Thursday 13 Nov 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

তিন পার্বত্য এলাকায় ইটের প্রাচীর দিলেই খেইল খতম

উজ্জল জিসান স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৮:৪০

গত কয়েকদিন ধরে পার্বত্য এলাকার খাগড়াছড়ি জেলায় অশান্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর আক্রমণ করছে। পাহাড় থেকে গুলি ছুড়ছে সন্ত্রাসীরা। পাল্টা গুলি চালাতে বাধ্য হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। প্রাণহানি ঘটেছে তিনজনের।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবঃ) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে পাহাড়ে অস্ত্র-অর্থ যোগান দেওয়া হচ্ছে বলে গোয়েন্দা তথ্যে উঠে এসেছে। ভারত ও ফ্যাসিস্টদের ইন্ধনে পাহাড়ে যেন কোনো ধরনের ঘটনা না ঘটাতে পারে এজন্য আমরা সর্বাত্মক ব্যবস্থা নিচ্ছি।

খাগড়াছড়িতে সন্ত্রসীদের হামলার বিষয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, পাহাড়ে অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি করছে এরা কারা? এদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।

বিজ্ঞাপন

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, পাহাড়ে অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টিকারী সন্ত্রাসীদের বিষয়ে দেশবাসীকে সজাগ থাকতে হবে।

আজ খাগড়াছড়ি, আগামীতে কি বান্দরবান ও রাঙ্গামাটি এভাবে আক্রান্ত হবে না? তাহলে এভাবে আর কত দিন আক্রমণ হবে পাহাড়ে? পাহাড় নিয়ে ষড়যন্ত্র এর আগেও হয়েছে এখনো হচ্ছে আগামীতেও হবে।

পাশ্ববর্তী দেশ ভারত আমাদের পাহাড়ি জনপদকে শান্ত থাকতে দেবে না। নানান কারনে ভারত আমাদের এই অংশকে নিজের করে নিতে চায়। সাথে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারকেও। তাদের সেভেন সিস্টার কোনোভাবে বাঁচবে না। আর বৃহত্তর চট্টগ্রাম বিভাগ নিতে পারলেই তাদের সেভেন সিস্টার্স বেঁচে যাবে বলে তারা মনে করেন। কিন্তু বাংলাদেশের এক ইঞ্চি মাটিও হাত ছাড়া হতে দেবে না এদেশের জনগণ।

আপনাদের চীনের কথা নিশ্চয়ই থাকার কথা। চীন ও চীনের জনগণকে মঙ্গলিয়ার রাজা চেঙ্গিস খান বারবার আক্রমণ করেছিলেন। চেঙ্গিস খানের পরবর্তী বংশধরেরাও চীনকে আক্রমণ করতো। তাই চেঙ্গিস খানের অত্যাচারের হাত থেকে বাঁচতে চীন মহাপ্রাচীর নির্মাণ করেছিল। এরপর থেকেই মঙ্গলিয়ার অত্যাচারের খেইল খতম হয়ে যায়। আর চীন এগিয়ে যেতে থাকে। চীন এখন পৃথিবীর নাম্বার ওয়ান অর্থনীতির দেশ।

উইকিপিডিয়ার তথ্য মতে, পাথর ও মাটি দিয়ে তৈরি দীর্ঘ প্রাচীরটি খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতক থেকে খ্রিস্টীয় ১৬শ শতক পর্যন্ত চীনের উত্তর সীমান্ত রক্ষা করার জন্য তৈরি ও রক্ষাণাবেক্ষণ করা হয়। এরকম অনেকগুলি প্রাচীর তৈরি করা হয়েছিল, তবে ২২০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে ২০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের মধ্যবর্তী সময়ে চীনের প্রথম সম্রাট শি – হোয়াংতি নির্মিত প্রাচীরটিই সবচেয়ে বিখ্যাত। এটি বর্তমান প্রাচীরের অনেক উত্তরে অবস্থিত এবং এর খুব সামান্যই অবশিষ্ট আছে। বর্তমান প্রাচীরটি মিং রাজবংশের শাসনামলে নির্মিত হয়।

চীনের মহাপ্রাচীর মানুষের হাতে তৈরি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় স্থাপত্য। এই প্রাচীরের উচ্চতা প্রায় ৫ থেকে ৮ মিটার এবং দৈর্ঘ্য ৮৮৫১.৮ কিলোমিটার। এটি শুরু হয়েছে সাংহাই পাস এবং শেষ হয়েছে লোপনুর নামক স্থানে। এর মূল অংশের নির্মাণ শুরু হয়েছিল প্রায় খ্রিস্টপূর্ব ২০৮ সালের দিকে। নির্মাণ কাজ শুরু করেছিলেন চৈনিক বা চাইনিজরা কিন সাম্রাজ্যের সময়। চীনের প্রথম সম্রাট কিন সি হুয়াং এটি প্রথম ব্যবহার করেছিলেন এবং শত্রুর হাত থেকে নিজের সম্রাজ্যকে রক্ষার জন্য দীর্ঘ করে নির্মাণ করেছিলেন। এটি চীনের প্রকৃতিক বাঁধাগুলো ছাড়া অন্যান্য অঞ্চল পাহারা দেওয়ার কাজে এবং উত্তর চীনের উপজাতি সুইং নু বিরুদ্ধে এটি প্রথম স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল।

গ্রেট ওয়ালের সীমানার মধ্যে সেনা ইউনিটগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা যেমন: দলকে শক্তিশালী করা এবং শত্রুদের আন্দোলন সম্পর্কে সাবধান থাকা ছিল উল্লেখযোগ্য। দেখার সুবিধার জন্য পাহাড়সহ অন্যান্য উচুস্থানে সংকেত টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছিল।

চীনের মহাপ্রাচীরের আদলে নাহলেও অন্তত পার্বত্য সীমান্ত এলাকায় আমরা একটি প্রাচীর দিতে পারবো তা নয়। অবশ্যই আমরা একটি বেড়া নির্মাণ করতে পারবো। যত টাকাই লাগুক, যত শ্রমিকই লাগুক আমরা সেটি করতে পারবো। সেটি বাস্তবায়ন করতে সবার আগে পরিকল্পনা দরকার। বর্তমান সরকার সেই পরিকল্পনা নিতেই পারে। পরিকল্পনা নিলেই সেটি বাস্তবায়ন সম্ভব বলে মনে করছি।

পার্বত্য এলাকায় একটি বেড়া নির্মাণ করা হলে পাহাড়িদের হাতে আর অস্ত্র ও মাদক আসবে না। অন্যদেশের সন্ত্রাসীরা পাহাড়ে প্রবেশ করতে পারবে না। আমাদের দেশের সন্ত্রাসীরাও কোনো কিছু ঘটিয়ে অন্যদেশে সহজেই যেতে পারবে না। অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে পাহাড়ি জনপদ হবে শান্ত ও শান্তিময়।

পাহাড়ি জনপদ রক্ষা ও শান্তিময় করতে হলে আমাদের অবশ্যই একটি শক্তিশালী সীমানা প্রাচীর করার দরকার। আর এটি যত দ্রুত করা সম্ভব হবে তত তাড়াতাড়ি পাহাড়ি এলাকা শান্ত হবে।

অন্যদিকে পাহাড়ে আরও বেশি করে সেনা ক্যাম্প স্থাপন করতে হবে। বিজিবির ক্যাম্প বৃদ্ধি করতে হবে। পাহাড়িদের দুঃখ দুর্দশা লাঘবে আর কাজ করতে হবে। তাদের বোঝাতে হবে দেশটা তাদেরও। তারাও অন্য সবার মতো নাগরিক। কাজেই অন্যদের দেশের সন্ত্রাসীদের ফাঁদে পা দিয়ে নিজের ক্ষতি যেন ডেকে আনেন কেউ।

লেখক: স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, সারাবাংলা ডটনেট

বিজ্ঞাপন

ভোগান্তি দিয়ে শুরু এবারের কপ৩০
১৩ নভেম্বর ২০২৫ ২৩:৪৮

তবুও অখুশি মাহমুদুল হাসান
১৩ নভেম্বর ২০২৫ ২৩:৪৫

৪ বিভাগে নতুন বিভাগীয় কমিশনার
১৩ নভেম্বর ২০২৫ ২৩:৩৮

আরো

উজ্জল জিসান - আরো পড়ুন
সম্পর্কিত খবর