Friday 07 Nov 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কোটা পদ্ধতির সংস্কার চেয়েছি, বিলোপ নয়


৪ অক্টোবর ২০১৮ ১০:০৬ | আপডেট: ৪ অক্টোবর ২০১৮ ১১:৫৮
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

।। রফিকউল্লাহ রোমেল।।

ঢাকা : আমরা শুরু থেকেই বলে আসছি এবং চার বছর ধরে একটানা বলছি যে, কোটা পদ্ধতি সংস্কার হওয়াই উচিৎ এবং অনগ্রসর আর নারীদের জন্য কোটা উঠিয়ে দেবার মত কোনই পরিস্থিতি দেশে তৈরি হয় নি।

মুক্তিযোদ্ধা কোটার ক্ষেত্রে নাতী নাতনী বা থার্ড জেনারেশনের ক্ষেত্রেও আমার ব্যক্তিগত আপত্তি আছে। তবে সন্তানদের জন্য কোটা সিগনিফিকান্টলি কমালেও তা উঠিয়ে দেবার কোন প্রশ্নই আসে না। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান একটা টাইম বাউন্ড কোটা। এই কোটা চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত ও নয়। কাজেই এটা জিরো পার্সেন্ট করার প্রশ্নই আসে না।

খুব হৈ চৈ করে বলা হচ্ছিল কারা কিভাবে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট নিয়েছে, কিন্তু কত সার্টিফিকেটধারী মুক্তিযোদ্ধার সন্তানেরা স্বেচ্ছায় কোটা আছে এমন পরীক্ষায় অংশই নেয়নি – সেটা নিয়ে কোন গল্প নেই। উচ্চবাচ্য তো পরের ব্যাপার। দ্বিতীয় অংশের সংখ্যা প্রথম অংশের চেয়ে কম নয় – আই বেট অ্যান্ড বেট অন ইয়োর ফেস লুজার্স!

বিজ্ঞাপন

মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটাটি আরেকটি কারণেও থাকতে হবে। কারণ এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কটাক্ষের স্বীকার। বাংলাদেশের বিসিএস পরীক্ষা মাত্র ৪.২% চাকরি প্রার্থীর ডিমান্ড লাইন সরবরাহ করে। বাদ বাকী পুরো জায়গায় কোন মেধাতত্ত্বের প্রয়োগে চাকরি দেয়া হয় না। বিশাল প্রাইভেট সেক্টর আর কর্পোরেটে অ্যাসেসমেন্ট সেন্টার আছে দশেরও কম প্রতিষ্ঠানে। পুরোটাতেই রয়েছে একটা জাজমেন্টাল প্রক্রিয়া। সেখানে মেরিট যাচাইয়ের কোন প্রক্রিয়াই নাই। সেইগুলো নিয়ে যুব সমাজের ‘সচেতন’ অংশটি একদম চুপ, কেন?!

কোটায় সরকারি চাকরি কোনদিনও করবে না এমন শত শত শিক্ষার্থী রাস্তায় নেমেছে এবং হাজার হাজার শিক্ষার্থী ফেসবুকে সরব ছিল এই যুক্তিতে যে কোটা থাকাটা ‘মেরিটোক্রেসি’র প্রতি অন্তরায়।

অথচ প্রাইভেট সেক্টর আর কর্পোরেট জগতের উদাহরণ নিশ্চিত প্রমাণ করে যে বাংলাদেশ চরম ‘মিডিওক্রেসির’ উপর দাঁড়িয়ে।

শুধু বিসিএস পরীক্ষাতেই ‘মিডিওক্রেসি’ বনাম ‘মেরিটোক্রেসি’ বিতর্ক টেনে আনা হয়েছে একেবারে মুক্তিযোদ্ধা কোটাকে কেন্দ্র করেই। আর উদ্দেশ্যটা রাজনৈতিক। এই ফায়দা যারা লুটতে চায় তাদের কলকাঠিতেই ৪% এরও কম চাকরির বাজারকে কেন্দ্র করে অমন অসহিষ্ণু একটা আন্দোলন তৈরি হয়েছে।

আজাইরা যুক্তি দিয়া বঙ্গবন্ধুর নাম কোটা আন্দোলনকারীরা ব্যবহার করেছে। প্রথম বিসিএস পরীক্ষায় বঙ্গবন্ধু মুক্তিযোদ্ধাদের যে সুযোগ দিয়েছিলেন তার সাথে মেধার কোন সম্পর্ক নাই।

আমি কোন অর্থে মেধাবী নই। ৯৩ সালে ঘটে যাওয়া একটা দুর্ঘটনা ছাড়া কোয়ান্টাফাইএবল কোন স্কেলে আমার মেধার কোন প্রমান মেলেনি। সে কারণে মেধাবীদের অন্তর্জ্বালা আমি বুঝতে পারছি না হয়ত। কিন্তু আমি প্রচুর মেধাবীদের নিয়ে আর সাথে কাজ করেছি। কোটা আন্দোলনকারীদের সাথে তাদের কোন চিন্তা প্রক্রিয়া বা রুচির মিল পাইনি। কোন ভাবেই মেধাবী নামধারী কেউ লিখিত, ভাইভা সব উত্তীর্ণ হয়ে শেষ স্তরে পৌঁছানো সহযোদ্ধাকে  ‘মেধা নেই কোটারু’ হিসেবে বিদ্রুপ করতে পারে না। যদি না অন্য কোন গূঢ় অর্থ না থেকে থাকে…..

একটা পলিটিক্যালি ইম্পোজড ক্যাম্পেইনকে সরকার হয়ত সরকারের মত দেখেছে। কিন্ত দল আওয়ামী লীগ পুরা ফেল করেছে পলিটিক্যালি। কোটা নিয়ে জনমতের যে অংশের উপরের কথাগুলো মনের কথা, তাদের আওয়ামী লীগ একেবারেই ধারণ করতে পারেনি। এই জনসংখ্যা মোট জনসংখ্যার ৩৫% এর চেয়ে কোন অংশে কম নয়। এদেরকে লিড করতে পারেনি দল আওয়ামী লীগ। অথচ আওয়ামী লীগের ফান্ডামেন্টাল পলিটিক্যাল আইডেন্টিটির জন্যই, নূন্যতম মুক্তিযোদ্ধা কোটার জন্য, নারীদের জন্য এবং আওয়ামী লীগ যাদের জন্য আজ আওয়ামী লীগ সেই পিছিয়ে পড়া, ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জাতিগোষ্ঠীর জন্য কোটা বজায় রাখার কাউন্টার মুভমেন্টে আওয়ামী লীগের অনেক আগেই পথে নামা লাগত।

অনেক অনেক অনেক দিন ধরে বিরোধী দলে থাকা আওয়ামী লীগটাকে মিস করি। সরকারে থেকেই এবার বিরোধী দলের পারফরমেন্স আসুক।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সভানেত্রী শেখ হাসিনার টুপিটা এখন আর পড়েন না। হয়ত এনজয়ও করেন না। তাঁর ব্যক্তিগত ইমেজের সকল ব্রান্ডিং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে। কিন্তু তিনি ‘নেত্রী’ হয়েছেন, ‘আপা’ হয়েছেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হিসেবে।

তাঁর দলের ই এখন সেটা কড়ায় গণ্ডায় আবার ফেরত আনা উচিৎ, হেফাজত তোষণ বাদ দিয়ে।

নূন্যতম কোটা থাকতেই হবে। কারণ আমরা কোটা পদ্ধতির সংস্কার চেয়েছি, বিলোপ নয়।

সারাবাংলা/এসএমএন

বিজ্ঞাপন

বিএনপির ৩ নেতার পদ স্থগিত
৭ নভেম্বর ২০২৫ ২৩:১২

মিরপুরে এনসিপির আনন্দ মিছিল
৭ নভেম্বর ২০২৫ ২৩:০৪

আরো