স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে আইসিটি খাতে কর অবকাশ চালু রাখা জরুরি
৩০ এপ্রিল ২০২৪ ১৪:১৫
আইসিটি সেক্টরে ট্যাক্স এক্সাম্পশন বা কর ছাড় ছিল আমাদের জন্য আশীর্বাদের মতো । গত একযুগে আমরা আইসিটি সেক্টরের যে বিশাল গ্রোথ দেখেছি, যে বিপুল পরিমাণ বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে তার একটি বড় সহায়ক ছিল ট্যাক্স এক্সাম্পশন। এখন আইএমএফের বেঁধে দেওয়া রেভিনিউ টার্গেট, আইসিটি খাতের নেতৃত্বস্থানীয়দের যথাসময়ে সঠিক পদক্ষেপ না নিতে পারা বা নেওয়ার পরেও ফল না আসা, আমরা আইসিটি ইন্ডাস্ট্রিকে যেভাবে প্রেসেন্ট করছি তাতে এনবিআর-এর কাছে ভুল ডাটা যাওয়া যে তারা বিপুল রাজস্ব হারাচ্ছে, যে সকল কারণেই ট্যাক্স এক্সাম্পশন বন্ধ হবার উপক্রম হোক না কেন তা আমাদের জন্য অশনি সংকেত । সত্যি কথা বলতে আইসিটি খাত থেকে এনবিআর কর আরোপ করে এই মুহূর্তে তাদের টোটাল রেভিনিউ এর ১ শতাংশও আদায় করতে পারবে না ।
আইসিটি ইন্ডাস্ট্রি গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রি নয়, এখানে প্রফিট মার্জিন এতো বড় নয়। অনেক ছোট কোম্পানি বা গ্রোথ লেভেল কোম্পানি এই ট্যাক্স এক্সাম্পশনের কারণে প্রফিট করতে পারছে। যেহেতু আইসিটি ইন্ডাস্ট্রি অন্য ইন্ডাস্ট্রির মতো ব্যাংক থেকে সহজে লোন পায় না তাই তারা প্রফিটের টাকাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ইনভেস্ট করছে, নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করছে। এখন যারা সফটওয়্যার সার্ভিস প্রোভাইডার তাদের ক্লায়েন্ট বিল দেওয়ার সময়ই ১০ শতাংশ ট্যাক্স কেটে রাখবে, যদি ট্যাক্স এক্সাম্পশন না থাকে। আপনি প্রফিট না করলেও তখন ট্যাক্স আপনাকে দিতেই হবে, চড়ে বসবে কর্পোরেট ট্যাক্সের বোঝা। আর এ বিষয়গুলো এমন সময় এসেছে যখন ইন্ডাস্ট্রি মাত্র গ্রো করছে, যখন প্রাইভেট সেক্টর, সরকার, সবাই অটোমেশন-ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন এসবের সুবিধা বুঝতে ও পেতে শুরু করেছে, বাংলাদেশ সরকার ২০৪১ সাল নাগাদ স্মার্ট বাংলাদেশ ভিশন নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে ।
গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিকে কিন্তু দীর্ঘদিনের পলিসি, ট্যাক্স সুবিধা দেওয়ার কারণেই তারা আজ এই অবস্থানে এসেছে। আমাদের নীতিনির্ধারকদের উচিত আইএমএফের প্রেসক্রিপশনে না গিয়ে আইসিটি ইন্ডাস্ট্রির গ্রোথ ও লং টার্মের ইমপ্যাক্ট নিয়ে চিন্তা করা, কর অবকাশ অন্তত ২০২৮ সাল পর্যন্ত চালু রাখা, এবং পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন রেভিনিউ স্ল্যাব অনুযায়ী ট্যাক্স নির্ধারণ করা। তাহলেই আমরা ২০৪১ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে পারব।
লেখক: সিইও, ইনভেনটো সফটওয়্যার লিমিটেড
সারাবাংলা/আইই