Wednesday 04 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আলসে মেয়ের ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প


১৭ নভেম্বর ২০১৮ ১৭:৩৪ | আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৮ ১৯:১৪
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আমি কোন চলচ্চিত্র বিশ্লেষক নই। একজন সাধারন দর্শক এবং এই দেশের একজন সাধারন নাগরিক হিসেবে ‘হাসিনা-অ্যা ডটার’স টেল’ প্রামাণ্যচিত্রটি দেখেছি। মূলত আমি আমার প্রধানমন্ত্রীকে দেখার চেষ্টা করেছি তার জীবনভিত্তিক এই প্রামাণ্যচিত্রে। কেমন আমার প্রধানমন্ত্রী? তার ত্যাগ, সংগ্রাম, দৃঢ়তা ও নানা গুণাবলী খোঁজার চেষ্টা করেছি এই প্রামাণ্যচিত্রে।

আমার মত যারা এখন তরুণ, তারা সবাই বিকৃত ইতিহাস পড়ে বড় হয়েছে। তাই নানা বিষয়ে আমাদের নানা ভ্রান্ত ধারণা রয়ে গেছে। জাতির পিতা ও প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে খুব অল্প লেখাপড়ার সুযোগ হয়েছে আমার। সেটার মাধ্যমেই তাদের বিষয়ে আমার কিছু ধারণাও তৈরি হয়েছে। অল্প জানা-শোনা থাকায় প্রধানমন্ত্রীর নানা বিষয়ে আমার নানা রকম দ্বিধা-দন্দ্ব ছিল। কিন্তু সব ধারণা পাল্টে নতুন ধারণার জন্ম দিতে সক্ষম হয়েছে এই প্রামাণ্যচিত্রটি। তাই বলবো এটি একটি সফল প্রামাণ্যচিত্র। একই সাথে এই চলচ্চিত্রটি তরুণ প্রজন্মকে সঠিক ইতিহাস দেখাতেও সক্ষম হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এই প্রামাণ্যচিত্রে যা দেখলাম সেটার অনেক কিছুই লেখাপড়ার মাধ্যমে আগ থেকেই জানা ছিল। কিন্তু বিষয়গুলো আমার মনোজগতে সেই ভাবে পূর্বে কখনও আলোড়ন তুলতে পারেনি। এই চলচ্চিত্রের সবথেকে বড় সফলতা হলো- এটি আমার মনোজগতে প্রবল আলোড়ন সৃষ্টি করছে। এই চলচ্চিত্রটি আমার মগজের ভিতরে প্রবশে করে আমাকে অস্থির করে দিয়েছে। আমাকে সাহসী করেছে। আমাকে স্বপ্ন দেখিয়েছে। সবকিছুকে ভিন্ন ভাবে ভাবতে শিখিয়েছে। যেটি পূর্বে কোন লেখাপড়ার মাধ্যমে সেই ভাবে তৈরি হয়নি। সত্যি বলতে রাষ্ট্রনায়ক তো এমন মানুষেরই হওয়া দরকার। যাকে দেশের মানুষ অনুসরণ করতে পারে। যাকে নিয়ে দেশের মানুষ গর্ব করতে পারে। আমরা তো তেমন প্রধানমন্ত্রীই পেয়েছি, যাকে নিয় গর্ব করা যায়। যাকে অনুসরণ করা যায়। এই বিষয়গুলোই এই চলচ্চিত্রটি দেখার পূর্বে সেইভাবে অনুভব করতে পারেনি।

চলচ্চিত্রটি যখন দেখছিলাম তখন আমার মত সবারই গায়ের লোমগুলো দাঁড়িয়ে গিয়েছিল! সবারই চোখেই জল এসেছিল! এত কষ্ট, ত্যাগ, সংগ্রাম একটি মানুষ করতে পারে! একটা মানুষ একটি দেশের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন ও তার বাবার স্বপ্নের বাস্তবায়নের জন্য এত ত্যাগ স্বীকার করতে পারে! তাও আবার আমার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা!

হাসিনা আ ডটার’স টেল
যে মেয়েটির ঘর আলসে ঘড় বলে পরিচিত ছিল-সেই মেয়েটি এখন এত পরিশ্রম করতে পারে! যেই মেয়েটি অলসের মত সারাদিন গান শুনে আর বই পড়ে কাটিয়ে দিতো- সেই কিনা বাঙ্গালী জাতির উন্নয়নের জন্য ঘর-সংসার, ছেলে-মেয়ে সব ছেড়ে দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পাঁয়ে হেটে, ভ্যানে চড়ে, নৌকায় করে ঘুরে বেড়িয়েছে! এত ঘুরে দাঁড়াতে পারে মানুষ!

একসময় যার সব কিছু ছিল আবার একইসাথে সব কিছু হারিয়েছেও। তার প্রিয় বাবা-মা, ভাই-বোন ও প্রিয়জন সবাই। সব কিছু হারিয়ে, শূন্য থেকে শুরু করে, আজ বীর দর্পে দেশের নেতৃত্ব দিয়ে সারাবিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেলও হয়েছে আবার সেই মেয়েটিই! নূন্যতম জীবন-যাপন কারার মত অর্থও যার ছিল না, যার থাকার একটি ভালো ঘড় ছিল না, সেই মেয়েটি এত ঘুরে দাড়াতে পারে! এগুলো কি আদৌ সম্ভব? কিন্তু সব কিছু সম্ভব করেছে একটি মেয়ে। যেই কিনা আমার প্রধানমন্ত্রী! সত্যি অসাধারণ! সত্যি ভাবতে শুধু ভালোই লাগে না অবাগও লাগে! এখন বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের সেই লাইনটি বার বার মনে পড়ছে -‘‘দাবায়ে রাখতে পারবা না’’। যে জাতির এমন বিষ্ময়কর, অপরাজেয় প্রধানমন্ত্রী আছে সে জাতিকে কে দাবায়ে রাখাতে পারে? এক শেখ হাসিনাই যদি এত কিছু করতে পারে তবে যেদিন এমন লক্ষ শেখ হাসিনার জন্ম হবে সেদিন এই দেশে কোথায় যাবে? আমি তো সেই প্রধানমন্ত্রী পেয়েছি- যে শুধু স্বপ্ন দেখে না স্বপ্ন দেখায় এবং স্বপ্ন কীভাবে সত্যি করতে হয় সেটাও শিখিয়ে দেয়। তাই লক্ষ শেখ হাসিনার জন্ম হতে এই দেশে খুব দেরি হবে না।

অনেক ক্ষোভ ও হাতাশা ছিল বুকের ভিতর। কিন্তু এই চলচ্চিত্রটি সব দূর করেছে। আমাকে সাহসী করেছে। নতুন করে আবারো স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছে। আমার প্রধানমন্ত্রী যদি এত করুণ পরিস্থিতি থেকে এখানে উঠে আসাতে পারে তাহলে আমরা কেন পারবো না? আমাদের এখন আর অন্য কোন দেশের সফল মানুষের গল্প শোনার প্রয়োজন নেই। শূন্য থেকে শুরু করে কিভাবে চূড়ান্তে লক্ষে পৌঁছাতে হয় সেটি আমাদের প্রধানমন্ত্রী আমাদের শিখেয়ে দিয়েছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী নিজে প্রমাণ করেছে কঠিন মনোবল আর পরিশ্রম থাকলে কোন কিছুই অর্জন করা অসম্ভব নয়। তাই আমরাও পারবো- আমাদের স্বপ্ন সত্যি করতে।

লক্ষ তরুণের হতাশা দূরে করে নতুন জীবনের স্বপ্ন শুরু হতে পারে এই চলচ্চিত্রের মাধ্যমেই। কেননা, আমরা মনে করি বঙ্গবন্ধুর মেয়ে শেখ হাসিনা, তার কোন অভাব থাকার কথা নয়। যাই হোক, যেই পরিস্থিতিই আসুক না কেন-সে ভালোই থাকবে। সবকিছু তার আপনা-অপনিই হয়েছে। কিন্তু চলচ্চিত্র বলছে অন্য কথা। প্রতিটি অর্জনের জন্য তাকে কঠিন মূল্য দিতে হয়েছে। নিজের জীবনকে বার বার মূত্যুর হাত থেকে ছিনেয়ে আনতে হয়েছে। এমনকি তার অর্জনগুলো ছিনেয়ে আনা সাধারণ মানুষের থেকেও কষ্টকর ছিল। বঙ্গবন্ধুর মেয়ে হাবার কারণে, বাড়তি সুবিধা ভোগ না করে বরং তাকে আরো বেশি মূল্য দিতে হয়েছে!

লক্ষ তরুণের বুকে থেকে হতাশা দূর করে নতুন স্বপ্ন দেখাতে এই চলচ্চিত্রটিই যথেষ্ট। তাই প্রতিটি স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এমনকি প্রতিটি গ্রামে এই চলচ্চিত্রটি দেখানোর ব্যবস্থা করা হোক। যেসব তরুণ বিকৃত ইতিহাস পড়ে বড় হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত নানা ভুয়া তথ্য যাদের মগজে ঘোরা-ফেরা করছে তাদের সঠিক ইতিহাস জানাতে এই চলচ্চিত্রটি ভূমিকা রাখবে। এই চলচ্চিত্রটি তাদের বলে দিবে-আমাদের জাতির পিতা নিশ্চিত মূত্যুকে ভয় না করে কীভাবে দেশকে স্বাধীন করেছে। শত বাধার বিপরীতেও আমাদের প্রধানমন্ত্রী কীভাবে এই জাতির উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। তাছাড়াও এই চলচ্চিত্রটি আমাদের জাতির পিতা ও প্রধানমন্ত্রীর জীবন-সংগ্রাম নিয়ে নির্মিত যেটা প্রতিটি নাগরিকের জানা প্রয়োজন। তাই এই চলচ্চিত্রটি ব্যাপকভাবে দেশব্যাপি দেখানোর ব্যবস্থা করা হোক।

চলচ্চিত্রটিতে দেখানো হয়েছে বঙ্গবন্ধু ‘আমার সাধ না মিটিল আশা না পুরিল’ গানটি খুব শুনতো। আমাদের এখনো সাধ মেটেনি। কীভাবে মিটবে? যে সোনার বাংলা গড়ার জন্য আমাদের পিতা এই দেশকে স্বাধীন করেছে সেই সোনার বাংলাতো এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এই অপূর্ণ সাধ কে মেটাকে? কে বাঙ্গালী জাতির এই সাধ পূরণ করে দিতে পারে? মেয়েটির অনেক অর্জনের পরেও তো সোনার বাংলা গাড়ার কাজটি এখনো অনেকটাই বাঁকি। তাই যে মেয়েটি এত কিছু করে দেশটিকে এখানে এনেছে তাকেই সোনার বাংলাটিও গড়ে দিতে হবে।

এক কথায় অসাধারণ। আমরা তরুণ প্রজন্ম বলতে চাই। প্রিয় হাসু আপা, তোমার হাত ধরেই এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। কোটি তরুণের স্বপ্নের বাস্তবায়ন হবে তোমার হাত ধরেই। তোমার দৃঢ়তা, ত্যাগ, সাহস আর কঠিন মনোবলের কাছে সকল অপশক্তিই হার মনতে বাধ্য। যত বাধাই আসুক তোমার দৃঢ়তার কাছে সব কিছু পরাজিত হবে। জয় আমাদের হবেই। আমাদের কেও দাবায়ে রাখতে পারবে না। আমরা সত্যি সত্যি তোমার নেতৃত্বে সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করবোই করবো।

আসাদুজ্জামান কাজল, প্রভাষক
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ইমেইল: [email protected]

হাসিনা: অ্যা ডটারস টেল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর