Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাংলা ভাষাচর্চার সাম্প্রতিক চালচিত্র


২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১১:২৩

।। . মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান ।।

এক.

ভাষা মানুষের নিজের সম্পদ। এর সঙ্গে ব্যক্তির মননশীলতা ও সৃজনের বিষয়টিও সম্পৃক্ত।  মায়ের যে ভাষায় মানুষ কথা বলে, এর সঙ্গে আবেগের বিষয়-সংশ্লিষ্টতার বৈজ্ঞানিক ও জৈবিক কারণ বিদ্যমান। এসব বিবেচনায় ভাষা মানুষের দেহসম্পদ ও অর্থসম্পদের মতো অত্যন্ত জীবনঘনিষ্ঠ এক প্রত্যয়। ভাষার প্রশ্নে মানুষের একত্র হওয়ার দৃষ্টান্ত পৃথিবীতে তাই শতত বিরাজিত। সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রবাহে ভাষার যে প্রায়োগিক দিক প্রকাশিত হয়, তাতে কোনো জনগোষ্ঠীর জীবনবোধের সার্বিক চিত্রই প্রতিফলিত হয়। বাংলা ভাষার ক্ষেত্রে এমন অন্বেষা আরও বেশি অন্বিষ্ট। কারণ জীবন বিপন্নের মাধ্যমে বাঙালিরা বাংলা ভাষাকে রক্ষা করেছেন। সঙ্গত কারণেই এ ভাষার প্রতি তাদের আবেগ ও অনুভূতি অনেক বেশি। বাংলা ভাষার বিরুদ্ধে যেকোনো সাম্রাজ্যবাদ ও ষড়যন্ত্র রুখে দিতে তারা বদ্ধপরিকর।

দুই.

বর্তমানে পৃথিবীতে প্রায় সাত হাজারের মতো ভাষা রয়েছে। এসব ভাষার মধ্যে পৃথিবীতে আধিপত্য বিস্তারকারী শক্তিমান ভাষাগুলোর গড় কথকসংখ্যা ৫ কোটির বেশি। এ বিবেচনায় বাংলাভাষা অনেক ভালো অবস্থানে রয়েছে। কারণ বাংলা ভাষাভাষীর সংখ্যা পৃখিবীতে প্রায় ৩০ কোটি। ভাষাবিজ্ঞানীরা এসব ভাষার কথক সংখ্যা বিচার করে বাংলাভাষা চতুর্থ অবস্থানে আছে বলে মত দিয়েছেন। বিষয়টি বাঙালিদের জন্য সুখবর বয়ে এনেছে, তাতে সন্দেহ নেই। তারপরও বাংলা ভাষাচর্চার সার্বিক দিক বিবেচনা করলে তার ব্যবহারিক ক্ষেত্র কিছুটা সংকুচিত হয়েছে বলে মনে করা হয়ে থাকে। এসব কারণের মধ্যে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক কারণ সংশ্লিষ্ট।

বিজ্ঞাপন

তিন.

মননের সঙ্গে ভাষার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। বাংলা ভাষা ব্যবহারে ভাষাভাষীরা কোনো কোনো ক্ষেত্রে যে ঔদাসীন্যের পরিচয় দেন, তাতে ঐতিহাসিক কারণ বিদ্যমান। বাংল ভূখণ্ডে ইসলামি শাসন থেকে শুরু করে ইংরেজ শাসনের অধীনে ছিল। প্রায় ছয়শ বছর ফারসি ভাষা এ অঞ্চলে ছিল রাজকাজের ভাষা। তখন আধিপত্যবাদী ভাষা হিসেবে ফারসির ব্যবহার বাংলা ভাষার ব্যবহারকে রুদ্ধ করে রেখেছিল। এরপর শুরু হলো ইংরেজ শাসন। এই অঞ্চলে ইংরেজরা ১৯০ বছর শাসন করেছিল। তখন ইংরেজি ভাষার দাপটে বাংলা একটি অবদমিত ভাষা হিসেবে পতিত হয়। ইংরেজরা প্রায় দুশো বছরে এ অঞ্চলেযে ইংরেজ সংস্কৃতির বীজ বপন করেছিল, তার ফসল আজও বাংলাভাষার বেদীমূলে সর্বত্র দৃশ্যমান। সমাজের প্রতিটি স্তরে মননশীলতার এই আধিপত্য প্রকট হওয়ায় বাংলাভাষার ওপর এর সুস্পষ্ট প্রভাব প্রতিফলিত হয়। ভৌগোলিক ও রাজনৈতিক দিক থেকে বাংলাদেশ স্বতন্ত্র স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পেলেও মননশীলতার দিক থেকে আমরা আজও পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা লাভে সক্ষম হতে পারিনি। এ কারণে বাংলা ভাষাচর্চায় ও গতি-প্রকৃতিতে বিদেশ-বিভূঁইয়ে ভাষা ও সংস্কৃতির মধ্য দিয়ে আমাদের সংস্কৃতি বিকাশের পথ খোঁজে।

চার.

ভাষা অন্দোলন ও স্বাধীনতার মূলমন্ত্র হিসেবে যে কয়েকটি মাপকাঠি নির্ধারণ করা যায়, তার মধ্যে সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা অন্যতম। সংস্কৃতির অন্যতম মাধ্যম হলো ভাষা। ভাষার মাধ্যমেই সংস্কৃতির বিকাশ। কিন্তু ভাষা আন্দোলনের সত্তর বছর অতিক্রান্ত হলেও বাংলাভাষার সর্বত্র ব্যবহার কাগজে-কলমেই সীমিত। সর্বত্র বাংলাভাষা ব্যবহারের অগ্রগতির কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। বাংলাভাষা সর্বত্র ব্যবহারের জন্য সরকারের ভূমিকা অনেক ক্ষেত্রেই সমালোচিত হয়েছে, আবার কোথাও কোথাও সরকার উদ্যোগী হয়েও শেষ পর্যন্ত কাজটি সম্পন্ন করতে সক্ষম হননি। নানা জটিলতার মধ্য দিয়ে বাংলাভাষা ব্যবহারের সর্বত্র ক্ষেত্র নিশ্চিত করা যায়নি। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে বাংলাভাষা উন্নয়নে শিক্ষাকমিশন প্রতিবেদন (১৯৭৪), ইংরেজি শিক্ষা টাস্কফোর্স কমিশন (১৯৭৬), বাংলাদেশ জাতীয় শিক্ষা কমিশন প্রতিবেদন (১৯৮৮), জাতীয় কারিকুলাম কমিটি ১৯৯১),( জাতীয় শিক্ষানীতি (২০০০), বারি কমিশন প্রতিবেদন (২০০২), মিয়া কমিশন প্রতিবেদন (২০০৪) এবং জাতীয় শিক্ষানীতি (২০১০); এমন আটটি শিক্ষা কমিশন গঠিত হয়েছে। এছাড়া ১৯৮৩ সালে বাংলা ভাষা কমিটি রিপোর্ট ও ১৯৮৭ সালে বাংলা ভাষা প্রচলন আইনের মাধ্যমে বাংলা ভাষা উন্নয়নে সর্বাত্মক প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করা যায়। এসব আইন ও কমিশনের নীতি ও উপনীতি বাংলা ভাষা উন্নয়নে সফল হয়নি।

বিজ্ঞাপন

বাংলাভাষা প্রচলনের চালচিত্রে দেখা যায়, এ ভাষা বড়লোকের ভাষা হতে পারেনি। বিশেষ করে, ধনী ব্যবসায়ী, উচ্চ চাকরিজীবী, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিকুলাম, সশস্ত্রবাহিনী,  আইন-আদালত তথা অভিজাত ক্ষেত্রে ইংরেজি ভাষার আধিপত্য এখনো সগৌরবে চলছে। আমাদের দেশে ইংরেজি মাধ্যমে কেবল ইংরেজি ভাষাকে যে গুরুত্ব দেওয়া হয় তা-ই নয়, সেখানে ইংরেজি সংস্কৃতিকেও প্রমোট করা হয়ে থাকে। বাংলা সেখানে গল্পের ‘দুয়োরানি’। অধিকাংশ ইংলিশ মাধ্যমের স্কুলের শিক্ষার্থীরা বাংলাভাষা ও সংস্কৃতিকে ধারণ করে না।  এমনকি তাদের অনেকেই বাংলাভাষা বলতে ও বুঝতে পারে না। ১৯৯২ সালে এদেশে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস হয়। এ আইনে শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতির সঙ্গে দেশীয় সংস্কৃতির বিকাশের বিষয়েরও উল্লেখ আছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় দুই-একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগ থাকলেও অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়েই তা উপেক্ষিত। বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে শিক্ষার পাশাপাশি বাংলা সংস্কৃতি বিকাশে সহায়তা করার কথা, সেখানে এ ধরনের শিক্ষা বাংলাভাষার প্রতি অবজ্ঞাকেই নির্দেশ করে। আদালতের ভাষা নিয়ে স্বাধীনতার পর থেকেই অনেক পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে। কিন্তু এ ব্যাপারে আশাবাদী হওয়ার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি। বিচারকরা এখনো ইংরেজি ভাষাতেই রায় দিয়ে থাকেন। কিন্তু রায়ের অর্থ অধিকাংশ লোকই বুঝতে সক্ষম নন। ব্রিটিশ আইনে কোর্ট কাচারি চলে বলে এখানে ইংরেজি একক আধিপত্য বিদ্যমান। উচ্চশিক্ষায় আমাদের দেশে ইংরেজি ভাষার প্রাধান্য দিনের পর দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।অধিকাংশ বই ইংরেজি ও অন্যান্য ভাষায় লেখা বিধায় আমাদের দেশের শিক্ষার্থীর কাছে এখানে বাহন হিসেবে ইংরেজিই প্রধান। এসব গ্রন্থ বাংলা ভাষায় অনুবাদের যে প্রয়াস পূর্বে ছিল, তা হ্রাস পেয়েছে অনেকটাই।

রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা যদি বাংলাভাষাকে পৃষ্টপোষকতা না করেন, তাহলে স্বদেশি ভাষা ব্যবহারের দিগন্তটি উন্মোচনের পথ কতটা কণ্টকামুক্ত হয়, সে বিষয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। ব্যবসায়ীরা দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে বেগবান করতে সমর্থ হন। তারা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যান ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে। বাংলাভাষা ও সংস্কৃতি বিকাশে তাদেরও ভূমিকা কম নয়। কিন্তু বাস্তব ক্ষেত্রে যোগাযোগের ভাষা ইংরেজি হওয়ায় তাদের মধ্যে বাংলা ব্যবহারের প্রবণতা কম লক্ষ করা যায়। তথ্য- প্রযুক্তির কল্যাণে আজকাল দেশের মানুষ নানা সুবিধা ভোগ করে। মুহূর্তের মধ্যেই আমরা পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তের খোঁজখবর নিতে পারি সহজেই। তথ্য্যপ্রযুক্তির যেসব উপাদান বাঙালি সংস্কৃতিতে সংযুক্ত হচ্ছে, তার বাহন হচ্ছে ইংরেজি। তাই নিরুপায় হয়েই আমরা এক্ষেত্রে ইংরেজির শরণাপন্ন হচ্ছি। ফারসি ও ইংরেজির আধিপত্যের পর বাংলার ওপর অযাচিত প্রভাব পড়েছে হিন্দি ভাষার। আজকাল হিন্দি সিরিয়ালের আদিগন্ত উপভোগ করতে সচেষ্ট এদেশের নারী সমাজের একটা বড় অংশ। তারা প্রতিদিন বাংলা চ্যানেলের দেশীয় অনুষ্ঠানে তৃপ্ত নন, হিন্দি সিরিয়ালের কূটনামিক আস্বাদনে ব্যতিব্যস্ত। এসব সিরিয়ালের কেবল ভাষাই তারা আয়ত্ত করছেন তা-ই নয়, তারা কোন পোশাক পরছেন, অন্যের সঙ্গে কী ব্যবহার করেছেন, এসব বস্তুগত ও অবস্তুগত সংস্কৃতি চর্চায় অতি উৎসাহী। বাংলা সংস্কৃতিতে তাই হিন্দি সংস্কৃতির প্রভাবের আখ্যান নব সংযোজ বটে।

ভাষা ব্যবহারের ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীনদের ভাষার প্রভাব অনস্বীকার্য নয়। চাকরি, বিত্তবৈভব যে ভাষায় সুযোগ তৈরি হয় বেশি, সে ভাষা ব্যবহারের প্রতি মনোযোগ বেশি থাকে মানুষের। বাংলাদেশে ইংরেজ শাসনামলে অনেকেই ইংরেজি ভাষা আয়ত্ত করেছিল এ কারণে। সে সময় একটি অভিজাত বাঙালি-ইংরেজ শ্রেণির আবির্ভাব হয়েছিল ইংরেজদের কৃপার মাধ্যমে। সেই ধারা বর্তমানেও অব্যাহত রয়েছে। ইংরেজি এখন যেমন বৈশ্বিক ভাষা, তেমনি মর্যাদাসম্পন্ন ভাষাও বটে। কেবল উচ্চশিক্ষিত নয়, গ্রামের সাধারণ মানুষটিও দুই-একটি ইংরেজি আওড়াতে পারলে তার সম্মানের ব্যাপ্তি যেন অনেক বেড়ে যায়। আর এর মাধ্যমে তার যে বড়াই করার অপ-মানসিকতা তৈরি হয়, তা কোনোক্রমেই কাঙ্ক্ষিত নয়। এটি বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিকে হেয় প্রতিপন্ন করার এক অশুভ মানসিকতার বিস্ফোরণ মাত্র।

পাঁচ.

বাংলাদেশে বাংলাভাষা উন্নয়নের লক্ষ্যে যেসব প্রতিষ্ঠান রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হলো আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট, বাংলা একাডেমি, এশিয়াটিক সোসাইটি, বাংলাদেশ টেকস্টবুক বোর্ড, প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় প্রমুখ। এসব প্রতিষ্ঠান কেবল বাংলা ভাষা উন্নয়ন এই ভাষা প্রসারের জন্যও কাজ কররে থাকে। ভাষা উন্নয়ন লক্ষ্যে যে অবস্থান পরিকল্পনা ও অবয়বগত পরিকল্পনা রয়েছে, সে বিষয়ে এসব প্রতিষ্ঠান সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। বাংলা ভাষা উন্নয়নে বর্তমানে বাংলা একাডেমি দৃশ্যত কাজ করে চলেছে। বাংলাভাষার বিভিন্ন অভিধান তৈরি করে এ প্রতিষ্ঠানটি যেমন অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে, তেমনি প্রমিত বাংলা ভাষার ব্যাকরণ রচনা করে বাংলাভাষা চর্চার গতিপথকে প্রাণবন্ত করে তুলেছে। দেশের ভাষা গবেষকগণ এ প্রতিষ্ঠানের প্রতি আশাবাদী হয়ে উঠেছেন। বর্তমানে বাংলা ও পৃথিবীর অন্যান্য ভাষা উন্নয়নের জন্য সবচেয়ে বড় অবদান রাখার মতো প্রতিষ্ঠান হলো আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট। ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা ও বাঙালিদের বাংলা ভাষার আবেগের প্রতি শ্রদ্ধার স্মারক স্বরূপ জাতিসংঘের ইউনেস্কো বাংলাদেশে আন্তজার্তিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করে। এটি আমাদের জন্য পরম পাওয়া। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এ প্রতিষ্ঠানের যে ভূমিকা ও উদ্যোগ আমরা দেখেছি, তা যেন দিনের পর দিন মন্থর গতিতে পরিণত হয়েছে। এটি কেবল বাংলাভাষা ও বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় দায়বদ্ধ, তা নয়। বরং এর মাধ্যমে বিশ্বের অন্যান্য ভাষা উন্নয়ন, চর্চা, সংগৃহীত, পুনরুদ্ধার, পুনরুজ্জীবন প্রভৃতি কাজও সম্ভব। কিন্তু সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় অন্যান্য প্রতিষ্ঠান যেমন চলে রাজনৈতিক বিবেচনায় সেভাবে চললে এ প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন তোলাটা অসমীচীন নয়।

ছয়.

মাতৃভাষার বাইরে অন্য ভাষাচর্চা বা শেখা অন্যায় কিছু নয়। এছাড়া ইংরেজি ভাষা বিশ্ব যোগাযোগের ভাষা, প্রযু্ক্তি ও জ্ঞানের ভাষা হওয়ায় একে পাশ কাটানোর কোনো সুযোগ আমাদের নেই। জাপানসহ পৃথিবীর অনেক দেশেই একসময় নো ইংলিশ অনুশীলন ছিল। তাতে করে সেদেশের মানুষের নিজের ভাষার প্রতি দরদ ও সম্মানের বিষয়টি উপলব্ধি করা যায়। জ্ঞান আহরণ, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা সুযোগের জন্য ইংরেজি তথা অন্যান্য ভাষা শেখার বিকল্প সদর দরজা এখনো আমাদের দেশে তৈরি হয়নি। কাজেই প্রসঙ্গ অনুযায়ী ইংরেজির চর্চা কোনো দোষ নয়। কিন্তু অতি আবেগী ইংরেজি তথা অন্য ভাষার ব্যবহার আর মাতৃভাষার অবদমন তো কারোই কাম্য নয়। আমাদের মননশীলতার ভাষা যদি বাংলা না হয়, তাহলে আইন করে বাংলাভাষা চর্চার সর্বত্র ব্যবহার নিশ্চিত করা যাবে না।

লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, ভাষাবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

সারাবাংলা/এমএনএইচ

ড. মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান বাংলা ভাষা ভাষা ভাষাচর্চা

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

উর্মিলার সংসার ভেঙে যাওয়ার কারণ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:০২

নতুন পরিচয়ে কুসুম সিকদার
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:৫৭

সম্পর্কিত খবর