Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বারেক সাহেবের ‘মার্কা’ বদল


৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১১:২৭

অধ্যাপক ডাঃ মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল) ।।

আনমনে নিজের নাকে হাত বুলান বারেক সাহেব। এখনও নাকটা তাহলে বহাল তবিয়তেই আছে। তবে ইদানিং যেভাবে নাক-কান কাটা যাচ্ছে তাতে ভয় হয়, নাকটা না একদিন সত্যি সত্যিই নাই হয়ে যায়। দলের বড়নেতা, পচা-রদ্দি নেতাদের ভিড়ে দলের যে দু’একজন নেতাকে এখনও মানুষ খায় তাদের অন্যতম। সহসা নিউইয়র্কে উড়াল দিলেন। শোনা গেল জাতিসংঘের মহাসচিবের আমন্ত্রনেই নাকি এই সাত সাগর পাড়ি দেয়া। আরেক বড় নেতাতো প্রেসক্লাবে মিষ্টি মিষ্টি করে বলেও বসলেন সেই কথা। আশায় বুক বেধেছিলেন বারেক সাহেব। খটকা যে লাগেনি তা না । টিভিতে দেখেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব এ সময়টায় থাকবেন ঘানায়, তার প্রয়াত পূর্বসুরির শেষকৃত্যে যোগ দিতে। কিন্তু তারপরও বিভ্রান্ত হয়েছিলেন দলীয় নেতৃত্বের প্রকাশ্য ঘোষনায়। শেষমেষ দেখা মেলেনি মহাসচিবের। দেখা মিলেছে এক সহকারী মহাসচিবের মাত্র। তাও চলতো, মানুষকে বোঝানো যেত কিছু একটা। কিন্তু মহাসচিবতো দেখা দেনইনি, বরং হাটে হাঁড়ি ভেঙ্গেছে তার দপ্তর। দেশের টিভি চ্যানেলকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে জাতিসংঘ মহাসচিব নয় বরং দলীয় মহাসচিবের আগ্রহেই এই অগুরুত্বপূর্ণ মোলাকাত। শোনা যাচ্ছে লবিষ্ট-টবিষ্ট নিয়োগ দিয়ে, অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে নাকি এই বৈঠকটির আয়োজন করা হয়েছিল। ‘কেমন লবিষ্ট এরা? নাকি লবিষ্টের টাকাও মেরে দিয়েছে কেউ’? ‘কফি আনানের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানটাতো আগেই থেকেই ঠিক করা ছিল, হঠাৎ করে আয়োজন করা হয়নি’। ভাবেন বারেক সাহেব। মহাসচিব না হোক, ডেপুটি সেক্রেটারী জেনারেল কিংবা আন্ডার সেক্রেটারী জেনারেলওকি ম্যানেজ করা গেল না? গেল না বেটাদের মুখ বন্ধ রাখা? ‘আমরা দাওয়াত দেই নাই, তারাই চেয়েচিন্তে দাওয়াত নিয়েছে, এত কথা বলার দরকারটা কি ছিল?’

বিজ্ঞাপন

লাভের লাভতো কিছুই হয়নি, যাও একটু সুযোগ-টুযোগ ছিল সবটাই গেল। এক ডিগ্রী সরেশ জাতিসংঘ আরও জানিয়ে দিয়েছে সামনের জাতিয় সংসদ নির্বাচন মনিটরিংয়ের কোন ধান্দাও নাকি তাদের নাই। তাদের নাকি এজন্য কোন মেন্ডেটই নাই। অথচ এরাই গতবার তারানকোকে এদেশে পাঠিয়েছিল! কোথাকার জল যে কোথায় গড়াচ্ছে ভাবতে একটু চিন্তায়ই পড়েন বারেক সাহেব। নেতা মহাশয় যে ক্ষতির পাল্টাটা ভারি করেই দেশে ফিরেছেন বুঝতে আর বাকি থাকে না তার। তবে তার বোঝায় আর কি-ই বা এসে যায়?। নেতারা বুঝলে হয়!

‘আচ্ছা, খোদা কি এদের মাথায় কোনদিনও একটু ঘিলু-টিলু দিবেন না’? এরাতো বারবারই একই কাজ করে আর একইভাবে ধরা খায়। তবুও শিক্ষা হয় না তাদের। বিজেপি’র সভাপতি অমিত শাহের নাম বেচে একবার বিপদে পড়লো। শাহ সাহেব ‘নো, নো, নো… …’ বলে এক তুড়িতে তাদের বাড়া ভাতে ছাই ঢেলে দিয়েছিলেন সেবার। আর মার্কিন সিনেটারদের সই জাল? কি কেলেংকারি, ভাবা যায়? তারাওতো মুখের উপর না করে দিল। সোজা জানিয়ে দিল, ‘সব মিথ্যা, জালিয়াতি’। তবু একটু যদি শিখতো এরা! শিখলো তো না-ই, বরং নিত্য-নতুন তাফালিং করে বারেক সাহেবদের নাক কাটার চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করতে উঠে পড়ে লেগেছে যেন সবাই। মানুষের প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে বারেক সাহেবদের নাভিশ্বাস যে ওষ্ঠাগত প্রায়, তা যদি নেতাগুলো একটু বুঝতেন!

ভাবেন বারেক সাহেব- ‘এদেরকি কোনদিনও বুদ্ধিসুদ্ধি হবে না’। একটা সময় ছিল যখন বাঙ্গালিকে ইচ্ছেমত নাকে দড়ি দিয়ে  ঘোরানো যেত, গেলানো যেত ইচ্ছেমত যা খুশি। রাষ্ট্রপতির ছেলে দু’তিনজন লোক নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভোল্ট ভাঙ্গতে গেছেন- মানুষ একদিন খেয়েছে তাও। ভাবেনি তিনজনে ভোল্ট লুটা যায় কিনা, কিংবা লুটের মাল একটা জিপে ভরে লোপাট করা সম্ভব কিনা। ঘোষণার পাঠককে ঘোষক বলে চালিয়েও দেয়া গেছে একটা সময়। আর ‘দি সুটকেস এন্ড টিশার্ট’ রেসিপি তো এদেশ গিলেছে গোগ্রাসে। আগ-পিছু ভাবেনি কিছুই!

বিজ্ঞাপন

কিন্তু দিনতো বদলায়। এই দিন যে সেই দিন না সেটা ভুলে গেলেতো চলবেনা। ভুলে গেলেতো চলবেনা যে এখন মানুষের এন্ড্রয়েড মোবাইলের টাচ স্ক্রীনে পৃথিবী। জজ মিয়ার কিচ্ছা তাই ধোপে টেকেনি। ধোপে টেকেনি দলীয় কার্যালয়ে চোখ তুলে নেয়া আর নারী নির্যাতনের রূপকথাও। নেতরা এসব যত তাড়াতাড়ি বোঝেন ততই মঙ্গল। নচেৎ ‘পাদুকা’ মার্কা ছাড়া অন্যকোন মার্কা নিয়ে নির্বাচনী বৈতরনী পাড় হওয়ার আশা যে ক্রমেই দুরাশা হয়ে যাবে!

অধ্যাপক ডাঃ মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল)

বিজ্ঞাপন

বাঘায় কৃষককে গলা কেটে হত্যা
২৩ নভেম্বর ২০২৪ ১৬:৪৩

আরো

সম্পর্কিত খবর