Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘সাহস থাকলে প্রতিবন্ধকতা কোনো বিষয় নয়’


৯ মার্চ ২০১৯ ১৭:৩৩

।। মো. আশিকুর রহমান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট॥

রাজবাড়ী: পুলিশের কাজ চ্যালেঞ্জে ভরা। আর এ পেশায় বাংলাদেশে শীর্ষ পদে যে ক’জন নারী রয়েছেন তাদের মধ্যে অন্যতম একজন আসমা সিদ্দিকা মিলি। বর্তমানে তিনি রাজবাড়ী জেলায় পুলিশ সুপার পদে দায়িত্ব পালন করছেন। পুলিশ সুপার হিসেবে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার, বাল্যবিয়ে বা ধর্ষণের মতো ঘটনায় অসহায় নারীদের পাশে দাঁড়িয়ে তিনি ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছেন।

জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মিলির পৈতৃক বাড়ি মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার দ্বারিয়াপুর গ্রামে। তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ হামিদ মিয়া ও মা রিজিয়া খানম। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর শেষে ২৪তম বিসিএসের মাধ্যমে ২০০৫ সালে পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন।

মিলি জাতিসংঘ শান্তি মিশনে কন্টিনজেন্ট কমান্ডার হিসেবে ডি আর কঙ্গোতে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় তিনি জাতিসংঘ শান্তিপদকে ভূষিত হন।

২০১৭ সালে কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ আইজি ব্যাচ প্রাপ্ত হন মিলি। পুলিশ সপ্তাহ-২০১৮ তে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকায় অসীম সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশ পদক-২০১৮ (বিপিএম-সেবা) পান। ২০১৮ সালের ৫ মার্চ তিনি পুলিশ সুপার হিসেবে রাজবাড়ীতে যোগ দেন। পুলিশ সপ্তাহ-২০১৯’এ তিনি প্রেসিডেন্ট পুলিশ মেডেল (পিপিএম)-সেবা পদক পান।

বাংলাদেশে নারী পুলিশ সদস্যদের সমস্যা-সম্ভাবনা নিয়ে সম্প্রতি এই পুলিশ সুপারের বিশেষ সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সারাবাংলা  রাজবাড়ী প্রতিনিধি আশিকুর রহমান।

বিজ্ঞাপন

শুরুতেই সারাবাংলার প্রশ্ন ছিলো বাংলাদেশ পুলিশবাহিনীতে নারী সদস্যদের কি ধরণের প্রতিবন্ধকতা রয়েছে বলে তিনি মনে করেন ?

আসমা সিদ্দিকা মিলি: আমি মনে করি নারী পুলিশ সদস্যদের ক্ষেত্রে কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। যে কারণে অনেক ক্ষেত্রে আমরা নারী পুলিশ সদস্যদের সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনে উৎসাহী করতে পারিনা। যেমন, সংসার একটা বড় যুদ্ধক্ষেত্র নারীদের জন্য। সন্তান-সংসার ও স্বামী নিয়ে পোস্টিংয়ের ক্ষেত্রে নারী পুলিশ সদস্যদের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয়। একজন নারী পুলিশকর্মীর স্বামী-সন্তান-সংসার ও পোস্টিং ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় হলে দায়িত্ব পালন কষ্টকর হয়।

সারাবাংলা: বাংলাদেশ পুলিশে নারীবান্ধব আর কি কি প্রয়োজন বলে আপনি মনে করেন ?

আসমা সিদ্দিকা মিলি: প্রতিটি অফিসেই নারীদের জন্য ‘বেবি কেয়ার’ থাকা উচিত। কারণ বাচ্চা নিয়েই মেয়েদের বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয়। অনেক পরিবারেই এমন আছে যে বাচ্চার দেখাশোনার কেউ থাকে না। আমরা পুলিশেরা দীর্ঘ ‍সময় কাজ করি। বড় কোনো সংকটের মুহূর্তে দায়িত্ব পালনের কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা থাকে না। অনেক সময় ১২-২৪ ঘণ্টাও ডিউটি করতে হয়। তখন নারী পুলিশ সদস্যদের শিশু সন্তানদের অনেক বেশি সমস্যায় পড়তে হয়। এছাড়া স্বামী-স্ত্রীর একই স্থানে কিংবা কাছাকাছি স্থানে পোস্টিং হলে সুবিধা হয়। তাছাড়া এখন যেহেতু আমরা নারীরা অনেকটা এগিয়ে এসেছি, আমি মনে করি সাহস থাকলে প্রতিবন্ধকতা কোনো বিষয় নয়।

সারাবাংলা: আমাদের দেশে নারীরা এখনও বিভিন্ন স্থানে বঞ্চিত-নির্যাতিত। এমন অবস্থায় আপনি বাংলাদেশ পুলিশে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করছেন। একজন নারী হিসেবে আপনার অনুভূতির কথা জানাবেন?

বিজ্ঞাপন

আসমা সিদ্দিকা মিলি: আমি খুবই গর্ববোধ করি যে আমি বাংলাদেশ পুলিশে পুলিশ সুপার পদে কাজ করছি। এটি একটি চ্যালেঞ্জিং পোস্ট। এখানে আমি আমার পেশাদারিত্ব প্রমাণ করেই কাজ করার চেষ্টা করি প্রতি মুহূর্তে। আমরা যারা সরাসরি অফিসার পদে যোগদান করি তাদের প্রত্যেকেরই একটি স্বপ্ন থাকে চ্যালেঞ্জিং পদে কাজ করার। পুলিশ সুপার হিসেবে কাজ করাটা আমার ক্যারিয়ারের জন্যেও প্রয়োজন বলে মনে করি। কারণ একজন পুলিশ সুপার কাজের মাধ্যমে যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন, ডেস্কে বসে কাজ করায় সেই ধরণের অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ নেই এবং জনগণের কাছাকাছি যাওয়ারও সুযোগ নেই। এজন্য আমি অবশ্যই গর্ববোধ করি যে, আমি ভালো একটি সুযোগ পেয়েছি এখানে কাজ করার ক্ষেত্রে।

সারাবাংলা: আপনার মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

আসমা সিদ্দিকা মিলি: আপনাকেও ধন্যবাদ।

সারাবাংলা/ আরএ

বিজ্ঞাপন

নামেই শুধু চসিকের হাসপাতাল!
২২ নভেম্বর ২০২৪ ২২:০৬

আরো

সম্পর্কিত খবর