Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আমের অর্থনীতিতে চাঙা ভাব: বিপণন ও সংরক্ষণ জরুরী

ড. মিহির কুমার রায়
২২ মে ২০২৪ ১৪:৪১

আম বাংলাদেশের প্রধান ফল হলেও কাঁঠাল জাতীয় ফল হিসাবে বিবেচিত। প্রতি বছর আমের মৌসুমকে ঘিরে আমচাষী ও ব্যবসায়ীদের নিয়ে সরকারকে নানা নীতি-পরিকল্পনা নিতে দেখা যায়, আর ভোক্তাদের জন্য সেসব নীতি বেশ জোরেশোরে প্রচার করা হয় গণমাধ্যমে যার মধ্যে আছে আমের উৎপাদন বাড়ানো, যত্নসহকারে বাগানের পরিচর্যা, গাছে সময়মতো স্প্রে করা, হার্ভেস্টিং, ফল সংরক্ষণ, ভেজালমুক্তভাবে বাজারজাতকরণ, বিদেশে রপ্তানিকরণ ইত্যাদি। আমচাষ লাভজনক হওয়ায় অনেক কৃষক শস্যদানা আবাদ বাদ দিয়ে ফসলি জমিতে মৌসুমি ও বারোমাসি আম চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছে যা অর্থনীতির জন্য সুখবর।

বিজ্ঞাপন

অভিজাত আমের রাজধানী বলে খ্যাত চাঁপাই নবাবগঞ্জের আমচাষিরা বলেছেন, তাদের এলাকায় গাছে আম পাকা শুরু হলে তারপর আম নামানো হবে, অন্যদিকে বর্তমান রংপুর, নওগাঁ, ঠাকুরগাঁও পার্বত্য চট্টগ্রামে এলাকায় হাঁড়িভাঙা, আম্রপালি ও সূর্যপুরী আম সুস্বাদু আমের বাজারে বিশাল জায়গা করে নিয়েছে যার উৎপাদন, বিপণন ও ভোক্তা দিনদিন বাড়ছে। রাজশাহী এলাকায় প্রতি বছর ‘ম্যাংগো ট্যুর’ গতিপ্রাপ্ত হয়। করোনার সময় থেকে অনলাইনে আম কেনাবেচার প্রবণতা শুুরু হলেও বর্তমানে অনলাইনের মাধ্যমে আম কেনাবেচার ব্যবস্থা ব্যবসা বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। ভিডিও কলের মাধ্যমে সরাসরি আমের বাগান থেকে পছন্দনীয় জাত ও গাছের আম পাড়া, ওজন দেওয়া, প্যাকেটজাত ও প্রেরণ করার প্রবণতা বেড়ে গেছে। এজন্য বাগানে আমের মুকুল আসার পর থেকে ভিডিও দেখিয়ে ক্রেতা আকর্ষণ করে তার ফলোআপ করার মাধ্যমে অগ্রিম বিক্রির চুক্তিও করেছে কিছু অনলাইন প্রতিষ্ঠান। অপরদিকে আমের মৌসুম শুরু হলেই কুরিয়ার সার্ভিসের ব্যবসা সরব হয়ে ওঠে। অনেকে আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবকে অভিজাত আম পাঠায়, কেউ কেউ চাকরিস্থলের বড় বাবুকে খুশি করার জন্য কুরিয়ারে আম পাঠানোর আবদার মেটাতে দেখা যায়, আমের জেলাগুলোতে মানুষের আনাগোনা বাড়ে, বহু শ্রমিকদের কাজের সুযোগ তৈরি হয়, বাজারে গতি বাড়ে ও স্থানীয় ও জাতীয় অর্থনীতি চাঙ্গা হয়ে ওঠে। শুধু ফলই নয়, ফলের জুস, আচার, আমসত্ত্ব, লজেন্স, ম্যাংগোবার ইত্যাদির উৎপাদন বাড়ানোর জন্য কারখানা তৈরিতে সরকারি পরিকল্পনা গ্রহণ ও বেকার যুবকদের জন্য সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ সৃষ্ঠি হয়।

বিজ্ঞাপন

এবার পাবনায় আমের ফলন বাম্পার হওয়ায় আম চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে এবং আম থেকে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা আয় হবেবলে আশা করা যায় । জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, গত বছর পাবনায় ২ হাজার ৭৩০ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ করে ৩৪ হাজার ৯৩৮ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হয়, কিন্তু এবারে আমের বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষি বিভাগ এবং চাষিরা আশা করছেন ফলন ৩৫ হাজার মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যাবে। পাবনা সদর, ঈশ্বরদী, আটঘরিয়া, সুজানগর, চাটমোহরসহ বিভিন্ন এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে আম চাষ হচে্েছ। এবারে সদরের দাপুনিয়া, হেমায়েতপুর, মধুপুর, মালঞ্চি, ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া, কালিকাপুর, মাধপুর, সাহাপুর, লক্ষীকুা, সলিমপুরসহ বিস্তীর্ণ অঞ্চলে আমের ব্যাপক ফলন হয়েছে,তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- আম্রপালি, লেংড়া, বারি-৪, বারি-১৪, বারি-১১, বারি-৮, গৌরমতি, থাইগ্রিন, গোপালভোগ, চোষা, হাঁড়িভাঙ্গা, হিমসাগর, ফজলি, ব্যানানা ম্যাঙ্গো, ব্র“নাইকিং, কিং অব চাকা পাত, মিয়াচাকি, বৈশাখী, সিন্ধুসহ দেশি-বিদেশি কমপক্ষে ২০ জাতের আম। বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পদকপ্রাপ্ত কৃষক ও এআইপি শাহজাহান আলী বাদশা জানান, তিনি এ বছর দুই হেক্টর জমিতে আম চাষ করেছেন যেখানে দেশি-বিদেশি কমপক্ষে ২০ জাতের আম রয়েছে তার বাগানে, গত বছর প্রতি কেজি আম ৫০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে; কিন্তু এবারে তারা আশা করছেন প্রতি কেজি আম গড়ে ৭০ থেকে ১০০ টাকা পাওয়া যাবে, সে হিসেবে এবারে কমপক্ষে ৩৫০ কোটি টাকার আম বিক্রি হবে।

রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার ভাল্লুকগাছি গ্রামের আবুল হোসেন জানান, তারা প্রথম দিন গুটি জাতের আম পাড়া শুরু করেছেন। গুটি জাতের এই আম মণপ্রতি বাজারে সর্বোচ্চ ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হবে, ৩০ থেকে ৩৫ টাকা প্রতি কেজি পড়বে, আর এই আম নতুন ফল হিসেবে খুচরা বাজারে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হবে মূলত আগামী ১৫ মে থেকে উন্নত জাতের আম গোপালভোগ পাড়া শুরু হবে, এরপর এক এক করে ক্ষীরসাপাত (হিমসাগর), ল্যাংড়াসহ বিভিন্ন নাম ও জাতের আম বাজারে উঠবে। রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বাজারে নিরাপদ, বিষমুক্ত ও পরিপক্ব আম নিশ্চিত করতে এ বছরও ‘ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার’ প্রণয়ন করা হয়েছে যা অনুযায়ী গাছ থেকে আম সংগ্রহ করতে হবে। রাজশাহীতে এ বছর ১৯ হাজার ৫৭৮ হেক্টর জমিতে প্রায় ৩৩ লাখ ৬৩ হাজার ৯৮৬টি আমগাছ রয়েছে। এবার জেলায ৯৫ ভাগ গাছে মুকুল এসেছিল গত বছর ১৮ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমিতে আমবাগান ছিল। এবার বাগান বেড়েছে ১ হাজার ৬৩ হেক্টর জমিতে। এ বছর হেক্টরপ্রতি ১৩.২০ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে যাঅর্জিত হলে জেলায় এ বছর মোট ২ লাখ ৫৮ হাজার ৪৫০ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হবে, সব মিলিয়ে চলতি মৌসুমে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকার আম-বাণিজ্যের প্রত্যাশা করা হচ্ছে। গেল বছর মেহেরপুর জেলায় প্রায় ৩৩ হাজার ৫০০ টন আম উৎপাদন হয়েছিল। এ বছর ২ হাজার ৩৪০ হেক্টর জমির আম বাগান থেকে ৪০ হাজার টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে জেলা কৃষি বিভাগের।

মেহেরপুর জেলার আম চাষিদের মতে অনুকূল পরিবেশের কারণে আমের বাম্পার ফলন হয়েছে এবং এই জেলার বিখ্যাত বনেদি জাতের বোম্বাই, হিমসাগর এবং ন্যাংড়ার সঙ্গে রয়েছে ফজলি, আম্রপলি, রুপালিসহ সুস্বাদু বিভিন্ন জাতের আম চাষ আছে, এর মধ্যে বাগান মালিকরা আম ভাঙার কাজ শুরু করে দিয়েছেন, মুজিবনগর আম্রকাননে ১২০০ আম গাছ আছে, ওই এক বাগানে ১২০০ আম গাছ ১২০০ জাতের। লাভজনক হওয়ায় প্রতি বছর কৃষিজমিতে তৈরি করা হচ্ছে আমের বাগান, ১৮ শতক থেকে ৯ শতকের প্রথম পর্যায়ে মুজিবনগর আম্রকানন মেহেরপুরের বড়বাগান, নায়েববাগান, মহাজনপুর আম বাগান, মল্লিক বাগান, হাঁদুবাবুর বাগান, রামবাবুর বাগান, গোপি সুন্দরী ও বিশ্বাস বাগান (বিলুপ্ত); চিৎলা ও আমঝুপি কুঠি বাগান, বারাদি ফার্মের বাগান সবচেয়ে বড় আমের বাগান। এসব বাগানে হিমসাগর, ন্যাংড়া, গোপালভোগ, খিরসাপাতি, খিরসাভোগ, জামাইভোগ, ফজলি, কাঁচামিঠা, কুমড়াজালি, খেজুরছড়ি, পেয়ারাফুলি, নারকেল পাখি, গুলগুলি, আষাঢ়ে, আশ্বিনা, বারোমাসি, মোহনভোগসহ অসংখ্য নাম, রং, স্বাদ ও গন্ধের আম চাষ আছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জানান, জেলায় প্রায় সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে এবং এখানকার মাটির গুণেই আম খুবই সুস্বাদু। নাটোর জেলায় ২০২২-২৩ মৌসুমের গাছ থেকে নিরাপদ আম সংগ্রহ কার্যক্রম ১৫ মে থেকে শুরু হবে, টানা তিন মাস চলবে এ কার্যক্রম, আঁটি আম দিয়ে শুরু হওয়া এ কার্যক্রম ১৫ আগস্ট গৌরমতি আম পাড়ার মধ্য দিয়ে শেষ হবে। এবার নাটোরের সাত উপজেলার পাঁচ হাজার ৭৪৭ হেক্টর জমিতে আম উৎপাদন হয়েছে। এবারও গত বছরের মতোই ৭৯ হাজার ৭৬৭ টন আম উৎপাদন হবে বলে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে । গড়ে এক হাজার ২০০ টাকা মন হিসাবে যার বাজারমূল্য প্রায় ২৩৯ কোটি টাকা, জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলার জোয়াড়ীর আম চাষি আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, দীর্ঘদিন থেকে তিনি তার ৪০ বিঘা জমিতে ২৭ প্রকার আম চাষ করছেন, তার দাবি এ ৪০ বিঘা জমিতে অন্য ফসল করলে তিনি বেশি লাভবান হতেন, আম চাষ করে তার কোনো লাভ হচ্ছে না, অল্প সময়ের মধ্যে সব আম পেকে যাওয়ায় কৃষক উপযুক্ত মূল্য পান না বলে তিনি মনে করেন।আহম্মদপুরের আম ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আড়তদার ও আম চাষি কামরুজ্জামান রউফ ও সদরের একডালা এলাকার আমচাষি আব্দুর রহিম বলেন, এবার সঠিক সময়ে আম পাড়া শুরু হবে, এসব আম ঢাকাসহ দেশের বড় শহরগুলোতে সরবরাহ করার জন্য তারা বিশেষ ট্রেন সার্ভিস চালুর দাবি জানান । এদিকে খাগড়াছড়িতে বাড়ছে আম অর্থনীতির পরিধি,প্রতিবছরই বাড়ছে বাগানের সংখ্যা, অনুকূল আবহাওয়া ও পাহাড়ের মাটি আম চাষের উপযোগী হওয়ায় বাড়ছে চাষের পরিমাণ জেলায় ছোট-বড় আম বাগানের সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার, আর এ খাতে জড়িত অন্তত ২০ হাজার মানুষ এবং আম উৎপাদনের ‘নতুন রাজধানী’ এখন খাগড়াছড়ি, চলতি মৌসুমে তিন হাজার ৭৯৩ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে, হেক্টরপ্রতি উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১২ টন, সে হিসাবে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৪৫ হাজার ৫২০ মেট্রিক টন, যার বাজার মূল্য প্রায় দুই হাজার ২৭৫ কোটি টাকা। জেলার ৯ উপজেলায় আম চাষির সংখ্যা বাড়ছে খাগড়াছড়ি জেলা সদর, দীঘিনালা, মাটিরাঙা, গুইমারা, পানছড়িসহ সবখানেই বাড়ছে আমের আবাদ। জেলা সদরের কমলছড়ি ইউনিয়নের ভুয়াছড়ি সড়কের পাশে আমের বাগান গড়ে তুলেছেন কৃষক মংশিতু চৌধুরী, প্রায় ৩০ একর পাহাড়ের টিলাভূমিতে আমের বাগান করেন তিনি, বাগানে অন্তত চার হাজার গাছে আমের ফলন এসেছে, চলতি মৌসুমে আমের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৫০ থেকে ৬০ টন বলে জানিয়েছেন এ কৃষক, খাগড়াছড়ির সদর উপজেলার ভাইবোনছড়া ইউনিয়নের জোরমরম ও বানছড়া এলাকায় চাষির সংখ্যা প্রায় ১৫০ জন, পুরোএলাকায় আম চাষ হয়েছে, সুজন চাকমা ২০০৭ সালে এ এলাকায় প্রথম বাগান গড়ে তোলেন, ২০ একর পাহাড়ি টিলায় তিনি দুই হাজার আমের চারা রোপণ করেছেন তিনি, চলতি মৌসুমে তার আমের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১০০ টন, যার বাজার মূল্য প্রায় ৫০ লাখ টাকা। এ কৃষক আরও বলেন, ‘কীটনাশক ও শ্রমিক মজুরি বাবদ ব্যয় হয়েছে ১৫ লাখ টাকা, উৎপাদন খরচ বাদ দেওয়ার পরও ৩৫ লাখ টাকার মতো লাভ হবে, মৌসুমের শুরুর দিকে প্রতিকেজি আম বিক্রি হয় ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, আম্রপালি, রাংগুয়াই, বারি-৪সহ বিভিন্ন জাতের আম চাষ হয়েছে, চলতি মৌসুমে কৃষক আম বিক্রি করে লাভবান হবেন।

এখনো আম আহরণ শুরু হয়নি আমের রাজধানী চাঁপাইনবাবগঞ্জে। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে আম বাজারজাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। নাবী জাতের হওয়ায় দেশের অন্যান্য স্থানের চেয়ে অন্তত দুই সপ্তাহ পর এই অঞ্চলের আম পরিপক্ক হয়। তাই আগের বছরগুলোর মতো এবারও আম আহরণের ক্ষেত্রে কোনো সময়সীমা নির্ধারণ করেনি স্থানীয় প্রশাসন। গাছে আম পরিপক্ক হলেই শুরু হবে বাজারজাত, চলতি বছর প্রায় দুই হাজার ৪০০ কোটি টাকা আম বাণিজ্যের আশা করছে কৃষি বিভাগ, গত বছরের তুলনায় প্রায় সাড়ে ৭০০ কোটি টাকা বৃদ্ধির আশা করছে কৃষক । কৃষি বিভাগের তথ্যানুযায়ী জেলায় প্রায় ৩৮ হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ করা হয়, গাছের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ২৮ হাজার, চলতি আম মৌসুমে চার লাখ টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, তবে আবহাওয়া বৈরী রূপ ধারণ না করলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। আম ব্যবসায়ীরা জানান, চলতি মাসের শেষ দিকে গুটি আম বাজারজাত শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে, গুটি আম ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা মন দরে বিক্রি হতে পাওে, আর গোপালভোগ ও ক্ষীরসাপাতা বা হিমসাগর ১৬০০ থেকে দুই হাজার টাকা মন দরে বিক্রি হতে পারে। উদ্যোক্তা রা জানান এ বছর গাছে প্রচুর মুকুল এসেছিল, সে অনুপাতে গাছে তুলনামূলক ভালো ফলন হয়েছে, এ ছাড়া এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চালী লাভের আশা করছে। তারা হতাশা ব্যক্ত করে জানান, এ বছর হঠাৎ করে আমের প্লাস্টিক ক্যারেট ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে অন্তত অর্ধ কোটি টাকার ক্যারেট মজুদ করেছে, তারা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি শুরুকরেছে, গত বছর প্রতি ক্যারেটের দাম ছিল ১১০ টাকা অথচ আমের মৌসুম শুরু না হতেই ১৭০ টাকার নিচে কোনো ক্যারেট বিক্রি করছে না, আম মৌসুম শুরু হলে এই ক্যারেটের দাম আরও বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জানান, চলতি বছর আমের গাছে মুকুলের পরিমাণ বেশি ছিল এবং ফলনের পরিমাণও বেশি হয়েছে।

উপরের আলোচনা থেকে এটাই প্রতিয়মান হয় যে সারা দেশের আম উ্ৎপাদনকারী এলাকা যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে, অপরদিকে চাষের আওতায জমি/ চাষীর সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন যদি আবহাওয়া ও বাজার ব্যবস্থা সহায়ক থাকে তা হলে আর সমস্যাকি? এ ব্যাপারে সরকানী নীতি সহায়তা, প্রসেসিং শিল্প স্থাপনে প্রণোদনা, বাজার ব্যবস্থাপনা, আম সংরক্ষন ইত্যাদি সহায়ক হলে আমের অর্থনীতির চাঙ্গা ভাব আরও জোড়ালো হবে এবং আম ফল হিসাবে দেশের অর্থনীতিতে একটি স্থান কওে নিতে পারবে বলে আশা করা যায় ।

লেখক: অধ্যাপক (অর্থনীতি), সাবেক পরিচালক, বার্ড (কুমিল্লা), সাবেক ডিন (ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ) ও সিন্ডিকেট সদস্য, সিটি ইউনিভার্সিটি, ঢাকা ও এলকপ মনোনীত দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষন টিমের সদস্য

সারাবাংলা/এসবিডিই

আমের অর্থনীতিতে চাঙা ভাব: বিপণন ও সংরক্ষণ জরুরী ড. মিহির কুমার রায় মুক্তমত

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর