তথ্য ও যোগাযোগ এবং সম্প্রচার প্রযুক্তি
২৫ আগস্ট ২০২৪ ১৪:৫৩
তথ্য প্রযুক্ত হচ্ছে ডেটাকে প্রক্রিয়াকরণ করে তথ্যে রুপান্তর করা অর্থাৎ তথ্য তৈরী, প্রক্রিয়াকরণ, সংরক্ষণ, তথ্যের সত্যতা ও বৈধতা যাচাই, আধুনিকীকরণ, পরিবহন, বিপনন ও ব্যবস্থাপনা করা হয় তাকে তথ্য প্রযুক্তি বা ইনফরমেশন টেকনোলজি বলে। অপরদিকে যোগাযোগ প্রযুক্তি হলো তথ্যকে এক স্থান হতে অন্য স্থানে সঠিকভাবে ও সঠিক সময়ে স্থানান্তর করা। অর্থাৎ কোন ডেটা বা ইনফরমেশন এক স্থান হতে অন্য স্থান কিংবা এক কম্পিউটার হতে অন্য কম্পিউটার কিংবা এক ডিভাইস হতে অন্য ডিভাইসে অথবা একজন অন্যজনের নিকট আদান প্রদানের প্রক্রিয়াকে যোগাযোগ প্রযুক্তি বা কমিউনিকেশন টেকনোলজি বলে। আর এই দুটি প্রযুক্তি একসাথে সমন্বিত হয়ে হয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে তাৎক্ষণিক যোগাযোগ, তথ্য সংগ্রহ ও বিতরণ ইত্যাদি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে কম সময়ে বেশি তথ্য স্থানান্তর সম্ভব হওয়ার ফলে খরচ কম হচ্ছে এর পাশাপাশি সময়ের সাশ্রয় হচ্ছে ও কাজের গতি বৃদ্ধি পাচ্ছে। তথ্য প্রযুক্তির সাথে যোগাযোগ প্রযুক্তির নিবিড় সম্পর্ক বিদ্যমান।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মূলত একটি সমন্বিত প্রযু্ক্তি হওয়ায় যা কম্পিউটার, মোবাইল, টেলি যোগাযোগ, অডিও ভিডিও, সম্প্রচারসহ আরো বহুবিধ প্রযুক্তির সমন্বয়ে তৈরী হয়েছে। স্যাটেলাইট ব্যবহার করে মূহুর্তের মধ্যে বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে তথ্যের যোগাযোগ সম্ভব হচ্ছে। ইন্টারনেনেটের মাধ্যমে অত্যন্ত দ্রুততার সাথে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে তথ্যের আদান প্রদান সম্ভব হচ্ছে। স্যাটেলাইট হলো এমন এক যন্ত্র যা তার চাইতে বড় কোনো বস্তুকে কেন্দ্র করে প্রদক্ষিণ করে। একটা গ্রহকে কেন্দ্র করে এর চারপাশে যেসব বস্তু ঘোরে সেগুলোই হলো ওই গ্রহের উপগ্রহ। চাঁদ পৃথিবীকে কেন্দ্র করে এর চারপাশে ঘোরে। চাঁদ প্রাকৃতিকভাবে একমাত্র প্রাকৃতিক উপগ্রহ। প্রতিটি উপগ্রহের একটা বহির্মুখী গতিশক্তি থাকে। তদ্রূপ চাঁদেরও একটা বহির্মুখী গতিশক্তি আছে। এই গতিশক্তির কারণে সে পৃথিবী থেকে দূর মহাকাশে ছুটে যেতে চায়। অপরদিকে পৃথিবীর মহাকর্ষীয় আকর্ষণ বল চাঁদকে পৃথিবীর বুকে টেনে রাখে। চাঁদের গতিশক্তিজনিত বহির্মুখী বল আর পৃথিবীর মহাকর্ষ বল সমান। তাই এ দুই বল কেউ কাউকে হারাতে পারে না। এর ফলে চাঁদও পৃথিবীর বুকে নেমে আসে না।অন্যদিকে চাঁদের গতিশক্তিজনিত বলের কারণে একে দূর মহাকাশে দিকে ঠেলে দেওয়াও সম্ভব নয় । ফলশ্রুতিতে শেষ পর্যন্ত চাঁদ কোনো দিকেই না গিয়ে পৃথিবীর চারপাশে ঘোরে। এটাই হলো প্রতিটি গ্রহ-উপগ্রহের কক্ষপথে ঘোরার রহস্য।
মহাশূন্যে প্রাকৃতির উপগ্রহের পাশাপাশি মানুষের তৈরি বিভিন্ন ধরনের কৃত্তিম উপগ্রহ ও রয়েছে। মহাকাশে বর্তমানে কয়েক হাজার স্যাটেলাইট বা কৃত্তিম উপগ্রহ রয়েছে। যেগুলোর কোনোটি পৃথিবীর ছবি তুলে, কোনটি অন্যকোনো গ্রহের ছবি সংগ্রহ করে। কোনোটা আবার আবহাওয়ার পূর্বাভাস ও ঘূর্নিঝড়ের গতিবিধি পর্যবেক্ষণের কাজ করছে। আবার কিছু স্যাটেলাইট ব্যবহার হচ্ছে টেলিভিশন সিগন্যাল, জিপিএস সিস্টেম এবং ফোনকলের সংযোগ স্থাপনের মাধ্যম হিসেবে। স্যাটেলাইট মূলত তথ্য সংগ্রহ ও পর্যবেক্ষণের কাজ করে থাকে। কাজের ধরন অনুযায়ী এক এক স্যাটেলাইটে এক এক ধরনের যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা হয়। রকেটের সাহায্যে স্যাটেলাইট গুলোকে নিদিষ্ট স্থানে (কক্ষপথে) স্থাপন করা হয়। সেখান থেকে এগুলো পৃথিবী বা অন্য কোনো গ্রহ, নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে ঘুরে।যখন গ্র্যাভিটেশনাল ফোর্স ও সেন্ট্রিফিউগাল ফোর্স বিপরীতভাবে একটি স্যাটেলাইটের উপর কাজ করে তখন সেটি নিদিষ্ট কক্ষপথে চলে।যদি এর বিপরীত কিছু ঘটে তখন স্যাটেলাইটটি মহাশূন্যে সরল রেখায় চলবে নয়তো পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়বে। প্রকৃতপক্ষে যখন পৃথিবীর টান ও মাধ্যাকর্ষণ শক্তির ভারসাম্য তৈরি হয় তখনই কোনো স্যাটেলাইট পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করতে পারে। তবে প্রত্যেক স্যাটেলাইটে দুটি অত্যাবশ্যকীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ হলো অ্যান্টেনা এবং পাওয়ার সোর্স। এছাড়াও কাজের ধরন অনুযায়ী স্যাটেলাইট গুলোতে কমান্ড এন্ড ডাটা হ্যান্ডেলিং, গাইডেন্স এন্ড স্টাবিলাইজেশন, থার্মাল কন্ট্রোল, হাউজিং ও ট্রান্সপন্ডারের মত যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা হয়। এর পাশাপাশি আবার ক্যামেরা ও সাইন্টিফিক সেন্সরও ব্যবহার করা হয়। পৃথিবী থেকে রেডিও ফ্রিকোয়েন্সির মাধ্যমে স্যাটেলাইট গুলোতে তথ্য পাঠানো হয়। এইসব তথ্য স্যাটেলাইট গুলো অ্যান্টেনার সাহায্যে গ্রহন করে।
পরবর্তীতে স্যাটেলাইট গুলো এই তথ্যগুলোকে এমপ্লিফাই করে আবার পৃথিবীতে প্রেরন করে। এদিকে স্যাটেলাইট থেকে পৃথিবীতে পাঠানো সিগন্যাল অনেক দূর্বল হয়ে থাকে। যার কারনে এগুলোকে ডিস অ্যান্টেনার সাহায্যে কেন্দ্রীভূত করে রিসিভার দিয়ে গ্রহন করে প্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহার করা হয়। কাজের ধরন অনুযায়ী স্যাটেলাইট গুলোকে তিনটি কক্ষপথ বা অরবিটে ভাগ করা হয়। এগুলো হলো লোয়ার আর্থ অরবিট, মিডিয়াম আর্থ অরবিট এবং জিওসিনক্রোনাস অরবিট।পৃথিবীকে কেন্দ্র করে কয়েক হাজার স্যাটেলাইট প্রদক্ষিণ করছে। কিন্তু এদের মধ্যে কোনো সংঘর্ষ হয়না।এর কারন উৎক্ষেপনের সময়ই সেগুলো যাতে একটি আরেকটিকে এড়িয়ে চলতে পারে সেটা নিশ্চিত করা হয়।এছাড়াও নাসা ও আন্তর্জাতিক সংস্থা গুলো প্রতিনিয়তই স্যাটেলাইট গুলোর উপর নজর রাখে যাতে সেগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ না হয়।এদিকে যেহেতু বিভিন্ন ধরনের তরঙ্গ বিভিন্ন ধরনের তথ্য বহন করে। সে হিসেব অনুযায়ী তরঙ্গ বিভিন্ন মাপের হয়ে থাকে। একারণেই অ্যানটেনার সঙ্গে যুক্ত থাকতে হয় ট্রান্সসিভার যন্ত্র, তরঙ্গের বিচ্যুতি দূর করার জন্য ফিল্টার, তথ্যের নিরাপত্তার জন্য এনক্রিপ্টর-ডেক্রিপ্টর, দুর্বল সিগন্যালকে শক্তিশালী করার জন্য পাওয়ার অ্যামপ্লিফায়ার ইত্যাদি। এই সবকিছু পরিচালিত অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সব ইলেকট্রনিকস যন্ত্রপাতি ও সফটওয়্যার দিয়ে। স্যাটেলাইটের যোগাযোগের এই যন্ত্রপাতি ও সফটওয়্যারের সমন্বয়কে বলা হয় ট্রান্সপন্ডার। জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইট বা ভূস্থির উপগ্রহ পৃথিবীর সাপেক্ষে কখনো অবস্থান পরিবর্তন করে না। পৃথিবী যেভাবে ঘুরছে সেগুলোও পৃথিবীর সাপেক্ষে একই গতিতে ঘুরছে। স্যাটেলাইটে তরঙ্গ প্রেরণ বা গ্রহণের জন্য অ্যানটেনার প্রয়োজন। তাই এই স্যাটেলাইট ভূপৃষ্ঠের গ্রাউন্ড স্টেশনের দিকে তাক করে স্থাপন করা হবে। এ জন্য এতে থাকে ডিশ আকৃতির কতগুলো অ্যানটেনা। তেমনি ভূপৃষ্ঠের গ্রাউন্ড স্টেশনের অ্যানটেনাগুলোও উপগ্রহের দিকে মুখ করে রাখা হয়।
গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে দুইভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয় এই কৃত্রিম উপগ্রহগুলোকে। একটি হলো ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ এবং আরেকটি হলো কমিউনিকেশন নিয়ন্ত্রণ। ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ হয় মূলত স্বয়ংক্রিয়ভাবে। তবে মাঝেমধ্যে গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। ফ্রিকোয়েন্সি বরাদ্দের পরিমাণ নির্ণয়ের পাশাপাশি কোন ধরনের এনক্রিপশন ব্যবহার করা হবে এসব পর্যবেক্ষণ করা হয় গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে। প্রকৃতপক্ষে সার্বক্ষণিক অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টা সিগন্যালের শক্তি পর্যবেক্ষণ করে ঠিক রাখাই হলো গ্রাউন্ড স্টেশনের মূল কাজ। টেলিভিশন চ্যানেলগুলো তাদের অনুষ্ঠানমালাকে ট্রান্সমিটার আর ডিশ অ্যানটেনা দিয়ে প্রেরণ করবে উপগ্রহের দিকে। জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইট অর্থাৎ কৃত্রিম উপগ্রহ সাধারণত পৃথিবী থেকে ৩৬ হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থান করে। প্রায় এই ৩৬ হাজার কিলোমিটার পাড়ি দেওয়া সেই সিগন্যালে অপ্রয়োজনীয় ও অবাঞ্ছিত তরঙ্গ ঢুকে পড়ে। উপগ্রহ সেগুলোকে গ্রহণ করার পর প্রথমে ফিল্টার করে। পরবর্তীতে আবার এমপ্লিফাই করে সেই সিগন্যালকে পৃথিবীর দিকে প্রেরণ করে কৃত্রিম উপগ্রহ। স্যাটেলাইট হলো প্রযুক্তির হলো তথ্য প্রযুক্তির সর্বোচ্চ চূড়ায় পৌঁছানোর মাধ্যম। পৃথিবী থেকে বেতার তরঙ্গ ব্যবহার করে কৃত্রিম উপগ্রহে তথ্য পাঠানো হয়। এরপর কৃত্রিম উপগ্রহ সে তথ্যগুলো গ্রহণ করে পরবর্তীতে বর্ধিত অর্থাৎ এমপ্লিফিকেশন (Amplification) করে পৃথিবীতে প্রেরণ করে। স্যাটেলাইট তথ্য গ্রহণ এবং পাঠানোর জন্য দুটো ভিন্ন কম্পাঙ্ক তরঙ্গ ব্যবহার করে। এদিকে স্যাটেলাইট থেকে আসা সিগন্যাল বা তথ্য অনেক দুর্বল বা কম ক্ষমতা সম্পন্ন হয়ে থাকে। এজন্য ডিস এন্টেনা ব্যবহার করে সিগন্যালকে কেন্দ্রীভূত করা হয়। পরবর্তীতে রিসিভার (Receiver) দিয়ে তথ্য গ্রহণ করে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়। স্যাটেলাইট টিভি রিসিভারে এ ধরনের ডেক্রিপশনের অপশন রেখেই তৈরি করা হয়। টিভি স্টেশন থেকে কৃত্রিম উপগ্রহ ঘুরে আমাদের টিভিতে সিগন্যাল পৌঁছানো পর্যন্ত প্রায় ৭২ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়। কিন্তু পুরো প্রক্রিয়াটা সম্পন্ন হতে সময় লাগে মাত্র সেকেন্ডের তিন ভাগের এক ভাগ।
স্যাটেলাইট ব্যবহার করে ইন্টারনেটের ডেটা আদান-প্রদানের কাজও প্রায় একই রকমভাবে হয়। এ ক্ষেত্রে দুই জায়গাতেই ট্রান্সিভার বা একই সঙ্গে আদান ও প্রদান দুটি কাজেরই উপযোগী যোগাযোগব্যবস্থা থাকতে হবে।স্যাটেলাইট কমিউনিকেশনের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো নিরবচ্ছিন্নতার নিশ্চয়তা ও বিস্তৃত কাভারেজ। আর সবচেয়ে বড় অসুবিধা হলো ব্যয়বহুল এবং ধীরগতি। স্যাটেলাইট ইন্টারনেট এবং ল্যান্ডলাইন অর্থাৎ ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বা মোবাইল ইন্টারনেটের মধ্যে খুব একটা বেশি পার্থক্য নেই। ল্যান্ডলাইন ইন্টারনেট বা ব্রডব্যান্ড কানেকশনে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রভাইডারের কাছ থেকে একটি তার এসে সরাসরি ব্যবহারকারীর রাউটার বা কম্পিউটারে সংযুক্ত হয়। এই তারটি সাধারনত কপার বা অপটিক্যাল ফাইবারের হয়ে থাকে।
এ ধরনের সংযোগ ব্যবহারকারীকে ইন্টারনেট ডাটা বা ব্যান্ডউইথ সরবরাহ করে থাকে। আবার মোবাইল ব্রডব্যান্ডে ইন্টারনেট সিগন্যালকে সেলফোন টাওয়ারের মাধ্যমে গ্রাহকের ফোনে বা মডেমে পৌছিয়ে দেওয়া হয়। মূলত প্যাকেট সুইচিং পদ্ধতিতে ইন্টারনেট ডাটা সরবরাহ করা হয়।এদিকে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট এর ক্ষেত্রেও ইন্টারনেট সার্ভিস প্রভাইডার থাকে। ইন্টারনেট সার্ভিস প্রভাইডারেরা মূলত ইন্টারনেট এন্টেনার সাহায্যে স্যাটেলাইটে পৌছিয়ে দেয়। সেই সিগন্যাল স্যাটেলাইট থেকে প্রতিফলিত হয়ে গ্রাহকের বাড়িতে লাগানো ডিশ এন্টেনাতে রিসিভ হয়। এই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি প্রায় আলোর গতিতে সম্পূর্ণ হয়।এদিকে স্যাটেলাইট টিভি সিগন্যাল থেকে টেকনিক্যালি ইন্টারনেট পাওয়া সম্ভব। তবে এতে সেই অনুযায়ী সঠিক হার্ডওয়্যার এবং ডিভাইজের প্রয়োজন। কারন এই ইন্টারনেট ব্যবহার করার জন্য পরিপূর্ণ সিস্টেম সেটআপ থাকা প্রয়োজনীয়। এক্ষেত্রে সঠিকভাবে প্রপারলি স্যাটেলাইট ইন্টারনেট ব্যবহার করতে অবশ্যই কোন স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট প্রভাইডারের কাছ থেকে সেবা নিতে হবে।স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ইন্টারনেট প্রযুক্তি সেবা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে তিনটি স্যাটেলাইট ডিশ এন্টেনার প্রয়োজন হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে প্রথমটি ইন্টারনেট সার্ভিস প্রভাইডার ব্যবহার করে স্যাটেলাইটে গ্রাহকের সিগন্যাল পাঠায় (এটিকে প্রভাইডার হাব বলা হয়)। আরেকটি স্পেসে অর্থাৎ মহাকাশে স্যাটেলাইটে থাকে। যেখান থেকে স্যাটেলাইট গ্রাহকের সিগন্যাল ইন্টারনেট সার্ভিস প্রভাইডারের মাধ্যমে গ্রহণ করে থাকে। সর্বশেষটি গ্রাহকের বাড়িতে লাগানো থাকে যা স্যাটেলাইট হতে আসা সিগন্যাল রিসিভ করে থাকে।
স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যান্ডউইথ নিয়ন্ত্রন করতে পারে। এরফলে একত্রে অনেক ব্যবহারকারী একসাথে ইন্টারনেট ব্যবহার করলেও ইন্টারনেট স্পীড নিয়ে সমস্যা হয় না। তবে খারাপ আবহাওয়ার জন্য ইন্টারনেট কানেকশন কোয়ালিটি খারাপ হয়ে যেতে পারে। এতে স্পীড কমে যেতে পারে। স্যাটেলাইট ইন্টারনেটে লেটেন্সি বা পিং (Ping) রেট অনেক বেশি হয়।ফলে এটি অনলাইন গেমিং বা দ্রুত রেসপন্সের জন্য আদর্শ নয়। তবে একবার সার্ভারের সাথে কানেক্ট হয়ে গেলে হাই রেটে ব্যান্ডউইথ ট্র্যান্সফার করতে পারে। এই পিং (Ping) হলো ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর কম্পিউটার থেকে ইন্টারনেট সার্ভার কানেক্ট হতে কতো সময় লাগে তার পরিমাপ। যেহেতু এখানে ব্যবহারকারীর সকল ডাটা আইএসপি পর্যন্ত স্যাটেলাইটের মাধ্যমে যায়। অর্থাৎ ব্যবহারকার কিছু আবেদন করলে সেটি প্রথমে স্যাটেলাইটের কাছে যায়। তারপর স্যাটেলাইট থেকে ব্যবহারকারীর আইএসপি এর কাছে যায়। আবার আইএসপি থেকে একইভাবে ডাটা ব্যবহারকারীর কাছে আসে।
লেখক: নেটওয়ার্ক টেকনিশিয়ান (আইসিটি সেল), জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
সারাবাংলা/এসবিডিই
তথ্য ও যোগাযোগ এবং সম্প্রচার প্রযুক্তি মুক্তমত মো. জাহিদুল ইসলাম