Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চলুন পাইলটকে নামিয়ে দিয়ে ফ্লাই করি!


১৭ জুন ২০১৯ ১৪:০২

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচক কমিটির সদস্য দুইজন। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু, সদস্য হাবিবুল বাশার সুমন। এটা তো কাগজের হিসাব। বাস্তবে বাংলাদেশে নির্বাচক কমিটির সদস্য ১৬ কোটি এবং এই কমিটির সবাই প্রধান নির্বাচক। সবারই একটি করে বিশ্বকাপ স্কোয়াড আছে এবং একাদশ আছে। সবাই মনে করেন. তার দলটি মাঠে নামালেই বাংলাদেশ জিতে যেতো। ফেসবুকে এমন সব ক্রিকেট বিশেষজ্ঞের সন্ধান পাই, আমি চমকে যাই। নির্বাচকদের স্কোয়াড বা একাদশ নিয়ে কথা বলা যাবে না বা সমালোচনা করা যাবে না বা ক্রিকেট বিশ্লেষণ করা যাবেনা; এমন দাবি আমি করছি না। বরং খেলাধুলার ব্যাপারে
মানুষের এই বিপুল আগ্রহ আমার দারুণ লাগে। তবে এই প্রধান নির্বাচকদের মাঝে মাঝে খুব নিষ্ঠুর মনে হয়। তাদের এই নিষ্ঠুরতা আমাকে পীড়া দেয়। নির্বাচকদের ভুল হয় না, তা নয়। একাধিকবার মিডিয়ার চাপে নির্বাচকদের দল বদলাতে হয়েছে। আজকের যিনি প্রধান নির্বাচক সেই নান্নু ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপ স্কোয়াডে ছিলেন না। মিডিয়ার চাপে তাকে দলে নেয়া হয় এবং
বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম জয়ের নায়ক তিনি। হাবিবুল বাশার অভিষেক টেস্টের দলে ছিলেন না। মিডিয়ার চাপে তাকে নেয়া হয়। অভিষেক টেস্টেই হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। তখন অবশ্য ফেসবুক ছিল না। আলোচনা-সমালোচনা যা হতো, সব মূলধারার গণমাধ্যমে। সত্যি সত্যি বিশেষজ্ঞ ক্রীড়া সাংবাদিকরা বিশ্লেষণ করতেন, ন্যায্য চাপ সৃষ্টি করতেন। কিন্তু ফেসবুকে যুগে প্রবেশের পর আমরা সবাই রাজা, আমাদের এই রাজার রাজত্বে। ফেসবুক নির্বাচক কমিটি আশরাফুলকে বাদ দিয়ে দেয়, নাসিরকে দলে ঢুকিয়ে দেয়।

বিজ্ঞাপন

বিশ্বের কোন দেশে ক্রিকেট ক্রেজ সবচেয়ে বেশি, এই প্রশ্নের উত্তর সবাই জানেন- ভারত। তবে আমার ধারণা জনসংখ্যার অনুপাত বিবেচনা করলে ক্রিকেট ক্রেজে বাংলাদেশও খুব একটা পিছিয়ে থাকবে না। তবে আইপিএল, টিভি স্বত্ব, দর্শক সংখ্যা সব মিলিয়ে ক্রিকেট বাণিজ্যে ভারতই সবার আগে। বাণিজ্য বলুন আর ক্রেজ বলুন; ভারতে সেটার ঐতিহ্য অনেকদিনের। আশির দশক থেকেই আমরা দূরদর্শনের সুবাদে সরাসরি ক্রিকেট খেলা দেখতাম। ওয়েস্ট ইন্ডিজের একাধিক ভারত সফর টিভিতে দেখে দেখে ক্যারিবীয় ক্রিকেটের ভক্ত বনে গিয়েছিলাম। ভিভ রিচার্ডস এখনও আমার পছন্দের শীর্ষে। বাংলাদেশে ক্রিকেট ক্রেজের শুরুটা ৯০ দশকে। এর আগে বাংলাদেশের খেলাধুলা মানেই ফুটবল, ফুটবল মানেই আবাহনী-মোহামেডান লড়াই। আশির দশকে ববিবতা না শাবানা, সাবিনা ইয়াসমিন না রুনা লায়লার মতই ছিল আবাহনী না মোহামেডান।
হঠাৎ করেই ক্রিকেট এসে ফুটবলকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। নব্বই দশকের শেষ দিকে, আরো নির্দিষ্ট করে বললে ১৯৯৭ সালে আইসিসিতে চ্যাম্পিয়ন হয়ে বিশ্বকাপ খেলার যোগ্যতা অর্জন করার পর। এটা যতটা না ক্রিকেট প্রেম তারচেয়ে বেশি দেশপ্রেম থেকে। বাংলাদেশ কোনো একটা খেলার বিশ্বকাপে খেলছে, এটাই গোটা দেশে উচ্ছ্বাসের ঢেউ তোলে। আর ১৯৯৯ সালে প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে গিয়েই শক্তিশালী পাকিস্তানকে হারিয়ে সেই ঢেউকে উত্তাল করে তোলে ক্রিকেটাররা।
২০০০ সালে টেস্ট স্ট্যাটাস পেয়ে গেলে সেই ঢেউ সুনামি হয়ে ভাসিয়ে নেয় বাকি সব খেলা। সত্যি বলতে সেই থেকে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে এক অস্বস্তিকর ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ বিরাজ করছে। বাংলাদেশের যে কাউকে জিজ্ঞাসা করুন, ক্রিকেটারদের হাড়ির খবর বলে দেবে। ফুটবল দলের অধিনায়ক বা দ্রুততম মানবের নাম জানতে চান, আমতা আমতা করবে।

বিজ্ঞাপন

বলছিলাম বিশ্বকাপ স্কোয়াডের কথা। সব দল ঘোষণার পরই তা নিয়ে বিতর্ক হয়। এবারও অনেকে তাসকিনের জন্য আফসোস করেছেন। গত বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা পারফরমার তাসকিন বাদ পড়েছেন। কেউ কেউ ইমরুল কায়েসের কথাও বলেছেন। কিন্তু সৌম্য এবং লিটন ফর্মে থাকায় টিম কম্বিনেশনে ইমরুল কায়েস বাদ পড়ে। তারপরও বেশিরভাগ মানুষই বলেছেন, এবারের বিশ্বকাপের দলটিই বাংলাদেশের সম্ভাব্য সেরা। অভিজ্ঞতা আর তারুণ্যের মিশেলে দারুণ ভারসাম্যপূর্ণ দল। অনেকদিন ধরেই বাংলাদেশের সাফল্যে নেতৃত্ব দিচ্ছেন পঞ্চপান্ডব; মানে সাকিব, তামিম, মুশফিক, মাহমুদুল্লাহ আর মাশরাফি। বিশ্বকাপের আগে আগে সৌম্য, মোসাদ্দেকের জ্বলে ওঠায় প্রথম ত্রিদেশীয় সিরিজ জয় দলকে দারুণ চাঙা করে।

বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম তিনটি ম্যাচ ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। বিশ্বকাপপূর্ব বাস্তবতায় তিনটি ম্যাচই আমাদের হারার কথা। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়েই বিশ্বকাপে ফ্লাইং স্টার্ট হয় বাংলাদেশের। পরের দুটি ম্যাচ হারলেও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দারুণ লড়াই করেছে বাংলাদেশ। কিন্তু ইংল্যান্ডের সাথে হারার পরই গেল গেল রব উঠেছে। অনেকের প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হচ্ছে বাংলাদেশ বিশ্বকাপে গিয়েছিল অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে। পরপর দুই ম্যাচ হারার পরই আমরা এমনকি বিশ্বকাপের সপ্তাহখানেক আগে জেতা ত্রিদেশীয় শিরোপার কথাও ভুলে গেছি।
যে পঞ্চপান্ডবের ওপর ভর করে আমরা বিশ্বকাপ স্বপ্নের গান বাধলাম, তাদের চারজনকেই আমরা ছুড়ে ফেলে দিতে প্রস্তুত। তামিম ইকবাল বিশ্বকাপের তিন ম্যাচে রান পাননি। ব্যস, আবার চলে এসেছে ভাতিজা কোটা তত্ব। তামিম আর চলে না, এই কথাও। ভাই আপনাদের মেমরি এমন গোল্ডফিশ মার্কা হলে তো বিপদ। বছরের পর বছর বাংলাদেশের ওপেনিংটা একাই সামলেছেন তামিম। একা বললাম এ কারণে, তামিমের অপর প্রান্তের সঙ্গী বারবার বদল হয়েছে; তামিম ছিলেন ধীর-স্থির, অচঞ্চল। পরিসংখ্যানে এবং পারফরম্যান্সে তামিম বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যান। বিশেষ করে গত বিশ্বকাপের পর থেকে। এই সময়টা বাংলাদেশের কেটেছে স্বপ্নের মত। আর সেই স্বপ্নসারথীদের মধ্যে সবচেয়ে উজ্জ্বল নাম তামিম ইকবাল। এই সময় শুধু সবচেয়ে বেশি রান করেছেন বলেই নয়, তামিম নিজেকে বদলে নিয়েছেন দারুণভাবে। একসময় তামিম যেটা করতেন, এখন সৌম্য সেটা করেন। আর তামিম এখন অনেক পরিণত, শান্ত; এক ধ্যানী পুরুষ যেন। মাঝে মাঝে সেই ধ্যান ভেঙ্গে যায়। যেমন এবার বিশ্বকাপে এখনও ধ্যানগ্রস্থ তামিমের দেখা মেলেনি। এটা তামিম আমাদের চেয়ে বেশি জানেন। যারা তামিমকে চেনেন, তারা জানেন, একটা ভালো ইনিংস বদলে দিতে পারে সবকিছু। গত বিশ্বকাপ থেকে এই বিশ্বকাপ পর্যন্ত ৫২টি ওয়োনডেতে ৫৭.০৬ গড়ে ২৫১১ রান করেছেন তামিম। এর মধ্যে ৭টি সেঞ্চুরি আর ১৮টি হাফ সেঞ্চুরি। তামিম অনেকবার আমাদের আনন্দে ভাসিয়েছেন। তার সামর্থ্য নিয়ে, একাগ্রতা নিয়ে, দেশপ্রেম নিয়ে, দক্ষতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। খালি ফর্মে নেই। ফর্ম ক্ষণস্থায়ী, ক্লাস চিরস্থায়ী। তামিম আমাদের সেই মানের ব্যাটসম্যান। লারা, শচিনরাও কিন্তু প্রতি ম্যাচে সেঞ্চুরি করে না। আপনারা যারা বাংলাদেশের স্বার্থে তামিমকে বাদ দেয়ার দাবি তুলছেন, তারা কি ভুলে গেছেন, এই কদিন আগেও এক হাতে ব্যান্ডেজ নিয়ে এক হাতে ব্যাট করে বাংলাদেশকে জিতিয়েছেন। তামিম কি বাংলাদেশকে আপনার চেয়ে কম ভালোবাসে? আমি বলছি না, তামিম সারাজীবন খেলে যাবেন। কিন্তু এখনও তামিম বাংলাদেশের সেরা। আরো অনেকদিন আমরা তামিমকে চাই। আমি জানি, তামিমের ফর্মে ফেরা সময়ের ব্যাপার মাত্র। আর বাংলাদেশকে স্বপ্নের সীমানা ছুঁতে হলে তামিমের দুর্দান্ত ইনিংস লাগবেই।

মুশফিক বাংলাদেশের মিস্টার ডিপেন্ডেবল। গ্লাভস হাতেও বিশ্বস্ততার প্রতীক। এবার ব্যাটিং ভালো করছেন। নিউজিল্যান্ডের ম্যাচে একটি রানআউট মিস করে রাতারাতি ভিলেন হয়ে গেলেন। আমরা বলতে শুরু করলাম, মুশফিকের সেই রিফ্লেক্স আর নেই। বয়স হয়ে গেছে। আর চলে না। আপনি মুশফিককে বাদ দিতে বলেন, আপনার অকৃতজ্ঞতায় আমি বিস্মিত হয়ে যাই।

মাহমুদুল্লাহ বাংলাদেশের মিডলঅর্ডারের আরেক নির্ভরতা। বল হাতেও অধিনায়ককে সময়মত ব্রেক থ্রু এনে দেন। ইনজুরির কারণে এবার বল করতে পারছেন না। কিন্তু প্রথম ম্যাচেই ব্যাট হাতে দলের চাহিদা মিটিয়েছেন। তার ৩৩ বলে ৪৬ রানের ইনিংসই বাংলাদেশকে পৌছে দিয়েছিল ৩৩০ রানের চূড়ায়। পরের দুই ম্যাচে সেট হয়েও আউট হয়ে গিয়েছিলেন মাহমুদুল্লাহ। মাত্র দুই ম্যাচের ব্যর্থতায় আগের বিশ্বকাপে পরপর দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি করা ব্যাটসম্যানকে আমরা শুলে চড়াতে চাই। আমরা ভুলে যাই এই ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে কার্ডিফে নিউজিল্যান্ডরে বিপক্ষে ২৬৬ রান তাড়া করতে নেমে ৩৩ রানে ৪ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর সাকিবকে সাথে নিয়ে ২২৪ রানের জুটি গড়ে দলকে জিতিয়েছিলেন মাহমুদুল্লাহ। আমরা ভুলে যাই, সবকিছু ভুলে যাই। আমরা সবাই গোল্ডফিশ।

আমি বিস্মিত হতেও ভুলে যাই, যখন শুনি পারফরম্যান্স বিবেচনায় এমনকি মাশরাফিকেও বাদ দেয়ার দাবি তোলেন কেউ কেউ। তাদের যুক্তি হলো, খেলাধুলায় আবেগের কোনো জায়গা নেই। এখানে ব্যক্তির চেয়ে দেশ বড়। আমিও মানছি, আপনাদের যুক্তি। কিন্তু মাশরাফিকে বাদ দেয়ার দাবি তুলতে আপনাদের বুক একটুও কাঁপলো না? আপনাদের সাহস দেখে আমি অবাক হয়ে যাই। মাশরাফিকে আমি কখনো পরিসংখ্যান দিয়ে মাপি না। মাশরাফি আসলে সবকিছুর উর্ধ্বে। মাশরাফি এক অনুপ্রেরণার নাম। তবুও আপনাদের মত যুক্তিবাদীদের জন্য একটু পরিসংখ্যান দেই। ২০১৪ সালে এই দফায় অধিনায়কের দায়িত্ব পাওয়ার পর ৭৩টি ওয়ানডে খেলেছেন মাশরাফি। উইকেট নিয়েছেন ৯২টি। আপনারা যারা ভাবেন মাশরাফি অধিনায়ক কোটায় বা এমপি কোটায় খেলেন তাদের বিশ্বাস নাও হতে পারে, তবে সত্যিটা হলো, এই সময়ে তিনিই বাংলাদেশের সেরা বোলার। উইকেট সংখ্যায় তার পরে আছে মুস্তাফিজ, পেয়েছেন ৮৬টি; আর এই সময়ে সাকিব পেয়েছেন ৮১টি। হাঁটুতে ৭টি অপারেশন নিয়ে খেলাকে যারা এতদিন দেশপ্রেমের মহিমায় উজ্জ্বল করেছেন, তারাই এখন তাকে বলছেন আনফিট। আরে ভাই, এখন যতটা আনফিট, মাশরাফি কিন্তু গত ১৫ বছর ধরেই ততটা আনফিট। কিন্তু এই সময়ে মাশরাফি ফিটনেসের কারণে একটি ম্যাচও বাইরে ছিলেন না। যারা তিন ম্যাচ দিয়ে মাশরাফিকে মাপেন তাদের বলি, মাশরাফি যে বাংলাদেশে জন্মেছে, এ জন্য আমাদের গর্ব করা উচিত।
শুধু বাংলাদেশ নয়, আমার বিবেচনায় মাশরাফি বিশ্বসেরা অধিনায়কদের একজন। যেভাবে তিনি দলকে নেতৃত্ব দেন, সবাইকে অনুপ্রাণিত করেন, বিপদে সতীর্থকে আগলে রাখেন, হৃদয়ে গভীর দেশপ্রেম আর আবেগ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন; তার কোনো তুলনা নেই। ২০১৫ বিশ্বকাপের আগেও বাংলাদেশ একটা গড়পড়তা দল ছিল। কালেভদ্রে জয় পেতাম। জিম্বাবুয়েকে হারালেও মধ্যরাতে মিছিল বের হতো। মাশরাফি এসে জাদুর কাঠির ছোঁয়ায় বদলে দিলেন বাংলাদেশকে। সম্মানজনক পরাজয়ের ধারা থেকে বাংলাদেশকে নিয়ে এলেন জয়ের ধারায়। প্রতিপক্ষ যেই হোক, নিজেদের সেরাটা খেললে বাংলাদেশ জিততে পারে, এই বিশ্বাসটা সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেয়ার কৃতিত্ব মাশরাফি বিন মোর্তাজার। শুধু ক্রিকেটার নয়, মাশরাফি সব মানুষের অনুপ্রেরণা। মাশরাফির জীবনে যা যা ঘটেছে; অন্য কেউ হলে এতদিনে কোথায় চলে যেতেন।
মাশরাফিরা কখনো হাল ছাড়ে না, হার মানে না। লড়াই করে শেষ বিন্দু পর্যন্ত। ফুটবলে অধিনায়কের ভূমিকা তেমন নেই। কিন্তু ক্রিকেটে অধিনায়কের অনেক দায়িত্ব। মাশরাফি বাংলাদেশ দলকে বটবৃক্ষের মত আগলে রেখেছেন। রুবেল নেমে যদি ৫ উইকেট নিয়ে দলকে জিতিয়েও দেয়, তাহলেও কি মাশরাফির বদলে তাকে নামাতে হবে? আমরা আসলেই অকৃতজ্ঞ। আপনার বিবেচনা যদি ক্রিকেট না হয়ে রাজনীতি হয়; আপনি যদি আওয়ামী লীগ এমপি মাশরাফির পতন চান; তাহলে আমার কিছু বলার নেই। পাইলটকে নামিয়ে দিয়ে ফ্লাই করতে চাইলে সেটা বিপদজনক, আত্মঘাতী।

আপনারা যারা তামিম, মুশফিক, মাহমুদুল্লাহ, মাশরাফিকে বাদ দিতে চান; আমি তাদের দলে নেই। তারচেয়ে বড় কথা হলো, আপনার বেঞ্চে কি তাদের চেয়ে ভালো কেউ বসে আছেন? এই চারজনকে বাদ দিয়ে লিটন, সাব্বির, রুবেল আর আবু জায়েদকে নিলে কি বাংলাদেশ বিশ্বকাপ জিতে যাবে? যদি যায়ও, আমি তাও চাই না। আপনারা যারা বলে বলে উইকেট চান, ইনিংসে ইনিংসে সেঞ্চুরি চান; তামিম, মুশফিক, মাহমুদুল্লাহ, মাশরাফিকে বাদ দিতে চান; তাদের দেশপ্রেম নিয়ে আমার কোনো সন্দেহ নেই। তবে ক্রিকেটপ্রেম নিয়ে সংশয় আছে। আমাদের খেলোয়াড়দের যেমন ধারাবাহিকতা দরকার। দর্শক হিসেবে আমাদেরও ধারাবাহিকতা দরকার। আমরা চট করে মাশরাফিকে দেবতা বানিয়ে ফেলি, আবার ভিলেন বানাতেও সময় নেই না। আপনি যদি বাংলাদেশকে ভালোবাসেন, ক্রিকেটকে ভালোবাসেন; বাংলাদেশের পাশে থাকুন। ক্রিকেটারদের পাশে থাকুন। খারাপ সময়েই আপনাদের সমর্থন তাদের বেশি দরকার। ভাবুন এই ছেলেগুলো কতবার আপনাকে আনন্দে ভাসিয়েছে, আপনাকে গর্বিত করেছে।

ভালোবাসি বাংলাদেশ, ভালোবাসি টিম টাইগার্স। জিতলে তো তোমাদের সাথে আছিই, হারলেও আছি। হার-জিত খেলারই অংশ।

প্রভাষ আমিন : বার্তা প্রধান, এটিএন নিউজ।

সারাবাংলা/পিএম

ক্রিকেট জয় পরাজয় প্রভাষ আমিন বিশ্বকাপ ক্রিকেট মত-দ্বিমত

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

চট্টগ্রামে খালে ভাসছিল অর্ধগলিত লাশ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৪:৩৩

বিএসইসি‘র চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:৫১

সম্পর্কিত খবর