Sunday 24 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

যে পাঁচটি গাছ একেবারেই লাগাবেন না

মো. শাহিন আলম
১২ আগস্ট ২০২৪ ১৫:৫০

আমরা প্রতি বর্ষাকালে সারাদেশে ব্যাপক পরিমানে বৃক্ষ রোপন করে থাকি। সরকারি-বেসরকারি নানা সংগঠন এ মাসে বৃক্ষ রোপনের কর্মসূচি ঘোষনা করে। ব্যক্তিগত ভাবেও এ মাসে অনেকই গাছ লাগিয়ে থাকেন। তবে কোন গাছগুলো আমরা রোপন করবো?

এই যে আমরা বর্ষা এলেই এত গাছ রোপন করি সে সব গাছগুলো কি আমাদের পরিবেশের জন্যে ভালো, না ভালো না। আমরা আমাদের দেশীয় গাছগুলোর কথা ভুলে গেছি। বিদেশী আগ্রাসী গাছের প্রতি সামান্য কিছু টাকার লোভে আমাদের পরিবেশ ও জলবায়ু নষ্ট করছি। এ দেশের অনেক শিক্ষিত মানুষও জানে না কোন গাছের কি গুন এবং ক্ষতি। সেখানে অশিক্ষিত মানুষের কথা বাদই দিলাম। আমাদের এ বিষয়ে জানা উচিত। না জেনে না বুঝে যেমন আমরা কোন কাজ করি না। ঠিক তেমনি না জেনে না বুঝে বৃক্ষ রোপানও করা উচিত নয়। তবে প্রশ্ন থেকে যায় এ বর্ষায় আমরা কি ধরনের গাছ লাগাবো এবং কি ধরনের গাছ লাগানো থেকে বিরত থাকবো। চলুন এ বিষয়ে জানা যাক।

বিজ্ঞাপন

আমরা যে যে গাছ রোপন করা থেকে বিরত থাকবো:

১। একাশিয়া
২। ইউক্যালিপ্টাস
৩। রেইনট্রি
৪। মেহগনি
৫। শিশু

উপরোক্ত পাঁচটি গাছ আমরা লাগাবো না। এ গাছগুলো আমাদের যে ধরনের ক্ষতি করে:

১। একাশিয়া: বাংলাদেশের সর্বস্তরে যে গাছের বিস্তার তার নাম একাশিয়া। অল্প দিনে কাঠ বিক্রি করে কিছু টাকা পাওয়া যায়। যে কারনে গ্রামাঞ্চলের মানুষ একর একর জমির উপর এ গাছ আবাদ করছে। এ গাছটির ফুলের রেনুতে মানুষের এলার্জি হয়। যার ফলে মানুষের শরীরে চুলকানিসহ নানা ধরনের রোগ দেখা দেয়। এ গাছের পাতা অনেক বিষাক্ত। প্লাস্টিকের মতো পাতা, অনেক পর্যন্ত এ পাতা মাটিতে থাকে, পচনশীল নয়। এ গাছের নিচে ঘাস জন্মায় না। এ গাছ যেখানে রোপন করা হয় তার আশে পাশের ফল গাছে আবাদ কম হয়। মাটির উর্বর ক্ষমতা কমে যায়। এ গাছ অক্সিজেন গ্রহন করে এবং কার্বনডাই-অক্সাইড নির্গত করে। যার ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। গরমের সময় অধিক গরম এবং বৃষ্টির সময় অধিক বৃষ্টি।

বিজ্ঞাপন

২। ইউক্যালিপ্টাস: একটি বিদেশী গাছ। দেখতে সাদা বর্ণের এবং অল্পদিনে অনেক লম্বা হয়। এ গাছের পানের শোষন ক্ষমতা অনেক বেশি। এ গাছের পাতা অনেক বিষাক্ত। এ গাছের পাতা ও ফুলের গন্ধে বাতাস রোগ ছড়ায়। এ গাছ এত পরিমানে পানি শোষন করে যে দিন দিন আমাদের পানির লেয়ার একদম নিচে চলে যাচ্ছে। পাহাড়ী ও তথাকথিত উচু অঞ্চলের মানুষ পানি পাচ্ছে নাহ। এ গাছের পাতায় রাসায়নিক দ্রবনের উপস্থিতি রয়েছে। এ গাছ রোপন করা থেকে বিরত থাকুন।

৩। মেহগনি: এ গাছের ফল বা বীজ দিয়ে কীটনাশক তৈরি করা হয়। এ গাছের পাতা ও বীজ অনেক বিষাক্ত। যে মাটিতে পড়ে সেখানে ঘাস জন্মায় না। যদি কোন জলাশয় বা পুকুরে পড়ে তবে সেখানের মাছ এ গাছের পাতা বা বীজ থেকে নির্গত হওয়া গ্যাসে মাছ মারা যায়। এ গাছ লাগানো থেকে বিরত থাকুন।

৪। রেইনট্রি: এ গাছটি আমরা বেশিরভাগ রাস্তার পাশে দেখতে পাই। অনেক পরিমান জায়গা দখল করে। এ গাছের পাতা প্লাস্টিকের ন্যায়। অনেক দিন মাটি বা পানিতে থাকলেও পচেনা। এ গাছের পাতা থেকে এক প্রকার রাসায়নিক গ্যাস নির্গত হয়। যার ফলে পুকুরের মাছ মরে যায়। অনেক জায়গায় দেখি পুকুরের উপরের জাল বা নেট নিয়ে বেড়া দিয়ে রাখছে যাতে পাতা পানিতে না পড়তে পারে। এ গাছ জমির ফসল নষ্ট করে। এ গাছ অনেক জায়গা জুড়ে বিস্তার হওয়ায় নিচে থাকা ফসল সূর্যের আলো পায় না। যেকারনে কৃষক পর্যাপ্ত পরিমান ফসল পায়।

৫। শিশু: এটিও একটি বিষাক্ত গাছ। এ গাছ আমাদের মাটি ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। এর গাছের পরিমান একটু কম। তবে এ গাছ লাগানো থেকে সবাই বিরত থাকুন।

সর্বপোরি এ পাঁচটি গাছ একে অপরের পরিপূরক। এ গাছগুলো আমাদের পরিবেশ, প্রকৃতি, মাটি ও মানুষের জীবনের সুন্দর চলাকে ব্যাহত করে।

যে গাছগুলো লাগাবেন:

১। ফলের গাছ: আম, জাম, কাঠাল, পেয়ারা, জলপাই, লিচু, আমড়া, আতাফল ইত্যাদি যে কোন ফলের গাছ। যে গাছের ফল মানুষ ও পশুপাখি খেতে পারবে। আপনি যেমন গাছ থেকে ফল পাবেন তেমনি কাঠও পাবেন। বিদেশী বিষাক্ত ফলের পরবর্তীতে দেশিয় ফল নিজে খেতে পারবেন ও আত্নীয় স্বজনের দিতে পারবেন। যার ফলে আত্নীয়-স্বজনের সাথে সুসম্পর্ক হবে।

২। কাঠের গাছ: নিমগাছ, শাল, গজারি, পিত্তাজ ইত্যাদি অনেক দেশীয় গাছ রয়েছে। উপরোক্ত পাঁচটি গাছ বাদে জায়গা ভেদে আপনি যেকোন দেশীয় গাছ লাগাতে পারেন।

তাছাড়া জারুল, সোনালু, পারুল, গাব, ডাব, সুপারী সহ বিভিন্ন জাতের দেশীয় গাছ রোপন করুন। মনে রাখবেন আপনান রোপন করা একটি ভুল গাছের জন্য বর্তমান ও আগামী বিশ্ব হুমকির মধ্যে পড়বে। তাই নিজে সচেতন হোন অন্যকে সচেতন করুন। সবাই মিলে সুন্দর পৃথিবী গড়োন।

লেখক: শিক্ষার্থী ও ফটোগ্রাফার

সারাবাংলা/এসবিডিই

মুক্তমত মো.শাহিন আলম যে পাঁচটি গাছ একেবারেই লাগাবেন না

বিজ্ঞাপন

সিইসিসহ নতুন ৪ কমিশনারের শপথ
২৪ নভেম্বর ২০২৪ ১৪:১০

আরো

সম্পর্কিত খবর