ইএফডি: নতুন ভ্যাট ব্যবস্থায় শিকল তৈরি করবে
২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১১:২৩
২০১২ সালে নতুন ভ্যাট আইন প্রণয়ন হলেও তা বাস্তবায়ন হয়েছে প্রায় সাত বছর পরে। ১ জুলাই ২০১৯ থেকে এই রাজস্ব সংক্রান্ত আইন চালু হলেও প্রথম কয়েক মাস লেগেছে ব্যবসায়ীদের প্রতিক্রিয়া বুঝতে। যেহেতু এখন এর গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে তেমন কোনো নেতিবাচক উচ্চারণ নেই তাই নতুন আইনের সফলতা নিয়ে সামনে এগিয়ে যাবার সময় এসেছে। ধরে নেওয়া হয়েছে যে, নতুন আইন অধিকতর স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থার উপর নির্ভরশীল হবে। সময়সাপেক্ষ ম্যানুয়াল পদ্ধতির উপর নির্ভরতা কমাতে ভ্যাট অটোমেশনকে সামনে আনা এবং যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি এর অন্যতম উদ্দেশ্য। এই ব্যবস্থার অন্যতম হাতিয়ার হবে ইলেক্ট্রনিক ফিসকাল ডিভাইস (ইএফডি) চালু করা। বর্তমান এনবিআর এটি কার্যকরভাবে প্রবর্তনের জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে এবং তা অচিরেই দৃশ্যমান হচ্ছে।
বিশ্বের অনেক দেশে এই ইএফডি এখন প্রবর্তিত আছে। ইতালিতে ১৯৮৩ সালে প্রথম ইএফডি চালু করা হয়েছিল। এখন এই যন্ত্র ইউরোপ, এশিয়া ও আফ্রিকাসহ দেশে দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশে নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়নের অনুসঙ্গ হিসেবে এই ইএফডি সামনে চলে এসেছে। প্রশ্ন হচ্ছে ভ্যাট আইন পরিপালনে ইএফডি কতখানি ভূমিকা রাখতে পারবে?
ইতোমধ্যে এনবিআরের পক্ষে ভ্যাট অনলাইন প্রকল্প এই যন্ত্র স্থাপন প্রক্রিয়ায় অনেকদূর এগিয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য বলছে, একলক্ষ যন্ত্র ক্রয়ের আয়োজন চূড়ান্ত করা হয়েছে। পরীক্ষমূলকভাবে প্রথমে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ ভ্যাট কমিশনারেটে ৪০টি করে ৮০টি এবং চট্টগ্রামে ২০টিসহ মোট ১০০টি যন্ত্র বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে কোনো কারিগরি ত্রুটি দেখা না দিলে আরো ১০,০০০ মেশিন বসানো হবে। পর্যায়ক্রমে প্রথমে এক লক্ষ এবং পরে দুই লক্ষ যন্ত্র বসবে। হোটেল, রেস্টুরেন্ট, স্বর্ণের দোকান, বিউটি পার্লার, ডেকোরেটর সার্ভিস, তৈরি পোশাকসহ ২৪ ধরনের খুচরা পর্যায়ের দোকানে এসব যন্ত্র বসানো হবে। এর দ্বারা ভ্যাট আইন পরিপালন ও তা আহরণে একটা ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে বলে মনে করা হয়।
কেন এই ইএফডি-র ধারণাটি সামনে আসলো? ১৯৯১ সালের আইনে পর্যায়ক্রমে খুচরা বিক্রির উপর ভ্যাট আরোপ করার ফলে ছোটবড় দোকান থেকে সনাতনি ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে আশানুরূপ ভ্যাট না আসায় ২০০৮ সালের দিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ইলেক্ট্রনিক ক্যাশ রেজিস্ট্রার (ইসিআর) প্রবর্তন করে। তবে এই যন্ত্র তেমন ফলপ্রসু হয়নি। এর মূল কারণ হচ্ছে যে, এই যন্ত্রে ‘রিয়েল টাইম’ বিক্রির তথ্য মনিটর করার সুযোগ সীমিত ছিল। অধিকন্তু, নেটওয়ার্কিং এর সাথে সংযুক্ত না থাকায় যন্ত্রে কী হচ্ছে তা জানার সুযোগ ছিল না। অন্যদিকে, ইএফডি হচ্ছে ইসিআরের উন্নততর সংস্করণ। এতে প্রিন্টার, মনিটর, কি-বোর্ড এবং ক্রেডিট ও ক্যাশ কার্ডের মাধ্যমে লেনদেনের সংযোগ থাকবে। নেটওয়ার্কিং এর মাধ্যমে এনবিআরের সেন্ট্রাল সার্ভারের সাথে সংযুক্ত থাকায় দোকানের বিক্রির তথ্য সংরক্ষিত থাকবে স্থাপিত এই যন্ত্রে এবং এনবিআরের সার্ভারে। ইচ্ছে করলেই কেউ এর তথ্য মুছে ফেলতে পারবে না।
এর আরেকটি সুবিধা হলো, বিদ্যুৎ না নেটওয়ার্ক না থাকলেও এই যন্ত্র অফলাইনে তথ্যাদি নিজস্ব মেমোরিতে ধারণ করবে। পরবর্তীতে বিদ্যুৎ ও নেটওয়ার্ক ফিরে আসলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তা সেন্ট্রাল সার্ভারের সাথে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সমন্বয় হয়ে যাবে। এই ইএফডি তুলনামুলকভাবে ছোট ও অধিকতর ব্যবহার উপযোগী।
ব্যবসায়িদের জন্য এই যন্ত্র কী সুবিধা এনে দিবে? তারা কেন এই যন্ত্র বসাবে? প্রথম যুক্তি হচ্ছে যে, ব্যবসায়িদের এই যন্ত্র বসাতে কোনো খরচ নেই। এনবিআর এই যন্ত্রটি তাদের বিনামূল্যে সরবরাহ করবে। যন্ত্রে কোনো কারিগরি ত্রুটি দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে তা মেরামত করার জন্য সেবা দিতে সার্বক্ষণিকভাবে টিম কাজ করবে। তাছাড়া ২৪/৭ সেবা পেতে হটলাইন সেবাও উন্মুক্ত থাকবে। তাদের ইএফডি ব্যবহারের অন্যতম সুবিধা হলো, এতে দোকানের মালামালের পরিমাণ লিপিবদ্ধ থাকবে।
দিনশেষে কোন পণ্য কতটুকু বিক্রি হলো এবং অবশিষ্ট মজুত কত আছে তা একজন ব্যবসায়ী যন্ত্রের সাহায্য মেলাতে পারবেন। তাছাড়া তিনি কোথাও কোনো পণ্য চুরি হলে বা পণ্যের মান বা মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার আগে পণ্য সম্পর্কে তথ্য বের করা ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবেন। উন্নত নিরাপত্তামূলক সফটওয়্যার ব্যবহার করায় এই সিস্টেমে ধারণকৃত যে কোন তথ্য স্থায়ী ও অত্যন্ত নিরাপদ। অন্যদিকে, ভ্যাটের হিসাব বের করা এবং তা জমা দেওয়ার পদ্ধতিটি যন্ত্রের মাধ্যমে অল্প সময়ে শেষ করা সম্ভব। নিজের হিসাব নিজে করে তা অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের মাধ্যমে পরিশোধ করলে সময়, খরচ ও হয়রানির অভিযোগও কমে যাবে। মোটকথা, ব্যবসায়িদের নিজস্ব হিসাব ও ভ্যাট প্রদানে স্বচ্ছতা আসবে এই যন্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে।
ইএফডি-র অন্যতম সুবিধাভোগী হচ্ছে ক্রেতাসাধারণ। এই যন্ত্রের মাধ্যমে যে কোন পণ্য বা সেবা কিনলে যে রিসিপ্ট পাওয়া যাবে তা ওই পণ্য বা সেবা ক্রয়ের আইনী দলিল হিসেবে গণ্য হবে। এই রিসিপ্টে পণ্য বা সেবা ক্রয় ও ভ্যাট পরিশোধের তথ্যের পাশাপাশি দোকানের ভ্যাট শনাক্তকরণসহ বারকোড প্রিন্ট করা থাকবে। এই বারকোডটি ক্রেতা তার নিজস্ব মোবাইল অ্যাপস দিয়ে এর সত্যতা তাৎক্ষণিকভাবে যাচাই করে নিতে পারবেন। তিনি ক্রয়ের সময়ই নিশ্চিত পারবেন যে, তার দেয়া ভ্যাট এনবিআরের সেন্ট্রাল সার্ভারে গৃহীত হয়েছে, যা মাস শেষে বিক্রেতা সরকারি কোষাগারে জমা দেবে।
অন্যদিকে, সরকার সময়ে সময়ে সার্ভারে রক্ষিত ভ্যাট রিসিপ্ট থেকে দৈবচয়ন ভিত্তিতে পুরস্কারের ঘোষণা দিলে ক্রেতাসাধারণ তাতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অন্তর্ভূক্ত হতে পারেন। পণ্য ক্রয়ের সময় ক্রেতাসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করতে এনবিআরের এধরনের প্রণোদনা দেয়ার পরিকল্পনা আছে।
এনবিআর কেন এই ইএফডি চাচ্ছে? নতুন আইনের অন্যতম দিক হচ্ছে অনলাইন ব্যবস্থার প্রবর্তন। এই ইএফডি কেন্দ্রীয় তথ্য ভান্ডারের সঙ্গে সংযুক্ত থাকায়, যন্ত্রে দেওয়া যে কোন তথ্য সাথে সাথে এনবিআরের নেটওয়ার্কে চলে আসবে। একজন বিক্রেতা ইচ্ছে করলেও তার বিক্রির তথ্য ইচ্ছেমাফিক পরিবর্তন করতে পারবেন না। মাস বা মেয়াদশেষে মোট বিক্রি ও প্রযোজ্য ভ্যাট হিসেব করে তা আদায় করা সহজ হবে। এই ব্যবস্থায় কোন দোকানের পণ্যের মজুত ও বিক্রি সংক্রান্ত হালনাগাদ তথ্যও জানা যাবে। ভ্যাট কর্মকর্তারা অফিসে বসে জানতে পারবেন, দোকানে স্থাপিত যন্ত্রটি সচল আছে কিনা?
যদি দেখা যায়, কোনো নির্দিষ্ট সময়ে যন্ত্রটি কাজ করছে না এবং বন্ধ থাকছে তাহলে কেন্দ্রীয় তথ্যভান্ডার সিগনাল দিবে এবং ভ্যাট কর্মকর্তারা ঐ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে খোঁজ নিতে পারবেন। এই ব্যবস্থায় বিভিন্ন সময়ে ভ্যাটের হারে পরিবর্তন আসলে তা প্রতিষ্ঠানে না গিয়েও এনবিআরে বসে সিস্টেমে পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে। এনবিআরের জন্য সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে যে, ভ্যাটের কলেবর বাড়লেও জনবল না বাড়ায় সীমিত জনবল দিয়ে বিপুল পরিমাণ ভ্যাটের প্রতিষ্ঠানের ক্রয়-বিক্রয়ের হিসাব স্বয়ংক্রিয়ভাবে এবং সঠিকভাবে তদারকি করা সম্ভবপর হবে। এতে ভ্যাট ব্যবস্থায় সম্পদের সাশ্রয় হবে। সার্বিকভাবে, ইএফডি-র প্রবর্তন ভ্যাট ব্যবস্থায় আগের তুলনায় স্বচ্ছতা আনবে এবং তা আহরণের গতি বাড়িয়ে দেবে।
তবে বর্তমানে ইএফডি চালু করতে কয়েকটি চ্যালেঞ্জ বিবেচনায় আনতে হয়েছে। এগুলো তিনধরনের। প্রথমত, কারিগরিভাবে যন্ত্রগুলো দেশের উপযোগী করে তৈরি করা হয়েছে কিনা। যে ‘কি-বোর্ড’ ব্যবহার হবে তা প্রান্তিক পর্যায়ের দোকানদার বা তার কর্মচারিগণ চালাতে পারবে কিনা। বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট নিরবিচ্ছিন্ন না থাকলে কী হবে? অন্যদিকে, প্রথমদিকে দোকানের হাজারো পণ্যের প্রত্যেকটির স্টক নেওয়া এবং তার বিপরীতে পণ্য বা সেবার শনাক্তকরণ ও এইচএসকোড ব্যবহার ও তা সমন্বয় জটিল ও সময়সাপেক্ষ হতে পারে।
অন্যদিকে, কোনো একটি দোকানে বিক্রিত পণ্যের উপর একইসময়ে বিভিন্ন হারে ভ্যাট ও সম্পুরক শুল্ক প্রযোজ্য হতে পারে। সিস্টেমে এ বিষয়টি কীভাবে সামাল দেওয়া হয় তা দেখার বিষয়। দ্বিতীয়ত, ইএফডি হচ্ছে প্রযুক্তিনির্ভর যন্ত্র। এর ব্যবহার ও সংরক্ষণব্যবস্থাও নতুন। যেকোনো প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে ‘ম্যান বিহাইন্ড দি মেশিন’ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যথাযথ প্রশিক্ষণ ও ব্যাপকভাবে উদ্বুদ্ধকরণ অত্যন্ত জরুরি। সারাদেশে খুচরা দোকানের সংখ্যা ২০ লক্ষাধিক। এত ব্যাপক সংখ্যাকে নতুন ব্যবস্থায় আনতে উপযুক্ত পরিকল্পনা ও তা এগিয়ে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। তৃতীয় বিষয়টি হচ্ছে কর প্রদানের সংস্কৃতি তৈরির উপর নির্ভরশীল এই যন্ত্রের সাফল্য। এই ব্যবস্থায় যেহেতু কর ফাঁকির সুযোগ সীমিত তাই যারা এটি ব্যবহার করবেন এবং মনিটর করবেন তারা কতখানি আন্তরিক হবেন তা দেখার বিষয়।
অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, কোনো কোনো ব্যবসায়ি পণ্য বিক্রিতে ক্রেতার নিকট হতে ভ্যাট আদায়ে উৎসাহিত হন না। আদায় করলেও তা তারা যথাযথভাবে জমা দেন না। তারা এই নতুন ব্যবস্থাকে কীভাবে গ্রহণ করবেন তা দেখা আরো গুরুত্বপূর্ণ। খুচরা দোকান ব্যবসায়িদের একটা অংশ বেশ সংগঠিত এবং এই নতুন যন্ত্র বসানো ও ব্যবহারে কোথাও কোনো দীর্ঘসূত্রিতা হলে বা কারিগারি ত্রুটি দেখা দিলে তারা এর বিরুদ্ধাচরণ করতে পারেন। অন্যদিকে, দূরের কোনো প্রতিষ্ঠানে স্থাপিত মেশিন ব্যবহার না করেও বিক্রেতা তার পণ্যটি নগদে লেনদেন করতে পারেন। যন্ত্রে এন্ট্রি না দিয়েও বিকল্প পথে তিনি পণ্য বিক্রির সুযোগ খুঁজতে পারেন। একইসাথে, অভ্যন্তরীণ কেউ কেউ বাড়তি সুবিধা হারানোর আশঙ্কায় এই ব্যবস্থার প্রতি আগ্রহী নাও হতে পারেন।
এসব চ্যালেঞ্জসমূহকে মাথায় রেখে এনবিআর ইএফডি চালু করতে যাচ্ছে। তবে ইতোমধ্যে নতুন ভ্যাট আইনের বাস্তবায়ন শুরু হওয়ায় ইএফডি চালুর পথটি এখন সুগম হয়েছে। এনবিআরের টিম বিশ্বাস করে, যন্ত্র সংক্রান্ত যে সব ত্রুটি রয়েছে, তা আমলে নিয়ে ব্যবসায়ী ও ভ্যাট কর্মকর্তাদের উপযোগী করে সরবরাহ করা হবে। কারিগরি দিক দিয়ে যতটা ব্যবসায়ী ও রাজস্ব বান্ধব করা যায় ততটাই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এজন্য পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের জন্য নানামুখি কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। এতে ভ্যাট কর্মকর্তা ও মনোনীত ব্যবসায়িগণও অংশ নিচ্ছেন। ইএফডি নিয়ে বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ করার কার্যক্রমও চলমান রয়েছে। সকল ধরনের শঙ্কা দূর করেই এটি চালু হচ্ছে।
ইএফডি অন্য দেশে সাফল্য এনে দিয়েছে। রাজস্ব আহরণে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। কেসি ও ক্যাস্ট্রো (২০১৫) কেনিয়া, তানজানিয়াসহ ১৯টি দেশে জরিপ করে দেখতে পান যে, ইএফডি চালুর পর ওইসব দেশে ১৪% অতিরিক্ত বিক্রয় রেকর্ডভূক্ত হয়েছে এবং সে অনুপাতে রাজস্বও বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ রাজস্ব বাড়াতে ভ্যাট অন্যতম বিকল্প হওয়ায় নতুন ভ্যাট ব্যবস্থায় স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতির প্রবর্তন একটি বড় অগ্রগতি হবে।
এখানে কতিপয় চ্যালেঞ্জ থাকলেও তা গ্রহণযোগ্য ও উপযোগী করে চালু করার জন্য এনবিআরে যথাযথ প্রস্তুতি চলছে। যেহেতু খুচরা পর্যায়ে কোটি কোটি লেনদেনের হিসাব সনাতন পদ্ধতিতে ট্রাক করা বাস্তবসম্মত নয়, সেহেতু স্বচ্ছতার স্বার্থেই এবং ভ্যাট আহরণের সময় ও খরচ বাচাতে ইএফডি-কে স্বাগত জানানো দরকার। নতুন ভ্যাট আইন অনুসারে প্রযোজ্য হারে ভ্যাট আদায় ও তা সরকারি কোষাগারে জমা দেখতে চান অনেকে। চূড়ান্তভাবে, এতে ভ্যাট ফাঁকির সুযোগ সংকুচিত হওয়ায় অন্যান্য দেশের ন্যায় রাজস্ব বাড়ার সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, আদর্শ ভ্যাট ব্যবস্থার ‘চেইন ইফেক্ট’ সৃষ্টি করতে এই ইএফডি কার্যকর অবদান রাখবে। ইএফডি-র তথ্যাদি অন্যান্য অর্থনৈতিক সূচক, মাপকাঠি ও প্রক্রিয়ার সাথে যাচাই-বাছাই করার সুযোগ বাড়বে। এর মাধ্যমে ব্যবসায়িক কর্মকান্ডের পদচিহ্ণের সূচনা করবে এবং আনুষ্ঠানিক অর্থনীতির পথ প্রসারিত হবে।
লেখক: কমিশনার অব কাস্টমস ও ভ্যাট, ঢাকা পশ্চিম, এনবিআর।