Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

তোমরা যারা ‘শেখ হাসিনার ছাত্রলীগ’ করতে চাও


২৬ আগস্ট ২০১৮ ১৮:৫৬

।। গোলাম রাব্বানী ।।

বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। আদর্শিক পিতা বঙ্গবন্ধুর জীবন ও যৌবনের শ্রমে, ঘামে প্রতিষ্ঠিত আমাদের প্রাণের সংগঠন। ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় বহতা আবেগ-ভালোবাসা আর নির্ভরতার পরম ঠিকানা। ১৯৪৮ সালে তৎকালীন ছাত্রনেতা শেখ মুজিবের হাতে গড়া সংগঠনটি অন্তরের গহীনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে, পিতা মুজিবের আদর্শ লালন করে আর দেশরত্ন শেখ হাসিনার ভ্যানগার্ড হয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পরম বন্ধু, সহযোদ্ধা হয়ে আছে ৭০ বছর ধরে। দেশবিরোধী সকল অপশক্তির মূর্তিমান আতঙ্ক হয়ে শিক্ষা ও শান্তির মশালের নিয়ত প্রজ্জলনে প্রগতির পথে এগিয়ে যাওয়া এমন ছাত্রসংগঠন উপমহাদেশের ইতিহাসে বিরল।

বিজ্ঞাপন

কালের ধারাবাহিকতায় জাতির ভবিষ্যত শিক্ষার্থীদের পথপ্রদর্শক হয়ে ছাত্রলীগ এগিয়ে গেছে এতগুলো কাল। সময় গতি দেয়- আবার সময়ই বয়ে আনে জড়তা। মাত্র কিছুদিন আগে ঐতিহ্যবাহী এ ছাত্র সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্তির পর ধারাবাহিকভাবে কথা বলেছি তৃণমূলসহ কেন্দ্রের ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে। জানিয়েছি, ছাত্রলীগ নিয়ে তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত যে হতাশা, যে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে সেই হতাশা দূর করে আশার আলো ফোটাতে এবং সেই আলোর বিচ্ছুরণ ছড়িয়ে দিতে এবারের ছাত্রলীগের কমিটি করেছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমার ওপর যে দায়িত্ব বঙ্গবন্ধুকন্যা অর্পন করেছেন আমি কথা দিচ্ছি, জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও সে আস্থা-বিশ্বাসের মর্যাদা রাখবো। ছাত্রলীগের প্রতিটি পর্যায়ে এমন জনবান্ধব ও শিক্ষার্থীবান্ধব কর্মসূচী থাকবে, নেতৃত্ব মূল্যায়ন পদ্ধতি এমন হবে, যেন গণমানুষ উপলব্দি করতে পারে- ছাত্রলীগের তরুণ নেতৃত্ব তাদেরই পছন্দে নির্বাচিত। মুখ থেকে যেন অজান্তেই বের হয়ে আসে, ‘এই তো বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার ভবিষ্যত কারিগর, শেখ হাসিনার ছাত্রলীগ।’

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীসহ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে আমার বিনীত জিজ্ঞাসা- ইতিহাস গড়ার প্রত্যয়ে, ইতিবাচকতার নতুন বার্তা নিয়ে আসা শেখ হাসিনার ছাত্রলীগের একজন গর্বিত অংশীদার হতে চান? তবে নিচের এই কথাগুলো জেনে রাখুন, হৃদয়ের মানসপটে ধারণ করুন-

  • মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাস আর শেখ হাসিনার জনবান্ধব উন্নয়ন-রাজনীতির দর্শনে প্রবল আস্থা রেখে সেবাব্রতে শেখ হাসিনার ভ্যানগার্ড হয়ে নিরলস শ্রম দিতে হবে। তরুণরাই জাতির ভবিষ্যত। তারুণ্যের শ্রমে, ঘামে নির্মিত হবে নতুন বাংলাদেশ।
  • ছাত্রলীগের নেতৃত্ব মূল্যায়নের মূল নির্ণায়ক হবে সংগঠন ও আদর্শের প্রতি আপনার আত্মনিবেদন আপনার কমিটমেন্ট। হাই-হ্যালো, ভাইনীতি, লবিং আর গিভ এন্ড টেক নির্ভর রাজনীতি স্রেফ ভুলে যেতে হবে।
  • একজন ছাত্রলীগ কর্মীকে সবার আগে হতে হবে মানবিক গুণাবলীসম্পন্ন। মার্জিত আচরণ, সুন্দর ব্যবহার আর মানবিক কাজে সবার আগে সবসময় ছাত্রলীগকে দেখতে চান আমাদের মমতাময়ী নেত্রী, বিশ্বে মানবতার দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী নেতা শেখ হাসিনা। স্বেচ্ছায় রক্তদান, পীড়িতের সেবা, আর্তমানবতার পাশে দাঁড়ানোসহ জাতির যে কোনো দুর্যোগে, যে কোনো জনহিতকর কাজে সবার আগে থাকবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আর তার কর্মীবাহিনী।
  • সময়ের ক্রমপরিবর্তনে ছাত্রলীগের কর্মীদের হতে হবে মেধাবী ও দক্ষ। একদিকে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির সকল ষড়যন্ত্র প্রতিরোধে যেমন প্রতিবাদের মশাল হাতে রাজপথে থাকতে হবে তেমনি আবার সময়ের প্রয়োজনে সৃজনশীলতার কলমে বা কিবোর্ডে মেধার সাক্ষর রাখতে হবে ছাত্রলীগকে।
  • সিটিজেন জার্নালিজম আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের এই স্বর্ণযুগে সময়ের সাথে এগিয়ে যেতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে যথাযথ জ্ঞান থাকতে হবে। অনলাইনে অপশক্তির নেতিবাচক কর্মকাণ্ড ও গুজব-সন্ত্রাসের দাঁতভাঙা জবাব দিতে অনলাইনে সক্রিয় থাকার পূর্ণ সক্ষমতা অর্জন করতে হবে শেখ হাসিনার ছাত্রলীগকে।
  • সংগঠনের প্রতি আবেগ আর অর্পিত দায়িত্ব-কর্তব্যের প্রতি থাকতে হবে পূর্ণ নিষ্ঠাবান।
  • ব্যক্তি নয়, দল বড়। আর দলের চেয়ে দেশ। এই শ্লোগান হবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের আপ্তবাক্য। এই স্লোগানে বলীয়ান হয়ে দেশ ও দশের সেবায় নিজেকে সমর্পণ করার মানসিকতা থাকতে হবে ছাত্রলীগের প্রতিটি কর্মীর।
  • কারো নিজের ও পারিবারিক রাজনৈতিক ঐতিহ্যে আদর্শিক ত্রুটি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের যে কোন পর্যায়ে মূল্যায়নে বড় অযোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হবে।
  • পদ, ক্ষমতা যদি কারো ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের হাতিয়ার হয়, তাহলে ছাত্রলীগের শিক্ষা-শান্তি-প্রগতির পবিত্র পতাকা তার হাতে নিতান্তই বেমানান। হাসিমুখে ভালোবাসা দিয়ে ইতিবাচক কাজের মাধ্যমে মানুষের মন জয় করে তাদের অন্তরে শ্রদ্ধা-ভালোবাসার স্থান করে নিতে হবে ছাত্রলীগের প্রতিটি কর্মীকে।
  • যেদিন থেকে ছাত্রলীগের নেতা বা কর্মী হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেবেন, সেদিন থেকে আপনি এই সবুজ বদ্বীপের বৃহত্তম একান্নবর্তী পরিবারের অবিচ্ছেদ্য অংশ। আপনার কথা, চলন-বলন, আচার-ব্যবহার, সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে সংগঠনের ইতিবাচক ভাবমূর্তি গড়ে তুলে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে প্রাণের প্রতীক নৌকার পক্ষে জনমত গড়ে তুলতে ছাত্রলীগকে মূখ্য ভূমিকা রাখতে হবে।
  • তথাকথিত পরাধীনতা ও গতানুগতিক বাধ্যবাধকতার শেকল ভেঙে মেধাবীদের মনন আর সৃষ্টিশীলতা বিকাশের সেরা প্লাটফর্ম ছাত্রলীগ। ঐতিহ্যবাহী এই প্লাটফর্ম থেকেই প্রতিটি কর্মীর মেধা আর শ্রমে উদ্ভাসিত হবে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা। শিক্ষার্থীদের মেধাবিকাশে যে কোনো প্রতিবন্ধকতা দূর করতে বরাবরের মতোই সচেষ্ট থাকবে ছাত্রলীগ।

বাঙালি জাতির পিতা, কালের অবিসংবাদিত মহানায়ক বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা গড়ার যে স্বপ্ন নিয়ে ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তার সুযোগ্য উত্তরসূরি দেশরত্ন শেখ হাসিনা সেই স্বপ্নকে পূর্ণতা দিতে ছাত্রলীগের ওপরই আস্থা রেখেছেন। আমার-আপনার, আমাদের ছাত্রলীগের লাখো আদর্শিক কর্মী নিজ নিজ অবস্থান থেকে যদি দেশরত্ন শেখ হাসিনার চলার পথকে মসৃণ রাখতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই- তবে আমাদের বাংলাদেশ এগিয়ে যাবেই। উন্নয়নের মার্কা নৌকার পক্ষে নিরলস কাজ করতে আপনি যদি আগ্রহী হন, তাহলে ‘শেখ হাসিনার ছাত্রলীগ’ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে আপনাকে স্বাগত জানাতে। আপনার যোগ্যতা, আপনার শ্রম আর ত্যাগের যথাযথ মূল্যায়ন করতে অধীর চিত্তে অপেক্ষা করছে ৭০ বছরের ঐতিহ্যবাহী এই ছাত্রসংগঠনটি।

লেখক: সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ

সারাবাংলা/এসবি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর