সুস্থ বাংলাদেশের প্রত্যাশা
২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:৪০
আমার কাছে সবচেয়ে প্রিয় শব্দের মধ্যে একটা হচ্ছে বাংলাদেশ। এটি শুধুমাত্র আমার কাছে একটা শব্দ হিসেবে না তার সাথে আমার প্রিয় দেশও। এই দেশ আমার মাতৃভূমি ও জন্মভূমি। একজন সন্তান তার মাকে যেমনভাবে ভালোবাসে ঠিক তেমনভাবেই আমি আমার মাতৃভূমিকে ভালোবাসি। আর আমার এই মাতৃভূমি আজ অসুস্থ হয়ে গেছে। দিনের পর দিন অন্যায়, অত্যাচার করা হচ্ছে তার সন্তানের উপর তাহলে একজন মা হিসেবে কীভাবে ভালো থাকবে আমার এই মাতৃভূমি? এই দেশের খুবই সাধারণ মানুষ আমি কিন্তু চারদিকের অন্যায় অত্যাচারের কারণে কোনো সাধারণ মানুষ ভালো নেই। নিজ বাড়িতে অবস্থান করেও মনে ভয় থাকে কখন কি হয়ে যায়, এই নাকি পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করতে হয়! বাংলাদেশ একটি গণপ্রজাতন্ত্রী দেশ আর এই দেশে মানুষ এমন ভয়ে বাস করছে তা দেখে আজ আমার মাতৃভূমি অসুস্থ হয়ে পড়েছে বলে আমার মনে হয়। কিছু কুলাঙ্গার মানুষের জন্য আজ আমাদের এই দেশ হুমকির মুখে পড়েছে। তারা অর্থ, লোভ-লালসা আর ক্ষমতার পূজারী হয়ে যাচ্ছে অথচ আমাদের সকলের উচিত মানবতার পূজা করা। যেখানে একজন মানুষ তার কাজের মাধ্যমে মানবতার শ্রেষ্ঠ উদাহরণ হিসেবে পরিগনিত হবে।
সাম্প্রতিক এক ঘটনা তোফাজ্জল হত্যা এক দৃষ্টান্ত অমানবিকতার, নৃশংসতার! অথচ দেশটি এমন হওয়া উচিত ছিল যেখানে একজন মানুষ মুক্তভাবে চিন্তা করতে পারবে, স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারবে, যোগ্যতা ও দক্ষতা অনুযায়ী সর্বশ্রেষ্ঠ জায়গায় পৌঁছাবে, একজন ব্যবসায়ী স্বাধীনভাবে ব্যবসা করবে, ধর্মীয় রীতিনীতি ও সংস্কৃতি কোনো বাধাবিঘ্ন ছাড়া পালন করবে, একজন রাজনীতিবিদ মুক্তভাবে রাজনীতি চর্চা করতে পারবে এবং সরকারের সমালোচনা করতে পারবে স্বাধীনভাবে আর এই সমালোচনা অনুযায়ী সরকার সঠিক পদক্ষেপ নিবেন, একজন নারী স্বাধীনভাবে ঘর থেকে বের হতে পারবে তাহলেই এই দেশ সুস্থ হয়ে উঠবে। অথচ এই দেশে কত ধ্বংসলীলা চলছে তা ভাবলেই গায়ে কাটা দিয়ে উঠে। দিনে-দুপুরে চুরি-ডাকাতি হচ্ছে, সংখ্যালঘুদের উপর ধর্মীয়ভিত্তিক নির্যাতন করা হচ্ছে, পাহাড়ি অঞ্চলের কি ভয়াবহ অবস্থা হয়েছে তা সকলেই দেখতে পাচ্ছি, কোনো নারী রাস্তায় স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারছে না।
কত শিল্প-কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এতে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতি ঘটছে, বেকার সমস্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে কারণ এসব কারখানায় হাজার হাজার মানুষ কাজ করেন তাদের কর্মসংস্থান হারিয়ে গেছে। এসব কারখানার সাথে সম্পর্কিত ছোট ছোট ব্যবসায়ীদের কর্মসংস্থানও এখন হুমকির মুখে পড়েছে। মানুষের জীবন এক দুর্বিষহ অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে কারণ তাদের মৌলিক চাহিদাটুকুও পূরণ হচ্ছে না ঠিকমতো। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে খাদ্য দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি। একদিকে মানুষের কর্মসংস্থান নেই, অর্থনৈতিক দুরবস্থার মধ্যে জীবন পার করছে তার উপর খাদ্য দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি হচ্ছে প্রতিনিয়ত এতে দেশের অধিকাংশ মানুষেরই খাদ্যের চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। আবার চিকিৎসা ক্ষেত্রের কথা যদি বলি তাহলে দেখবো যে হাসপাতাল কেন্দ্রে বিড়ম্বনার শেষ নেই। বাংলাদেশের এই সেক্টরটায় কর্তৃপক্ষের বিশেষ নজর দেয়া উচিত। এতে বাংলাদেশ কিছুটা হলেও সুস্থ হয়ে উঠবে বলে আমি মনে করি। সরকারি হাসপাতালগুলোতে ব্যবস্থাপনার ঘাটতি প্রতিনিয়ত আমাদেরকে মোকাবিলা করতে হচ্ছে। অবশেষে বলবো আমার প্রিয় দেশ সুস্থ হয়ে উঠো যেখানে সকল মানুষ নির্ভয়ে বসবাস করতে পারবে তেমনই এক দেশ হিসেবে গড়ে উঠো।
লেখক: শিক্ষার্থী, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
সারাবাংলা/এজেডএস