Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিনিয়োগনীতিতে বৈষম্য: অসম প্রতিযোগিতায় দেশীয় উদ্যোক্তারা


১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৩:৫৫

।। রাজু আহমেদ ।।

পুঁজির ধর্মই মুনাফা অনুসন্ধান। যেখানে বিনিয়োগ করলে অধিক মুনাফা আসবে সেখানেই ছুটবে পুঁজি। যে খাতে বা যে স্থানে বিনিয়োগ করেই হোক না কেন পুঁজিপতির মূল লক্ষ্য মুনাফা।  অল্প পুঁজি-পরিশ্রমে বেশি মুনাফা লাভের আশায় পুঁজির মালিকরা প্রতিনিয়ত বিনিয়োগের নতুন নতুন খাত ও স্থান অনুসন্ধান করেন।  আর পুঁজির এই মুনাফামুখী প্রবাহকে অবাধ ও অসীম করাই ‘মুক্তবাজার’ বা ‘বিশ্বায়ন’ ব্যবস্থার মূল উদ্দেশ্য।

বিজ্ঞাপন

অধিক মুনাফার আশায়ই এক দেশের ব্যক্তি বা প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী অন্য কোনো দেশে বিনিয়োগ করেন।  আর এ বিদেশি বিনিয়োগ একটি স্বাধীন দেশে ভিন্ন দেশের পুঁজির অবাধ ব্যবহার নিশ্চিত করে। বিনিয়োগের মাধ্যমে বিদেশি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান একটি দেশের শিল্প, কৃষি ও সেবা খাত নিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করার সুযোগ পায়। দেশের অভ্যন্তরে পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সব রকম সুযোগ-সুবিধাও পেয়ে থাকে।

বিশ শতকের ষাটের দশকে অভ্যন্তরীণ বাজারকেই জাতীয় পুঁজি বিকাশের মাধ্যম হিসেবে ধরা হতো। ওই সময় অর্থনীতির প্রাণ হিসেবে কৃষিকেই বিবেচনা করা হতো। কৃষি থেকে উদ্বৃত্ত শ্রম কাজে লাগিয়ে শিল্পপণ্য তৈরি করে কৃষকদের কাছে বিক্রয়ের মাধ্যমে ক্রমশ একটি প্রাথমিক পুঁজি সঞ্চয় করা হতো। এভাবে মূলত অভ্যন্তরীণ বাজারকে ভিত্তি করে শিল্প ও কৃষির যুগপৎ বিকাশের সুযোগ তৈরি হয়। এ ব্যবস্থায় অনায়াসে সাময়িক সংরক্ষণ সুবিধা দিয়ে শহরে বা গ্রামে ‘আমদানি বিকল্প’ শিল্প গড়ে তোলার সুযোগ করে দেওয়া সম্ভব ছিল। এসব শিল্প শক্তিশালী অবস্থান করে নেওয়ার পর সংরক্ষণ সুবিধা প্রত্যাহার করা হলেও অসুবিধা হতো না।  এভাবেই অতীতে অনুন্নত দেশগুলোর উন্নতির কথা চিন্তা করা হতো। এ পদ্ধতি ছিল অনেক বেশি নিরাপদ, ঝুঁকিহীন ও স্বয়ংসম্পূর্ণ। যদিও এরও অনেক সমস্যা রয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় শিল্পায়ন ঘটাতে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন জাতীয় নেতৃত্বের সর্বোচ্চ সততা, দেশপ্রেম ও মানবিক মূল্যবোধ।

বিজ্ঞাপন

দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর সদ্য স্বাধীন দেশগুলো জাতীয় পুঁজি ও অভ্যন্তরীণ বাজারকে গুরুত্ব দিয়ে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রচেষ্টা শুরু করে।  ভারত, চীন, কিউবা, ভিয়েতনামসহ অনেক দেশই এর মাধ্যমে শক্তিশালী জাতীয় শিল্পায়ন এবং উন্নয়নের পথে অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে পেরেছে। অন্যদিকে পাকিস্তানসহ ল্যাটিন আমেরিকার কোনো কোনো দেশে অদক্ষ পুঁজিঘন শিল্প, ভর্তুকির বোঝা, বর্ধিত আয় বৈষম্য, আঞ্চলিক বৈষম্য, অবিকশিত কৃষি, গণদারিদ্র্য, উদ্বৃত্ত শ্রম ইত্যাদি সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।

১৯৯০-এর দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশে সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার পরিবর্তন সারা বিশ্বের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। এককেন্দ্রিক বিশ্বব্যবস্থার সুযোগ নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলো সব আন্তর্জাতিক ফোরামে উদারীকরণ, ব্যক্তিগতকরণ ও ভর্তুকিহীন বাজার ব্যবস্থার মাধ্যমে উন্নয়নের পক্ষে জোরেশোরে আওয়াজ তুলতে শুরু। এরই ফল হিসেবে সারা বিশ্বে বিশেষ করে অনুন্নত দেশগুলোয় ‘রফতানিমুখী প্রবৃদ্ধির’ মডেল চালু হতে থাকে। এ মডেলকেই বিশ্বায়নের আদর্শ প্রক্রিয়া হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এ মডেলের মূল কথা হলো—সরকারের আয় বাড়াতে হবে, ব্যয় কমাতে হবে। সরকার নয়, বেসরকারি বিনিয়োগকারীরাই হবে উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি। সরকারি ব্যয় সংকোচিত করতে হবে, বেসরকারি বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে ব্যাংক ঋণের সুদের হার কমাতে হবে।  শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্যসহ আবশ্যিক সেবা খাতে সরকারি ভর্তুকি প্রত্যাহার করতে হবে।  দেশি-বিদেশি পুঁজির অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে। বিদেশি বিনিয়োগের ওপর সব ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক নিয়ন্ত্রণ তুলে নিতে হবে। নিয়ন্ত্রণ তুলে স্থানীয় বাজার উন্মুক্ত করে দিতে হবে ইত্যাদি।

এসব নীতি সামনে রেখেই বাংলাদেশকে বাজার উদারীকরণের পথে ধাবিত করেছে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ-এডিবি। ১৯৯০ সালের পর থেকে পৃথিবীজুড়ে মুক্তবাজার অর্থনীতির দাপট শুরু হলে বাংলাদেশও সে জোয়ারে গা ভাসায়। দেশীয় উৎপাদন ব্যবস্থা সুরক্ষার ব্যবস্থা না করেই বিদেশি পণ্যের অবাধ প্রবেশাধিকার দেওয়া শুরু হয়। একইসঙ্গে জোর দেওয়া হতে থাকে বিদেশি বিনিয়োগের ওপর। বহুজাতিক বিভিন্ন কোম্পানিকে বাংলাদেশে আনতে ব্যাপক তৎপরতা থাকলেও দেশীয় বিনিয়োগ বাড়াতে তেমন কোনো প্রচেষ্টা নেই সরকারের। ফলে দেশের শিল্প-বাণিজ্য অচিরেই বিদেশিদের দখলে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।  বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রে চরম বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন দেশীয় শিল্প উদ্যোক্তারা। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য সরকারের নিজস্ব উদ্যোগে গ্যাস-পানি-বিদ্যুৎ সরবরাহ, কর মওকুফ, দীর্ঘমেয়াদি ব্যাংক ঋণ, মুনাফা স্থানান্তরসহ অসংখ্য সুবিধা দেওয়া হলেও স্থানীয় উদ্যোক্তাদের জন্য সরকারিভাবে সুবিধার ব্যবস্থা নেই। বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধা আদায়ের ক্ষেত্রে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সরকারের সঙ্গে দর কষাকষির পথ খোলা থাকলেও দেশীয় বিনিয়োগকারীদের জন্য এ ধরনের সুযোগ নেই। এসব কারণে প্রতিযোগিতায় বিদেশিদের কাছে মার খাচ্ছেন স্থানীয় উদ্যোক্তারা। এ ধরনের অসম সুযোগ-সুবিধার কারণে দেশীয় বিনিয়োগের ক্ষেত্রে চরম প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশই বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সবচেয়ে উদারনীতি গ্রহণ করেছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য নানা সুযোগ-সুবিধা দিয়ে ইতোমধ্যে দেশকে পুরোপুরি উন্মুক্ত করা হয়েছে। সামরিক সরঞ্জাম, পারমাণবিক শক্তি, বনায়ন, সিকিউরিটি প্রিন্টিং ও রেলওয়ে ছাড়া বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য সব খাত উন্মুক্ত করা হয়েছে।

বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে সরকার প্রদত্ত সুবিধাগুলো হলো:

১.         শিল্প বিনিয়োগের জন্য বিদেশিদের শতভাগ মালিকানা স্বীকার করা হয়েছে।

২.         উৎপাদন শুরুর পর খাতভেদে  থেকে ৭ বছর পর্যন্ত কর অবকাশ সুবিধা দেওয়া হয়। বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে বিদেশি কোম্পানিগুলো উৎপাদন শুরুর পর ১ বছর পর্যন্ত কর রেয়াত পাচ্ছে।

৩.         বিদেশি প্রতিষ্ঠান বা বিশেষজ্ঞরা তাদের রয়্যালিটি ও বেতন-ভাতার ওপর সম্পূর্ণ কর অবকাশ সুবিধা ভোগ করে।

৪.         বাংলাদেশের বড় বাণিজ্য শরিক দেশগুলোর সঙ্গে দ্বৈত কর পরিহার চুক্তি রয়েছে। এসব দেশের বিনিয়োগকারী নিজ দেশ কর দিলে বাংলাদেশে আর কোনো কর দিতে হবে না।

৫.         বিদেশি প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত বিদেশি প্রযুক্তিবিদ বা বিশেষজ্ঞদের জন্য ৩ বছর পর্যন্ত কর রেয়ত দেওয়া হয়েছে।

৬.         বিদেশি কোম্পানিগুলো বাধাহীনভাবে মুনাফা ও লভ্যাংশ স্থানান্তর করতে পারে।

৭.         মুনাফা বা লভ্যাংশ পুনর্বিনিয়োগ করা হলে তাকে নতুন বিনিয়োগ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ফলে পুনর্বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও কর অবকাশসহ সব কর সুবিধা আগের মতোই ভোগ করার সুবিধা রয়েছে।

৮.         বিদেশি বিনিয়োগকারী কোম্পানিগুলো বাধাহীনভাবে স্থানীয় ব্যাংকে ঋণের আবেদন করতে পারে।

৯.         বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য পুঁজিবাজারে শেয়ার ছাড়া বাধ্যতামূলক নয়। কিন্তু তারা শেয়ার বাজার থেকে যেকোনো কোম্পানির শেয়ার কিনতে পারবে।

১০.       ‘বিদেশি বিনিয়োগ উন্নয়ন ও সুরক্ষা আইন ১৯৮০’ অনুযায়ী, সরকার বিদেশি বিনিয়োগকে স্থানীয় বিনিয়োগের সমমর্যাদা দিয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগের নিরাপত্তার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। মাল্টিলিটারাল ইনভেস্টমেন্ট গ্যারান্টি এজেন্সিতে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিদিশে বিনিয়োগকে রাজনৈতিক ঝুঁকি থেকে রক্ষার জন্য পুরোপুরি দায়বদ্ধ। বিশ্ব মেধা সম্পদ সংস্থা (ডব্লিউআইপিও) এবং বিশ্ব বিনিয়োগ উন্নয়ন এজেন্সি (ডব্লিউআইপিও)’র সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ বিদেশি বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষায় অঙ্গীকারাবদ্ধ।

অধিকাংশ দেশেই বিদেশি বিনিয়োগকারীরা স্থানীয় উদ্যোক্তাদের সঙ্গে ন্যূনতম জয়েন্ট ভেঞ্চার ছাড়া বিনিয়োগের অনুমোদন পায় না। এছাড়া বিদেশি বিনিয়োগকারীরা শেয়ার হস্তান্তরের মাধ্যমে অর্জিত বাড়তি পুঁজির ক্ষেত্রে শুল্ক মওকুফের সুবিধা, স্থানীয় বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে দীর্ঘমেয়াদি ঋণের সুবিধা, বিনিয়োগকৃত পুঁজি মুনাফাসহ দেশে ফেরত নেওয়ার ব্যবস্থা, বিদেশি শেয়ার হোল্ডারদের দেশীয় মালিকদের কাছে শেয়ার হস্তান্তরের সুবিধা দেওয়া হয়েছে।

বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য নাগরিকত্ব সুবিধাও দিচ্ছে বাংলাদেশ। কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠানে স্থায়ীভাবে ৭৫ হাজার মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করলে যেকোনও বিদেশি নাগরিক এদেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি পান।  আর ৫ লাখ মার্কিন ডলার বিনিয়োগ কিংবা কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ১ কোটি মার্কিন ডলার হস্তান্তর করলে যেকোনো বিদেশি বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পেয়ে যান। বিদেশি নাগরিকদের ওয়ার্ক পারমিটের সব বাধাও তুলে দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে চরম বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন স্থানীয় বিনিয়োগকারীরা। বিদেশি বিনিয়োগ প্রস্তাব নিবন্ধিত হওয়ার পর সরকার তাদের পছন্দ অনুযায়ী জমি অধিগ্রহণের ব্যবস্থা করলেও দেশীয় উদ্যোক্তারা এ সুবিধা পান না। যেকোনো খাতে বিনিয়োগ করতে হলে দেশীয় উদ্যোক্তাদের নিজস্ব উদ্যোগে জমি, পুঁজি, ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করতে হয়। গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ সংযোগের ক্ষেত্রেও পোহাতে হয় নানা ভোগান্তি। অন্যদিকে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা সরকারি ব্যবস্থাপনায় এসব সুবিধা পেয়ে থাকেন। দীর্ঘমেয়াদি ঋণের ক্ষেত্রে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের। কর দেওয়ার ক্ষেত্রেও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা যেসব সুবিধা পাচ্ছেন কয়েকটি খাতে কর অবকাশ ছাড়া এর ক্ষুদ্র অংশও পাচ্ছেন না স্থানীয় বিনিয়োগকারীরা। ফলে নানামুখী প্রতিবন্ধকতার কারণে অধিকাংশ খাতেই দেশীয় বিনিয়োগ দিন দিন হতাশাজনক পর্যায়ে চলে যাচ্ছে।

বিগত দু’টি বাজেটে কর অবকাশ প্রদানের ক্ষেত্রে টাটাসহ বিদেশি কোম্পানিগুলোর প্রস্তাবিত বিনিয়োগের খাতগুলোকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। টাটা, আবুধাবিসহ বিদেশি করপোরেট গ্রুপগুলোকে সুবিধা দেওয়ার জন্যই ইস্পাত, সার, কম্পিউটার হার্ডওয়্যার, তিন তারকা বা তদূর্ধ্ব আবাসিক হোটেল, পেট্রো কেমিক্যাল, সমুদ্র বা নৌ বন্দর খাত ও রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (ইপিজেড) বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কর অবকাশ দেওয়া হয়েছে।

নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। বিদেশি প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারি তত্ত্বাবধায়নে জমি অধিগ্রহণ এবং অবকাঠামো নির্মিত হওয়ায় চাঁদাবাজির শিকার হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। অন্যদিকে স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের পদে পদে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি সংযোগসহ বিভিন্ন কাজে দিতে হয় মোটা অঙ্কের ঘুষ।

এসব অসম সুবিধার কারণে বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছেন দেশীয় উদ্যোক্তারা। অতিরিক্ত সুবিধা কাজে লাগিয়ে কম সময়ে বেশি মুনাফার খাতগুলোতে বিনিয়োগ করে লাভবান হচ্ছেন বিদেশিরা। এতে দেশীয় পুঁজির বিকাশ ও উদ্যোক্তা সৃষ্টির ধারা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ অবস্থায় বিদেশি বিনিয়োগকে জাতীয় স্বার্থে কাজে লাগাতে হলে দেশীয় শিল্প ও উদ্যোগের সুরক্ষা নিশ্চিত করে বিদেশি বিনিয়োগ আনতে হবে। বিদেশি বিনিয়োগনীতিতে এমন ব্যবস্থা রাখতে হবে, যেন স্থানীয় শিল্পের স্বার্থে যেকোনো সময় তা পরিবর্তন করা যায়।  যেসব খাতে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের পুঁজি ও প্রযুক্তি বিনিয়োগের সামর্থ্য নেই, সেসব খাতে বিদেশি বিনিয়োগ আহ্বান করতে হবে। শ্রমঘন, উৎপাদনমুখী ও প্রযুক্তি হস্তান্তরযোগ্য খাতে বিদেশি বিনিয়োগকে প্রাধান্য দিতে হবে।  যেকোনো পর্যায়ে স্থানীয় বিনিয়োগকে বিদেশি বিনিয়োগের চেয়ে বেশি সুবিধা দিতে হবে। বিদেশি বিনিয়োগ আনার ক্ষেত্রে স্থানীয় সম্পদ, জনসাধারণের জীবনযাপন, সংস্কৃতি, প্রাণবৈচিত্র্য ও খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখতে হবে।

লেখক: সাংবাদিক

অর্থনীতি উদ্যোক্তা প্রতিযোগিতা বিনিয়োগ রাজু আহমেদ

বিজ্ঞাপন

আদানি গ্রুপের নতুন সংকট
২২ নভেম্বর ২০২৪ ১৫:৩৬

আরো

সম্পর্কিত খবর