Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

প্রজন্মের প্রার্থনা— শতায়ু হোন বঙ্গবন্ধুকন্যা


২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:০১

ছবি: ফাইল

আজ ২৮ সেপ্টেম্বর। আজ থেকে ৭২ বছর আগে, দেশভাগের বছর ১৯৪৭ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ঘর আলো করে জন্ম হয়েছিল তাদের প্রথম সন্তানের। রাজপথে বাবার আন্দোলন-লড়াইয়ের জীবন আর পর্দার আড়াল থেকে বাবার সব লড়াইয়ে অনুপ্রেরণা হয়ে থাকা মায়ের সংগ্রাম দেখতে দেখতে বড় হয়ে ওঠা সেই প্রথম সন্তান নিজেও বেছে নিয়েছেন পিতা-মাতার পদাঙ্ক। বাবা বঙ্গবন্ধু নিজের শিক্ষাজীবন থেকেই ছিলেন সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ে উচ্চকণ্ঠ। সেই পথ অনুসরণ করেছেন তার প্রথম সন্তানও। আবার বঙ্গবন্ধু যেমন পরিণত বয়সে এসে দেশের মানুষের মুক্তি এনে দিয়ে পরিণত হয়েছিলেন বিশ্বরাজনীতির বলিষ্ঠ এক কণ্ঠস্বরে, ঠিক তেমনি তার প্রথম সেই সন্তানও পরিণত বয়সে এসে দেশের মানুষের অর্থনৈতিক-সামাজিক মুক্তি আর উন্নয়নের লড়াইয়ের মাধ্যমে পরিণত হয়েছেন বিশ্বনেতায়। কারও কাছে শান্তির দূত, কারও কাছে বিশ্বের নেতা, কারও কাছে মানবতার নেতা হিসেবে পরিণত হওয়া তিনি আর কেউ নন, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিজ্ঞাপন

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় আভিজাত্য ও প্রতিপত্তির কারণে বহু বছর ধরেই সমাদৃত শেখ বংশ। এই বংশের গোড়াপত্তন শেখ বোরহানউদ্দিন নামে একজন ধার্মিক ব্যক্তির হাত ধরে। এরপর কালের পরিক্রমায়, নানা উত্থান-পতনে একটা সময় শেখ বংশ সেই জৌলুস হারালেও এখন এই বংশের নামডাক টিকে রয়েছে সমুজ্জ্বল হয়ে। কারণ এই বংশেই জন্মে নিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের অবিসংবাদিত নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেই শেখ পরিবারেই জন্ম শেখ হাসিনার। ছিলেন বাবার আদরের হাসু। বাবার আদর আর আদর্শ ধারণ করে কালক্রমে তিনিই এখন বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। একইসঙ্গে নানা ঝড়-ঝঞ্ঝাকে পেরিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগকেও।

বিজ্ঞাপন

টুঙ্গিপাড়ার শান্ত, সুনিবিড়, মায়াময় পরিবেশে বাংলা মায়ের কোলে আর বঙ্গমাতার আদর-যত্নে বেড়ে উঠতে থাকেন শেখ হাসিনা। গ্রাম বাংলার ধূলোমাটি আর সাধারণ মানুষের সান্নিধ্যেই কেটেছিল তার বাল্যকাল। তাই গ্রামের সঙ্গে তার সম্পর্ক যেমন নিবিড়, তেমনি তার অন্তরেও নিপুণভাবে গেঁথে আছে সহজাত সারল্যের এক মায়াময় সৌন্দর্য। পল্লীমায়ের মতোই বঙ্গমাতার এই কন্যার হৃদয়ও বিশাল। তাই ছোটবেলাতেও তিনি মানুষের সুখ-দুঃখে পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন, নির্দ্বিধায় মুছে দিয়েছেন অসহায় মানুষের চোখের জল। সেই যে শুরু, তারপর আজ পর্যন্ত জীবনের প্রতিটি ধাপেও তিনি শোষিত-বঞ্চিত-নিপীড়িত দুঃখী মানুষের এক পরম স্বজন।

একটি মানবশিশুর শৈশব-কৈশোর ঠিক যতটা আনন্দপূর্ণ হওয়ার কথা, শেখ হাসিনার শৈশব-কৈশোর ছিল ঠিক ততটাই বেদনায় পূর্ণ। বাস্তবতার আগুনে দগ্ধ হয়েছে তার শৈশব-কৈশোর। এই বয়সে অন্যরা শখের তালপাতা কিনতে বাবার সঙ্গে মেলায় যায়, মনের আনন্দে ঘুরতে যায় এখানে-সেখানে, আদরে-আবদারে-আহ্লাদে বেড়ে ওঠে বাবার পরম সান্নিধ্যে— এমন সৌভাগ্য শেখ হাসিনার হয়নি। তার বাবা তো নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন দেশের মানুষের মুক্তির জন্য। তাই শেখ হাসিনা যখন বেড়ে উঠছেন, তার বাবা তখন দিনের পর দিন কারাগারে বন্দি। তাই আর দশজনের মতো বাবার অবারিত সান্নিধ্যের সুযোগই পাননি শেখ হাসিনা। বাবার হাত ধরে যখন স্কুলে যাওয়ার কথা, তখন মায়ের হাত ধরে জেলগেটে যেতে হয়েছে বন্দি বাবাকে দেখতে। কখনো বাবার কাছে পৌঁছে দিয়েছেন মায়ের চিঠি, চিঠি দেওয়া সম্ভব না হলে বাবার কাছে পৌঁছেছেন মায়ের বার্তা, মায়ের পরামর্শ। এর ফাঁকে ফাঁকে বাবাকে যতটুকু সময় কাছে পেয়েছেন, ওইটুকু সময়ের মধ্যেই বাবার কাছ থেকে ধারণ করেছেন তার আদর্শ আর মূল্যবোধ। তাই তো বাবার দেখানো পথ ধরেই দেশের মানুষের জন্য নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে পথ চলেছেন শেখ হাসিনা।

অনেকসময় বাবা জেলে বলে স্কুল বন্ধ হয়েছে, পড়ালেখা বন্ধ হয়েছে। সরকারি স্কুলে পড়তেন বলে নামও কাটা গিয়েছে। তাই বলে যে শেখ হাসিনার পড়ালেখাই আর হয়নি, তা নয়। কারণ শেখ হাসিনার জীবনের সবচেয়ে বড় শিক্ষক ছিলেন তার পিতা। দেশের জন্য আত্মত্যাগ করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জীবনে অসংখ্যবার জেলে গিয়েছেন সত্যি, কিন্তু তার আদর্শে দারুণভাবে দীক্ষিত হয়েছেন শেখ হাসিনা। বঙ্গমাতাও ছিলেন অতুলনীয় মেধা, বুদ্ধিমত্তা আর অসাধারণ ধীশক্তির অধিকারী। বঙ্গমাতা তার শক্তিশালী চারিত্রিক গুণাবলীর বলে যেমন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের রাজনৈতিক জীবনে রেখেছিলেন অসামান্য প্রভাব, তেমনি শেখ হাসিনাসহ তার ভাই-বোনদেরও একা হাতেই শিক্ষিত করেছেন, মানুষ করেছেন।

জন্মস্থান টুঙ্গিপাড়াতেই শেখ হাসিনার পড়ালেখার হাতেখড়ি, সেখানেই বাল্যশিক্ষা নেন। তারপর ১৯৫৪ সালে চলে আসেন ঢাকায়। সেসময় পরিবারের সঙ্গে থাকতেন মোগলটুলি রজনীবোস লেনের বাড়িতে। পরে মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে ওঠেন। ১৯৫৬ সালে তিনি টিকাটুলির নারীশিক্ষা মন্দির বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। বর্তমানে এই বিদ্যালয় শেরে বাংলা বালিকা মহাবিদ্যালয় নামে পরিচিত। ১৯৬১ সালের ১ অক্টোবর পরিবারের সঙ্গে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িতে উঠে এলে আবারও স্কুল বদল, এবার ভর্তি হলেন আজিমপুর বালিকা বিদ্যালয়ে। এখান থেকেই ১৯৬৫ সালে ম্যাট্রিক (এসএসসি) পাস করেন। ১৯৬৭ সালে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন ঢাকার বকশীবাজারের ইন্টারমিডিয়েট গভর্নমেন্ট গার্লস কলেজ (বর্তমানে বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয়) থেকে। সে বছরই তিনি ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, সেখান থেকে ১৯৭৩ সালে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এক ঘৃণ্য সামরিক অভ্যুত্থানে কালো রাত নেমে আসে বাঙালি জাতির জীবনে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা ফজিলাতুনেচ্ছা মুজিবসহ ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িতে অবস্থানরত তাদের পরিবারের সব সদস্য ও স্বজনদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। শেখ হাসিনা ও ছোট বোন শেখ রেহানা তখন পড়ালেখার জন্য পশ্চিম জার্মানিতে। তারা দু’জন ছাড়া শেখ পরিবারের বাকি সবাই সেই ১৫ আগস্ট প্রাণ হারায় আততায়ীদের হাতে।

রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হিসেবে ছাত্রজীবন থেকেই প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন শেখ হাসিনা। এখন তিনি শুধু জাতীয় নেতাই নন, তৃতীয় বিশ্বের এক বিচক্ষণ নেতা হিসেবে বিশ্বরাজনীতির অঙ্গনে তিনি এক উজ্জ্বল নক্ষত্র।

শেখ হাসিনা যখন স্কুলে পড়েন, ওই সময়ই অন্যান্য স্কুলে গিয়ে মেয়েদের বোঝাতেন কেন সংগঠন করতে হবে, কেন আন্দোলন করতে হবে। স্কুল পালিয়ে চলে যেতেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায়, মিটিং শোনার জন্য। একবার স্কুলে ধর্মঘট হওয়া অবস্থায় এক অফিসার পুলিশ এসে তাকে জেলে নেওয়ার ভয় দেখালেন, শেখ হাসিনা হাসতে হাসতে উড়িয়ে দিলেন। উত্তরে তিনি অফিসারকে বলেছিলেন, আমরা তো প্রতি ১৫ দিন পরপরই জেলখানায় যাই (বাবার সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার কথা বলেছেন)! কী নির্মম সত্য, অথচ তার উচ্চারণ সবসময়ই ছিল বলিষ্ঠ আর আত্মপ্রত্যয়ী।

কলেজে পড়ার সময় শেখ হাসিনা কলেজ ছাত্রী সংসদের সহসভানেত্রী নির্বাচিত হন। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সরকারি ইন্টারমিডিয়েট গার্লস কলেজের ছাত্রসংসদের সহসভাপতি ছিলেন। তিনি এই কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং পরের বছর সভাপতি ছিলেন। তার জন্য এই লড়াই ছিল আরও কঠিন। কারণ বঙ্গবন্ধুকন্যা বলে সবসময়ই তাকে হারিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা থাকত।

শেখ হাসিনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একজন সদস্য এবং ছাত্রলীগের রোকেয়া হল শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে ছাত্রলীগের নেত্রী হিসেবে তিনি আইয়ুববিরোধী আন্দোলন এবং ছয় দফা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন। বাহান্নর ভাষা আন্দোলনের পর বাঙালিকে বাংলা ভাষা আরবি ও রোমান হরফে লেখানোর একটি কূটচাল চলছিল, আন্দোলন করেছেন তার বিরুদ্ধে। অর্থাৎ বাংলা ভাষাকে তার নিজস্ব মর্যাদা দিতেও শেখ হাসিনা আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় জীবনেই ১৯৬৭ সালে এম এ ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় শেখ হাসিনা। তিনি কালক্রমে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পরমাণু বিজ্ঞানী হয়ে ওঠেন। ২০০৯ সালের ৯ মে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তবে এই দম্পতির ঘর আলো করে জন্ম নেওয়া পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় ও কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এখনো আলোকিত করে চলেছেন বিশ্বকে। সজীব ওয়াজেদ একজন তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ। তিনি প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবেও কাজ করছেন। একমাত্র কন্যা সায়মা ওয়াজেদ একজন মনোবিজ্ঞানী এবং তিনি অটিস্টিক শিশুদের কল্যাণে কাজ করছেন। শেখ হাসিনার নাতি-নাতিনীর সংখ্যা সাত।

পিতাসহ পরিবার-পরিজন হারিয়ে দুই বোন তখনো দেশে ফিরতে পারেননি। ১৯৭৫ থেকে পরের আরও পাঁচ বছর অবস্থান করেছেন ভারতে। ১৯৮০ সালে ইংল্যান্ডে থেকে তিনি স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন শুরু করেন। তেমন একটি সময়েই ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তার হাতে তুলে দেওয়া হয় আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব, নির্বাচিত করা হয় সভাপতি। সামরিক শাসকদের রক্তচক্ষু ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ওই বছরের ১৭ মে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন তিনি, শুরু করেন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রাম। আর সে কারণেই ক্ষমতালিপ্সু শাসকগোষ্ঠীর রোষানলে পড়েন তিনি। বারবার কারান্তরীণ করা হয় তাকে, হত্যার জন্য কমপক্ষে ১৯ বার সশস্ত্র হামলা চালানো হয়।

শত বাধা-বিপত্তি-প্রতিকূলতা ও হত্যার হুমকি উপেক্ষা করেও শেখ হাসিনা ভাত-ভোট ও সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার আদায়ের জন্য অবিচল থেকে সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন। তারই ফল হিসেবে ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ২১ বছর পর ফের আওয়ামী লীগকে এনে দিয়েছেন জয়, গঠন করেছেন সরকার। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশের জনগণ অর্জন করেছে গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতা। বাংলাদেশ পেয়েছে নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা। শেখ হাসিনার অপরিসীম আত্মত্যাগের ফলেই বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে।

মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় শেখ হাসিনা সবসময়ই আপসহীন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে এক লৌহমানবীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে লড়াই করে যাচ্ছেন। ২০০৯ সালে সরকার পরিচালনায় দায়িত্ব নিয়ে তার সরকার ১৯৭১ সালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল স্থাপনের জন্য আইন প্রণয়ন করে। এই আইনের আওতায় স্থাপিত ট্রাইবুনাল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছে এবং রায় কার্যকর করা হচ্ছে।

শুধু তাই নয়, তিন মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সফলভাবে দায়িত্ব পালনের পর এখন পার করছেন চতুর্থ মেয়াদ। আশির দশকে যেমন তিনি ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করেছেন দলকে, তেমনি একটি অনুন্নত দেশকে মধ্য আয়ের দেশে পরিণত করতেও রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। যে কারণে জাতীয়-আন্তর্জাতিক অনেক পুরস্কার আর স্বীকৃতি রয়েছে তার ঝুলিতে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করে বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থা, গণমাধ্যম ও বিশ্বব্যাক্তিত্বরা বিভিন্ন উপাধি দিয়েছেন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে—

  • লেডি অব ঢাকা— যুক্তরাষ্ট ভিত্তিক প্রভাবশালী বিজনেস ম্যাগাজিন ‘ফোর্বস’
  • মাদার অব হিউম্যানিটি— ব্রিটিশ মিডিয়া
  • ক্যারিশম্যাটিক লিডার— মিশরের রাষ্টদূত মাহামুদ ইজ্জত
  • প্রাচ্যের নতুন তারকা— সংযুক্ত আরব আমিরাতের সংবাদপত্র খালিজ টাইমস
  • বিশ্বের নেতা— ভারতের বিজেপির ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সংসদ সদস্য ড. বিনয় প্রভাকর
  • নারী অধিকারের স্তম্ভ— কানাডার আন্তর্জাতিক উন্নয়নমন্ত্রী মেরি ক্লড বিবেউ
  • বিশ্ব শান্তির দূত— কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পিস স্ট্যাডিস বিভাগের তিন শিক্ষক।
  • মানবিক বিশ্বের প্রধান নেতা— অক্সফোর্ড নেটওয়ার্ক অফ পিস
  • জোয়ান অফ আর্ক— শ্রীলঙ্কা গার্ডিয়ান
  • বিশ্ব মানবতার আলোকবর্তিকা— নোবেল বিজয়ী কৈলাশ সত্যর্থী
  • বিশ্ব মানবতার বিবেক— কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট জুয়ান ম্যানুয়েল সন্তোস
  • বিরল মানবতাবাদী নেতা— তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান

এছাড়া তার কর্মদক্ষতা ও মহানুভবতার জন্য তিনি বিশ্ববাসীর কাছ থেকে অসংখ্য পদক ও সম্মাননা পেয়েছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে স্বপ্ন দেখতেন, সেই স্বপ্ন আজ বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের যে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ, তার কারিগর এই শেখ হাসিনা। তলাবিহীন ঝুড়ির তকমা পাওয়া একটি দেশকে যে মানুষটি ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়েছেন, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত করার স্বপ্ন দেখিয়েছেন, তিনি এই শেখ হাসিনাই।

কেবল স্বপ্ন দেখানোই নয়, স্বপ্নকে কিভাবে বাস্তবায়ন করতে হয়, তার পথও দেখিয়েই চলেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি। এরই মধ্যে জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে বাংলাদেশের অবস্থান গোটা বিশ্বের মধ্যেই ঈর্ষণীয়। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বলছে, ২০৩০ সালের মধ্যেই অর্থনীতিতে বিশ্বের শীর্ষ ২৬টি দেশের মধ্যে উঠে আসবে বাংলাদেশ। বিশ্লেষকরাও বলছেন, বাংলাদেশ যে গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, তাতে উন্নত বিশ্বের কাতারে উন্নীত হতে এই দেশকে ২০৪১ সাল পর্যন্ত অপেক্ষাও করতে হবে না। যার কল্যাণে এই উন্নয়ন আর উত্তরণের পথে বাংলাদেশের পথচলা, তিনি শেখ হাসিনা।

আজ সেই বঙ্গবন্ধুকন্যার ৭২তম জন্মদিন। তার জন্য প্রাণঢালা অভিনন্দন ও শুভ কামনা। শতায়ু হোন বঙ্গবন্ধুকন্যা। বর্তমান প্রজন্মেরও প্রত্যাশা— পিতার অসমাপ্ত আপনাকেই সমাপ্ত করতে হবে। নির্মাণ করতে হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দুর্নীতিমুক্ত একটি অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, সমৃদ্ধ ও মর্যাদাশীল আধুনিক বাংলাদেশ।

লেখক: সাধারণ সম্পাদক, গৌরব৭১; সংগঠক, গণজাগরণ মঞ্চ

৭২তম জন্মদিন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা শেখ হাসিনার জন্মদিন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর