Thursday 18 Sep 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

প্রশাসনের অনুজ প্রতিমদের উদ্দেশ্যে কিছু কথা

আনোয়ার হাকিম
১৯ মে ২০২৫ ১৮:২১

জ্ঞান দেওয়া বাঙ্গালির চিরকালের অভ্যেস। কারণ কাউকে জ্ঞান দিতে পয়সা লাগে না। অথচ নিজেকে বিজ্ঞ বলে মনে হয়। তার পরেও জ্ঞান বা পরামর্শ অত্যন্ত জরুরি বিষয়। জ্ঞান অর্জন করতে হয়, চেষ্টা থাকলে কব্জাও করা যায়। কিছু জ্ঞান উপরস্থদের কাছ থেকে বা বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে নিতে হয়। আবার নিজের আত্মস্থ জ্ঞান সঠিক কিনা তার জন্য অভিজ্ঞজনের বা সিনিয়রদের সাথে পরামর্শ করতে হয়। আজকাল পয়সার বিনিময়েও পরামর্শ খরিদ করা যায়। যাহোক, পয়সার বিনিময়েই হোক আর সম্পর্কের সূত্রেই হোক জ্ঞান লাভ করা বা পরামর্শ গ্রহণ করা উভয়ই জরুরি। পেশাজীবিদের কাছে তা অতি আবশ্যিক।

সরকারি দপ্তরে কাজ হয় বিভিন্ন পদ্ধতিতে। সাধারণ জ্ঞান খাটিয়ে, আইন-কানুন-বিধি-বিধান মেনে, সৃজনশীলতা বা উদ্ভাবনী জ্ঞান প্রয়োগ করে বা সিনিয়রদের কাছ থেকে শলাপরামর্শের মাধ্যমে অথবা পয়সার বিনিময়ে পরামর্শ ক্রয় করে বা অংশীজনদের সাথে মতবিনিময় করে বা পূর্ব নজীর অনুসরণ করে। প্রশাসনের কাজকর্ম এভাবেই পরিচালিত হয়ে আসছে। কোন জায়গায় মারামারি লেগেছে। নবীন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে পাঠানো হলে তাকে ব্রিফ করে দেওয়ার রেওয়াজ বহু প্রাচীন। বহুল প্রচলিত ম্যানেজ করা বা ট্যাক্টফুল হওয়ার বিষয়টা যার যার ক্যারিশমা বা দক্ষতার উপর নির্ভর করে। এর বাইরেও পদ সোপান ভিত্তিক প্রশাসনে নথী ব্যবস্থাপনায় আরোহন ও অবরোহন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সিনিয়রদের মতামত, নির্দেশ, সিদ্ধান্ত জুনিয়রদের কাছে বিশেষ সহায়ক হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। তাহলে আজকের আমলাতন্ত্রের এরূপ ভগ্নদশা কেন?

বিজ্ঞাপন

অনেকে অনেক কথা বলবেন। লম্বা দু’চার প্রস্থ লিখেও ফেলবেন। ফোরামে, সিম্পোজিয়ামে বা প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে ‘আমি যখন অমুক ছিলাম’ জাতীয় জ্ঞান বিতরণের ফাঁকে ফাঁকে সিনিয়রদের এরূপ বচন শুনে বিরক্ত হন নি এমন জুনিয়র খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে। তাহলে কি সিনিয়র বাগাড়ম্বর করছেন? নাকি আজকাল জুনিয়ররা সব বেয়াদব বা পণ্ডিত হয়ে গেছে? এগুলোর মীমাংসা কোনকালে হয় নি। হবেও না। সিনিয়ররা বলবেন আজকালকার কর্মকর্তারা কোন কিছুতেই মনোনিবেশ করতে চায় না। পক্ষান্তরে জুনিয়রদের অভিব্যক্তি হলো সিনিয়ররা মোটেই অনুকরণীয় কোন ভাবমূর্তি গড়ে তুলতে পারেন নি। দু’টোর মধ্যেই আংশিক সত্য লুকায়িত আছে। এর বাইরেও আমলাতন্ত্র পড়েছে বহু ভাতারের (যুতসই শব্দ পেলাম না, পেলে প্রতিস্থাপন করে দেবো) খপ্পরে।

আগে আমলাতন্ত্র টপ ডাউন থিওরি মেনে চলত। অটোক্রেটিক শাসনের মত সব সিদ্ধান্ত আসত উপর থেকে চূড়ান্ত হয়ে। সর্বক্ষেত্রে যে তা খারাপ আসত তা নয়। কিন্তু সেখানে ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন সম্ভব হত না। যুগের প্রয়োজনে, পাশ্চাত্যের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে মান্ধাতার আমলের টপ ডাউন থিওরির পরিবর্তে আবির্ভূত হয় বটম আপ থিওরি। এটি প্রথমোক্ত অপেক্ষা উত্তম। কিন্তু সেটাও এদেশে কার্যকর হতে পারে নি। কেন পারে নি তা কেউ খতিয়ে দেখে নি। যারা দেখতে পারতেন তারা উপরে ডিলাক্স ক্লাসে বসে আত্মোন্নয়নের রঙ্গীন ফিল্ম দেখতে মশগুল ছিলেন। আর যারা নিচের আধিকারিক তারা মনোবল হারিয়ে গড্ডালিকা প্রবাহে অবগাহন করার কাজে নিজেদেরকে ব্যস্ত রাখছে। ফলতঃ প্রশাসন চলেছে ঝড়-ঝঞ্ঝা বিক্ষুব্ধ দরিয়ায় কাণ্ডারীবিহীন জলযানের মত। কখনো ডুবে ডুবে যায় অবস্থা, কখনো ভেসে উঠে, কখনো হেলে দুলে চলে, কখনো নিরাপদ চরাচরে নোঙ্গর ফেলে বসে থাকে।

প্রশাসনে আজকাল জুনিয়রদের গাইড করার প্রবণতা একেবারে কমে গেছে। কাজের ব্যস্ততা এর অন্যতম কারণ। এর বাইরে অন্য মনস্তত্ত্ব হলো, কি লাভ এত শুদ্ধাচারের? অথচ শুদ্ধাচার ব্যবস্থা ও এতদসংক্রান্ত কমিটি এখনো প্রতিটি সরকারি দপ্তরে কাজের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ হিসেবে স্থান দখল করে আছে। কিছু ব্যাতিক্রম বাদে এগুলো এখন উর্ধতন সোপানে নিজেদেরকে জাহির করার প্রমাণক তৈরির কাজে ব্যস্ত। বাস্তবে কাজ কর্মের কতটা উন্নতি ঘটলো তা মুখ্য না। প্রমাণক তৈরি, পদক-পুরষ্কার প্রাপ্তি ও বিশেষ কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ আর্থিক প্রণোদনা প্রাপ্তিই মুখ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। উর্ধতন যারা আছেন তারা কাগজ, প্রমাণক, উন্নয়নের উর্ধগামী গ্রাফ দেখতে চান। আর জুনিয়ররাও তা বুঝে জ্বী হুজুর মার্কা কাগজ তৈরি করে দিচ্ছে। উভয়ের কাছে উভয়ের আকাংখা খুব স্পষ্ট। এই খেলাই চলেছে আমলাতন্ত্রে।

‘দুষ্টের দমন শিষ্টের পালন’ সবার কাছে খুব আদুরে বচন। অথচ সরকারি দপ্তরে এর বিন্দুমাত্র চর্চা নেই। কিছু কর্মকর্তার পোস্টিং প্রোফাইল পর্যালোচনা করলেই দেখা যাবে তারা ঘুরেফিরে সরকারি লোভনীয় দপ্তর, সংস্থা, মন্ত্রণালয়ে পদায়িত হচ্ছে। এমনকি ওইসব দপ্তর, সংস্থা, মন্ত্রণালয়ের মাখনযুক্ত ডেস্ক করায়ত্ত করে বছরের পর বছর পার করে দিচ্ছে। তারাই দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অফিস। বাকি যারা আছে তারা নামে অফিসার হলেও কার্যত দ্বিতীয় ক্যাটাগরিতে পড়ে থাকে ঠ্যাকা কামলা হিসেবে। হতাশা, ক্ষোভ ও অনিয়মের চর্চার শুরু এখান থেকেই। বিদেশ ভ্রমনের ক্ষেত্রেও একই দশা। কারো উপুর্যুপরি ভ্রমণের কারণে পাসপোর্টের পাতা শেষ হয়ে যায় ভিসা আর ইমিগ্রেশনের সীল মোহর অংকনে। আর অবশিষ্টদের পাঁচ বছর মেয়াদি পাসপোর্টের পাতা গুলো শূন্য-বিরাণ পড়ে থাকে। তাতে থাকেনা ভিসার কোন রঙ্গিন স্টিকার।

সরকারি কর্মে পদোন্নতি একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি গত কয়েক দশকে হয়ে উঠেছে চরম হতাশাব্যাঞ্জক। বিশেষত গত পনের বছরে পদোন্নতি প্রক্রিয়ায় মেধা, দক্ষতা, যোগ্যতার কোন স্থান ছিলো না। দলীয় লেজুড়বৃত্তি ও ‘আমাদের লোকে’র স্টিকারযুক্ত হলেই পদ সোপান বিনা ক্লেশে টপকানো যেত। ফলতঃ বহু সিনিয়র, জুনিয়রের আ-ারে কাজ করতে বাধ্য হয়েছে। ভোগ করেছে প্রাত্যহিক দাপ্তরিক লাঞ্চনা, সামাজিক গঞ্জনা আর পারিবারিক যাতনা। পদোন্নতি প্রক্রিয়ায় উর্ধতন কর্মকর্তারা ছিলেন স্বাক্ষী গোপাল টাইপের। এ নিয়ে তাদের কোন খেদ ছিলো বলে শুনি নি। বরং বঞ্চিত কর্মকর্তারা তাদের করুণা প্রার্থী হলে তারা যার যার ব্যাচমেট বা বিশেষ এজেন্সীর কাছে রেফার করতেন। কেউ তলিয়ে দেখার দায়িত্বটুকুও নিতেন না, নেন নি। ফলস্বরূপ ব্যাচমেটরাই অলিখিত ভাগ্যনির্ধারকের ভূমিকায় অধিষ্ঠিত হয়ে গেছে। এখনো সেরূপ সিলসিলা জারি আছে কিনা জানি না। এসব নিয়ে পত্রিকায় বিস্তর লেখালেখি হয়েছে। সুপিরিয়র অথরিটির সবাই বিষয়টি সম্যক অবহিত। তারপরেও পরিস্থিতির বিন্দুমাত্র উন্নতি হয় নি। যথাযথ কর্তৃপক্ষের বাইরে অযাচিত কর্তৃপক্ষের এরূপ উদ্ভব আমলাতন্ত্রকে করেছে ভেতর থেকে দুর্বল আর বাহিরের বৃহত্তর বলয়ে করেছে দুর্বলতর। পদায়ন, বিদেশ ভ্রমণ আর পদোন্নতিতে বছরের পর বছর এরূপ অনিয়মের চর্চা চলে আসছে। কোন উন্নতি হয়েছে বলে অভিজ্ঞতায় নেই। এই যদি হয় বহুল চর্চা তাহলে শুদ্ধাচারের কৌলিন্য থাকে কি? জুনিয়ররা এ থেকে কি শিখে? তাই, বিনা ক্লেশে শুধু তদবির আর লিয়াজোঁ গুণে আনলমিটেড জ্যাকপটের মওকা কে ছাড়ে?

আমলাতন্ত্রে সিনিয়র, জুনিয়রের মধ্যে বিভাজিত দুই স্রোত স্পষ্ট দৃশ্যমান। সিনিয়র সর্বক্ষণ নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত। উপরের তারা গোনা তার অভ্যেস হয়ে গেছে। উপরের ব্লেসিং তার একমাত্র আরাধ্য। তাই, কোন অঘটন যাতে না ঘটে সেটুকু দেখভাল করাই তার দায়িত্ব হয়ে পড়েছে। পক্ষান্তরে জুনিয়ররা তাদের ধীশক্তি দিয়ে এতটুকু বুঝতে পেরেছে যে, সিনিয়রের কাছ থেকে ব্লেসিং পেতে হলে অন্য তরিকা দরকার, গতানুগতিক তরিকায় কাজ হবে না। তাই সে ডাইরেক্ট চ্যানেল স্থাপনে উঠে পড়ে লাগে। সে খুব সহজেই নিজেকে সি-িকেটে অধিভুক্ত করে ফেলে। এতে বেজায় সুখ, বেশুমার প্রাপ্তি আর নেই কোন রিস্ক। এভাবেই ক্রমে ক্রমে ভেতরগত বিএমআরআই না হতে হতে আমলাতন্ত্র আজকের এই বেহাল দশায় উপনীত হয়েছে।

আমলাতন্ত্রের কিছু লোক তাদের উচ্চাভিলাষ হাসিলের জন্য সিস্টেমের মেরামত কাজ না করে উপরের অনুগ্রহ প্রাপ্তিকেই আরাধ্য করে নিয়েছে। আর এজন্য তারা রাজনৈতিক প্রভুদের পকেটেস্থ হয়েছে, বৃহত্তর সি-িকেটের তল্পীবাহক হয়েছে। সিনিয়ররা হয়েছে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে। আর জুনিয়ররা দেখে দেখে। প্রবাদে আছে, আগের হাল যেদিকে যায় পেছনের হালও সে দিকে যায়। এর ব্যাতিক্রম পথ যে বা যারা বেছে নিয়েছে বা চেষ্টা করেছে তাদের কপালেই নেমে এসেছে দূর্ভোগ। একবার ‘তাহাদের লোক’ হিসেবে তকমা লেগে গেলে তার বা তাদের জন্য আকাশ দেখার আর সুযোগ থাকেনা। তাদের কান্না উপরস্থ চেয়ারে আসীন রথী-মহারথীদের কর্ণকুহরে প্রবেশ করে না। আজ পর্যন্ত শুনিনি বা জানিনা যে, কোন মন্ত্রিপরিষদ সচিব বা এসএসবি’র প্রধান আমলাতন্ত্রের এরূপ অচলাবস্থা নিয়ে প্রজাতন্ত্রের কর্মবিভাগের শীর্ষ নির্বাহীর কাছে সাক্ষাৎ করেছেন বা সাক্ষাৎ লাভের চেষ্টা করেছেন। এটা তাদের জন্য কষ্টকর, দুরূহ কোন ব্যাপার ছিলো না। কিন্তু শীর্ষ নির্বাহী অসন্তুষ্ট হতে পারেন, রুষ্ট হয়ে পদ থেকে অপসারণ করতে পারেন এই মনস্তত্ত্ব থেকে তারা এ থেকে বিরত থাকাকেই শ্রেয়তর মনে করেছেন। আজ আমলাতন্ত্রের এরূপ করুণ ও এতীম অবস্থা দেখেও এসএসবি’র প্রাক্তন মাননীয়দেরকে এগিয়ে আসতে দেখি না, কথা বলতে শুনি না। এমনকি নিরাপদ দূরত্বে থেকে কাগজে দু’কলম লিখতে বা পরামর্শ দিতেও দেখি না। এর পেছনে একাধিক কারণ থাকতে পারে। এক, তারা নিজেরা বলার মত কোন অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত রেখে যেতে পারেন নি। দুই, আজকের প্রজন্মের জুনিয়রদের কাছে তাদের কোন ভাবমূর্তি নেই। তিন, তারা তাদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া কর্মকর্তাদের রোষানলে নতুন করে পড়তে পারেন। চার, কেউ কেউ তাদেরকে সুপিরিয়র রেসপন্সিবিলিটির দায়ে অভিযুক্ত করে আদালতের দ্বারস্থ করতে পারে। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো কেউ কিছু না বললেও, না করলেও এত এত বান্দার হক নষ্ট করার দায় তারা মহান আল্লাহর দরবারে খণ্ডন করবেন কি করে?

আমলাতন্ত্রে এখন হায়ারার্কি বলে কিছু নেই। মন্ত্রণালয়ের যিনি প্রধান তিনিও অসহায় রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতাবান তার জুনিয়রের কাছে। এ অবস্থা তারাই সৃষ্টি করেছেন, পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করেছেন, উৎসাহ দিয়েছেন, খাইয়ে পড়িয়ে পরিপুষ্ট করেছেন। গেলো পনের বছরে কৃত ব্যাক্তিগত ও সামষ্টিক অনাচার, অবিচারের জন্য ব্যাক্তি পর্যায়েও তাদের কাউকে অনুতপ্ত হতে দেখিনি, অনুশোচনা করতে শুনি নি, ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি এতটুকু সহানুভূতিশীল হতেও দেখি নি। এখনো তারা দলবদ্ধ, সি-িকেট চর্চায় রত। এখনো গেল রেজিমের আলোর প্রত্যাশী। তাদের অনেকেই আজ কুঠুরীতে, কেউ কেউ পলাতক, কেউ কেউ দেশান্তরি আর কেউ কেউ ইতিউতি খোঁজ খবর রাখছেন কোনো তালিকায় তার নাম উঠেছে কিনা? অথচ তাদের নেই কোন অনুতাপ, নেই অনুশোচনা, নেই দু:খ প্রকাশের দাহ। হয়ত সুদিনের প্রতীক্ষায় দেখে নেওয়ার জিঘাংসা জাগরূক রেখেছেন অন্তরে। জুনিয়ররা এগুলো দেখছে, শিখছে আর নিজেদেরকে সাসটেইনেবল করার কৌশল রপ্ত করছে।

কথা উঠেছে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো নিয়ে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি গেল রেজিমে পুলিশকে নির্বিচারে গুলীর আদেশ দিয়েছিলেন। এতে অনেকের মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে। অনুরূপ বাড়াবাড়ির অভিযোগে একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকেও আটক করা হয়েছে। এরকম বিচারে এর সংখ্যা অগণিত হবে বলে আমার বিশ্বাস। ম্যাজিস্ট্রেটদের তরফ থেকে তখনকার প্রেক্ষাপটে পুলিশের কাছে তাদের অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরা হয়েছে। চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে পুলিশ গুলীর আদেশে স্বাক্ষর করে নিয়েছে- একথাও আজ লজ্জার মাথা খেয়ে প্রকাশ্যে বলে বেড়াচ্ছে। অথচ পনের বছর তারা এগুলো গায়ে মাখেনি। এবিষয়ে সেই ম্যাজিস্ট্রেটের বক্তব্য জানা যায় নি। চাপ প্রয়োগে বাধ্য হলেও তিনি কি তার উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে তা জানিয়েছিলেন, লিখিত দিয়েছিলেন? হয়ত এ জায়গাতেই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এই পুলিশকে আপারহে- দিয়েছে কে? এতে কি প্রশাসনিক সর্বোচ্চ আসনধারীরা সংশ্লিষ্ট ছিলেন না? নিছক নিজেদের পদ-পদবী, পদোন্নতি আর সুযোগ সুবিধার লোভে নির্বিকার ও নির্লিপ্ত থেকেছেন। জুনিয়ররাও দেখেছে এরূপ অবিচারে কারো কোন ক্ষতি তো হয়ই না বরং উন্নতি যোগ হয়েছে। এভাবেই আমলাতন্ত্র রাজনৈতিক প্রভুদের লাঠিয়ালে পরিণত হতে হতে একসময় তুচ্ছতাচ্ছিল্যের বস্তুতে পরিণত হয়েছে। অনেক সহকর্মীকে দেখেছি এরূপ কর্মকে গ্লোরিফাই করতে। হাসি-তামাশা করতে। নিপীড়ন করে মজা নিতে। অনেক জুনিয়রকে দেখেছি এরূপ কর্মে উদ্যোগী ভূমিকা নিতে, যেন এরূপ অন্যায় অবিচার দেখার এত সময় কই? পনের বছর এরূপ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থায় থেকে কখনো যে হাওয়া পাল্টে যেতে পারে তা হয়ত তারা ঠাহর করতে পারে নি। আজ যখন চড়া দামেও কুলকিনারা পাওয়া যাচ্ছে না তখন আমলাতন্ত্রের সর্বত্র গুমরে গুমরে মরছে চাপা কান্না। আর আগেরটাই ভালো ছিলোর মাতম।

একটা অসুস্থ সময় আমরা পেরিয়ে এসেছি। পনের বছরের অবিচারের, জুলুমের, নৃশংসতার চিত্র নয়-দশ মাসেই আচানক পাল্টে যাবে এমন ভাবা মুর্খতার নামান্তর। অথচ অতি শিক্ষিত সরকারি, বেসরকারি দলবাজ আধিকারিকদের আজো বলতে শুনি ‘সেই লাউ সেই কদু’। তাহলে পরিবর্তন হলো কি? ইত্যাদি। আসলে তাদের এরূপ বক্তব্যের সার কথা হলো তারা অস্বস্তি নিয়ে দিনাতিপাত করছে। কোটি কোটি টাকা আছে কিন্তু বের করতে পারছে না। বিদেশে বিস্তর সম্পদ আছে কিন্তু কখন কি হয় বুঝা যাচ্ছে না। দুদক কোনদিন এক কাপ চা খেতে ডাকে, তার ঠিক নেই। পুলিশ কোনদিন গভীর রাতে লাইভ টেলিকাস্টে ধরতে আসে, বিশ্বাস নেই। বাসা থেকে ট্রাংকে, হাড়ি-পাতিলে, মাটিতে, তোষকের নিচে, খাটের নিচে, পেটিকট আর অন্তর্বাসের ভাঁজে রাখা কোটি কোটি টাকা বের করে জনসমক্ষে প্রচার করে, কে জানে? গেল পনের বছরের কুশীলবরা আজ এ চিন্তাতেই পেরেশান। তারা খুব সংঘবদ্ধ। পরস্পর পরম আত্মীয়। ইয়ার দোস্ত। আমলাতন্ত্রের বিভৎস রূপ আজকাল হরহামেশাই বের হচ্ছে। হয়ত আগামীতেও বের হবে। তাই, আমলাতন্ত্রের আশু ‘মেরামত’ কাজ স্থবির হয়ে আছে। সিস্টেম যারা ঠিক করবেন তাদের বেশিরভাগ আজ একই রোগে আক্রান্ত। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পত্রের ব্যবস্থা করবে কে? তাই ক্রমে ক্রমে সম্মিলিত আওয়াজ উচ্চকিত হচ্ছে, সংস্কারের কি প্রয়োজন?

আমলাতন্ত্রকে সহসাই সঠিক ট্র্যাকে আনতে গেলে নির্মোহ হয়ে কয়েকটি কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যারা আমলাতন্ত্রের সুপিরিয়র রেসপন্সিবিলিটিতে থেকে এরূপ কদর্য কর্ম করেছেন বা পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করেছেন তাদের সবাইকে কোন এক কর্তৃপক্ষের আওতায় এনে ব্যাখ্যা তলব করতে হবে। তাদের প্রদত্ত ব্যাখ্যা জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে। তাদের দায়ভাগ সুনির্দিষ্ট করে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের সামনে দাঁড় করানো এখন সময়ের দাবি। তাদের সবার দেশে-বিদেশের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি জব্দ করে ব্যাখ্যা তলব করতে হবে। তাদের প্রদত্ত ইনকাম ট্যাক্স ফাইল খতিয়ে দেখে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে এনবিআরকে কঠোর নির্দেশনা প্রদান করতে হবে। আমাদের এনবিআর আবার স্বপ্রণোদিত হয়ে কাজ করতে পারে না। সুপিরিয়র রেসপন্সিবিলিটিতে থাকা তৎকালীন কর্তৃপক্ষের প্রত্যেকের জন্য নতুন করে এজেন্সী রিপোর্ট তলব করা ও একই ব্যাক্তির পক্ষে ইত:পূর্বে একই এজেন্সী রির্পোটের তুলনামূলক প্রতিবেদন উপস্থাপন করতে হবে। গড়মিল পরিলক্ষিত হলে তখনকার এজেন্সীর রিপোর্টিং কর্মকর্তাদেরকে জবাবদিহিতার মধ্যে আনতে হবে। প্রশাসনে এখনো যারা অতিশয় দুষ্টু ও বিগত দুষ্কমের্র ‘তারকা’ হিসেবে চিহ্নিত তাদেরকে অপসারণ করে আইনের মুখোমুখি দাঁড় করাতে হবে। সিভিল সার্ভিস আইনে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ মুক্ত প্রশাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে যা যা ধারা অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিধান সংযোজন করা দরকার তার ব্যবস্থা করতে হবে। মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর প্রশাসনিক ক্ষমতা পুনর্বিন্যাস করতে হবে। বদলী, পদায়ন ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ডিও মাধ্যমে তদবির ও টেলিফোনিক সুপারিশ নথীতে বাম পাশে নাম, তারিখ ও সময় রেকর্ড করে রাখার আদেশ জারি করতে হবে। উভয় ক্ষেত্রই কর্মকর্তার বদলী, পদায়ন ও পদোন্নতিতে ‘অযোগ্যতা’ বলে প্রতিপন্ন হবে।

কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। অনেক কর্মকর্তা, বিশেষত আশীর্বাদ পুষ্টরা, প্রশিক্ষণ গ্রহণে অনাগ্রহ প্রকাশ কওে থাকে। এ ক্ষেত্রে কোন ব্যত্যয় করা যাবে না। প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান গুলোকে শক্তিশালী করতে হবে। প্রশিক্ষিত, দক্ষ ও যোগ্য কর্মকর্তাদেরকে সেখানে পদায়ন করতে হবে বাড়তি সুযোগ সুবিধা দিয়ে। পদায়নের ক্ষেত্রে পূর্ববর্তী কয়েক বছরে দেখা গেছে অত্যন্ত নবীন কর্মকর্তারাও মাঠ ছেড়ে জেলা, বিভাগ, অধিদপ্তর, মন্ত্রণালয়ে বা প্রকল্পে বদলী ম্যানেজ করে চলে আসে। এটা প্রশাসনকে দুর্বল করার জন্য যথেষ্ট। কোন ক্রমেই কোন কর্মকর্তাকে, বিশেষ কিছু ক্ষেত্র ব্যাতিরেকে, মাঠ থেকে তুলে আনা যাবে না। অন্তত চাকরির প্রথম দশ বছর। কেননা, এদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা মাঠের ঝক্কি নিতে চয় না। শুধুমাত্র উপজেলা বা জেলা আধিকারিক হওয়ার সময় কিছু সময়ের জন্য মাঠে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। এ প্রবণতা রোধ করতে হবে। প্রশাসনিক কর্মকর্তারা মাঠে কর্ম অভিজ্ঞতার অভাবে সিজনিং হতে পারছে না। জনগণ তাদের ভাষা বুঝে না, তারাও জনগণের ভাষা পড়ার আগ্রহ বোধ করে না। ফলত: আমলাতন্ত্র সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কোন ‘শ্রদ্ধা’ ও ‘সহানুভূতি’ আকর্ষণ করতে পারছে না।

জেলা পর্যায়ে সর্বসাধারণের কাছে সর্বকালে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ও ‘মাননীয়’ অফিসারটি ছিলেন জেলা প্রশাসক বা ডিসি। আজ তারা জনগণের কাছে মোটেই আস্থার পাত্র নন। বরং জনগণ তাদেরকে দেখেছে জেলা- উপজেলা পর্যায়ের দলীয় তৃতীয় শ্রেণীর লোকদের বন্ধুরূপে, রক্ষক, আসকারা দাতা ও সহযোগী হিসেবে। এই পদটির এত এত অবমূল্যায়ন তথা নেগেটিভ ইম্প্রেশনের জন্য যারা দায়ী তাদের রক্ষার দায়িত্ব কে নেবে? জনগণ নেবে না। প্রশাসন ক্যাডার নেবে? তিনটি প্রহসনের নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসারের মূল দায়িত্ব পালন করেছে কে? কিন্তু সেটা কি তারা একক কর্তৃত্বে করেছে? করে নি। বিভিন্ন এজেন্সির সহায়তায় করেছে। সেখানে কার কি ভূমিকা ছিল তারা কি জানত না? এ নিয়ে তারা কি কোন উচ্চবাচ্য করেছে? উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে বা তার উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে কি অবহিত করেছ? রিপোর্ট করেছে? তাদের একক কর্তৃত্বাধীনে থাকা পাক্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদনে (এফ সি আর) কি তা উল্লেখ করেছে? কোন মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে কি অবহিত করেছে? সর্বোপরি বিরূপ পরিস্থিতিতে নিজেকে উঠিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব কি দিয়েছে কেউ? অথচ ভালো জায়গায় পোস্টিং পেতে, সুবিধাজনক পদে পদায়ন পেতে তো ধর্ণা দিয়ে সুকতলা ক্ষয় করে ফেলি। এসব প্রশ্নের উত্তর জানা নেই। নিছক অনুমান করে বলা সঙ্গত হবে না। এসব ডিসিরা নি:সন্দেহে, কিছু ব্যাতিক্রম বাদে, তাদের ব্যাচের ইচ্ছুক প্রার্থীদের তুলনায় যোগ্যতায়, দক্ষতায়, দৃঢ়তায় বেশ উঁচু মানের ছিলেন। কিন্তু তাদের আজকের এই করুন পরিণতিতে তারা না পারছে কণ্ঠ উঁচু করতে, না অন্য কেউ পারছেন তাদের পক্ষে জোরালো ভূমিকা রাখতে। তারা যেমন নিজেরা ডুবেছে তেমনি প্রায় আড়াই শ’ বছরেরও অধিক কালের সবচেয়ে কার্যকর ও গ্রহণীয় ডিসি পদটিকে কলংকিত করেছেন। যোগ বিয়োগ গুণ ভাগ শেষে ফলাফল কি দাঁড়াবে তা ভবিষ্যতের খাতাতেই তোলা থাকলো। এরি মধ্যে কোন এক গোষ্ঠী প্রকাশ্যে সংবাদ সম্মেলন করে দাবী করেছে জেলা প্রশাসনকে জেলা পরিষদের সাথে একীভূত করে নির্বাচিত প্রতিনিধির অধীনে আনয়নের। এবার ঠ্যালা সামলাও। এরূপ দাবীকে পঁচিশ ক্যাডারও সাধুবাদ জানাবে।

প্রশাসন ক্যাডারের বেশির ভাগ কর্মকর্তাই মেধাবী, দক্ষ, যোগ্য ও নিবেদিতপ্রাণ। কিছু কর্মকর্তার অতি উৎসাহী ও অনৈতিক চর্চার কারণে পুরো প্রশাসন যন্ত্রই আজ এরূপ বিরূপ অবস্থায় পড়েছে। অন্তত পাবলিক পারসেপশন তাই বলে। আজ প্রশাসনের পাশে অন্য কোন ক্যাডার নেই, নেই সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক, পেশাজীবি এমনকি জনগণও। এ অবস্থা অপমানের, হতাশার, লজ্জার আর ক্ষোভের। জুনিয়র প্রতীমদের প্রতি পরামর্শ হলো নিজের বিবেক আগে, তারপর প্রয়োগ কৌশল নির্ধারণ করতে হবে। সিনিয়রের পরামর্শ যদি সুবিবেচনা প্রসূত হয় এবং যদি পূর্ব নজীর থাকে বা জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট হয় তাহলেই তা বাস্তবায়নে যথাযথ নিয়মে অগ্রসর হওয়া যেতে পারে। পরিস্থিতির কারণে বা চাপে কোন একশন নিলে বা কোন উপায়ান্তর না থাকলে কর্ম সম্পাদনের অব্যবহিত পরেই তা উপরস্থকে নি:সংকোচে প্রথমে মৌখিকভাবে অবহিত করতে হবে। কাজ না হলে লিখিত আকারে বা কর্তৃপক্ষের উপরস্থ কর্তৃপক্ষের নজরে আনতে হবে। এমনকি সহকর্মীদেরকেও অবহিত করতে হবে। অন্ধ অনুকরণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ক্ষতিগ্রস্ত করে। হয়ত এর কুফল তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যক্ষ করা যায় না। তবে একদিন তা ব্যাক ফায়ার করবেই। সর্বক্ষণ ‘ইয়েস স্যার’ চর্চা পরিহার করতে হবে। এরূপ চর্চার মাধ্যমেই উপরস্থ কর্তৃপক্ষের কাছে ম্যাসেজ চলে যায় সেই কর্মকর্তা কোন ধাঁচের? তাকে দিয়ে কি কি করানো যাবে। এ সব পদ্ধতি কর্মকর্তার সেফ গার্ড হিসেবে কাজ করতে পারে। নিজেকে বিষয়ের উপর, পরিস্থিতির উপর, সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তনের উপর গতিশীল রাখতে হবে। মেধা ও দক্ষতার কোন বিকল্প নেই। দেরিতে হলেও এর মূল্যায়ন হবেই। আর না হলে দু:খের কোন কারণ নেই। উপরওয়ালার হিসেবে হয়ত আলাদা, যা অবশ্যই মঙ্গলজনক।

যারা সুপিরিয়র রেসপন্সিবিলিটির পর্যায়ভুক্ত ছিলেন তাদের কৃত অপরাধ সীমাহীন। করজোড়ে ক্ষমা প্রার্থনা করুন মহান আল্লাহর কাছে ও ক্ষতিগ্রস্ত বান্দাদের কাছে। প্রশাসনের এই ক্রান্তিকালে অতীতের মত মুখে কুলুপ এঁটে বসে না থেকে সু-পরামর্শ দিন। প্রশাসনকে শুধুমাত্র আপনাদের উন্নতির সোপান হিসেবে না ভেবে এর পরিচর্যায় কিছু করুন। আর কোন অশুভ আলোর তালাশ না করে নিজস্ব আলোর বিচ্ছুরণ ঘটান। পাপ মুক্তি হবে কিনা জানিনা তবে কিছুটা হাল্কা হলেও হতে পারে।

পরিশেষে, যারা বর্তমান প্রশাসনকে পরিচালনা করছেন তাদেরও মনে রাখা উচিত একই অপরাধে একদিন এই জুনিয়ররাই হয়ত কাঠ গড়ায় তাদেরকে দাঁড় করিয়ে মজা লুটবে, একবারের জন্যও করুণা করে ফিরেও তাকাবে না। সবারই মনে রাখা উচিত: হাওয়া ঘুরে। কখনো ঘূর্ণিঝড়ের মত, কখনো উল্টো পথে। অতএব সাধু সাবধান। সবার সুবোধ জাগ্রত হোক।

লেখক: কলামিস্ট ও সাবেক প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তা

সারাবাংলা/এএসজি

বিজ্ঞাপন

দূষিত নগরীর তালিকায় আজ ঢাকা ২৩তম
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৯:৪৩

আরো

সম্পর্কিত খবর