Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কঠিন চীবর দান: উৎসবের মহাজাগরণ

বিপ্লব বড়ুয়া
২১ অক্টোবর ২০২৪ ১৫:৩০

দানোত্তম শুভ কঠিন চীবর দান বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অন্যতম একটি বড় বা শ্রেষ্ঠ দানোৎসব। যে দানোৎসবের জন্য সারাবছর অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় থাকেন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী জনগণ। কঠিন চীবরকে ঘিরে প্রতিটি বিহার, প্যাগোডা বৌদ্ধ পল্লী আনন্দ উৎসবে মেতে উঠে। এ বছর কঠিন চীবর দান চলবে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন কঠিন চীবর দানানুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারলে অনেক পূণ্যের ভাগীদার হওয়া যায়; এই বিশ্বাস থেকে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা কঠিন চীবর দানের আয়োজন করে থাকেন। এই উৎসব বিশেষ করে পাহাড়ি জনগোষ্ঠির মাঝে খুব ব্যাপকতা লক্ষ্য করা যায়। তবে এ বছর (২০২৪) খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে গত ১৯ ও ২০ সেপ্টেম্বর এবং ১ অক্টোবর খাগড়াছড়িতে দুই দফায় পাহাড়ি বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় বেশ কয়েকজন হতাহত সেই সঙ্গে অসংখ্য বাড়িঘর ভাঙচুর, বৌদ্ধ বিহারে হামলা, লুটপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুন দেওয়ায় সীমাহীন ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। পাহাড়ি জনগণ এসব ঘটনার উপযুক্ত বিচার না পাওয়া এবং উপরন্তু হয়রানি ও নিরাপত্তাজনিত কারণে পার্বত্য তিন চট্টগ্রাম খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান জেলার সম্মিলিত পার্বত্য বৌদ্ধ ভিক্ষু সংঘের নেতৃবৃন্দরা সংবাদ সম্মেলন করে কঠিন দান উৎসব না করার ঘোষণা দিয়েছেন। এদিকে সমতলীয় বৌদ্ধরা কঠিন চীবর দান করা না করার বিষয় নিয়ে মতভেদ দেখা দিলেও শেষ পর্যন্ত ভীতি, শঙ্কা, নিরাপত্তা এবং একধরনের মিশ্র মতদ্বৈততার মধ্যে দিয়ে অনাড়ম্বরভাবে কঠিন চীবর দানোৎসব পালন করবে।

বিজ্ঞাপন

গত ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যূত্থানের মধ্যে দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে দেশের জনগণের মধ্যে এক ধরনের শঙ্কা বিরাজ করছে। অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতা গ্রহণ করেন ৮ আগষ্ট। দীর্ঘ এত দিনেও দেশের আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিকতায় ফিরে আসেনি। পুলিশ প্রশাসনকেও তেমন একটা সক্রিয় হতে দেখা যাচ্ছে না। এমতাবস্থায় আর্মি প্রশাসনের ওপর নির্ভরশীল হয়ে আইনশৃঙ্খলাকে নিয়ন্ত্রণ করার জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। তারপরেও দেশের বিভিন্নস্থানে সংখ্যালঘু জনগণ, মন্দির, বাসাবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সমূহ একের পর এক হামলার স্বীকার হচ্ছে। সেই শঙ্কায় অনেকটা ভীতসন্ত্রস্ত , সদ্য সমাপ্ত শারদীয় দুর্গোৎসবেও কোথাও কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক জেএমসেন হলে অনুষ্ঠিত দুর্গাৎসবে একদল যুবকের ইসলামী ভাবধারার গান পরিবেশন করা নিয়ে তীব্র অসন্তোষ ছড়িয়ে পরে; যা এযাবৎকালে আর কখনো দেখা যায়নি। ঢাকার তাঁতীবাজারে পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ, কয়েকজন ছুরিকাঘাত এবং রাজবাড়িতে প্রতিমা ভাংচুরসহ সারাদেশে ৩৫টি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. মঈনুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। এ প্রেক্ষিতে ১১টি মামলা এবং ২৪টি সাধারণ ডায়রি (জিডি) করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয় ১৭ জনকে। এতকিছুর পরও কেন হামলা করা হয় বোঝে আসে না। মনে রাখতে হবে উপাসনালয়ে পাহারা দিয়ে ধর্মের আনুষ্ঠানিকতা কখনো মানুষের মনে শান্তি বিরাজ করে না। এতে করে দেশের গৌরব খুন্ন হয় এবং বিদেশের মাটিতে দেশের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

বিজ্ঞাপন

বুদ্ধসমকালীন সময়ে বিভিন্ন শ্মশানে মৃত ব্যক্তির শরীরের পরিত্যক্ত স্বেতবস্ত্র ও কুড়ানো টুকরো কাপড় জোড়া লাগানোর পর সেগুলোকে একজাতীয় গাছের ছালদ্বারা রং করে ভিক্ষুরা চীবর বা বস্ত্র পরিধান করতেন। বর্তমানে অবশ্য সে রকম অবস্থা নেই। তথাগত গৌতম বুদ্ধের আদেশ অনুসারে একটি বিশেষ সময়ের মধ্যে কাপড় বুনন, রং ও সেলাই করার মাধ্যমে ভিক্ষুগণকে চীবর (বস্ত্র) দান দেওয়ার রীতি প্রবর্তিত হয়। দিন দিন আধুনিকতার কারণে বর্তমানে সে ধারাটিও অনেকটা বিলুপ্তির পথে। শুধু পার্বত্য চট্টগ্রামের কিছু কিছু এলাকায় বুদ্ধের সেই প্রবর্তিত নিয়মটি তারা এখনো চালু রেখেছেন। কঠিন চীবর চলাকালীন সময়ে কেউ যদি এই জাতীয় চীবর দান করতে পারে তাহলে ইহজন্ম ও পরজন্মে অনন্ত পূণ্যের ভাগীদার হন। সেই বিশ্বাস থেকে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী জনগণরা কঠিন চীবর দানকে কেন্দ্র করে বৌদ্ধ ভিক্ষুদেরকে কঠিন চীবর দান দিয়ে থাকেন। একটি ধর্মীয় বিধিবদ্ধ নিয়মের মধ্যে ভিক্ষুদেরকে পরিধানের বস্ত্রটি দান করা হয় বলে এটির গুরুত্ব এবং ব্যাপকতা খুব বেশি। এখন সম্পূর্ণ বস্ত্রখানি রেডি করা অবস্থায় দোকান থেকে ক্রয় করা যায়। ভিক্ষুরা একসাথে তিনটি কাপড়দ্বারা শরীর আবৃত করেন। এই তিনটি কাপড়ের আবার একেকটির আলাদা আলাদা নাম আছে। এ গুলোকে পালি ভাষায় বলে- উত্তরাসঙ্গ, দোয়াজিক এবং অন্তর্বাস। এর মধ্যে থেকে যে কোনো একটি দান করলেই কঠিন চীবরের ফল লাভ করা যায়।

কঠিন চীবর দান হচ্ছে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের জন্য একটি মহা উৎসবের জাগরণ। বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পাশাপাশি গৃহীরাও দীর্ঘ তিনমাস অমাবশ্যা অষ্টমী পূর্ণিমা তিথিতে কৃচ্ছতা সাধনের পর আসে কঠিন চীবর দানোৎসব। এ কারণে মানুষরা কঠিন চীবর দানকে কেন্দ্র করে পবিত্র ও আনন্দমুখর হয়ে ওঠে। প্রবারণা উৎসব অর্থাৎ আশ্বিনী পূর্ণিমার পরদিন (১৭ অক্টোবর) থেকে শুরু হয় কঠিন চীবর দানের আনুষ্ঠানিকতা। এই উৎসবের বার্তা এমন যে দীর্ঘ একমাস অর্থাৎ কার্তিকী পূর্ণিমার দিন (১৫ নভেম্বর) পর্যন্ত বৌদ্ধ ভিক্ষুগণ দেশের প্রতিটি বিহার, প্যাগোডায় ধর্ম সমাবেশে উপস্থিত হয়ে শান্তি, সম্প্রীতি ও মৈত্রীর বাণী প্রচারে সামিল হন। চীবর হচ্ছে অত্যন্ত পবিত্র বস্ত্র। মহামানব তথাগত গৌতম বুদ্ধের মতে, এই বস্ত্রটি যারা পরিধান করেন তাদেরকে অনেক নিয়ম নীতি পালন করতে হয়। বুদ্ধ ভাষায় এটি আগুন সদৃশ্য। সবার দ্বারা এটি পরিধান করা সম্ভবপর হয় না। বৌদ্ধ সাহিত্য মতে, এটিকে নিয়ম বহির্ভূত যথেচ্ছ ব্যবহারের ফলে অনন্ত দুঃখের সাগরে নিমজ্জিত হতে হয়।

কঠিন চীবর দান গ্রামে গ্রামে, বিহারে বিহারে উৎসবের মাত্রা ছড়িয়ে দিয়ে সকল অকুশল চিন্তা থেকে মুক্ত হয়ে অহিংসা, শান্তি ও মৈত্রীর বন্ধন সুদৃঢ় করণে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন। কোন একটি বিহারে একবারই কঠিন চীবর দান করা হয়। এক বিহারে একাধিকবার কঠিন চীবর দান করার নিয়ম নেই। একজন ভিক্ষু একবারের অধিক কঠিন চীবর গ্রহণ করতে পারে না। যে বিহারে কঠিন চীবর দান করা হয় সে বিহারে অবস্থানরত ভিক্ষুরা বর্ষবাস চলাকালীন আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা পর্যন্ত এই তিনমাস নিজ বিহার ছেড়ে অন্য কোথায়ও অবস্থান বা রাত্রিযাপন করতে পারে না। এমনি কি বছরের ১২ মাসের মধ্যে এই তিনমাসকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে নিজেদেরকে ধর্মানুশীলন, আচরণ, প্রতিপালন, পরিশীলনে সর্বদা নিয়োজিত থাকতে হয়। যারা এই নিয়ম কানুন থেকে নিজেদেরকে বিচ্যুতি ঘটায় সে সব ভিক্ষুগণ চীবরদানের যোগ্য হতে পারে না। তবে অনেক ভিক্ষুগণ নিয়মবহির্ভূত জীবনযাপন করার কারণে ধর্মের পরিহানী ঘটছে। অর্থকড়ি ছোঁয়া, রাজনীতি, সমাজনীতি, কূটনীতি, লোভ, হিংসা বা প্রশংসাজাতীয় কোনো কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত থাকা কোনো ভিক্ষু ধর্মীয় সঠিক জীবনাচার করতে পারে না। কিন্তু আজকাল প্রতিনিয়ত তাই ঘটছে। অনেক ভিক্ষুকে দেখা যায় বর্ষাবাস চলাকালীন দেশ ছেড়ে বিদেশে চলে যেতে। আবার এও দেখেছি একটি বিহারে অধ্যক্ষের বিনা অনুমতিতে কঠিন চীবর দানের আয়োজন করতে। তেমনি ধর্ম বিনয় বিরোধী ঘটনা ঘটিয়ে বিগত কয়েকবছর যাবত কঠিন চীবর দানকে বিতর্কিত পর্যায়ে নিয়ে গেছেন চট্টগ্রাম বৌদ্ধ বিহারের জনৈক ভিক্ষু। তিনি বাংলাদেশ তথা দক্ষিণ এশিয়ার সর্বোচ্চ ধর্মীয়গুরু চট্টগ্রাম বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ, বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক সমাজ সেবায় একুশে পদকে ভূষিত, শতবৎসর বয়সী অনাথপিতা ড. জ্ঞানশ্রী মহাথের’র কথা বার বার অমান্য, অশ্রদ্ধা করে, বিগত সময়ের আওয়ামী রাজনীতির প্রভাব খাটিয়ে ধর্ম বিনয় বহির্ভূত কাজগুলো করে চলেছেন। যা বৌদ্ধ ধর্মের ইতিহাসকে কলঙ্কিত করেছেন বলে প্রাজ্ঞ পণ্ডিত বিনয়শীলধারী ভিক্ষুগণ মনে করেন। এব্যাপারে ভিক্ষু সংগঠনদের জোরালো ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না।

আমরা কমবেশি সবাই একবাক্যে স্বীকার করি, বাংলাদেশ হচ্ছে সর্বধর্মের মানুষের উৎসবস্থল। সনাতন সম্প্রদায়ের শারদীয় দুর্গাপূজা, জন্মাষ্ঠমী, কালিপূজা, লক্ষ্মী পূজা, দোলযাত্রা, রথযাত্রা। মুসলিম সম্প্রদায়ের ঈদে মিলাদুন্নবী, ঈদুল ফিতর, ঈদুল আযহা, শবে কদর। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা, প্রবারণা পূর্ণিমা, কঠিন চীবর দান, মাঘী পূর্ণিমা। খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের শুভ বড়দিন, ইস্টার সানডে। আর আদিবাসী পাহাড়ি জনগোষ্ঠির বৈসাবি উৎসব, চাকমদের বিজু, মারমাদের সাংগ্রাই, ত্রিপুরাদের বৈসুক, তঞ্চঙ্গ্যাদের বৈসুক, মুরংদের চাংক্রান, সাঁওতালদের সহরায় উৎসব। সমস্ত বাঙালিদের প্রধান উৎসব নববর্ষ বা পহেলা বৈশাখ। উৎসব সমগ্র বাংলাদেশকে একত্রিত করে তোলে। এই বিষয়টি হচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় সম্প্রীতি যেটি পৃথিবীর অন্য কোথাও দেখা মেলে না। তাই জাতি ধর্ম নির্বিশেষ সবার শ্লোগান ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার।’ উৎসব বাঙালির অন্তরআত্মার সাথে নিবিড় মেলবন্ধন। বাংলাদেশের মতো ধর্মীয় উৎসব ও সম্প্রীতির বাতাবরণ পৃথিবীর আর কোথাও এ দৃশ্য দেখা মেলে না। এমনকি আমাদের পার্শবর্তি দেশ ভারত সংস্কৃতির উর্বরভূমি হলেও সেখানেও বিভিন্ন ধর্মের মানুষদের মধ্যে এত ভ্রাতৃত্ববোধ-সম্প্রীতি দেখা যায় না। সেদিক থেকে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ হচ্ছে সৌহার্দ্য বন্ধনের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তবে এটাও ঠিক যে ধর্ম নিয়ে উগ্রতা বাড়াবাড়িও কম নয়। প্রত্যেক ধর্মের মধ্যে এমনকিছু উগ্রমানসিকতা সম্পন্ন লোক আছে তারা ধর্মকে ব্যবসায় পরিণত করে অশান্তি সৃষ্টির পাঁয়তারায় লিপ্ত। আরাধনার স্থান ধর্ম হয়ে উঠেছে কিছু মানুষের জীবিকার স্থান। জোর জবরদস্তি হামলা-মামলা দখলবাজির মাধ্যমে আধিপত্য বিস্তার করে। এই জাতীয় গর্হিত কাজ যেকোনো ধর্মের জন্য অপরিণামদর্শী। চলতি বছর (২০২৪) ৮ ও ৯ মে এবং ১১ জুন দুই দফায় গুটি কয়েক উশৃঙ্খল কিছু নামধারী ভিক্ষু ও গৃহী মিলে চট্টগ্রাম বৌদ্ধ বিহার জোর জবরদস্তি দখল হামলা-মামলা, লুটপাট, আগুন দিয়ে মূল্যবান দলিলপত্র ধ্বংসযজ্ঞ করে বিহারের প্রায় দেড়’শ বছরের ইতিহাসকে কলঙ্কিত করেছে। এমন ঘৃণিত ও ন্যাক্কারজনক ঘটনায় বৌদ্ধ সমাজ পদে পদে আজ অশান্তি ভোগ করছে এবং নবপ্রজন্মের মাঝে অশান্তির মাত্রা তীব্রতর হচ্ছে। এই ঘৃণিত কাজের যিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি আবার একজন ভিক্ষু। হিংসা, ঘৃণা, বিদ্বেষ, হানাহানি, মারামারি করে কখনো সমাজে শান্তি ফিরে আসে না। বরঞ্চ জাতি সম্প্রদায় অনেকটা ক্ষতির সম্মুখীন হয়। ধর্মের অনুশীলন হতে হবে ত্যাগ ও আনন্দের মধ্যে দিয়ে। ত্যাগের মধ্যে আনন্দের বাতাবরণ সৃষ্টি করতে হবে। আনন্দিত জীবন শুধু মানুষের দুঃখকে মোচন করে না; পরিপূর্ণ সহনশীল ও উন্নত মানসিকতা সম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতেও সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

এই ক’দিন আগেই পালিত হলো মুসলিম সম্প্রদায়ের ঈদে মিলাদুন্নবী। সমগ্র বাংলাদেশে অত্যন্ত ধর্মীয় গাম্ভীর্যতায় মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর শুভ জন্ম বা আবির্ভাবের দিন উৎসব মুখরতায় পালিত হয়। এরপর ঢাকঢোল পিঠিয়ে মা দুর্গার আগমন ঘটে প্রায় পাঁচদিন পূজা অর্চনা আরতি উৎসব এবং সর্বশেষ মা দুর্গাকে বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে শেষ হয় দুর্গাৎসব। হিন্দু সম্প্রদায়ের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার রেশ কাটতে না কাটতেই বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব প্রবারণায় বিচিত্র রকমের ফানুস উত্তোলনের মধ্যে বৌদ্ধ সংস্কৃতির যে সম্প্রীতির উৎসব শুরু হয় মাসব্যাপী কঠিন চীবর পালনের মধ্যে দিয়ে ধর্মীয় উৎসবের পরিসমাপ্তি ঘটে। তাই বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের জন্য কঠিন চীবর দান অত্যন্ত গুরুত্ববহ ও তাৎপর্যময়।

লেখক: সাংবাদিক, প্রাবন্ধিক

সারাবাংলা/এসবিডিই

কঠিন চীবর দান: উৎসবের মহাজাগরণ বিপ্লব বড়ুয়া মুক্তমত

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর