Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

খাদ্যনিরাপত্তা পরিসংখ্যান: সামষ্টিক অর্থনৈতিক অস্থিরতার চিত্র

ড. মিহির কুমার রায়
২১ মার্চ ২০২৪ ১৭:৩৩

খাদ্যনিরাপত্তার সংজ্ঞা অনুযায়ী তখনই খাদ্যনিরাপত্তা বিরাজমান যখন সবার কর্মক্ষম, স্বাস্থ্যকর ও উৎপাদনমুখী জীবনযাপনের জন্য সবসময় পর্যাপ্ত পরিমাণে নিরাপদ ও পুষ্টিমানসম্পন্ন খাদ্যের লভ্যতা ও প্রাপ্তির ক্ষমতা বিদ্যমান থাকে। ১৯৯৬ সালে রোমে অনুষ্ঠিত বিশ্ব খাদ্য সম্মেলনে যোগদানকারী দেশগুলোর রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধানরা নিরাপদ ও পুষ্টিমানসম্পন্ন খাদ্যপ্রাপ্তিকে প্রত্যেক মানুষের অধিকার হিসেবে পুনর্ব্যক্ত করেন। আমাদের জাতীয় খাদ্যনীতিতে (২০০৬) খাদ্যনিরাপত্তায় চিহ্নিত তিনটি নিয়ামক হলো খাদ্যের লভ্যতা, খাদ্যপ্রাপ্তির সক্ষমতা ও খাদ্যের জৈবিক ব্যবহার । সামগ্রিক খাদ্যনিরাপত্তার প্রশ্নে সব কয়টি নিয়ামক গুরুত্বপূর্ণ এবং এগুলোর মধ্যে সুনির্দিষ্ট পারস্পরিক নির্ভরতা বিদ্যমান থাকায় খাদ্যনিরাপত্তা-সম্পর্কিত সব বিষয়ে সুষম ভারসাম্য বজায় রাখা অপরিহার্য। খাদ্যের গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলোর মধ্যে রয়েছে শর্করা (চাল, গম, আলু), আমিষ (মাছ, মাংস, ডিম, ডাল), স্নেহ পদার্থ (ভোজ্যতেল, দুগ্ধজাতীয় খাবার), মিনারেলস (শাকসবজি), মসলা (পেঁয়াজ, রসুন, আদা) ও পানীয় (চা, কফি)। যেহেতু এ দেশের কমবেশি ৯০ শতাংশ মানুষের প্রধান খাদ্য ভাত, সেহেতু খাদ্যনিরাপত্তা নিয়ে আলোচনায় প্রথমে আসে চালের বিষয়টি। স্বাধীনতা লাভের সময় দেশে চাল উৎপাদনের পরিমাণ ছিল কমবেশি ১ কোটি টন, যা ২০২২-২৩ অর্থবছরে দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ৮৬ লাখ ৯৫ হাজার টনে (বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা-২০২৩)। অর্থাৎ স্বাধীনতাকালীন দেশের সাড়ে সাত কোটি জনসংখ্যা দ্বিগুণের কিছুটা বেশি বৃদ্ধি পেলেও চাল উৎপাদন বেড়েছে তিন গুণের বেশি। তবে চাল উৎপাদনে দেশ এখন পর্যন্ত স্বনির্ভরতা অর্জন করতে না পারায় চাহিদা মেটাতে প্রায় প্রতি বছর আমাদের কিছু পরিমাণ চাল আমদানি করতে হচ্ছে। খাদ্যশস্যে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা গম উৎপাদন মোটেই সন্তোষজনক নয়। সরকারি তথ্য মোতাবেক ১৯৯৮-৯৯ অর্থবছরে দেশে গম উৎপাদন দাঁড়িয়েছিল ১৯ লাখ ৮ হাজার টনে, যা এখন ১১-১২ লাখ টনের মধ্যে সীমাবদ্ধ। তবে শর্করাজাতীয় খাদ্য আলু উৎপাদনে দেশ স্বনির্ভরতা অর্জন করেছে এবং নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে পৃথিবীর অনেক দেশে তা রফতানি করছে। আলু উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে সপ্তম। সবজি উৎপাদনেও দেশ স্বনির্ভরতা অর্জন করেছে। এফএওর তথ্যমতে, সবজি উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে তৃতীয়।বেশকিছু খাদ্যপণ্য উৎপাদনে দেশ পিছিয়ে আছে যেমন ডাল, ভোজ্যতেল, চিনি, ফল, পেঁয়াজ, রসুন, আদাসহ বিভিন্ন ধরনের মসলা যা আমদানির মাধ্যমে এসব খাদ্যপণ্যের চাহিদা মেটাতে হয়। আমিষের প্রধান উৎস মাছ উৎপাদনে দেশ স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে এবং বিশ্বে অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ তৃতীয় আর চাষকৃত জলাশয়ে মাছ উৎপাদনে পঞ্চম স্থানে রয়েছে, সামুদ্রিক মত্স্য আহরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে ১১তম।দেশ মাংস উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে এবং ডিম উৎপাদনে স্বনির্ভরতার কাছাকাছি পৌঁছেছে। তবে দুধ উৎপাদনে দেশ পিছিয়ে আছে যার চাহিদা মেটাতে আমদানির আশ্রয় নিতে হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

বিবিএস ২০২৩ সালের ১৫ থেকে ২৫ জুন পর্যন্ত নির্বাচিত খানায় দেশের প্রথমবারের মতো খাদ্যনিরাপত্তা জরিপ পরিচালনা করে। জরিপ পরিচালনার প্রকল্প পরিচালক বলেন, ‘দেশের ২৭ হাজার ৭৬০টি খানা থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে ৫৪১ জন কর্মকর্তা তথ্য সংগ্রহ করেন। আর মান বজায় রাখার জন্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের মাধ্যমে একটি উচ্চ পর্যায়ের বিশেষজ্ঞ প্যানেল কাজ করেছে। তথ্য সংগ্রহে বিশ্ব খাদ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী আটটি প্রশ্ন সেট তৈরি করা হয়।’

বিজ্ঞাপন

বিশ্লেষনে দেখা যায় যেবাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ‘খাদ্যনিরাপত্তা পরিসংখ্যান-২০২৩’-এ উঠে এসেছে দেশের ২১ দশমিক ৭৭ শতাংশ মানুষ খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। বিবিএসের পরিসংখ্যান বলছে, যারা গৃহস্থালির কাজ করেন কিংবা কর্মের সন্ধানে আছেন, খাদ্যনিরাপত্তায় তাদের চেয়েও পিছিয়ে আছেন কর্মজীবীরা। গৃহস্থালির কাজে যুক্ত ২১ দশমিক ৬৭ শতাংশ মানুষ খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। কর্মের সন্ধানে থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে এ হার ১৮ দশমিক ৫১ শতাংশ। তবে যারা কোনো কাজ করেন না, তাদের মধ্যে খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার হার সবচেয়ে বেশি; ২২ দশমিক ৩৮ শতাংশ । এদের মধ্যে গ্রামে খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার হার ২৩ দশমিক ৮৯ শতাংশ। শহরে এ হার ২০ দশমিক ৫৬ শতাংশ। সবচেয়ে কম সিটি করপোরেশন এলাকায়, ১৩ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে দারিদ্র্যসীমার নিচে রয়েছে ১৮ শতাংশ মানুষ। আর ২২ শতাংশ মানুষ খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। তার মানে, যারা দারিদ্র্যসীমার ওপরে আছে, তারাও উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে পড়েছে। বিবিএসের প্রতিবেদনের তথ্যমতে, শ্রেণীভিত্তিক বিভাজনে অতিদরিদ্রদের মধ্যে খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার হার ৭০ দশমিক ৩৭ শতাংশ, দরিদ্রদের মধ্যে ২২ দশমিক ৯ শতাংশ, মধ্যবিত্তদের মধ্যে এ হার ১৪ দশমিক ৮৮ শতাংশএবং ধনীদের মধ্যে খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় ভোগে ১ দশমিক ১১ শতাংশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে দারিদ্র্যসীমার নিচে রয়েছে ১৮ শতাংশ মানুষ। আর ২২ শতাংশ মানুষ খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। তার মানে, যারা দারিদ্র্যসীমার ওপরে আছে, তারাও উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে পড়েছে। বিভাগভিত্তিক হিসাবে বিবিএসের তথ্য বলছে, সবচেয়ে বেশি খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে রংপুরের মানুষ। বিভাগটির ২৯ দশমিক ৪২ শতাংশ মানুষ খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এরপর আছে ময়মনসিংহ। এ বিভাগে খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার হার ২৮ দশমিক ৬৫ শতাংশ। এছাড়া সিলেটের ২৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ, রাজশাহীর ২৪ দশমিক ৪৪, বরিশালে ২৩ দশমিক ২৪, খুলনার ২০ দশমিক ৫৯ ও চট্টগ্রাম বিভাগের ১৯ দশমিক ৬৫ শতাংশ মানুষ খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এ হার সবচেয়ে কম ঢাকা বিভাগে, ১৭ দশমিক ২৫ শতাংশ।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের এক অধ্যাপক বলেন, ‘খাদ্যের জোগান থাকার পরও প্রয়োজনীয় খাদ্য গ্রহণ করতে না পারলে তাকে খাদ্যনিরাপত্তাহীনতা বলা হয়। এখন আগের চেয়ে মূল্যস্ফীতি অনেক বেশি। আয় করার পরও মানুষ হয়তো জিনিসের দাম বাড়ার কারণে প্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয় করতে পারছে না। ক্রয়ক্ষমতা না থাকায় মাংসের বদলে হয়তো মানুষ ডিম খাচ্ছে।’এ বিষয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো বলেন, ‘দেশের দারিদ্র্যসীমার নিচে রয়েছে ১৮ শতাংশ মানুষ আর ২২ শতাংশ মানুষ খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। তার মানে দাঁড়াচ্ছে, যারা দারিদ্র্যসীমার ওপরে আছে তারাও উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে পড়ছে। স্বল্প আয়ের চাকরিজীবীদেরও ক্রয়ক্ষমতার ঘাটতি তৈরি হচ্ছে। তারা সঞ্চয় ভেঙে খাচ্ছে। এমনকি মধ্যবিত্তরা টিসিবির ট্রাকের পেছনে লাইনে দাঁড়িয়ে নিত্যপণ্য কিনতে বাধ্য হচ্ছে। অন্যদিকে বিশ্বব্যাংক বলছে, ৭০ শতাংশ মানুষ পুষ্টিনিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এসব পরিসংখ্যানের মাধ্যমে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক অস্থিরতার চিত্রটি সামনে আসছে।’

কর্মজীবীদের খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার বিষয়ে বিবিএসের এ যুগ্ম পরিচালক বলেন, ‘খাদ্যনিরাপত্তাহীনতা মানে তাদের মধ্যে খাবার নিয়ে চিন্তা রয়েছে। হয়তো সামনের মাসে চাকরি থাকবে কিনা, সেটাও এতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।’সার্বিক বিষয়ে সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘দুই বছর ধরে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। গত বছর খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল প্রায় ১২ শতাংশ। সার্বিক মূল্যস্ফীতিও ছিল ঊর্ধ্বমুখী। আর খাদ্যে মানুষ ৬৫ শতাংশ পর্যন্ত ব্যয় করে থাকে। তাই মূল্যস্ফীতির কারণে এটা হতে পারে। তবে গত ১৫ বছরে বেতনও বাড়ানো হয়েছে। ফলে কর্মজীবীদের ব্যাংকে জমাও বেড়েছে। যাদের মজুরি কম, তাদের মধ্যে খাদ্যনিরাপত্তাহীনতা হতে পারে। তবে এত বেশি পরিমাণ মানুষের খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার তথ্য আমার কাছে অসংগতিপূর্ণ মনে হচ্ছে। এক্ষেত্রে বস্তুনিষ্ঠভাবে তথ্য সংগ্রহের বিষয়েও প্রশ্ন থেকে যায়।

গরিব ও অতি গরিব এক বিরাট জনগোষ্ঠীর খাদ্য সংগ্রহে আর্থিক সক্ষমতার অভাব এবং এর ফলে তাদের অপর্যাপ্ত খাদ্য গ্রহণ, খাদ্যে পুষ্টিমানের স্বল্পতা, নিরাপদ খাদ্যপ্রাপ্তিতে অনিশ্চয়তা ইত্যাদি কারণে বাংলাদেশের খাদ্যনিরাপত্তা এখনো ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। খাদ্যনিরাপত্তার নিয়ামকগুলো বিবেচনায় নিয়ে তৈরি ‘গ্লো¬বাল ফুড সিকিউরিটি ইনডেক্স ২০২০’-এ বাংলাদেশের অবস্থান তলানিতে। অর্থাৎ ১১৩টি দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ৮৪তম। তাছাড়া তালিকা অনুযায়ী খাদ্যনিরাপত্তায় দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসা আমাদের জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে আমাদের জয়ী হতেই হবে। চালসহ শস্য উৎপাদনে স্বনির্ভরতা অর্জনে দেশ বেশকিছু সীমাবদ্ধতা ও চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় চিহ্নিত এসব সীমাবদ্ধতা ও চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে (ক) নিম্ন উৎপাদনশীলতা, (খ) জলবায়ু পরিবর্তন ও সম্পর্কিত অন্যান্য চ্যালেঞ্জ, (গ) প্রাকৃতিক সম্পদের ভিত্তির অবনমন ও ভূগর্ভস্থ পানির স্তর হ্রাস, (ঘ) কৃষিজমির প্রাপ্যতা হ্রাস, (ঙ) কৃষি ঋণপ্রাপ্তিতে সমস্যা, (চ) খাদ্যনিরাপত্তা ও পুষ্টি সমস্যা, (ছ) যথাযথ ব্যবস্থাপনা, সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণ ও বাজারজাত ব্যবস্থার অভাব। এসব সীমাবদ্ধতা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় বেশকিছু কৌশল অবলম্বনের কথা বলা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে (এক) ফসলের উৎপাদনশীলতা ও উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে খাদ্যের সহজলভ্যতা, খাদ্যের অধিকার ও ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি করা; (দুই) পুষ্টিকর, নিরাপদ ও চাহিদা রয়েছে এমন খাদ্যের চাহিদা নিশ্চিত করার জন্য খাদ্য উৎপাদন পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা; (তিন) কভিড-১৯ মহামারীর পর কৃষিপণ্যের সরবরাহ শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার এবং উন্নয়ন সাধন করা, কভিড-১৯-এর বিরূপ প্রভাব সর্বনিম্ন পর্যায়ে নামিয়ে এনে সংকট-পরবর্তী কৃষির প্রবৃদ্ধি ও খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা; (চার) কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি ও কৃষিপণ্যের বিপণন সুবিধা নিশ্চিতকরণ এবং ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকরণে কৃষকদের সহায়তা প্রদান করা; (পাঁচ) মূল্যসংযোজন, সরবরাহ শৃঙ্খলার উন্নয়ন, চাহিদা উপযোগী ও রফতানিমুখী কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে কৃষি বাণিজ্যিকীকরণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে নতুন ক্ষেত্র তৈরি করা।

প্রাণিসম্পদে উন্নতি হলেও এক্ষেত্রে বেশকিছু সীমাবদ্ধতা ও চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে (ক) কম উৎপাদনশীলতা, (খ) মানসম্মত ফিড ও তৃণজাতীয় খাদ্যের অপর্যাপ্ততা, (গ) নতুন রোগের প্রাদুর্ভাব ও পুরনো রোগের পুনঃসংক্রমণ, (ঘ) অপর্যাপ্ত ভেটেরিনারি সেবা ও প্রাণী স্বাস্থ্য, (ঙ) সীমিত ঋণ সুবিধা। এসব সীমাবদ্ধতা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় যেসব কৌশল অবলম্বনের কথা বলা হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে (এক) প্রক্রিয়াজাত পণ্যসহ দুধ, ডিম, মাংসের টেকসই উৎপাদনে সহায়তা প্রদান; (দুই) ভূমিহীন, ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষীদের টেকসই আয় উপার্জন ও কর্মসংস্থানের প্রসার করা; (তিন) জলবায়ু সহনশীল ও সুলভ মূল্যে পশুখাদ্য ও তার উন্নয়ন; (চার) বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পশু থেকে উৎপাদিত পণ্য ও উপজাত পণ্য উৎপাদন, বিপণন ও রফতানিতে বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ বৃদ্ধিতে সহায়তা প্রদান।

লেখক: অধ্যাপক (অর্থনীতি), গবেষক

সারাবাংলা/এসবিডিই

খাদ্যনিরাপত্তা পরিসংখ্যান: সামষ্টিক অর্থনৈতিক অস্থিরতার চিত্র ড. মিহির কুমার রায় মুক্তমত

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর