Thursday 05 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ধর্মান্ধের প্রকোপে ভবিষ্যৎ প্রকম্পে

কাজী মাসুদুর রহমান
২৩ মে ২০২৪ ১৫:২৭

এক কথায় ধর্মে অন্ধ হওয়াকে ধর্মান্ধ বলে।কিন্তু প্রচলিত বাস্তবতায় এর অর্থ নেতিবাচক; অর্থাৎ-যিনি ধর্মের সার্বজনীন মানবিক আবেদনকে অস্বীকার বা উপেক্ষা করে অন্তর্নিহিত রিপু (খারাপ প্রবণতা) চরিতার্থে ব্যক্তি ও গোষ্ঠীস্বার্থে ধর্মের বিকৃতি সাধনের দ্বারা বিভাজন, বৈষম্য ও সর্বত্র (পরিবার, সমাজ, রাস্ট্র) অশান্তি সৃষ্টির অপচিন্তা ও অপচেষ্টা করে তাকে ধর্মান্ধ (fanatic) বলে। বস্তুতঃ সার্বজনীন কল্যাণপ্রসূত ধারণা বা জ্ঞানই হলো ধর্মের সারবস্তুতা; এর বিপরীত মুখিতা-ই হলো ধর্মান্ধতা। ধর্মীয় অজ্ঞতা থেকে জন্ম নেয় ধর্মান্ধতা। আর ধর্মান্ধতা থেকে জন্ম নেয় সাম্প্রদায়িকতা।

পৃথিবীতে ধর্ম আবির্ভূত হওয়ার অব্যবহিত পরেই ধর্মান্ধতাও সমান্তরাল ভাবে প্রচলিত হয়ে আসছে। সভ্যতার ক্রমবিকাশমান ধারায় ধর্মান্ধতাই সবচেয়ে বড় অন্তরায় হয়ে দেখা দিয়েছে। এটা কূটরাজনীতির অনুষঙ্গ ও ঢাল হিসাবেও ব্যবহার হয়ে আসছে। এই উপমহাদেশে ধর্মান্ধতা প্রসূত সাম্প্রদায়িকতার বীজ রোপিত হয়েছে বৃটিশ ঔপনিবেশিক আমল হতে। এর মাধ্যমে সামাজিক বিভাজন সৃষ্টি করে জাতীয় ঐক্য দূর্বল করে একচ্ছত্র নিষ্পেষণ ও শোষণ চরিতার্থ করাই ছিল বৃটিশের লক্ষ্য। পরবর্তীতে দ্বিজাতিতাত্ত্বিক বা সম্প্রদায়ভিত্তিক রাস্ট্রীয় প্রভাবে তা (ধর্মান্ধতা) পরিপুষ্ট হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের (১৯৭১) পূর্বাপর পূর্ববঙ্গের সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীদের কাছে তা এক অবিচ্ছেদ্য রাজনৈতিক কূটকৌশলে পরিণত হয়েছে। উল্লেখ্য, এদেশের ধর্মান্ধ তথা সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী প্রকাশ্যে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল এবং কখনোই এদেশের স্বাধীনতাকে মেনে নেয়নি। মুক্তিযুদ্ধকালীন এদেশের ধর্মান্ধগোষ্ঠীরা গণহত্যাকারী পশ্চিম পাকিস্তানের পক্ষে মসজিদে-মাদ্রাসায় দোয়া- মোনাজাতও করেছিল। এছাড়াও গণহত্যা, গণধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগে সহযোগিতাকারী রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস গ্রুপে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ- আল কোরআন শপথের মাধ্যমে ধর্মান্ধরা দলে দলে যোগদান করেছিল। স্বাধীনতা পরবর্তী কথিত ধর্মীয় প্রবক্তা ও জামায়াত নেতা দেলোয়ার হোসেন সাইদী (প্রয়াত) তার দলের দুরভিসন্ধি (মুক্তিযুদ্ধে পরাজয়ের প্রতিশোধ) বাস্তবায়নে অত্যন্ত কূটকৌশলে ইসলামের বিকৃতি সাধন করেছিল। এর দ্বারা তিনি তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানিদের মতই ইসলামকে বাঙালি জাতিসত্তা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সাথে সাংঘর্ষিক মর্মে উপস্থাপন করে ধর্মান্ধদের বাঙালি জাতিসত্তা বিরোধী মনস্তত্ত্ব প্রগাঢ় করে তোলে। প্রসঙ্গত, সাইদীকে এদেশের ধর্মান্ধগোষ্ঠীবর্গের মাষ্টারমাইন্ড বললে অত্যুক্তি হবে না।

বলাবাহুল্য, ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর সাথে পারষ্পরিক রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকলেও ধর্মান্ধতা ও বিজাতীয়তা চর্চার ক্ষেত্রে এদের অধিকাংশরাই এক ও অভিন্ন। লক্ষ্যণীয়, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে এদেরকে কখনোই সরব হতে দেখা যায়নি। আবার, অসাম্প্রদায়িক বাঙালি জাতিসত্তা, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির বিরুদ্ধে এদের অবস্থান এক ও অভিন্ন যা বহু অপ্রীতিকর উদাহরণে জর্জরিত। সম্প্রতি হেফাজত ইসলামের নেতা মামুনুল হক জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর সংগঠনটি আবার নড়েচড়ে বসেছে। ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে রাজধানীর ধোলাই পাড়ে তার ভাস্কর্য স্থাপনকে কেন্দ্র করে মামুনুল হকের নেতৃত্বে হেফাজত তীব্র বিরোধিতা করে। চরমোনাই পীর ফজলুল করিমের নেতৃত্বে ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ সংগঠনটিও যথেষ্ট বিরোধিতা করে। এদের প্রভাবে অন্যসকল ধর্মান্ধরাও ফুঁসে ওঠে। এতে তৎকালীন আওয়ামী সরকার পিছু হটে। এ ঘটনায় হেফাজত নেতা মামুনুল হক ও জুনায়েদ বাবু নাগরি (প্রয়াত)সহ সংগঠনের আমির চরমোনাই পীর ফজলুল করীমের বিরুদ্ধে রাস্ট্রদ্রোহ মামলা রুজু হয়। উল্লেখ্য, মামুনুল হকের বিরুদ্ধে একটি হত্যাসহ মোট ৪১ টি মামলা রুজু আছে। এগুলোর মধ্যে ভাস্কর্যের পাশাপাশি একটি ধর্ষণ মামলাও চাঞ্চল্যকর হয়ে ওঠে। তিনি ২০২১ সালের ৩০ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও এর রয়্যাল রিসোর্টে এক নারী ঘটিত কেলেংকারিতে স্থানীয় জনতার নিকট হাতেনাতে ধরা পরেন। ভুক্তভোগী নারী তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন। ঘৃণিত বিষ্ময় হলো, ঐ সমসাময়িকে ভাস্কর্য বিরোধী প্রতিবাদ উঠলেও তার এই চারিত্রিক স্খলনের বিরুদ্ধে ধর্মান্ধগোষ্ঠীদের কেউ প্রতিবাদ তো দূরের কথা, নুন্যতম ঘৃণাটুকুও জানায়নি। অর্থাৎ, সংঘটিত ঘটনাক্রমে আবারো প্রমাণিত হলো – ধর্মকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে জাতিসত্তা ও রাস্ট্র বিরোধিতা এবং সমাজে অরাজকতা সৃষ্টি করাই হলো এদেশের ধর্মান্ধ গোষ্ঠীদের মূল লক্ষ্য। অথচ, কোরআন ঘোষণা করছে, ‘ফিতনা (ফ্যাসাদ) হত্যার চেয়ে মহাপাপ’ (সূরা-বাকারা; আয়াত- ২১৭)।

বলাবাহুল্য, পৃথিবীর প্রায় সকল মুসলিম দেশেও ভাস্কর্য শোভিত হয়ে আছে। ভাস্কর্যের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দেশ ও জাতির ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও সভ্যতার শৈল্পিক প্রকাশ ঘটে। মুসলিমদের তীর্থভুমি খোদ আরব্য নগরীতেই পাঁচশতাধিক ভাস্কর্য স্থাপিত আছে। শুধুমাত্র জেদ্দাতেই রয়েছে প্রায় চারশত ভাস্কর্য। ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে ধর্মান্ধদের অবস্থান থাকলেও উদার ইসলামপন্থীদের কাছে এটার বিরুদ্ধে কোনো বিতর্ক নাই। কেননা, ইসলামি দর্শনে বস্তুগত রুপকল্প নয় বরং অন্তরের সংকল্প (নিয়্যত)কেই সর্বসাকুল্যে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ইসলাম ঘোষণা করছে, ‘তোমাদের অর্থহীন শপথের জন্য আল্লাহ তোমাদের ধরবেন না; তিনি পাকড়াও করবেন তোমাদের অন্তরের সংকল্পের জন্য’ (সূরা- বাকারা, আয়াত-২২৫)। অথচ ইস্যুটিকে ঘিরে ধর্মান্ধ বক্তারা যেভাবে গর্জে উঠেছিল তাতে পবিত্র ইসলামের সমস্ত শালীনতা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। অথচ কোরআন ঘোষণা করছে, ‘আর তুমি তোমার চলনে মধ্যমপন্থা অবলম্বন করবে এবং কন্ঠস্বর নীচু রাখবে; নিঃসন্দেহে স্বরের মধ্যে গাধার (পশু) স্বরই সর্বাপেক্ষা অধিক অপছন্দনীয়’ (সূরা-লুকমান, আয়াত-১৯)। ভাস্কর্য বিতর্কের মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরে অরাজকতা সৃষ্টি করে ২০২১ সালে অনুষ্ঠেয় স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনকে বাধাগ্রস্ত করাই ছিল ধর্মান্ধগোষ্ঠীদের মূল লক্ষ্য। সে সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে জাতির পিতার ম্যুরালও ভাঙচুর করা হয়। তাদের এমন হিংস্র ঔদ্ধত্যে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ধর্মান্ধগোষ্ঠীদের সরব আস্ফালনকেও প্রকারন্তরে জানান দেওয়া হয়েছিল। এর আগে ২০০৮ সালের ২৯ নভেম্বর রাতের আঁধারে ‘আলবাইয়িনিয়াত’ নামক ধর্মান্ধ গোষ্ঠী মতিঝিলের বিমান অফিসের সামনে স্থাপিত রাস্ট্রীয় বিমান সংস্থা- বাংলাদেশ বিমানের বিখ্যাত লগো ‘বলাকা’-এর ঐতিহ্যিক স্মৃতিস্বরুপ নির্মিত দৃষ্টিনন্দন ‘বলাকা ভাস্কর্য’ ভাঙচুর করে তা ধ্বংস করে দেয়। ঐ বছরেই ঢাকাস্থ বিমান বন্দর মোড়ে অবস্থিত মরমী সাধক লালনের ভাস্কর্য ২২ অক্টোবরের মধ্যে সরিয়ে ফেলার জন্য ‘খতমে নবুয়াত’ নামে মাদ্রাসা ভিত্তিক আরেকটি ধর্মান্ধ গোষ্ঠী আলটিমেটাম দেয়। পরে তা অপসারণ করা হয়। বিষ্ময়কর হলো, উক্ত দু’টি ঘৃণ্য ঘটনা তৎকালীন সেনাসমর্থিত একক প্রভাবশালী তত্ত্বাবধায়ক সরকার-ফখরুদ্দীন এর আমলেই ঘটেছিল। ঐ সরকার এদেশের আওয়ামীলীগ-বিএনপি’র মতো সর্বাধিক প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলকে নিশ্চিহ্ন করার দুঃসাহস দেখিয়েছিল; অথচ ছোট-খাটো মাত্র দু’টি ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর ভয়ে ভীত হয়ে তাদের কাছে নতি স্বীকার করেছিল। ২০১৬ সালে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে ন্যায় বিচারের প্রতীক-গ্রীক দেবী ‘থেমিস’-এর ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়। কিন্তু ধর্মান্ধ গোষ্ঠী হেফাজতের দাবীর প্রেক্ষিতে তৎকালীন আওয়ামী সরকার তা সরিয়ে নেয় এবং সুপ্রিম কোর্টের এনেক্স ভবনের সামনে প্রতিস্থাপন করে তা অনেকটা সাধারণ মানুষের দৃষ্টির আড়ালে রাখা হয়। যদিও গঠিত ভাস্কর্যে গ্রীক দেবীর প্রকৃত অবয়বের অমিল নিয়ে বিতর্ক উঠেছিল কিন্তু হেফাজতের মতো উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর শর্তমূলক চাপের কাছে আওয়ামী সরকারের নতি স্বীকার সচেতন মহলকে বেশ ভাবিয়ে তুলেছিল; অথচ, ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে তৎকালীন আওয়ামী সরকার পতনের আন্দোলনে ধর্মান্ধ হেফাজতের নজিরবিহীন অগ্নিতান্ডব জাতীয় ঘটনাপ্রবাহে এক কলঙ্কজনক অধ্যায় হয়ে আছে।

সম্প্রতি, হেফাজতে ইসলাম আরবি ভাষাকে বাধ্যতামূলক করার দাবী তুলেছে। মধ্যপ্রাচ্যের শ্রম বাজারকে ধরার প্রয়োজনীয়তা হিসাবে তারা যুক্তি দেখিয়েছেন যা অত্যন্ত খোঁড়াযুক্তি। একই যুক্তিতে পাকিস্তানে মুসলিম লীগ কর্তৃক উপস্থাপিত ‘আরবি ভাষা বিল-২০২০’ জাতীয় সংসদে অনুমোদনের মাধ্যমে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাস্তরে আরবি ভাষাশিক্ষা কে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তবে এটা পাকিস্তানের বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির জন্য ক্ষতিকর হবে মর্মে পাকিস্তান পিপলস পার্টি বিলটির তীব্র বিরোধিতা করে। লক্ষ্যণীয় যে, বিশ্বায়নের যুগে নিজ মাতৃভাষাকে সর্বোচ্চ সমুন্নত রেখে অর্থনৈতিক উন্নয়ন যে সম্ভব, পৃথিবীর অর্থনৈতিক পরাশক্তি গণচীন সেটার প্রকৃষ্ট উদাহরণ।

কোনো জাতির মেরুদণ্ড ভাঙতে হলে প্রথমেই তার নিজ ভাষার ওপর আঘাত হানতে হয়। এই দুরভিসন্ধি থেকেই তদানীন্তন পাকিস্তানি স্বৈরশাসকগণ ’৫২ তে পূর্ববাঙালীর ভাষার ওপর আঘাত হানে। একই কারনে তদানীন্তন পাকিস্তান লৌহ শাসক ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খান আরবি বা রোমান হরফে বাংলা ভাষা লেখার প্রচলন শুরু করেন। বাংলা ভাষার আবেগময়তা নিঃশেষ করার লক্ষ্যে হিন্দু বনাম মুসলিম বৈষম্যের সাম্প্রদায়িক ধোঁয়া তুলে ১৯৬৭ সালের ৬ জুন সরকারি প্রচার যন্ত্রে রবীন্দ্র সঙ্গীত নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এমনকি বাঙালির প্রাণের উৎসব ‘বাংলা নববর্ষ’ উদযাপন নিষিদ্ধ করণের মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িক বাঙালি সংস্কৃতিতে প্রবল আঘাত হানা হয়েছিল। অথচ স্বজাতীয় ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি ইসলাম অত্যন্ত উদার নীতি ধারন করে। কোরআনে বর্ণিত, ‘আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে আসমান ও জমিনের সৃজন এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বৈচিত্র্য। নিশ্চয় এতে রয়েছে নিদর্শন জ্ঞানবানদের জন্য’ (সূরা -রুম, আয়াত-২২)। এভাবে সূরা- আর রহমান, সূরা-ইব্রাহিমেও ভাষাসংস্কৃতির লীলাময় মহিমা প্রকাশিত হয়েছে।

ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তে বিধৌত স্বাধীনতার ৫৩ বছরের পাদপীঠে দাঁড়িয়ে ধর্মান্ধদের এমন অপতৎপরতা রাস্ট্র বিরোধী ঔদ্ধত্যের সকল সীমা লঙ্ঘন করে বৈকি। ধর্মান্ধতা তথা সাম্প্রদায়িকতার শেকড় এখন গভীরে গ্রথিত। জাতীয় কারিকুলামের বাইরে ধর্মমুখী শিক্ষার নামে এক বিশাল সংখ্যক শিক্ষার্থী এদেশে বিরাজমান যারা বাঙালির চিরায়ত অসাম্প্রদায়িক জাতিসত্তায় বিশ্বাস করেনা। স্বীকার করেনা সেই জাতিসত্তা সংশ্লিষ্ট ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতিতে। অথচ এগুলোই আমাদের জাতীয় শিক্ষার ভিত্তি। এই ভিন্ন শিক্ষা এক ভিন্ন সংস্কৃতি ও প্রজন্মের (সাম্প্রদায়িক) জন্ম দিয়েছে যার প্রভাব এখন সাধারণ শিক্ষার ওপর পরছে। নিম্ন শিক্ষাস্তর হতে খোদ বিশ্ববিদ্যালয়স্তর পর্যন্ত এখন সাম্প্রদায়িক চেতনায় আচ্ছন্ন। সোশ্যাল মিডিয়ার অবাধ ও অনিয়ন্ত্রিত প্রভাবে ধর্মান্ধতা ও সাম্প্রদায়িকতা এখন সমাজের সিভিল সোসাইটির মনন, মগজকেও অনেকাংশে গ্রাস করে ফেলেছে। এই অপচেতনার বিস্তৃত পালকে এগারো লাখ আশ্রিত ধর্মান্ধ রোহিঙ্গার ভবিষ্যৎ যদি সংযুক্ত হয় তবে আগামীর বাংলাদেশের চেহারা কেমন হবে তা ভাবতেই আঁতকে উঠি! সেই অনাগত আঁধারের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার স্বপক্ষরা পারক্ষম হবে কি?

লেখক: কলামিস্ট ও গবেষক

সারাবাংলা/এসবিডিই

কাজী মাসুদুর রহমান ধর্মান্ধের প্রকোপে ভবিষ্যৎ প্রকম্পে মুক্তমত


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর