ববিদ্বিক! মরুভূমিও ভালো, কেননা গোলা ভরা, পুকুর ভরা মাছের দেশে খাবারের অভাব! মানুষ অর্ধমৃত; নয় মাস যুদ্ধ চলাকালীন সময় থেকেই। বঙ্গবন্ধু কী করবেন একা! সিদ্ধান্ত, সময়, সাহায্য নিতে তিনি মরিয়া! এমন দেশের এই হালে দাতাগোষ্ঠীর সাহায্য, সহানুভূতি পেতেও সময় লাগছিল।

আর তখন হতেই কিছুই না বুঝে কিছু অন্ধ গোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে চক্রান্তে নামে, অপপ্রচার শুরু করে। দেশের জিনিস পত্র দুর্লভ, খাবার নেই, চারদিকে হাহাকার, দাম চড়া। এমন অবস্থায় যদি জীবন ধারণের উপকরণের অপ্রতুলতায় ও যোগান সংকটে দাম বাড়ে একজন রাষ্ট্র সেবকের কী করার থাকে!

যদিও বঙ্গবন্ধুর জন্য এ ছিল এক অগ্নি পরীক্ষা! তিনি সবে হাত ধরে উঠে বসতে চেয়েছেন, দেশকে গুছাতে লাগলেন তখনি মৃত্যুর ঘন্টা বাজালো দেশীয় আবালরা! ঘরের পোষা সাপ ফোঁস করে উঠে। এতো ষড়যন্ত্র! বঙ্গবন্ধু বিন্দু মাত্র বুজতে পারেন নি! ক্ষেপিয়ে তুলেছিল দেশের অর্ধমৃত জনগণকে। এদের মধ্যেই দুদল ভাগ হয়, একদল যারা বলে বঙ্গবন্ধু সব লুটে খেয়ে, দাম বাড়িয়ে ধ্বংস করছে সব খাচ্ছে, জনগণকে ভাতে মারছে! কিন্তু বুজতে চায়নি যুদ্ধের পর দেশে কিছুই নেই, সব তলিয়ে দিয়ে গেছে পাকিস্তানের শোষকরা। এদের জন্যই বঙ্গবন্ধু কে নিয়ে ভুল প্রচার। এরা একটা বংশধর রেখে যাচ্ছে, গেছেও! তারাই আজ বিরোধী। তবে এদের থেকেই আজ রিসার্চে বেরিয়ে এসেছে বঙ্গবন্ধু থাকা উচিত ছিল আরো কয়টা বছর৷ এটাই সৌভাগ্য বলা যায়। ভুল বোঝার দিন একদিন শেষ হবে। তখন বঙ্গবন্ধুর সত্যিকার আদর্শে দেশ এগিয়ে যাবে। সোনার স্বদেশ হবে এক তিলোত্তমা স্বপ্নের নগরে। বঙ্গবন্ধু আসবেন একদিন ঠিকই, জানবে সবাই বঙ্গবন্ধু আসলেই মরে নাই!

লেখক: সাংবাদিক

সারাবাংলা/এসবিডিই

বঙ্গবন্ধুর আদর্শ মুক্তমত সাহিদা সাম্য লীনা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর