Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিশ্বায়নের যুগে চিকিৎসা সেবায় নানাবিধ প্রতারণা

সাহিদা সাম্য লীনা
২৮ জুন ২০২৪ ১৮:১৬

রাস্তায় প্রায় প্রতিদিনই কিছু কার্ড ফেলতে দেখি সিএনজি ,রিকশা এমনকি বাসেও ছুঁড়ে মারে যাত্রীদের উদ্দেশ্যে। বাত ব্যথা, হাঁপানী, স্বপ্নদোষসহ যাবতীয় রোগ উল্লেখ করে এইরুপ কার্ড লিপলেট ছুঁড়ে দিতে গিয়ে অনেক অল্প বয়সী ছাত্র ছাত্রীর হাতেও পড়ে। বিষয়টি নিয়ে বড়দের অস্বস্তিতে ভুগতে হয়। কারণ কার্ডে অশ্লীলভাবে রোগের নাম ও চিকিৎসা কিভাবে লেখা থাকে। ব্যাঙের ছাতার মতো সারাদেশসহ ফেনীতেও এমন চিকিৎসা সেবার নামে প্রচারণাও করে আসছে প্রায় দিন। খোঁজ নিলে জানা যায়, এদের কোন অস্তিত্ব বা কোন ঠিকানা পাওয়া যায় না। অসংখ্য কার্ড পড়ে থাকে রাস্তায় ও সিএনজির সিটের নিচে। যা যাত্রীদের দিবার সাথে সাথে তারা ফেলে দেয়। এরমধ্যে বিষু তান্ত্রিক মগ বৈদ্য ও গোপাল বৈদ্য নামে দুটি কার্ড ইদানিং পাওয়া যাচ্ছে ফেনীর রাস্তায়। আবার কেউ কেউ সাইনবোর্ড দিয়ে বসতেও দেখা গিয়েছে অতীতে। নোয়াখালীর পথেও বেশ সাইনবোর্ড ঝুলতে দেখা যায়। কিন্তু হঠাৎ মোবাইল কোর্ট আসায় তারা সুবিধা করতে না পেরে চম্পট দেয়।

বিজ্ঞাপন

এরা মূলত রাঙামাটি ও বান্দরবন নানা জায়গা থেকে মফস্বল শহরসহ খোদ রাজধানীতেও এমন কার্য করে রোগী টার্গেট দেয়, যারা গরীব ও দুর্বল মানুষ তাদের। এক হাজার কার্ড বিলি করলে যদি সেখান হতে একজন পাওয়া যায় ও তাকে দিয়ে তিন জনকে তারা টার্গেট করবে। একজন পথচারী কামাল উদ্দিন জানান এরা মূলত আগেকার বেদে সম্প্রদায় । পুরনো ব্যবসা বাড়ি, বাড়ি হাঁটা এই দাঁতের পোক ফালাই উঠে যাওয়াতে এরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়। এক ভাগ চুড়ি বিক্রিসহ এমন কাজে আছে, আরেক ভাগ এই ব্যবসায় নেমে পড়েছে। এরা মূলত সঠিক নাম ঠিকানা দেয় না। রাঙ্গামাটি ও বান্দরবন ইত্যাদি জায়গার ঠিকানা ব্যবহার করে কিন্তু থাকে চিটাগাং শহরে বা অন্যত্র। এগুলো প্রশাসন দমন করা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।

বিজ্ঞাপন

কার্ডে লেখা আছে রোগী না আসলেও চলবে। ফোনে সেবা দেয় ও কুরিয়ারে পার্সেল পাঠায়। কেউ লিখে ৭২ ঘন্টার মধ্যে কাজের ফলাফলের পরে টাকা চালানোর মাধ্যমে কাজ করা হয়। আবার তাদের লোগো সম্বলিত বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রেনিং পাওয়া সেটাও লেখা থাকে। এমনকি দাঁতের চিকিৎসায়ও এমন হাতুড়ে বৈদ্য ধরা পড়েছে। আধুনিক সময়ে চিকিৎসা পদ্বতির নানা পরিবর্তন ও সেবা দানে টেকনোলজির উন্নতিতে মানুষ অনেকটাই নির্ভর করে জীবন যাপনের খুঁটিনাটি ও রোগ নিয়েও। অনুন্নত দিনে মানুষ নির্ভর ছিল ভেষজ ও হোমিও চিকিৎসার উপর। এছাড়া, আছে ইউনানী ও আর্য়ুবেদিক প্রাচীন ও আদি চিকিৎসা। এখন রোগীরা চলে গেছে প্রায়ই এলোপ্যাথিক চিকিৎসার উপরে। চিকিৎসা পদ্বতির চারটি ধাপ এলোপ্যাথিক যা বর্তমানে বেশী জনপ্রিয় ,ইউনানী চিকিৎসা, আয়ুবের্দিক চিকিৎসা ও হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা। এলোপ্যাথিক ছাড়া বাকি তিনটা চিকিৎসা বিকল্প চিকিৎসা পদ্বতি।

দেশে চারটি চিকিৎসাই বর্তমান। রোগীর সংখ্যা কমলেও তবু ভালো চলছে মনে করেন হাকীম আব্দুল্লাহ আল মামুন। তিনি মূলত ইউনানী চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকেন। ফেনীতে চেম্বার। ঢাকার হামদার্দ ইউনির্ভাসিটি থেকে তিনি লেখাপড়া করেছেন ।এই চিকিৎসা সেবার উপর তার ডিগ্রি ও ট্রেনিং আছে বলে জানান। ব্যাচেলর অব ইউনানী মেডিসিন সার্জারী বিশেষজ্ঞ তিনি। ফেনীতেই আছে এই চিকিৎসা সেবায় ৩০০ চিকিৎসক ও উৎপাদন কর্মকর্তা। তাদের রোগী কম হলেও দিনে ৭/৮ জন থাকে জানালেন। চিকিৎসাটা ব্যাক্তিগত পছন্দ রোগীর। রোগীর ইচ্ছা অনুসারে যায় বিভিন্ন চিকিৎসা নিতে জানালেন হাকীম মামুন।

হাকীম কেন বলা হয় আপনাদের জানতে চাইলে জানান হাকিম হচ্ছে যিনি বিচার করেন। আর আমরা ইউনানী যারা চিকিওসা সেবা দেই তাদের বানানটা -ী কার দিয়ে লেখা হয়। এ নিয়ে আমরা আইনি লড়াই করছি। কথা হচ্ছে এখনো এটি কাগজে কলমে স্বীকৃত দেয়া হয়নি। চিকিৎসক বা ডাক্তার তাদের নামের আগে লেখা যাবে না। তবে, সমস্যা তাদের নিজেদের মধ্যেই জানালেন হাকীম মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম। তার অফিস মহিপাল কবিরাজ ঘর নামে। তিনি বলেন এছাড়া মায়ের দোয়া, নবজীবন, হারবাল মহিপাল ভেষজ ঔষধালয় নামে বেশ কয়েকটি ইউনানী, আর্য়ুবেদিক, হারবাল, ভেষজ চিকিৎসালয় রয়েছে। ফেনী বিসিকে এই ইউনানী সেবার জন্য দেয়া রোগীদের ঔষুধ বানানো হয়। যা বিভিন্ন ঔষধালয়ে প্রেরণ করা হয়। ইউনানী ,আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার কোন ধরণের নিবন্ধন বা অনুমতি এই সম্পর্কে সিভিল সার্জন অফিস থেকে জানতে চাইলে এটা এই মুহুর্তে তাদের অন্তর্ভুক্ত কিনা দেখে জানাতে হবে জানালেন।

লেখক: সাংবাদিক, ফেনী

সারাবাংলা/এজেডএস

বিশ্বায়নের যুগে চিকিৎসা সেবায় নানাবিধ প্রতারণা সাহিদা সাম্য লীনা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর