নতুন দিনের গল্প কি লিখবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৬:১৩
নিউজিল্যান্ড – পাকিস্তান ম্যাচের মধ্যে দিয়ে দীর্ঘ ৮ বছর পর পর্দা উঠতে যাচ্ছে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির। আইসিসি মেগা ইভেন্ট আসলেই সব দলের মধ্যে ভিন্নরকম প্রস্তুতি দেখা যায়। কোনো কোনো দল নিজেদের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলে কিংবা ট্রাইনেশন সিরিজ, কোনো দল আবার টুর্নামেন্টের প্রস্তুতি হিসেবে ভিন্নরকম কন্ডিশনে নিজেদের ঝালিয়ে নেয়। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলও এর বাইরে নয়।
যদিও এইবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশের প্রস্তুতি আশাব্যঞ্জক নয়। তাও বাংলাদেশী দর্শক আশার আলো চাইলেই দেখতে পারে, কারণ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মধ্যে দিয়ে দীর্ঘ দুই মাস পর আবারো নিজেদের চিরচেনা ওয়ানডে ফরম্যাটে নতুন দিনের গল্প লিখতে মাঠে নামছে বাংলাদেশ। সব দলের মতো বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অভিষেক হওয়াটা স্বাভাবিক হয়নি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশের অভিষেক হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু তা ভেন্যু হিসেবে।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৯৮ সালে।তখন অবশ্য শুরুর দিকে ভিন্ন নামে পরিচিত ছিল এই টুর্নামেন্টটি। ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল এই আসর। ভেন্যু হিসেবে অভিষেক হলেও, দল হিসেবে সেইবার মাঠে নামতে পারেনি লাল সবুজের দল। টেস্ট স্ট্যাটাস না থাকায় টুর্নামেন্টে ছিল না বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ওই সময় এর নাম ছিল উইলস ইন্টারন্যাশনাল কাপ, সেই নক-আউট প্রতিযোগিতার নাম পরবর্তীতে ২০০২ আসরে নাম বদলে ‘চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি’ নামকরণ করা হয়।
প্রথমদিকে সরাসরি নকআউট পদ্ধতিতে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হতো। কোয়ার্টার ফাইনাল দিয়ে ম্যাচের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হতো। ছিল না গ্রুপপর্ব । যাতে বিশ্বকাপের মর্যাদা কোনোভাবেই কমে না যায়। প্রথম দিকে শুধু টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলো খেলার সুযোগ পেত। পরবর্তীতে কিছুটা নিয়ম পরিবর্তন আসে। ১০টি পূর্ণ সদস্যের টেস্ট খেলুড়ে দলের পাশাপাশি আরো দুটি সহযোগী দেশ টুর্নামেন্টে অংশ নিত। কিন্তু ২০০৮ সাল থেকে নিয়ম পরিবর্তন করা হয়। ২০০৯ সাল থেকে সেটি হয়ে আসছে র্যাংকিংয়ের শীর্ষ আট দল নিয়ে।
এইবার বাংলাদেশের দিকে ফেরা যাক। ২০০০ সালে অনুষ্ঠিত হওয়া পরের আসরে প্রি কোয়ার্টার ফাইনালে বিদায় নেয় বাংলাদেশ। এই আসরে চ্যাম্পিয়ন হয় নিউজিল্যান্ড।
এরপর ২০০২, ২০০৪ এবং ২০০৬ সালে টানা তিন আসরে যথারীতি গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেয় বাংলাদেশ। এরপর ২০০৯ ও ২০১৩ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে কোয়ালিফাই করতে পারেনি বাংলাদেশ। তৎকালীন সময়ে বাংলাদেশের অংশগ্রহণই ছিলো বাংলাদেশীদের জন্য অনেক বড় অর্জন। তবে এই ধারাবাহিকতায় বড় পরিবর্তন ঘটায় ২০১৭ সালে। র্যাংকিংয়ে ভালো করার সুবিধার্থে ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে আবারো খেলার সুযোগ পায় তৎকালীন মাশরাফি বাহিনীর দল। আর তাতেই বাজিমাত করে বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের গ্রুপে থাকা টাইগাররা নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো সেমিফাইনালে খেলে। যদিও সেমিতে ভারতের কাছে হেরে যায় টাইগাররা। এখন পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ১২ ম্যাচ খেলে ৯টিতে হেরেছে বাংলাদেশ। জিতেছে দুইটি ম্যাচ, ফলাফল আসেনি এক ম্যাচে। তবে সাম্প্রতিক সময় যেনো বাংলাদেশ নিজেদের চিরচেনা ফরম্যাটে নিজেদের হারিয়ে খুঁজছেন। গেলো বছর বাংলাদেশের ওয়ানডে পরিসংখ্যান যদি লক্ষ্য করা যায় তাহলে ৯ ওয়ানডে খেলে ৬টিতে হেরেছে, সর্বশেষ দুটি সিরিজেও হার।
শেষ গেলো বছরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হোম সিরিজ বাদে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে দীর্ঘদিন পর হোয়াইটওয়াশের লজ্জা বরণ করে নিতে হয়।অন্যদিকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের নতুন জায়েন্ট আফগানিস্তানের কাছেও বাংলাদেশ সিরিজ হেরেছিল ২-১ ব্যবধানে। এই বছরগুলোতে বাংলাদেশকে তিনশোর বেশি রান করেও চরমভাবে হারতে হয়েছে। সর্বশেষ প্রস্তুতি ম্যাচে পাকিস্তান ‘এ’ দলের বিপক্ষে বাংলাদেশ ৩৮.২ ওভারে মাত্র ২০২ রানে অলআউট হয়েছিল এবং ম্যাচটি হেরেছিল। তবে হাস্যকর হলেও সত্যি যে, বাংলাদেশকে গেলো বছরে গোটা ওয়ানডে ফরম্যাটে জয়হীনতার হাত থেকে রক্ষা করেছে নাজমুল হোসেন শান্ত ও রিশাদ হোসেন।
গেলো মার্চে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে শান্ত ও রিশাদের দুই অপরাজিত ইনিংস না এলে তো পুরো বছরটাই ওয়ানডে সিরিজে জয়হীন থাকতে হতো বাংলাদেশকে। প্রথম ওয়ানডেতে শান্তর ১২২ ও তৃতীয় ম্যাচে রিশাদের ঝোড়ো ৫৮ রানের ইনিংস মান বাঁচিয়েছে বাংলাদেশের। নিজেদের পছন্দের ফরম্যাটেও এমন দুরবস্থা দেখে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিজেদের আত্মবিশ্বাস তলানিতে ঠেকেছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাটিতে আফগানদের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে শেষ ৫৩ বলে ২৩ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ হারতে হয়েছিল ৯২ রানে। অথচ সেই ম্যাচে এর কিছুক্ষণ আগেও বাংলাদেশ উইনিং কন্ডিশনে ছিলো।
তবে, দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৮৪ রানের জয় সিরিজ পরাজয় ঠেকিয়েছিল এক ম্যাচের জন্য। শেষ ম্যাচে ৫ উইকেটের হারে তা রূপ নেয় ধবলধোলাই ঠেকানো জয়ে। মাঝের সেই ম্যাচ না জিততে পারলে চলতি বছরের তিন সিরিজের দুই সিরিজই ধবলধোলাই হতে হতো লাল সবুজের প্রতিনিধিদের।
গেলো দুই মাস আগে উইন্ডিজের বিপক্ষে বোলিংয়ে ভালো করতে না পারা বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে করেছে ভালো। যে ভালোর ঘাটতি ছিল আগের সিরিজে। কিন্তু দুইদিকের ভালোর ভারসাম্য করতে পারছে না ফিল সিমন্সের শিষ্যরা। ক্যারিবিয়ান কোচের অধীনে তার চিরচেনা ওয়েস্ট ইন্ডিজে খেলতে গিয়েও নিজেদের সবচেয়ে পছন্দের ফরম্যাটে কামব্যাক করতে পারে নি।
নিজেদের চিরচেনা ফরম্যাটে আকস্মিক কেন বাংলাদেশ শক্তিমত্তার জায়গা হারিয়ে ফেলেছে?
এই প্রশ্নের জবাব খুঁজতে গেলে দেখা যাবে ২০২৩ সাল থেকেই ওয়ানডে দলের অবস্থা ভালো নয়। ইংল্যান্ড ও আফগানিস্তানের কাছে হেরেছিল তৎকালীন সময়ে নেতৃত্বে থাকা তামিম ইকবালের দল। সেই বছর জয় কেবল ঘরে ও ঘরের বাইরে আয়ারল্যান্ডকে টানা দুই সিরিজ। তবে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায় এশিয়া কাপে প্রত্যাশানুযায়ী পারফর্ম করতে ব্যর্থ হয় তৎকালীন সময়ের আরেকজন অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের দল।
বিশ্বকাপের আগে ঘরের মাঠে সবশেষ সিরিজে নিউজিল্যান্ডের কাছেও পরাজিত হতে হয়েছিল। তবে মার্চ ও মে মাসে আইরিশদের দাপুটেভাবে হারানোর পর ওয়ানডে বিশ্বকাপকে ঘিরে যেই প্রত্যাশার পারদ জন্ম নিয়েছিল সেটি বিশ্বকাপের আগে ও চলমান অবস্থায় মাঠ ও মাঠের বাইরের ঘটনায় বাস্তবতায় ফিরিয়েছিল সমর্থকদের। বছরের শুরুতে ২০২৩ বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য দারুণ বছর হবে বলে সাকিব আল হাসান ইঙ্গিত দিলেও বাস্তাবে হয়েছিল তার বিপরীত।
ভারত বিশ্বকাপের ধকল কাটিয়ে উঠতে দরকার ছিল ওয়ানডে সংস্করণে কিছু দারুণ জয়। কিন্তু বিশ্বকাপের পর তা আসেনি। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে তিন ম্যাচের সিরিজে অর্জন ছিল কেবলই শেষ ম্যাচে জয়, তাও বহু বছরের প্রতীক্ষিত জয়। বরাবরের মতো সেই বছরটাও হার দিয়ে শেষ করে বাংলাদেশ।
২০২৩ সালে বিশ্বকাপ ও এশিয়া কাপসহ খেলা ২৯ ম্যাচে দুটিতে ফলাফল হয়নি। বাংলাদেশের জয়ের সংখ্যা ১১। ৫ ওয়ানডে সিরিজে (এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপ ছাড়া) জয় দুটিতে। যেখানে দুইবারই প্রতিপক্ষ আয়ারল্যান্ড।
২০২৪ সালও আগের বছরের ধারাবাহিকতায় হার দিয়ে শেষ করেছে নতুন অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজের দল।৯ ওয়ানডে ম্যাচে জয় তিনটি; একটি আফগানিস্তানের বিপক্ষে আর দুটি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে যে সিরিজটি বাংলাদেশ জিতেছিল।
অর্থ্যাৎ, ৩ সিরিজের ২ সিরিজেই এই বছর হারতে হয়েছে। আফগানদের বিপক্ষে আবার টানা দুই সিরিজে পরাজয়। যে ওয়ানডেতে মাঠে নামলেও জয়ের দিকেই পাল্লা ভারি থাকতো এখন সেই ফরম্যাটেই দলের দুরবস্থা নিশ্চিতভাবেই শঙ্কার জন্ম দেয় চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে।
তার চেয়েও বড় কথা ৩২১ রান করেও পরাজিত হতে হয় মিরাজ বাহিনীকে, যা রীতিমতো মেনে উঠতেই পারছিলেন না অধিনায়ক মিরাজ। তার মতো অবস্থা এখন দেশের ক্রিকেটের সমর্থকদেরও। জয় অভ্যাসে পরিণত হওয়া ফরম্যাটটাতে এমন দুঃসময় সমর্থকদেরও বোধগম্যের বাইরে।
বর্তমানে বাংলাদেশের এমন অবস্থাকে কেন্দ্র করে ক্রিকেট বিশারদরাও আশার আলো দেখছেন না।
অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি ক্রিকেটার রিকি পন্টিং আইসিসির একটি পডকাস্ট শোতে উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ দল মানের দিক থেকে আগের চেয়ে পিছিয়ে গেছে। এমনকি এবারের আসরে আফগানিস্তানের সম্ভাবনাও বাংলাদেশের চেয়ে ভালো বলে মনে করেন তিনি। বাংলাদেশের সম্ভাবনাকেও তাই অন্য যেকোন দলের চেয়ে কম ।
আমার ধারণা তাদের সংগ্রাম করতে হবে। দলটিতে সেরকম মান আছে বলে মনে হচ্ছে না। বিশেষ করে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির অন্য দলগুলোর সাথে তুলনা করলে। এখন দলটিতে কোয়ালিটির অভাব আছে মনে হচ্ছে। তারা তাদের আদর্শ হোম কন্ডিশন পেলে তখন তারা ভয়ংকর দল, তবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশের মতো কন্ডিশন পাবে বলে মনে হয় না।’
সাকিব আল হাসান নেই। তামিম ইকবালও অবসরে। দলে ‘কোয়ালিটি’-র অভাব বেশিই চোখে পড়ছে তার। পন্টিংয়ের অনুমান, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশ সম্ভাবনার নিরিখে আফগানিস্তানের চেয়েও পিছিয়ে থাকবে।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে এইবার মূল লক্ষ্য থাকবে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, ভারত, সাউথ আফ্রিকা নিউজিল্যান্ডের মতো দলের দিকে। অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়া বেশকিছু খেলোয়াড় হারালেও তারা তাদের সেরাটা দিতে প্রস্তুত, অন্যদিকে সদ্য শেষ হওয়া ত্রিদেশীয় সিরিজে পাকিস্তানও তাদের শক্তির জানান দিয়েছে। আর এইবার যেহেতু তাদের চেনা উইকেটে টুর্নামেন্ট তাই আলাদা করে পাকিস্তানকে তুরুপের তাস বললেও ভুল হবার নয়। তাই বর্তমান প্রেক্ষাপট ও কন্ডিশন বিবেচনায় বাংলাদেশের যে অবস্থা তাতে করে সম্ভাবনা দেখার মতোই নয়। শুধু ব্যাটিংয়ের টপ-অর্ডার ভালো করলে বা বোলিংয়ে নির্দিষ্ট ধাপে ভালো করলে হবে না। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভালো কিছু করতে হলে দলগত পারফরম্যান্স লাগবে।
যেহেতু খুবই শক্ত একটা গ্রুপে বাংলাদেশ, তাই পাওয়ারপ্লে ও ডেথ ওভারের বোলিং-ব্যাটিং কৌশল তৈরি করতে হবে।নির্দিষ্ট প্রতিপক্ষের বিপক্ষে বিশেষ পরিকল্পনা (যেমন: ভারতের বিপক্ষে স্পিন আক্রমণ বাড়ানো, পাকিস্তানের বিপক্ষে সুইং বোলিং কাজে লাগানো)। ফিল্ডিং উন্নত করা (ক্যাচ মিস না করা, দ্রুত থ্রো, স্মার্ট রান আউট) ।
পাকিস্তানের উইকেট সাধারণত পেস বান্ধব, তাই পেস আক্রমণ শক্তিশালী করা জরুরি ।মিডল অর্ডারে ভালো স্পিন সামলানোর মতো ব্যাটসম্যান রাখা। ডেথ ওভারে ভালো বোলিং ও ব্যাটিং পরিকল্পনা করা। বড় স্কোরিং পিচে যেহেতু খেলা হবে তাই লম্বা সময় ধরে পার্টনারশিপ করার চেষ্টা থাকতে হবে। পাকিস্তানের উইকেট সাধারণত পেস বান্ধব, তাই পেস আক্রমণ শক্তিশালী করা জরুরি। মিডল অর্ডারে ভালো স্পিন সামলানোর মতো ব্যাটসম্যান রাখা; সেইসাথে বিকল্প পরিকল্পনার জন্য ব্যাকআপ খেলোয়াড় রাখা।
এতো সমালোচনার মাঝেও নতুন দিনের আলো লিখতে চাই বাংলাদেশ। কারণ ক্রিকেটকে বলা হয় আনপ্রেডিক্টেবল খেলা। যেকোনো সময় যেকোনো কিছুর মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। যার বড় একটি প্রমাণ প্রতিষ্ঠিত করেছিল ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিউজিল্যান্ডকে হারানোর মাধ্যমে ।
তাই দলের মধ্যে কিছু ইতিবাচক দিকও রয়েছে।এইবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশের ভরসার নাম হতে পারে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। বাংলাদেশের গেলো সিরিজগুলোতে পরাজয় বরণ করে নিলেও ব্যাটিং এ নিজের সেরাটা প্রমাণ করেছেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, অন্যদিকে আরেকজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড় মুশফিকুর রহিমও হতে পারে সম্ভাবনার নতুন পারদ। অন্যদিকে সদ্য দলে নতুন যোগ হওয়া জাকের আলী, রিশাদ হোসেন, তৌহিদ হৃদয়ও নিজেদের আস্থার প্রতিদান দিয়েছে।
গেলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে প্রাপ্তির পাল্লাটা ভারী করেছে তানজিদ হাসান তামিমের রানে ফেরা ও দুই সিরিজ সৌম্যের আত্মবিশ্বাসী ব্যাটিং। অন্যদিকে তাসকিন আহমেদ পেস আক্রমণে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তার দেখাদেখিতে মোস্তাফিজ, শরীফুল, নাহিদ রানাও ভালো কিছু বয়ে আনতে পারে এবং মেহেদী হাসান মিরাজ অলরাউন্ডার হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। কিন্তু দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হবে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত, সৌম্য সরকার, পারভেজ ইমনদের। তাহলেই দল থেকে সেরা পারফরম্যান্স বেরিয়ে আসবে।
সামগ্রিকভাবে, শক্তিশালী প্রতিপক্ষ এবং প্রস্তুতির ঘাটতির কারণে বাংলাদেশের জন্য চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভালো করা চ্যালেঞ্জিং হবে।তাই নতুন করে বাংলাদেশ এই অনিশ্চয়তার ক্রিকেটে নতুনের গল্প লিখতে পারে, তা কঠিন হলেও স্বপ্ন দেখা যেতেও পারে। সঠিক মনোভাব ও কৌশল নিয়ে মাঠে নামলে বাংলাদেশ বাংলাদেশ যদি পরের পর্বে যায়, তাতে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। অবশ্যই খুব কঠিন কাজ। গুছিয়ে খেলতে পারলে সম্ভব।
লেখক: শিক্ষার্থী, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগ, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি
সারাবাংলা/এএসজি