কমিউনিস্ট আন্দোলনের কিংবদন্তী কমরেড হায়দার আকবর খান রনো
১২ মে ২০২৪ ১৪:০২
চলে গেলেন মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও ‘৭০ সালে তৎকালীন স্বাধীন জনগণতান্ত্রিক পূর্ববাংলার প্রবক্তা, বিশিষ্ট বামপন্থী নেতা, কমিউনিস্ট আন্দোলনের অন্যতম প্রবাদ পুরুষ, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাবেক পলিটব্যুরোর সদস্য, কমিউনিস্ট পার্টির উপদেষ্টা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা কমরেড হায়দার আকবর খান রনো ভাই। পরিণত বয়সে বিদায় নিলেও খুবই খারাপ লাগছে। তার জন্য গভীর শোক ও বিনম্র শ্রদ্ধা!
শুক্রবার (১০ মে ২০২৪) দিবাগত রাত ২টা ৫ মিনিটে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। প্রবীণ এ কমিউনিস্ট নেতা গত ৬ মে সন্ধ্যায় অসুস্থতা নিয়ে রাজধানীর হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালে ভর্তি হন। মৃত্যুর আগে সেখানেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তিনি।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির তাত্ত্বিক নেতা হিসেবে খ্যাত ও অসংখ্য গ্রন্থের লেখক কমরেড হায়দার আকবর খান রনো ভাইয়ের শারীরিক অবস্থা ও সর্বশেষ মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে তারই মেয়ে (বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রীর সাবেক কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য) কমরেড রানা সুলতানা, এর আগে শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ক্রনিক ফুসফুসের রোগে আক্রান্ত কমরেড হায়দার আকবর খান রনো ভাই যান্ত্রিক অক্সিজেন সহায়তার ওপর নির্ভরশীল ছিলেন।
কমিউনিস্ট আন্দোলনের কিংবদন্তি ও মার্কসবাদী তাত্বিক কমরেড হায়দার আকবর খান রনো, কাজী জাফর আহমদ ও কমরেড রাশেদ খান মেনন রাজনীতির ত্রিরত্ন। কমরেড রাশেদ খান মেনন ও কমরেড হায়দার আকবর খান রনো বাম প্রগতিশীল রাজনৈতিক জুটি হিসেবে খ্যাতি ছিল দীর্ঘদিন। উভয়ের সাথে আমার সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। এ বিষয়ে অন্য কোন নিবন্ধে আলোচনা করার ইচ্ছা রইলো।
কিংবদন্তি রাজনীতিক কমরেড হায়দার আকবর খান রনো কীর্তিমান তাত্ত্বিক ও খ্যাতিমান লেখকও বটে। তিনি রাজনীতি, অর্থনীতি ও দর্শন নিয়ে লিখেছেন।এমনকি সাহিত্য ও বিজ্ঞানের উপরও তার অজস্র লেখা আছে। তিনি লিখেছেন সাম্রাজ্যবাদ ও পুঁজিবাদের মৃত্যুঘন্টা নিয়ে। তিনি লিখেছেন ফরাসী বিপ্লব থেকে অক্টোবর বিপ্লব ও সোভিয়েত সমাজতন্ত্র সম্পর্কে, গ্রাম শহরের গরীব মানুষের রাজনীতির প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে, মার্কসবাদী রাজনীতি ও মার্কসীয় অর্থনীতি নিয়ে, মার্কসবাদ ও সশস্ত্র সংগ্রাম প্রসঙ্গে, সিপিবি ও চীনপন্থী বন্ধুদের নিয়ে, শ্রেণি দৃষ্টিকোণ থেকে ও মানুষের কবি হিসেবে রবীন্দ্রনাথকে মূল্যায়ন, কোয়ান্টাম জগৎ- কিছু বৈজ্ঞানিক ও দার্শনিক প্রশ্ন নিয়ে, বাংলাসাহিত্যের প্রগতির ধারা নিয়ে, পলাশী থেকে মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধে বামপন্থীদের ভূমিকা ও স্টালিন প্রসঙ্গে, অক্টোবর বিপ্লবের তাৎপর্য ও বর্তমান প্রেক্ষাপটসহ নানা বিষয়ে প্রবন্ধ-নিবন্ধ।
আগেই উল্লেখ করেছি যে, তিনি ছিলেন কমরেড মেননের সাথে কমিউনিস্ট মতাদর্শের রাজনৈতিক জুটি ও বন্ধু, একাধারে তাত্ত্বিক, বুদ্ধিজীবী এবং বহু গ্রন্থের লেখক। তিনি বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির রণনীতি-রণকৌশলগত রাজনৈতিক ও তাত্ত্বিক ভিত্তি নির্মাতাদের অন্যতম প্রধান কারিগর। যে বিশ্লেষণ ও ভিত্তির উপর নির্ভর করে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সংগ্রাম অব্যাহত অাছে। এমনকি তিনি বিপ্লবের প্রস্তুতিকালে ও বিপ্লব সম্পন্ন করে কমিউনিস্টরা ক্ষমতায় গেলে অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক ব্যবস্থায় নীতি ও কৌশল কী হবে? তা বিস্তৃত বিশ্লেষণ সহ নির্ধারণ করেছেন। এ যাবৎ তার লেখা প্রকাশিত গ্রন্থগুলোই এসব কথার দালিলিক প্রমাণ। তিনি ২০২২ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন।
এদেশের বাম আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাবেক নেতা, মার্কসবাদী সাহিত্যিক ও তাত্বিক, প্রগতিশীল অসাম্প্রদায়িক ব্যক্তিত্ব ও বীরমুক্তিযোদ্ধা কমরেড হায়দার আকবর খান রনো ভাইয়ের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করেছে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি। কমরেড রাশেদ খান মেননের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পলিটব্যুরোর সভায় শোক প্রস্তাবে বলা হয়, কমরেড রনো এদেশের বাম প্রগতিশীল রাজনীতিতে যে ত্যাগ আদর্শ ও নীতি—নিষ্ঠার পরিচয় দিয়েছেন তা নতুন প্রজন্মের প্রগতিশীল কর্মীদের জন্য অনুকরণীয় আদর্শ। ষাটের দশকে আইয়ূবের সামরিক শাসন বিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধ সংগঠনে কমরেড রনোর ভূমিকা অসামান্য।
পলিটব্যুরোর প্রস্তাবে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়েও সামরিক—স্বৈরাচারী শাসনের বিরোধীতা এবং ধনতান্ত্রিক বুর্জোয়া শাসনের বিপরীতে একটি সাম্যমূখী সমাজতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের লড়াইয়ে কমরেড রনোর রাজনৈতিক ভূমিকা দেশের জাতীয় ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবে। এছাড়াও মার্কবাদী এই তাত্বিক বিজ্ঞান, রাজনীতি, সমাজ ও সাহিত্য বিষয়ক অসংখ্য গবেষণাও আমাদের রাজনীতির সৃষ্টিশীল বৈশিষ্টের অন্যতম পরিচায়ক। কমরেড রনো’র এই মহাপ্রয়াণ দেশের বাম—কমিউনিস্ট আন্দোলনের অপূরণীয় ক্ষতি।
কমরেড হায়দার আকবর খান রনো ১৯৪২ সালের ৩১ আগস্ট কলকাতায় নানা বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। নড়াইল জেলায় এক রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান রনো দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় জন্ম হয়েছিল বলে তার ডাক নাম রাখা হয়েছিল রনো। এখন তিনি এই নামেই পরিচিত। পিতৃভূমি নড়াইল জেলার নড়াইল থানার অন্তর্গত চিত্রা নদীর পাড়ে বরশালা গ্রাম (বর্তমানে নড়াইল পৌরসভার অন্তর্গত)। নানাবাড়ি নড়াইল থানায় অন্তর্গত মির্জাপুর গ্রাম। নানা ছিলেন ছিলেন উপ-মহাদেশের বিখ্যাত রাজনীতিক সৈয়দ নওশের আলী।
পিতা হাতেম আলী খান ছিলেন একজন প্রকৌশলী। ১৯৬৮ সালে মরহুম হাতেম আলী খান তদানিন্তন পূর্ব পাকিস্তান সরকারের সড়ক ও জনপথ বিভাগের চীফ ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে অবসরগ্রহণ করেন। সৎ ও যোগ্য অফিসার হিসাবে তার খ্যাতি ছিল। ১৯৯৯ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। কমরেড রনোর মা কানিজ ফতেমা মোহসিনা ছিলেন সৈয়দ নওশের আলীর দ্বিতীয় কন্যা। বাম রাজনৈতিক কর্মীদের প্রতি কমরেড রনোর মায়ের অকৃত্রিম ভালবাসা ও সহযোগিতার জন্য বাম প্রগতিশীল মহলের তিনি বিশেষ পরিচিত ও শ্রদ্ধার স্থানে অবস্থান করেছিলেন। কমরেড রনোর মানসিক গড়নের ক্ষেত্রে পিতা-মাতার যথেষ্ট ভূমিকা ছিল। রনোর ছোট ভাই হায়দার আনোয়ার খান জুনোও একজন বিশিষ্ট বামপন্থি রাজনীতিবিদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা। হায়দার আকবর খান রনো’র একমাত্র কন্যা ছাত্রমৈত্রীর সাবেক নেত্রী রানা সুলতানা। তার দুই নাতি- অরিত্র ও অন্তিক।
শিক্ষাজীবন:
হায়দার আকবর খান রনো ছাত্রজীবনে অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিলেন। স্কুলজীবনে তিনি বরাবরই ক্লাসে প্রথম স্থান অধিকার করতেন। যশোর জিলা স্কুল, রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল ও ঢাকার সেন্টগ্রেগরী স্কুলে পড়াশোনা করেছেন। ১৯৫৮ সালে ঢাকার সেন্টগ্রেগরী স্কুল হতে ম্যট্রিক পাশ করেন। ম্যাট্রিক পরীক্ষায় তদানিন্তন পূর্ব পাকিস্তানের মধ্যে তিনি মেধা তালিকায় ১২তম স্থান লাভ করেছিলেন। ১৯৬০ সালে ঢাকার নটরডেম কলেজ হতে আইএসসি পাশ করেন। ১৯৬০ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিদ্যা বিভাগে ভর্তি হন। কিন্তু পদার্থবিদ্যার কোর্স সম্পন্ন করতে পারেননি কারাবাস ও অন্যান্য কারণে। পরে তিনি কারাগারে অবস্থানকালে আইনশাস্ত্রে ব্যাচেলর ডিগ্রী লাভ করেন। পরবর্তীতে তিনি হাইকোর্টের সনদও লাভ করেছিলেন। কিন্তু কোনদিন ওকালতি পেশা গ্রহণ করেননি।
ছোট বয়েসেই রনো বাংলা ও বিদেশী ক্ল্যাসিক্যাল সাহিত্য পাঠ করেছিলেন। কিশোর বয়সেই বাবার কাছ থেকে রবীন্দ্রনাথ, মাইকেল, নজরুল, সেক্সপিয়ারের বিভিন্ন কাব্য শুনে শুনে তার মুখস্থ হয়ে গিয়েছিলো। চমৎকার আবৃত্তির পাশাপাশি তিনি স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বিতর্ক ও সাহিত্য প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে বহু পুরস্কার লাভ করেছেন। পরবর্তীতে তিনি ভালো বক্তা হিসাবেও পরিচিতি লাভ করেছিলেন। ছাত্রজীবনে তাকে বলা হতো অনলবর্ষী বক্তা।
ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণ:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থ বিদ্যার ছাত্র থাকাকালে ১৯৬০ সালে তিনি গোপন কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হন। ১৯৬২ সালের ফেব্রুয়ারীতে সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব প্রদানের মধ্য দিয়ে তার সক্রিয় রাজনীতিতে প্রবেশ। ১৯৬৩ সাল হতে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন তদানিন্তন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) সাধারণ সম্পাদক। ১৯৬১ সালে তিনি মেধাবী ছাত্র হিসাবে যে সিয়াটো স্কলারশিপ পেয়েছিলেন, তার পুরোটাই কমিউনিস্ট পার্টিকে চাঁদা হিসাবে দিয়েছিলেন।
তখন দেশে সামরিক শাসন চলছিল। প্রকাশ্য রাজনৈতিক তৎপরতা ছিল না। কোন ছাত্র সংগঠনের অস্তিত্বও ছিল না। এই সময়ে গোপন কমিউনিস্ট পার্টির সাথে সংশ্লিষ্ট কয়েকজন ছাত্র গোপনে সামরিক শাসন বিরোধী ছাত্র আন্দোলন গড়ে তোলার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। তার মধ্যে প্রধান ভূমিকায় ছিলেন মোহাম্মদ ফরহাদ ও হায়দার আকবর খান রনো। টার্গেট ছিল ২১ ফেব্রুয়ারীর মিছিল থেকে শুরু হবে সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন। ইতোমধ্যে ৩০ জানুয়ারী শহীদ সোহরাওয়ার্দী গ্রেফতার হলে টার্গেটের তারিখ এগিয়ে আনা হয়। ঠিক হয় ১ ফেব্রুয়ারী ছাত্র ধর্মঘট ডাকা হবে। রনোসহ অন্যান্যরা এই ধর্মঘটের ব্যবস্থা করেন। ১ ফেব্রুয়ারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ধর্মঘট হয় এবং ঐদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় যে ছাত্র সভা হয়েছিল, সেখানে একজনই বক্তা ছিলেন হায়দার আকবর খান রনো। সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে তিনিই প্রথম প্রকাশ্য বক্তব্য রেখেছিলেন।
৬২ সাল জুড়ে যে ঐতিহাসিক সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন ও পরবর্তীতে শিক্ষা আন্দোলন হয় রনো তার নেতৃত্বে ছিলেন। তখনো পর্যন্ত কোন সংগঠিত ছাত্র সংগঠন ছিল না। ছাত্র নেতারা ঠিক করলেন ১৯৫২ সালে গঠিত পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নকে (যা ১৯৫৮ সালে সামরিক শাসনের পর বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিলো) পুনর্জীবিত করা হোক। বস্তুতঃ পুরাতন নাম গ্রহণ করলেও পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নকে নতুন করে গঠন করা হয়েছিল।
অক্টোবর মাসে এক সম্মেলনের মধ্য দিয়ে এই সংগঠনের পুনর্জন্ম হয়েছিল। ঐ সম্মেলনে হায়দার আকবর খান রনো ৬২-এর আন্দোলনের উপর রাজনৈতিক রিপোর্ট পেশ করেন। ডা. আহমদ জামান’কে সভাপতি, কাজী জাফর আহমদ’কে সাধারণ সম্পাদক ও হায়দার আকবর খান রনোকে যুগ্ম সম্পাদক করে ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ৬২ সালে রনো দুইবার গ্রেফতার হয়েছিলেন। ৬২-এর মার্চ মাসে তাকে গ্রেফতার করে প্রথমে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে রাখা হয়েছিল। পরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। যেখানে ছাব্বিশ সেলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ও তিনি একত্রে ছিলেন।
পরের বছর ১৯৬৩ সালে হায়দার আকবর খান রনো পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তার নেতৃত্বে ও দক্ষ সাংগঠনিক যোগ্যতার কারণে সেই সময় পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন ক্ষুদ্র অবস্থা থেকে দেশের সর্ববৃহৎ ছাত্র সংগঠনে পরিণত হয়েছিল। ছাত্র আন্দোলনের কারণে ১৯৬৪ সালে তার নামে হুলিয়া বের হয়, যা তখনকার সকল পত্রিকায় প্রথম পৃষ্ঠায় ছাপা হয়েছিল। তিনি আত্মগোপনে গেলেন। কিন্তু দুই মাস পর ধরা পড়েন। তাকে গোয়েন্দা সংস্থার কার্যালয়ে দুই দিন ও দুই রাত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাখা হয়েছিল। ঘুমাতে দেয়া হয়নি তাকে। মাথার উপর রাখা হয়েছিল অনেক পাওয়ারের বৈদ্যুতিক বাতি।
১৯৬৫ সালের তার জেলে থাকাকালেই ছাত্র ইউনিয়নের একাংশকে (মেনন গ্রুপ) সংগঠিত করার কাজে আত্মনিয়োগ করেন। ইতোমধ্যে ১৯৬৫ সালে তিনি রেল ধর্মঘটের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন এবং আবার স্বল্পকালের জন্য কারারুদ্ধ হন। জেলে থাকা অবস্থায় তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে, মুক্তির পর তিনি আর ছাত্র সংগঠন করবেন না এবং সরাসরি শ্রমিক বা কৃষক আন্দোলনের সাথে যুক্ত হবেন। ১৯৬৬ সালে তিনি সরাসরি শ্রমিক আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন।
শ্রমিক আন্দোলন:
১৯৬৬ সালে কাজী জাফর আহমদ ও হায়দার আকবর খান রনো টঙ্গী শ্রমিক এলাকায় শ্রমিক আন্দেলনের সঙ্গে যুক্ত হন। এই দুইজন একত্রে টঙ্গী অঞ্চলে যে শ্রমিক আন্দেলন গড়ে তুলেছিলেন তা বাংলাদেশের শ্রমিক আন্দোলনের ইতিহাসে এক উজ্জ্বল অধ্যায়।
হায়দার আকবর খান রনো ঢাকার বাসা ছেড়ে টঙ্গীর শ্রমিক বস্তিতে বাস করতে শুরু করেন। সপ্তাহে এক আধবার ঢাকায় আসতেন রাজনৈতিক কারণে। মধ্যবিত্ত ঘর থেকে আসা রাজনৈতিক কর্মীর নিজস্ব বাড়ী-ঘর ছেড়ে শ্রমিক বস্তিতে দিনের পর দিন থেকে তৃণমূল পর্যায়ে শ্রমিক আন্দোলন ও বিপ্লবী সংগঠন গড়ে তোলার ঘটনা আমাদের দেশে খুব বেশী নেই। রনোর এই জীবন বিপ্লবীদের জন্য এক দৃষ্টান্ত।
গ্রেফতারী পরওয়ানা এড়িয়ে তিনি শ্রমিক কলোনী বা বস্তিতে বাস করতেন। টঙ্গীতে যে ধরণের শক্তিশালী সংগঠন গড়ে তোলা হয়েছিল তাতে এবং শ্রমিকদের মধ্যে তার যে ধরণের বিশাল জনপ্রিয়তা ছিল, তাতে টঙ্গী অঞ্চল থেকে পুলিশের পক্ষে খুব বড় রকমের প্রস্তুতি ও ঝুঁকি নেয়া ছাড়া তাকে গ্রেফতার করা সহজ ছিল না। এরপর তিনি আর কখনো গ্রেফতার হননি। তবে আত্মগোপনে গেছেন অনেকবার।
১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানেও তার ভূমিকা ছিল। একদিকে টঙ্গীতে শ্রমিক আন্দোলন, পাশাপাশি জাতীয় রাজনৈতিক আন্দোলনে সংগঠকের ভূমিকা দুটোই পাশাপাশি চালিয়ে গেছেন। ১৯৬৯ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে টঙ্গী থেকেই শুরু হলো ঐতিহাসিক ঘেরাও আন্দোলন। এই আন্দোলনে তিনি নেতৃত্ব দেন। পরে ঘেরাও আন্দোলন অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ে। রনোকে তখন টঙ্গীর বাইরে অন্যান্য শ্রমিক অঞ্চলেও যেতে হয়েছে সংগঠন গড়ে তুলতে ও নেতৃত্ব দিতে। বলা যেতে পারে তার নেতৃত্বে এক নতুন ধারার শ্রমিক আন্দোলন গড়ে উঠেছিল।
১৯৬৯-৭০ সালে দ্বিতীয় সামরিক শাসন আমলে টেক্সটাইল শ্রমিকদের যে ঐতিহাসিক দুইমাস ব্যাপী বেআইনী ধর্মঘট হয়েছিল রনো ছিলেন তার নেতৃত্বে। টঙ্গী অঞ্চলে অসংখ্য বীরত্বপূর্ণ লড়াইয়ে সেনাপতির ভূমিকা পালন করেছিলেন এই সাহসী নেতা হায়দার আকবর খান রনো। সেসব ঘটনা এখনো কিংবাদন্তির মতো রয়েছে। ১৯৭০ সালে তিনি তদানিন্তন সর্ববৃহৎ শ্রমিক সংগঠন পূর্ব পাকিস্তান শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন।
রাজনৈতিক আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ ও কমিউনিস্ট আন্দোলন:
ছেলে বেলায় পারিবারিক সূত্রে তিনি কমিউনিস্ট মতাদর্শের সংস্পর্শে আসেন। কিছু কিছু মার্কসবাদী গ্রন্থ তিনি স্কুলজীবনে কলকাতা থেকে সংগ্রহ করেছিলেন। ১৯৬৫ সালের আগে এদেশে মার্কসবাদী সাহিত্য নিষিদ্ধ ছিল। ১৯৬০ সালে তিনি গোপন কমিউনিস্ট পার্টির সংস্পর্শে আসেন। ১৯৬৬ সালে গোপন কমিউনিস্ট পার্টি আন্তর্জাতিক মতবিতর্কের ফলে বিভক্ত হলে তিনি চীনপন্থী অংশের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন। পরবর্তী দুই বছরে ঐ অংশ কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়। ১৯৬৯ সালে তিনি জননেতা কমরেড রাশেদ খান মেনন সহ আরও কয়েকজনের সঙ্গে একত্রে গঠন করেন কমিউনিস্ট বিপ্লবীদের পূর্ব বাংলা সমন্বয় কমিটি।
১৯৭১ সালে এই সমন্বয় কমিটির নেতৃত্বে বাংলাদেশে বিভিন্ন এলাকায় ১৪টি সশস্ত্র ঘাঁটি তৈরী হয়েছিল। এই সকল অঞ্চলগুলির সঙ্গে যোগাযোগ ও রাজনৈতিক পরিচালনা এবং মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত করার কাজে তিনি নিয়োজিত ছিলেন। ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ অন্যান্য সহকর্মীদের সঙ্গে তিনি শিবপুর যান যেখান থেকে পরবর্তীতে সমন্বয় কমিটির নেতৃত্বাধীন সশস্ত্র ঘাঁটি অঞ্চলগুলির সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা হতো। শিবপুরের সমন্বয় কমিটির অন্যতম সদস্য মান্নান ভুঁইয়ার নেতৃত্বে গড়ে উঠেছিল বিশাল মুক্তিবাহিনী এবং ঘাঁটি অঞ্চল। সেখান থেকে তিনি এবং কমরেড রাশেদ খান মেনন নানা পথ ঘুরে টাঙ্গাইলের বিন্নাফুর গ্রামে গিয়েছিলেন মাওলানা ভাসানীর সঙ্গে সাক্ষাত করতে (৩ এপ্রিল, ১৯৭১)। পরদিনই মাওলানা ভাসানীর বাসা পাকিস্তানি বাহিনী কর্তৃক আক্রান্ত হয়েছিল। একদিন পরেই ভাসানীর সঙ্গে কমরেড রনো ও কমরেড মেনন বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। যুদ্ধের সময় অনেক চেষ্টা করেও তারা আর যোগাযোগ করতে পারেননি।
১৯৭১-এর ১ ও ২ জুন কলকাতার বেলেঘাটায় ভারতের মার্কসবাদী কমিউনিস্ট পার্টির সহায়তায় বামপন্থীদের এক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় যেখানে বাংলাদেশ জাতীয় মুক্তি সংগ্রাম সমন্বয় কমিটি গঠিত হয়েছিল। হায়দার আকবর খান রনো এই কমিটির ঘোষণাপত্র রচনা ও পেশ করেছিলেন।
ছাত্রজীবন থেকেই মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যে আসার সুযোগ তার হয়েছিল। পরবর্তী জীবনে তিনি মাওলানা ভাসানীর ঘনিষ্ঠ সহযোগী হয়ে জাতীয় রাজনীতিতে ভূমিকা রেখেছিলেন। ১৯৭১ সালেই রনোর পরিচয় ঘটে ভারতের কমিউনিস্ট আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা কমরেড মোজাফফর আহমদসহ ভারতের মার্কসবাদী কমিউনিস্ট পার্টির বিভিন্ন নেতার সাথে। কমরেড রনোর সঙ্গে অনেক বিদেশী কমিউনিস্ট ও ওয়ার্কার্স পার্টির ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। কমিউনিস্ট পার্টিসমুহের অনেক আন্তর্জাতিক সম্মেলনেও তিনি যোগদান করেছেন।
১৯৭৩ সালে কমরেড রনো ও অন্যান্য সহকর্মীরা মিলে গঠন করেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (লেনিনবাদী)। পরে ১৯৭৯ সালে পার্টির নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি। প্রথম থেকেই তিনি পলিটব্যুরোর সদস্য ছিলেন। ১৯৭৯-৮৪ সাল পর্যন্ত তিনি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ২০০৯ সালে কমরেড রাশেদ খান মেননের সাথে রাজনৈতিক ও মতাদর্শগত বিরোধ তৈরি হলে তিনি ওয়ার্কার্স পার্টির একাংশ নিয়ে কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হন। বর্তমানে ঐ পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য। তিনি কমিউনিস্ট ঐক্যের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
মাওলানা ভাসনীর ঘনিষ্ঠ অনুসারী হলেও এবং বিভিন্ন সময় ন্যাপের কর্মকান্ডে ভূমিকা রাখলেও তিনি কখনও ন্যাপের সভ্য হননি। ১৯৭৪ সালে ইউপিপি গঠিত হলে তিনি তার সহ-সভপতি ছিলেন ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত। সুদীর্ঘ রাজনৈতিকজীবনে জাতীয় পর্যায়ের সকল রাজনৈতিক কর্মকান্ডের সঙ্গে তিনি যে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন শুধু তাই নয়, বিভিন্ন সময় তিনি বুর্জোয়া সুবিধাবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন এবং প্রতিটি রাজনৈতিক প্রশ্নে শ্রমিক শ্রেণীর দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছেন তত্ত্বগতভাবে এবং বাস্তব সাংগঠনিক আন্দোলনগত কাজের মধ্য দিয়ে। রনোর মধ্যে বাস্তব সংগ্রাম ও তত্ত্বেও সমন্বয় লক্ষ্য করা যায়। সাহস, দৃঢ়তা, কৌশলগত নমনীয়তা ও বুদ্ধিমত্তার এক অর্পূব সমন্বয় দেখা যায়।
এরশাদ সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলনে তিনি প্রথম থেকেই নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করেছেন। সাতবার তার নামে হুলিয়া জারী হয়েছে। প্রতিবারই তিনি আত্মগোপনে থেকে আন্দোলনকে সংগঠিত করেছেন। এরশাদ আমলের নয় বছরে তার বাসায় পঞ্চাশ বারের বেশী মিলিটারী পুলিশ রেইড করেছিল। ৯০-এর গণঅভ্যুত্থানের তিনি ছিলেন অন্যতম রূপকার।
লেখালেখি:
কমরেড রনো একদিকে জননেতা, অপরদিকে তাত্ত্বিক ও লেখক। রাজনীতি, অর্থনীতি, দর্শন এমনকি সাহিত্য ও বিজ্ঞানের উপরও তার অজস্র লেখা আছে। তার প্রথম বই প্রকাশিত হয় ২৪ বৎসর বয়সে “সাম্রাজ্যবাদের রূপরেখা”।
এ পর্যন্ত প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা অনেক। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ১) শতাব্দী পেরিয়ে, ২) ফরাসী বিপ্লব থেকে আক্টোবর বিপ্লব, ৩) পুজিবাদের মৃত্যু ঘন্টা, (৪) সোভিয়েত সমাজতন্ত্রের সত্তর বছর, ৫) গ্রাম শহরের গরীব মানুষ জোট বাধো, ৬) মার্কসবাদের প্রথম পাঠ, ৭) মার্কসীয় অর্থনীতি, ৮) মার্কসবাদ ও সশস্ত্র সংগ্রাম, ৯) সিপিবির বন্ধুদের প্রতি (পুস্তিকা), ১০) চীনপন্থী বন্ধুদের প্রতি (পুস্তিকা), ১১) শ্রেণী দৃষ্টিকোন থেকে রবীন্দ্রনাথ, ১২) মানুষের কবি রবীন্দ্রনাথ, ১৩) কোয়ান্টাম যগৎ – কিছু বৈজ্ঞানিক ও দার্শনিক প্রশ্ন, ১৪) বাংলা সাহিত্যের প্রগতির ধারা – প্রথম ও দ্বিতীয় খন্ড, ১৫) পলাশী থেকে মুক্তিযুদ্ধ – প্রথম ও দ্বিতীয় খন্ড, ১৬) মুক্তিযুদ্ধে বামপন্থীরা (সম্পাদিত), ২০) স্টালিন প্রসঙ্গে, ২১) অক্টোবর বিপ্লবের তাৎপর্য ও বর্তমান প্রেক্ষাপট, ২২) নির্বাচিত প্রবন্ধ সংকলন (প্রথম খন্ড)।
তার কিছু কিছু বই ও প্রবন্ধ বিশেষ সময়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। ২০০৫ সালে তার আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ “শতাব্দী পেরিয়ে” প্রথম আলোর নির্বাচনে বছরের সেরা বই হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছিল। তার কিছু লেখা বিদেশী ভাষায় অনুদিত হয়েছে।
২০১৬ সালে বই মেলায় প্রকাশিত নতুন বই: ১. মানুষের কবি রবীন্দ্রনাথ- প্রকাশক, বাংলা একাডেমি। ২. বাংলা সাহিত্যে প্রগতির ধারা (প্রথম খন্ড) প্রকাশক, ছায়াবীথি। ৩. নির্বাচিত প্রবন্ধ সংকলন (প্রথম খন্ড), প্রকাশক, অগ্রদূত। ৪. উত্তাল ষাদের দশক।
অন্যান্য:
হায়দার আকবর খান রনো খুব সরল জীবনযাপন করেন। নিরহংকারী মানুষটি সহজ সরলভাবে মিশতে পারেন যে কোন সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে এবং সকলেই তার আন্তরিকতার স্পর্শে মুগ্ধ হন। বিশেষ করে যে গরীব জনগোষ্ঠীর মধ্যে তিনি কাজ করেন, তারা তাকে আপন বলে গ্রহণ করতে পারে রনোর নিজস্ব চারিত্রিক ও আচরণগত বৈশিষ্টের কারণে।
একমাত্র রাজনীতি ছাড়া অন্য কোন পেশাও তার ছিল না। তিনি ছিলেন সার্বক্ষনিক রাজনীতিবিদ। তবে খবরের কাগজে কলম লেখা ও প্রকাশিত বইয়ের থেকে তিনি কিছু অর্থ উপার্জন করেছেন।
আগ্রহের বিষয়:
তিনি সাহিত্য পড়তে ভালবাসেন। বাংলা ইংরেজী সাহিত্যের বহু কবিতা তার এখনও মুখস্থ আছে। সুযোগ পেলেই তিনি ভালো সিনেমা ও নাটক দেখেন। ক্রিকেট খেলায় তার আগ্রহ আছে।
মহান ও কীর্তিমান মানুষদের নিয়ে সব সময়ই লেখা যায় আমরা এটা বিশ্বাস করি। পরিশেষে, সমাজতন্ত্র অভিমুখী অসাম্প্রদায়িক জনগণতান্ত্রিক ও বৈষম্যহীন ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রত্যয়ে সমতা-ন্যায্যতার প্রশ্নে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার প্রয়োজনেই বিশ্বজনীন মহান এই গুণীর রাজনীতি, জীবন সংগ্রাম, কীর্তি, ইতিহাস, তত্ত্ব ও অনুশীলন সম্পর্কে পাঠ প্রাসঙ্গিক ও জরুরী।
বিদায় মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও তৎকালীন স্বাধীন জনগণতান্ত্রিক পূর্ববাংলার প্রবক্তা, বিশিষ্ট বামপন্থী নেতা, কমিউনিস্ট আন্দোলনের অন্যতম প্রবাদ পুরুষ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা কমরেড হায়দার আকবর খান রনো ভাই। আপনার প্রতি অতল শ্রদ্ধা ও অভিবাদন!
লেখক: মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক, সাংবাদিক ও কলামিস্ট
সারাবাংলা/এসবিডিই
কমিউনিস্ট আন্দোলনের কিংবদন্তি কমরেড জর্জ দিমিত্রভ মুক্তমত সৈয়দ আমিরুজ্জামান