আমরা জানি দেশ বা রাস্ট্র বলতে একটি নির্দিষ্ট ভূখণ্ড, সার্বভৌমত্ব, জনসমষ্টি ও সরকার এর সমন্বয়ে গঠিত বৃহৎ প্রতিষ্ঠান কে বোঝায়। বস্তুতঃ এ চারটি হলো রাস্ট্রের মৌলিক উপাদান। এর মধ্যে সবচেয়ে সংবেদনশীল উপাদান হলো জনসমষ্টি। আধুনিক রাস্ট্র ব্যবস্থাপনায় জনসমষ্টি বা জনগণের ছয়টি মৌলিক অধিকার স্বীকৃত যা আমাদের জাতীয় সংবিধানেও সমর্থিত; যথা- ১)খাদ্য ২) বস্ত্র ৩) বাসস্থান ৪) শিক্ষা ৫) চিকিৎসা বা স্বাস্থ্য ৬) নিরাপত্তা। বাঙালি জাতির ক্ষেত্রে এসকল মৌলিক তথা মানবিক অধিকার সমূহ তদানীন্তন বৃটিশ ঔপনিবেশিক আমল হতে প্রবঞ্চিত হয়ে তা ১৯৪৭ এ দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে দেশ বিভাজনের প্রহসনী পর্যায় পেরিয়ে পশ্চিম পাকিস্তানের ঔপনিবেশিক যাতাকলে নিপতিত হয়েছিল। বলা বাহুল্য, পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি তদানীন্তন শাসক পশ্চিম পাকিস্তানের ঔপনিবেশিক নিষ্পেষণের মাত্রা বৃটিশ ঔপনিবেশকেও হার মানিয়েছিল! ১৯৪৭ থেকে ১৯৭০ পর্যন্ত দীর্ঘ ২৩ বছরে সৃষ্ট বঞ্চনার পুঞ্জিভুত ক্ষোভ ১৯৭১ এর ৭ মার্চ এ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর অগ্নিমুখর কালজয়ী নেতৃত্বে বিস্ফোরিত হয়ে তা এক রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ১৬ ডিসেম্বরে একটি পরিণত জাতি ও রাষ্ট্র’র স্বরুপ লাভ করে। যেহেতু জনগণ রাস্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ সেহেতু রাস্ট্রের অস্তিত্বের প্রয়োজনে জনগণের অস্তিত্ব রক্ষায় উল্লেখিত মৌলিক অধিকার সমূহ স্বাধীনতার ৫৩ বছরে আলোকপাতের দাবী রাখে।
[১] খাদ্য- মুক্তিযুদ্ধ অব্যবহিত পরেই তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রীয় মুখপাত্র হেনরি কিসিঞ্জার (প্রয়াত) পৃথিবীর মানচিত্রে সদ্যপ্রসূত বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি বলে ভর্ৎসনা করেছিল।বর্তমানে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের মাধ্যমে সেই ভর্ৎসনা আজ সন্মাননা রুপে রুপায়িত হয়েছে। আজ কৃষিজ পণ্যের উৎপাদন লক্ষ্য মাত্রা অর্জনে বাংলাদেশ ঈর্ষনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। স্বাধীনতার ৫৩ বছরে ১২ টি কৃষিপণ্য উৎপাদনে বাংলাদেশ পৃথিবীর শীর্ষ ১০ টি দেশের মধ্যে রয়েছে।ইতোমধ্যে প্রধান খাদ্যপণ্য চাল,মাছ,মাংস ও সবজি উৎপাদনে দেশ স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে।চাল উৎপাদনে টানা পাঁচবার ৩য় স্থান অধিকার করেছে।এছাড়া মাছ, সবজি, আলু, ছাগল, আম, পেয়ারা, কাঁঠাল উৎপাদনে বিশ্বে যথাক্রমে ৩য়, ৩য়, ৬ষ্ঠ, ৪র্থ, ৭ম, ৮ম, ২য় স্থান অধিকার করেছে। আবার ইলিশ উৎপাদনে বিশ্বে ১ম। উল্লেখ্য- নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের মধ্যে গম, ভুট্টা, চিনি ও ভোজ্য তৈল নিয়মিত আমদানী করতে হয়। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (FAO) এর সর্বশেষ ২০২৩ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী খাদ্য পণ্য আমদানিতে বাংলাদেশ বিশ্বে তৃতীয় অবস্থানে আছে। ভবিষ্যতে পর্যাপ্ত দেশীয় উৎপাদন বাড়িয়ে আমদানি নির্ভরতা কমাতে হবে। উল্লেখ্য, খাদ্য ভোগের সাথে খাদ্য নিরাপত্তা জড়িত। লক্ষণীয় যে, বাজার সিন্ডিকেটের দ্বারা বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে পণ্যমূল্য বাড়িয়ে খাদ্য নিরাপত্তায় বিঘ্ন ঘটানো হয়। ফলে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়। এছাড়া খাদ্যে ভেজাল মিশিয়েও নিরাপত্তা ঝুঁকি সৃষ্টি করা হয়। পাশাপাশি, কৃষিজ খাদ্যে অজৈব সারের অপরিকল্পিত ব্যবহারের মাধ্যমেও খাদ্য নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে। ফলে জনস্বাস্থ্য বেশ ঝুঁকির মধ্যে নিপতিত হচ্ছে। অধিক মুনাফার লোভে খাদ্যে ভেজাল মিশ্রণকারীদের বিরুদ্ধে আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি, অজৈব সার ও রসায়নের নির্ভরতা কমিয়ে জৈব সার ও রসায়নের ওপর নির্ভরতা বাড়াতে হবে। এটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে উভয় ক্ষেত্রে জনসচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ডেনমার্ক, জাপানসহ কিছু কৃষিউন্নত দেশ অনুকরণীয় হতে পারে।
[২] বস্ত্র- এখাতে বাংলাদেশ এখন স্বয়ংসম্পূর্ণ। বাংলাদেশের ঐতিহ্যিক সংস্কৃতি হিসাবে শাড়ি,ধুতি,লুঙ্গি,ব্লাউজ সাধারণ পরিধেয় বস্ত্র হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বর্তমানে পায়জামা-পাঞ্জাবি ও এর অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এছাড়া পর্দা, বিছানার চাদর এবং কাঁথা ও লেপের আচ্ছাদন হিসাবেও বস্ত্রের ব্যবহার অপরিসীম। স্বাধীনতার পরে বস্ত্র শিল্প সরকারি খাতে থাকলেও তা আশানুরূপ শিল্পায়ন ঘটাতে পারেনি। বর্তমানে এ খাত বেসরকারি করণের ফলে তা দেশের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি প্রধান রপ্তানি খাতে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে তৈরী বস্ত্র (নীট) ও তেরী পোশাক(গার্মেন্ট) রপ্তানিতে চীনের পরে বাংলাদেশের অবস্থান। এ খাত বর্তমানে জাতীয় অর্থনীতির অত্যন্ত শক্তিশালী উৎসে পরিণত হয়েছে। সর্বশেষ তথ্যমতে ২০২২ সালে ৪ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করা হয়েছে। এটি বিশ্ববাজারে মোট পোশাক রপ্তানির ৭ দশমিক ৯ শতাংশ। বৈশ্বিক বাজারে এ খাতকে টিকিয়ে রাখতে হলে পোশাকশ্রমিক অধিকার সংরক্ষণে আরো মনোযোগী হওয়া হতে হবে। পাশাপাশি জাতীয় স্বার্থে এ খাতকে সকল রাজনীতির উর্ধ্বে রাখা উচিৎ।
[৩] বাসস্থান- একসময় বাসস্থান বলতে কাঁচা ঘর-বাড়ী কে বোঝানো হতো; কিন্তু এখন সেই অবস্থার অনেকটাই উত্তরণ ঘটেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বি বি এস) এর ২০১৯ সালের তথ্যানুযায়ী বর্তমানে দেশে কাঁচা ঘরবাড়ির সংখ্যা দুই কোটিরও বেশি। অর্থাৎ, তথ্যানুযায়ী ৪৩ শতাংশ পাকা ঘড়বাড়ির বিপরীতে এখনো ৪৭ শতাংশ মানুষ কাঁচা ঘরবাড়িতে বসাবাস করছ। তবে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে আবাসন পরিকল্পনারও আধুনিকায়ন হয়েছে। অধিক নগরায়নের ফলে এটি এখন আবাসন শিল্পে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে এ খাত জাতীয় অর্থনীতিতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। দেশের জি ডি পি’র প্রধান পাঁচটি খাতের (৬৭% জি ডি পি’র উৎস) মধ্যে নির্মাণখাত অন্যতম যার গুরুত্বপূর্ণ অংশ আবাসন। এ খাত হতে ১৫% জি ডি পি সংযোজিত হয়। কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও এ খাতের গুরুত্ব যডথেষ্ট বটে।তাই এ খাতকে আরো উৎসাহিত করা দরকার। লক্ষ্যণীয় ভূমিহীন ছিন্নমূল মানুষদের মাঝে ‘আশ্রয়ণ প্রকল্প’-এর মাধ্যমে বর্তমান সরকার পর্যায়ক্রমে আবাসন নিশ্চিত করছে। সরকারি তথ্যমতে, ১৯৯৭ সাল থেকে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের আওতায় সর্বশেষ ২০২৩ সাল অবধি সর্বমোট ৫ লাখ ৫৫ হাজার ৪৩২ টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পুনর্বাসিত হয়েছে। বর্তমান সরকারের ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য মাত্রা -২০৩০’ নীতি অনুযায়ী ‘সবার জন্য আশ্রয়’ পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়েছে। তবে আগামীতে শুধু রাস্ট্রীয় অনুদানে নয় বরং শিল্পায়নের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে দেশের এই প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে উৎপাদনশীল জনশক্তিতে রুপান্তরিত করে স্বনির্ভর করে গড়ে তোলার মাধ্যমে দেশে শতভাগ টেকসই আবাসন নিশ্চিত করতে হবে।
[৪] শিক্ষা- স্বাধীনতার তিপ্পান্ন বছরে সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী দেশে স্বাক্ষরতার হার বেড়ে ৭৬ দশমিক ৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। তবে লিখতে, পড়তে ও ব্যাখ্যা করতে পারে এমন প্রায়োগিক স্বাক্ষরতার হার ৬২ দশমিক ৯২ এ উন্নীত হয়েছে। তবে স্বাধীনতা পরবর্তী স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বাড়লেও সেই অনুপাতে কর্মসংস্থান বাড়েনি। আই এল ও এর ২০১৯ সালের তথ্যানুযায়ী এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের উচ্চশিক্ষিত বেকারত্বের অবস্থানে বাংলাদেশ দ্বিতীয়। এ ক্ষেত্রে শিক্ষিত তরুণদের শুধু চাকরি প্রত্যাশি না হয়ে উদ্ভাবনী চিন্তার মাধ্যমে উৎপাদনশীল উদ্যোক্তা হতে হবে। রাস্ট্র ও সরকারকে এ বিষয়ে উৎসাহ ও সহোযোগিতা প্রদান করতে হবে। পাশাপাশি কর্মমুখী ও কারিগরি শিক্ষার প্রসারতা বাড়াতে হবে। শিক্ষায় বৈষয়িক গুণের সাথে নৈতিক গুণের মানও বাড়াতে হবে।
[৫] চিকিৎসা বা স্বাস্থ্য- স্বাধীনতার তিপ্পান্নে আমরা স্বাস্থ্য বা চিকিৎসা সেবা খাতে লক্ষণীয় উন্নতি লাভ করেছি। বি বি এস এর সর্বশেষ ২০২৩ সালের তথ্য প্রতিবেদনে দেখা যায় আমাদের গড় আয়ু বেড়ে ৭২ দশমিক ৪ বছরে দাঁড়িয়েছে যা ২০২২ সালেও একই ছিল। তবে স্বাধীনতা পরবর্তী শিশু মৃত্যুর হার ক্রমশ কমলেও তা আবার ওঠা-নামা করতে দেখা যায়। বিশ্বব্যাংকের পরিসংখ্যান মতে, ১৯৭২ সালে প্রতিহাজারে ১৪১ জন শিশু মৃত্যুবরণ করতো। এখন তা ২১ জনে দাঁড়িয়েছে। শুন্য থেকে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু মৃত্যুর হার কমিয়ে আনার স্বীকৃতি স্বরুপ জাতিসংঘের ইউনিসেফ বাংলাদেশকে সাফল্যের স্বীকৃতি প্রদান করেছে। স্বীকৃতি হিসাবে সর্বপ্রথম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ২০১০ সালে এম ডি জি তুলে দেওয়া হয় যা জাতীয় গৌরব বটে। তৃণমূল স্তর হতে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচী, পরিবার পরিকল্পনা ও জনসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে তা সম্ভবপর হয়েছে। এটি অব্যাহত রাখতে হবে। ইতোমধ্যে ঔষধশিল্পে আমরা আগের তুলনায় যথেষ্ট উন্নতি সাধন করেছি। আভ্যন্তরীন চাহিদার প্রায় ৯৮ শতাংশই এখন দেশে উৎপাদিত হচ্ছে। বর্তমানে দেশে ২৮৪টি ইউনানি, ২০৫টি আয়ুর্বেদিক, ৭১টি হোমিওপ্যাথিক, ৩১টি হারবাল, ২৯৫টি আ্যালোপ্যাথিক ঔষধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আভ্যন্তরীন চাহিদা মিটিয়ে বর্তমানে বিশ্বের ১৫৭টি দেশে স্বউৎপাদিত ঔষধ রপ্তানি করা হচ্ছে। তবে আভ্যন্তরীন বাজারে কখনো-কখনো ভেজাল ও নিম্ন মানের ঔষধ উৎপাদন, বিপনন ও বিক্রয় হচ্ছে। এগুলো জন স্বাস্থ্যের জন্য বেশ হুমকি স্বরুপ।ঔষধ প্রশাসন কে এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। বর্তমানে গণস্বাস্থ্য সেবা তৃনমূল পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। পাশাপাশি চিকিৎসকদেরও চিকিৎসা সেবার মান বাড়াতে হবে। বলা বাহুল্য, উন্নত স্বাস্থ্য একটি উন্নত জাতি সৃষ্টি করতে পারে।
[৬] নিরাপত্তা- পারিবারিক, সামাজিক ও রাস্ট্রিক নিরাপত্তা প্রতিটি নাগরিকের বিশেষ অধিকার।এ অধিকার আরো নিশ্চিত করতে হবে। বিশ্বায়নের যুগে ডিজিটালাইজেশনের প্রভাবে সাইবার নিরাপত্তাও এখন নতুন ভাবে যোগ হয়েছে। সর্বশেষ যুক্তরাজ্য ভিত্তিক ‘ন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি ইনডেক্স ( এন সি এস আই) এর বৈশ্বিক সাইবার নিরাপত্তা সূচকে বাংলাদেশ ৭৩ থেকে ৬৫ তম ধাপে উন্নীত হয়েছে। তবে এই নিরাপত্তার মান আরো উন্নত হওয়া উচিৎ। উল্লেখ্য, জঙ্গিবাদ বৈশ্বিক নিরাপত্তা ইস্যুর পাশাপাশি জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতেও পরিনত হয়েছে। তবে জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশ যথেষ্ট সফল হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বেশ সমাদৃত হচ্ছে।
বলাবাহুল্য, মৌলিক চাহিদা নিশ্চয়নে ও এর উন্নয়নে অবকাঠামোগত বিষয়াবলী বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। ইতোমধ্যে দেশের অবকাঠামোগত ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক উন্নয়ন ঘটেছে। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বঙ্গবন্ধু টানেল, পায়রা সমুদ্র বন্দর, মাতার বাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর, রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মতো মেগা প্রকল্পগুলো আগামীর বাংলাদেশকে বিশ্ব অর্থনৈতিক মঞ্চে এক মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করতে যাচ্ছে। শুধু পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল ও বঙ্গবন্ধু টানেল হতে ২ শতাংশ জি ডি পি প্রবৃদ্ধি বাড়বে বলে অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞগণ মত দিয়েছেন। এদিকে রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প আগামীতে দেশের শিল্পায়নে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে মর্মেও ধারণা করা হচ্ছে। উপরন্তু, উন্নয়নের মৌলিক শর্ত হিসাবে দেশের সামগ্রিক সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায়ও প্রভূত উন্নতি সাধিত হয়েছে।সার্বিক উন্নয়নের কৃতিত্ব স্বরুপ বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায়নে এস ডি জি অর্জনে সক্ষম হয়েছে যা আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে দেশের ভাবমূর্তিকে উজ্জলতর করেছে।
পরিশেষে- স্বদেশ প্রেমে উজ্জীবিত হয়ে সুশিক্ষা, সুশাসন ও সুব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দূর্নীতি সহ সকল অনিয়ম দূর করে আগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে দেশ ও জাতিকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ স্তরে উন্নীত করতে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে একযোগে কাজ করা উচিৎ। তবেই কাঙ্ক্ষিত সোনার বাংলা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।
লেখক: কলামিস্ট